Sunday, 25 April 2021

ত্যাগ- অজিত গঙ্গোপাধ্যায়



বছর পঁচিশের সুদর্শন যুবক এই   পার্থিব , হাইস্কুলের শিক্ষক । ছাত্র ছাত্রীদের নয়নের মণি  । জটিল অঙ্ক সরলভাবে সমাধান করে দেওয়ার জন্য ছাত্র ছাত্রীদের কাছে পার্থিব স্যার শ্রদ্ধার আসনে বিরাজমান । পিথাগোরাসের উপপাদ্যই হোক বা নিউটনের সুত্র – সবক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ পার্থিবের । 
           
              বি এসসি পড়তে পড়তেই  সহপাঠী বান্ধবী তিথির প্রেম নিবেদনে সাড়া দিয়ে মনপ্রাণ সঁপে দিয়েছিল পার্থিব । যে প্রেম পবিত্র সেখানে প্রশ্ন কিসের ? তাই তিথির প্রেমের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে জীবনসাথী বেছে নিতেও দ্বিধা করেনি পার্থিব ।  কিন্তু ছায়া , কায়া আর মায়া তো একসময় সকলকেই ত্যাগ করে । পার্থিবের জীবনে স্বপ্নের পরী হয়ে এসেছিল তিথি , আবার হঠাৎ পুরাতন প্রেমিকের হাত ধরে পার্থিবকে কিচ্ছুটি না বলে বিদেশে পাড়ি দিয়েছে ।
  
            পার্থিবের জীবনে ভয়ংকর ভূমিকম্প এসে সবকিছুই তছনছ করে দিয়েছে ।  পার্থিব এখন পাগল হয়ে গেছে । পথে পথে খুঁজে বেড়ায় তিথিকে । সকলকেই শুধোয় , তিথিকে দেখেছো ? মাঝে মাঝেই গান গায় “ ছেড়ে দিলে সোনার গৌর আরতো পাবো না , তিথিকে ছেড়ে দেবো না “ ।                                                

                   এই দৃশ্য দেখে অনেকেই হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠে ।
----------------------------------------------------

        Voice Literary Blog 

Editor : Bristi Kangsabanik 

Sub-Editor : Priyatama Ghosh 

Affiliated by : Voice Literary Cultural Organization

উপলব্ধি - পংকজ সরকার




     'শুভ জন্মদিন দাদুভাই...'-সরলা দেবী রিওকে আশীর্বাদ করলেন এভাবেই।রুচিরার আশঙ্কাই সত্যি হল।বিশিষ্ট স্যার-ম্যামদের সামনে ঠাকুমা বাংলায় আশীর্বাদ করে ভৌমিক পরিবারের প্রেস্টিজ একেবারে পাঙচার করে দিলেন।বউমা ইংলিশে কথা-কৌশল সব শিখিয়ে দিয়েছিলেন,কিন্তু শুনলেতো তার কথা!সুমিত-রুচিরার একমাত্র পুত্র রিও 'ঊষা মার্টিন' স্কুলে পড়ে।ছেলের মাথায় হাত দিয়ে রুচিরা ইংলিশে আশীর্বাদ করে চলেছেন।সেলফোনটা বেজে উঠল হঠাত্।প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ছেলে তার প্রথম হয়েছে।11 ডিসেম্বর স্কুলের সংবর্ধনাসভায় বাবা-মাকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ করে প্রিন্সিপাল স্যারের এই ফোন।
         অবশেষে এল সেই শুভক্ষন।প্রিন্সিপাল ঘোষণা করলেন-আমাদের গর্ব রিও ইংলিশ মিডিয়মে পড়েও 'শিক্ষায় মাতৃভাষার গুরুত্ব' বিষয়ক সর্বভারতীয় বাংলা প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে।চারিদিক করতালিতে মুখরিত হল।ঠাকুমা রাত জেগে কিভাবে বাবা-মার অগোচরে তাকে বাংলা শিখিয়েছেন,মঞ্চে দাঁড়িয়ে রিও সেই কাহিনীই শোনাল।ঘোর কাটলে রুচিরা সুমিতাকে শুধোয়-'মা যে লেখাপড়া জানে কোনদিন বলনিতো?
মা বাংলায় লেটারসহ স্টারমার্কস   নিয়ে মাধ্যমিক,বাবা কথাটা বলেছিল কোনওএকদিন। আফশোষের সুরে শুধু বলল-'ছোট থেকেই বাবা আমাকে হোস্টেলে রেখে পড়িযেছেন;তাই হয়তো মায়ের ট্যালেন্ট বিশেষ উপলব্ধি করতে পারিনি।'
----------------------------------------------------

        Voice Literary Blog 

Editor : Bristi Kangsabanik 

Sub-Editor : Priyatama Ghosh 

Affiliated by : Voice Literary Cultural Organization

অগ্নিশিখা - ক্ষমা কংসবণিক



           কলেজের দেওয়াল গুলি আজ কত রঙিন হয়ে উঠেছে | রংবেরঙের রঙিন ফুলে সাজানো আজ | পোড়ো অশ্বত্থ গাছটা আজ আর নেই |যেখানে অগ্নিশিখার নাম খোদাই করা ছিল | কলেজের মধ্যে সবথেকে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ছিল অগ্নি  আর শিখা |  নামের  মিলন ঘটিয়ে, স্যারেরা মজা করে ডাকতেন  অগ্নিশিখা |দুজনের মধ্যেই ছিলো স্বর্গীয় স্বপ্ন | হ্যাঁ, তবে শুধু পড়াশোনা নয়, জীবনের বাস্তব রূপকে আলিঙ্গন করে, একসাথে জীবনের চড়াই-উৎরাই পাড়ি দেবার স্বপ্ন তারা দেখতো | কিন্তু প্রকাশ্যে শুধুই  বন্ধু | হয়তো সেই অশ্বত্থ গাছটিও ছিল তাদের প্রেমের সাক্ষী | তবে ওদের জুটিটা ছিল কিন্তু বেশ |  দরিদ্র বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে অগ্নি | দরিদ্র হলেও খুব আদরের | কিন্তু শিখার মা-বাবা ছোটবেলায় শিখা কে ছেড়ে পরলোকে পাড়ি দেন | ছোট থেকেই মামা বাড়িতে মানুষ | শিখার তিন মামা ছিলেন স্বনামধন্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন | শুধু স্বনামধন্য ব্যবসায়ী নয় অহংকারীতে পরিপূর্ণ | বন্ধুদের মুখে শুনেছি, অগ্নি, শিখার বন্ধুত্বের কথা তার মামা  যে দিন জানতে পেরেছিলো, তারপর থেকে অগ্নিকে আর কখনো কেউ দেখেনি | শিখারও কোন খবর নেই | অগ্নিশিখা নিভে গেলেও, তাদের প্রেমের কাহিনী চির অমর |

----------------------------------------------------

        Voice Literary Blog 

Editor : Bristi Kangsabanik 

Sub-Editor : Priyatama Ghosh 

Affiliated by : Voice Literary Cultural Organization