Tuesday, 7 April 2020

কবিতা - আমি লিখি

"আমি লিখি" 
        --বিজয় সরকার 

আমি লিখি বিশ্ব মানবের কথা 
জীবের কল্যাণে যারা জাগ্রত প্রহরা।
আমি।লিখি দীন-দুঃখী মানুষের কথা
কালের গতিতে অবহেলায় আজও যারা। 
আমি লিখি ধনীদের কথা 
মুক্ত হস্তে যারা দান করে সদা।  
আমি লিখি বাংলার বাঙালির কথা 
বিশ্ব আঙিনায় শ্রেষ্ঠ যারা। 
আমি লিখি চিকিৎসক-সেবিকার কথা 
দিবারাত্রি করে যারা মানবের সেবা।
আমি লিখি শহীদের বীরত্বের কথা
জীবন দিয়ে করে যারা দেশ রক্ষা।  
আমি লিখি অন্ধ পথিকের কথা 
আধার চোখে দেখে যারা আলোর দিশা।
আমি।লিখি তমসা রজনীর কথা 
পূর্ণিমার জ্যোৎস্না ঘোচাবে সে মলিনতা। 
আমি।লিখি শিক্ষক-শিক্ষিকার কথা 
যুব সমাজ গঠনে কান্ডারী যারা।  
আমি লিখি কবি-লেখকের কথা 
সত্যের পথে কলম ধরে যারা। 
আমি লিখি সভ্যতার উথ্যান-পতনের কথা 
একদিন ইতিহাস হবে তা পড়বে পাঠক যারা। 

copyrights@ Bijoy Sarkar 
Date: 07-04-2020
Raiganj, Uttar Dinajpur, West Bengal, India 
 ----------------------------------

------------------------------------
     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

Sunday, 5 April 2020

কবিতা - আমি সেই নারী

"আমি সেই নারী" 
       --বৃষ্টি কংসবনিক 

আমি সেই নারী.. 
যাকে ভ্রূণাবস্থাতে আজও হত্যা করা হয় |
আমিই সেই নারী.. 
যাকে আজও জন্মাবার পর আবর্জনায় ছুড়ে ফেলা হয় |
আমি সেই নারী.. 
যাকে আজও রাতের আঁধারে চিল-শকুনের শিকার হয়ে আগুনে পুড়তে হয় |
 আমিই সেই নারী.. 
যাকে আজও যৌতুক যাতনায় লাঞ্চিত হয়ে মরতে হয় |
হ্যাঁ আমিই সেই নারী.. 
যাকে সৃষ্টির শক্তি ধারণ করি হয়েও ঋতুকালে অশুচি হতে হয় |
হ্যাঁ আমি, আমিই সেই নারী.. 
যাকে নিয়ে আধুনিক সমাজে আজ নারী-পুরুষ সমন অধিকারের ধ্বনি তোলা হয় |
কিন্ত সেই আমি... 
এই একবিংশ শতাব্দীতেও পরাধীনতার গ্লানি  নিয়েই যার ক্ষয়|
আগেও সেই আমার... 
পুড়তে হতো সতীদাহের জ্বলন্ত চিতায়।  
আজও এই আমায়... 
জ্বলতে হয় নানা উছিলায়, 
হৃদয় দগ্ধ যন্ত্রনায় ||

copyrights@ B Kangsabanik 
 -----------------------------------
শ্রীমতি বৃষ্টি কংসবনিক 
কবি ও লেখিকা 
দত্ত পুকুর, উত্তর ২৪ পরগনা , পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ 
------------------------------------

     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

গল্প - সন্ধ্যার আলো

"সন্ধ্যার আলো"
--পৃথা ব্যানার্জী 
***************
রিনি ম্যসেজ টা পড়ে চমকে উঠলো। এ কি কথা লিখেছে! 
---"কি হলো, উত্তর দেবেনা"? টুং করে ম্যাসেজ এলো।
রিনি ভেবে পাচ্ছেনা কি লিখবে। কথা বলতে ভালো লাগে তাই কথা বলেছে। কিন্তু তাই বলে!

