Wednesday, 29 July 2020

গৌড় চন্দ্র পাল

কবিতা
--------

কবি  পরিচিতি : গৌড় চন্দ্র পালের জন্ম মালদা জেলার প্রত্যন্ত মিরকামারী গ্রামে ৩ রা জানুয়ারি ১৯৯৪ সালে। পিতা-জিতেন্দ্র নাথ পাল। মাতা-ইরা পাল। মিরকামারী প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে দেবীপুর স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে, করবোনা কাঞ্চননগর হাই মাদ্রাসা থেকে মাধ্যমিক(2010), মথুরাপুর বিএসএস হাই স্কুল(10+2) উচ্চ মাাাধ্যমিক, ফারাক্কা নুরুল হাসান কলেজ থেকে ভূগোলে স্নাতক, ও বিলাসপুর উনিভার্সিটি থেকে ভূগোলে MA ডিগ্রি অর্জন করি।


ছোট বেলা থেকেই সাহিত্য অনুরাগী।সাহিত্যের প্রতি গভীর ভালোবাসা।অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় বিশ্ব ব্রহ্মমান্ড কবিতা দিয়ে আমার পথ চলা শুরু।অনেক পত্রিকায় ও স্কুল ম্যাগাজিনে কবিতা প্রকাশ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।

------------------------------------------------------------------

সহিষ্ণুতা

          
সহিষ্ণুতার মন্ত্রণা আজ,
কোথায় গেছে হারিয়ে,
জাতি-ধর্ম-রাজনীতির তর্ক যে আজ,
সকলকে গেছে ছাড়িয়ে।
ভারতমাতার বীর সন্তান,
নয় যে আর ততই মহান,
জাতি -ধর্ম-রাজনীতির দ্বন্দ্বে।
যে মায়ের একশো-ত্রিশ কোটি সন্তান,
কেন আজ তার এই অবস্থান,
কাঁদবে কেন মাতৃভূমি,
রক্ষা করতে কাশ্মীর ভূমি।
জাতি-ধর্ম-রাজনীতির দ্বন্দ্ব ভুলে,
হাতে হাত মিলাও আজ সহোদর বলে,।
সন্ত্রাসীরা নয় যে কোনো জাতি,
মিছি-মিছি দোষ কেন দাও একশ্রেণীর জাতি,
সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে,
ছিন্ন করতে নিজ মাতৃভূমি।।


-------------------------------------------------------------

চালক শ্রমিক 


     যে শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে,
     সচল থাকার শক্তি পেত পৃথিবী। 
     সেই শক্তির সৃষ্টি কর্তা ভ্রমে,
     ফিরে পেতে মাতৃ ভূমির দৃষ্টি।
     বিদেশে থাকে ব্যার্থ আশা নিয়ে,
     অনাহারে প্রাণ যায়।
     পথ খুঁজে না পায়,
     রেলে পৃষ্ট হয়ে মরে।
     কেউ বা যদি দীর্ঘ পথ হেটে,
     বাড়ির উদ্দেশ্যে দেয় পারি।
     পুলিশ তাদের পথেই ধরে,
     বেজায় মারে লাঠি।
     বিলেতে যারা থাকে সুখে,
     প্লেন যায় তাদের আনতে তড়িঘড়ি।
     চালক মোদের শ্রমিকের জন্য,
     জুটেনা একটি চার চাকার লরি।
     চিরদিন তারা নিঃস্বার্থ ভাবে,
     আহার দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে সৃষ্টি।
     বিপদ মাঝে জুটছে তাদের,
     অবহেলা,লাঞ্ছনা,সমাজের ভ্রুকুটি।
     কেউ বা যদি তাদের কথা ভেবে,
     সরকারি ত্রানতহবিলে করে দান।
     শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাতে,
     সেই দানের হয় যে পরিত্রাণ।
     আমরা উন্নত মানব জাতি,
     তাদের দেখে করি ছি ছি ।
     ভেবে কি একবারও দেখি?
     থেমে যায় ওরা যদি,
     পারবে চলতে এক দিনও কি?
     ভেঙে পড়বে জয় স্তম্ভ,
     খিদের জ্বালায় গাদা গাদা টাকা দেখে,
     বলবে এগুলোই কি রুটি?
             

----------------------------------------------------------------l

বীর শহীদদের মা
             

যেদিন তুই জন্মেছিলি,
নিঃস্বের এই ছোট্ট কুটির কোণে।
রুপোলি জ্যোৎস্নায় ভরিয়ে তুলেছিলি,
আমার শূন্য হৃদয়।
স্বপ্নে ভেসেছিলাম,আনন্দের রোশনাই।
বুকে আগলে রেখেছিলাম তোকে,
শত বেদনার মাঝে ,তোর হাসি মুখ,
আমাকে আনন্দের স্রোতে ভাসাত।
স্নান করতে,খেতে,ঘুমোতে,ঘুমিয়ে উঠতে,
একটু দেরি হলে আমি বক্তাম,তার পর-
আমি কতই না কষ্ট পেতাম।
কোথাও গেলে তুই আমাকে বলতি, মা আসছি,
সেদিনও তুই বলেছিলি,
যেদিন প্রথম তুই কাশ্মীর উপত্যকায় গেলি।
নাড়ু,রুটি,নিয়ে যাবো বলেছিলি,
তৈরি করেও ছিলাম,দিতে ভুলে গিয়েছিলাম,
পেছন থেকে ডাকিনি অমঙ্গল হবে বলে।
তোর পথ চেয়ে বসেছিলাম,
আবার কখন ফিরবি বলে।
একবারও ভাবতেও পারিনি,
মাতৃ ভূমিকে রক্ষা করতে গিয়ে,
গর্ভধারিনী মায়ের কোল শূন্য করে,
নিঝুম দিনে বীর শহীদদের বেসে,
কফিন বন্দি হয়ে আসবি!
তুই বলটিনা,
মা আমাকে সকলে চিনবে!
আজ তোর সব ইচ্ছা পূর্ন হয়েছে!
তোকে বীর শহীদ বলে ডাকছে,
মৌন মিছিল করছে,
আমি তোর গর্ভধারিনী মা হয়ে,
কি করে সহ্য করি বল!
দু-বছর আগে তোর বাবাকে হারিয়েছি,
আজ তোকে হারালাম।
তুই আমাকে দেখবি তো?
যেভাবে কাশ্মীর থেকে,
মাতৃ ভূমিকে দেখতি ।
এখন আকাশ থেকে আমাকে!!

--------------------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment