Monday, 22 November 2021

পুরুষ - আশুতোষ শী




ঈশ্বরে সৃজিলেন জীব ,
                        বিধির  বিধান,
বহু  শাস্ত্রে  রহিয়াছে
                        প্রকৃষ্ট  প্রমাণ ।
সৃষ্টিকর্তা  রচিলেন
                        জীব গতিধারা ,
কভু  না  হবে  রুদ্ধ 
                জীবের দুর্নিবার ধারা ।
স্মরনাতীত কাল হতে 
                        জীবের দুই বিভাগ ,
এক ভাগে পুরুষ জাতি
                          নারী  আর  ভাগ ।
পুরুষ  সুঠাম  দেহী
                             শক্তিশালী  হয় ,
নারী  দেহ  কমনীয়
                         ততটা  দৃঢ়া  নয় ।
জীব দেহ ধারণের জন্য
                           খাদ্য সংগ্রহেতে ,
পুরুষই অগ্রনী হয়,
                            নিয়ম  জগতে ।
পুরুষই জগতে শ্রেষ্ঠ
                            কর্মের  বিচারে ,
পুরুষ-চরিত্রেই তার তরে
                             সেই গুন ধরে ।
জীবকূলের  যাহাতে
                              বিনাশ না হয় ,
বংশ রক্ষার দায়িত্ব 
                             পুরুষে  বর্তায় ।
দৈহিক দৃঢ়তায় মরদ
                              সব জীবে আছে,
নারী তাই অবলা মানি
                          বেটাছেলের কাছে ।
সমাজেতে  নরগনের
                            যতেক  অবদান ,
রমনীর  না হয় কভু
                              তাহার  সমান ।
জীবন সমরে কর্ম 
                        যাহা পুরুষেই পারে,
বিপদে আপদে সে তো
                         নিয়োজে নিজেরে ।
উপার্জন কালে পুরুষের
                             ভূমিকা  অগ্রনী ,
সামাজিক শৃঙ্খলায় জায়া
                               হয় যে ঘরনী ।
সর্ব কর্ম অসম্ভব হয়
                         নারী-শক্তির পক্ষে,
পুরুষ তুলনায় নারী
                           না রহে সমকক্ষে ।
দোষে আর গুনে হয়
                                 মনুষ্য  চরিত্র ,
নারীও মুক্ত নহে এতে
                              বিদিত  সর্বত্র।
ক্ষেত্র বিশেষে মরদ
                             হয়  পরিত্রাতা ,
কখনোও বা শত্রু হয়
                         "সহোদর  ভ্রাতা ।
কখনো বা নারী হয়
                          লাঞ্ছনার শিকার ,
যদি কভু হয় পুরুষের
                           বুদ্ধির  বিকার ।
যুগে যুগে পুরুষ কর্তৃক
                               দমনোৎপীড়ন ,
ললনা গন নীরব- কন্ঠে
                          সয়েছে  আজীবন ।
হয়তো বা  নরগনই শ্রেষ্ঠ
                             দেহ- আকৃতিতে ,
তবু  বামার গুন বার্তা
                             না পারি বর্ণিতে ।
রমণীরা "মা" না হলে যাবে
                                সৃষ্টি  রসাতলে ,
জগৎ অচল হবে দুই- এ
                              সমান না হলে ।
সংক্ষেপেতে মর্দের
                             দিলাম যে বর্ননা ,
মহিলারা আমার 'পরে
                        ক্রোধিতা হয়ো না ।
কিছু মর্দা নেশা করে
                        হয় যে বেসামাল ,
মানবী তখন বহু কষ্টে
                           ধরে ঘরের হাল ।
মানবী কে অবজ্ঞা জ্ঞানে
                            না করো দর্শন,
তারাও করে দক্ষ হস্তে
                             দেশের শাসন ।
সংসারেতে  নারী- পুরুষ
                        দুয়েরই আবশ্যক ,
বাঁচার  জন্য  তারা
              একে- অন্যের পরিপুরক 

পুরুষ আমি -- ডাঃ অসিত কুমার সরকার


পুরুষদের নাকি কষ্ট হয় না, 
হওয়ার তো কথাও নয়, বাস্তবতায় তারা বাঁচতে জানে, 
কান্না লুকিয়ে পুরোদমে হাঁসতে জানে। 
পুরুষদের আবার মন ভাঙা কি, 
পাজর ভাঙার কষ্ট কেবল হাড় গুলোই জানে 
চামড়ার বাহিরে আর খতর দরকার কি??? 
পুরুষদের তো মন নেই, 
প্রেম নিয়ে খেলেই কেবল 
অথচ দায়িত্বের বেড়াজালে ডিঙিয়ে, 
হয়না পাওয়া ভালোবাসা যাযাবর।। 
পুরুষ মানেই তো প্লেবয়, 
পুরোদমে ভালোবেসে অযুহাত  দিয়ে ছেড়ে যায় কেবল, 
অথচ তাদের কষ্টটাও মেয়েদের মতই প্রখর। 
পুরুষ মানেই শক্ত সামর্থ 
খুশিতে চকচক করা চোখ থাকলেও 
কান্নায় জ্বল জ্বল করা চোখ থাকতে নেই 
ও হ্যা পুরুষদের তো আবার কাঁদতে ও নেই। 
কেননা পুরুষদের তো ইনকাম, দায়িত্ব আর নিজের ছোট বড় শখ চাওয়া পাওয়া ইচ্ছের বিসর্জনেই বড় হতে হয়, তাদের আবার কান্না কি,
তারা তো পাষাণ। 
কেননা এই জগৎ এ বিসর্জন মানেই নারী, 
পুরুষের আর কি হলেই হলো 
কোন এক সুন্দরী রমনী আর বিলাসিতায় মোড়ানো বিশাল একটা বাড়ি।। 
তবুও কখনো কখনো পুরুষেরাও অবহেলিত, প্রতারিত, এমনকি দিনশেষে তারাও বহন করে আকাশ সমান অসহায়ত্ব।।।।।।।।।।

ভুল -- রিয়া মিত্র


মঞ্চে মেয়ের বক্তৃতা শুনে কমলেন্দু বাবুর চোখে জল চলে এলো। ছোট থেকেই মেয়েটা বড় লিখতে ভালোবাসত। একদম ওর মায়ের মতো লেখার প্রতি ভালোবাসা ছিল মেয়েটার।
কমলেন্দু বাবুর স্ত্রী অনিতা দেবীও লেখালেখি, সাহিত্য-চর্চা করতে খুব ভালোবাসতেন। যে'দিন অনিতা দেবীর এই সখের কথা কমলেন্দু বাবুর মা আর দুই দিদির কানে যায়, কি অশান্তিটাই না তারা করেছিলেন! অনিতা দেবীর লেখার সাধের লাল ডায়রিটা তারা আগুনেই পুড়িয়ে দিলেন। মেয়েমানুষের আবার পড়াশোনা, লেখালেখি কীসের?! যতসব আদিখ্যেতা, সংসারের কাজ না করে পটের বিবি সেজে বসে থাকার ফন্দি। সংসারের যাবতীয় কাজ চাপিয়ে দিতে লাগলেন অনিতা দেবীর ওপর, যাতে দিনের শেষে ক্লান্ত, অবসন্ন শরীরে তার সাহিত্য-চর্চার ভুত ঘাড় থেকে নেমে যায় তবু অনিতা দেবী দিনান্তে গোপনে তার প্রাণের ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন। এ'জন্য স্বামীর কাছেও কম গঞ্জনা সহ্য করতে হয় নি তাকে! সে'দিন মাতৃভক্ত কমলেন্দু বাবুও বৌকে অপমান করতে ছাড়েন নি। বড় ভুল হয়ে গেছিল তার! 
অন্নপ্রাশনে মেয়ে যখন সব কিছু ছেড়ে বই আর পেন তুলে নিল, অনিতা দেবীর বোধহয় বুক কেঁপে উঠেছিল, তার মতোই মেয়েরও পরিণতি হবে না তো?! এরপর সব চোখরাঙানি অগ্ৰাহ্য করে মেয়ের লেখালেখি আপন ছন্দে এগিয়ে গেছে। অনিতা দেবী নিজের অপূর্ণ সাধ পূর্ণ করতেন মেয়ের হাত ধরে। লুকিয়ে মেয়েকে লেখালেখিতে উৎসাহ দিতেন। প্রাণাধিক প্রিয় মেয়েকে কোনো কিছুতে বাধা দেন নি কমলেন্দু বাবু। নিজের স্ত্রীকেও যদি এই স্বাধীনতা দিতে পারতেন, হয়তো আরেকটি কুঁড়ি ফুল হয়ে ফুটতে পারত। অনুতপ্ত কমলেন্দু বাবুর আফসোসে মনটা ভরে উঠলো। আজ অনিতা দেবী বেঁচে থাকলে মেয়ের সাফল্যে খুব খুশি হতেন, তার অপূর্ণ ইচ্ছা পূর্ণ হতো।
মঞ্চে তখন 'রবীন্দ্র পুরস্কার' প্রাপ্ত স্বর্ণালী দেবী ডেকে নিয়েছেন তার বাবাকে, "যে মানুষটা না থাকলে লেখার অনুপ্রেরণা পেতাম না, তিনি আমার বাবা, তাকে মঞ্চে আসতে অনুরোধ করছি।"  ঝাপসা চোখে মঞ্চে উঠে এলেন কমলেন্দু বাবু। স্বর্ণালী দেবী বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বললেন, "ভাগ্যিস্, মায়ের মতো বিদুষী নারীর চলার পথে তোমরা এত বাধা দিয়েছিলে, তাই তো আমার জেদটা দ্বিগুণ বেড়ে গেছিল। মা কিন্তু বীরাঙ্গনার মতো আমাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছিল, কখনো আমাকে হেরে যেতে দেয় নি।" অনুকম্পিত, লজ্জিত কমলেন্দু বাবু মোখ নীচু করে নিলেন, ঠিকই তো, সত্যিকারের পুরুষ মানুষ কখনো নারীর অধিকারের পথে, অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, বরং নারীর হাত ধরে একই সঙ্গে পথ পাড়ি দেয়। সেই রকম পুরুষ, সেই রকম স্বামী আর হতে পারল কোথায় সে?! মেয়েকে জড়িয়ে ধরে চোখের জলে নিজের ভুল সংশোধন করলেন তিনি।

*রাবণ* ✒️পরেশ চন্দ্র দাস



অসৎ আত্মাকে রিভাইভ করে,পাপ নগরীর
সেলিব্রিটি ।
লালসার মোহে কৈকেশী গর্ভে জন্ম আমার—'নাম রাবণ' ।
বর্ণসংকরের জিনেটিক রিলেশন ঘটিয়ে ,
এ যুগের মহান প্রবাদ পুরুষ *আমি*।
আমার কর্মের ছাপ সবার কলিজার ভিতর সুপ্ত
আকারে প্রবেশের জাতিস্মর ।
মনগড়া কথার জালে ছেঁকে তুলেছি প্রাণবন্ত,
নটীনারীর আশ্চর্য কাহিনী।
বর্বরতার 'মোখটা, বিক্রি হচ্ছে, ফেসবুক স্ট্যাটাসের রসময় মনোহরা
ইন্দ্রজালের ম্যাসেঞ্জারে ।
ভদ্রতার প্রাচীর টপকে পার হচ্ছে আমার
নীলরাতের পর্ণগ্রাফি । 
সতীত্ব এখন পণ্যজাত ,পটেশ্বরী ফ্লেক্সে বিজ্ঞাপন , খদ্দের আমি
দশমহাবিদ্যাধারী রাবণ ।
নারী দিয়ে নারী ধরে নারী পাচার চক্রে আমি
গুরমিতরামরহিম ।
আমার চিতাভষ্মে যে নেটওয়ার্ক ছড়ানো আছে,তার নতুন নামকরণ
প্যানডেমিক । 
'রাবণ আছে থাকবে পুরুষসত্বার
রেনেসাঁসে ।।
Iiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiii

পুরুষ" -- দিলীপ কংস বণিক।


হে পুরুষ, তুমি কাম বীজ স্বরূপ--
প্রকাশিবে সত্য, করিবে সুন্দরের সৃজন।
আপনারে ভুলি, নিলে হাতে তুলি আপনার ধ্বংস করণ।।
কোন মোহ তে ভুলি আপন ধর্ম হয়ে উন্মত্ত কর সৃষ্টি অনাচার
হে পুরুষ আপনারে চেনো আপনি স্মরণ করো আপন অঙ্গীকার।
সত্য সুন্দরের পূজারী তুমি তবে কেন এহেন কদর্য রূপ তোমার
কেন এমন রূঢ়তা পৈচাশিক ভ্রষ্টাচার।।
হে পুরুষ তব তেজময় দীপ্তিতে অসুর নাশিতে সৃষ্টি করিলে দশভূজা--
পুরুষ! কেন আজি রক্ষিতে নারে ভগ্নি-আত্মজা?
ধিক্ ধিক্ শত ধিক্ তব পৌরুষেরে।
জাগ্রত করো পৌরুষত্ব, আত্মগুণ হোক মহত্ত্ব আপনি চিনো আপনারে,
তুমি সৃষ্টির আধার, ভোলো বারবার আপনি আপন সত্তা।। 
তুমি যে মহৎ দেখিবে জগৎ সৃষ্টি করো আপনারে।
পুরুষ তুমি বর্ধিষ্ণু, সত্তা কেন ক্ষয়িষ্ণু? কোথা তোমা সহিষ্ণু?
পাতিয়া দিয়াছ আপনি বক্ষ রক্ষিতে মহান সৃষ্টি--
জাগো জাগো হে পুরুষ,
হে সত্য সুন্দরের পূজারী।
দেবতা ও যে যাচে,            জ্ঞান-পুরুষ-ত্রিপুরারি।।