সুরজিৎ চ্যাটার্জীর সাথে আলাপ আজ পনেরো দিন। এক সন্ধ্যায় ফেসবুকের পাতায় বন্ধুত্বের আবেদন নিয়ে সুরজিৎ এসেছিল। রিনির মধ্যবয়সী নিঃসঙ্গ মন সাড়া দিয়েছিল সুরজিতের ডাকে।
---"ম্যাডাম কি এখনও ভাবছেন"!
আবার একটা ম্যাসেজ।  
কি লিখবে রিনি ভেবে পাচ্ছেনা। এক অদ্ভুত আকর্ষণ অনুভব করে রিনি সুরজিতের প্রতি। ভীষন ইচ্ছে করে কথা বলতে। কথা বলার কায়দাও খুব সুন্দর ভদ্রলোকের। নিজের জীবনে তো কখনও ভালোবাসার স্বাদ পায়নি রিনি। কষ্ট অপমান লাঞ্ছনা নিয়েই তার জীবন।


আবার একটা ম্যাসেজ!
---"আমরা কি বন্ধু হইনি এখনও!  যদি হিসেবে ভুল না করে থাকি তাহলে আমাদের বন্ধুত্বের বয়স পুরো পনেরো দিন।
আমার মনে হয় একটা বন্ধুত্ব পনেরো দিনে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যায়। তখন তার ভালোলাগার কথা সে বলতে পারে। আমিও তাই বলেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল করে ফেলেছি"।
রিনি তাড়াতাড়ি টাইপ করলো,---"না না ভুল কেন"!
---"ভুল যদি নয় তাহলে উত্তর পাচ্ছি না কেন? বুঝেছি, টাইপ করে কি আর এতো কথা হয়!
নম্বর টা দিয়ে রাখলাম। যদি তেমন অসুবিধে না থাকে তাহলে তোমার টা দাও"।
রিনি অত্যন্ত সাধারণ আর লাজুক মেয়ে। প্রথম জীবনে প্রেম করতে পারেনি। যখন রঙিন স্বপ্ন দেখার সময় তখন মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করেছে। আর এখন তো শুধু "দিন গত পাপ ক্ষয়"!
মনের কোনে একটু যেন সুরের ছোঁয়া লাগলো। মন বললো সেই জীবনটাই যে বৃথা যে জীবনে বসন্ত আসেনি। জীবনের খাতার খোলা পাতাগুলো হোক না একটু এলোমেলো। সাদা কালো পাতায় ছড়িয়ে পড়ুক লাল, হলুদ, সবুজের ছোঁয়া।
শেষ পর্যন্ত মনের কাছে হেরে গিয়ে নম্বরটা দিয়েই ফোন অফ করলো। 
          এই বয়সেও একরাশ লজ্জা রিনিকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরলো। তাহলে এই কি সেই প্রেম, সেই ভালোলাগা! যার স্বাদ সে পেলো জীবনের শেষপ্রান্তে এসে! 
গরীব স্কুল মাষ্টার বাবার খুবই সামান্য আয়ে তারা দুই ভাই বোন বড়ো হয়েছে। চাপা লাজুক স্বভাবের জন্য প্রেম পিরিত আর হয়ে ওঠেনি। কলেজে পড়া শেষ হবার আগেই বিয়ে দিয়ে বাবা মা নিজেদের দায় মুক্ত করে ফেলেছিলো। বিরাট অবস্থা না হলেও মোটামুটি স্বচ্ছল ছিলো সেই সংসারটা। কিন্তু ছিলোনা শান্তি। উঠতে বসতে গরীবের মেয়ে, ভিখিরির মেয়ে কথা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গিয়েছিল। তবুও সব সহ্য করে দিন চলছিলো। অসহ্য লাগলো তখন, যখন তার স্বামী গায়ে হাত তুলতে লাগলো।
দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করতে করতে যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলো রিনির তখন সে ঘুরে দাঁড়িয়ে ঠিক করলো বাঁচতে হলে মানুষের মতোই বাঁচবে। নাহলে মরবে।
সে বেড়িয়ে পড়েছিল রাস্তায় কোনোও উদ্দেশ্য না নিয়ে। 
----"ক্রিং --- ক্রীং ---"
অনেক পেছন থেকে রিনি ফিরে এলো ফোনের শব্দে। অচেনা নম্বর! 
---"হ্যালো,
---"এতোক্ষণ অপেক্ষা করে করে আমিই ফোন করলাম। রাগ হয়নি তো"!
---"না, রাগ করবো কেন"! কোনোমতে নিজেকে সামলিয়ে কথাগুলো বললো রিনি।
---"আমি সকালে একটা প্রশ্ন করেছিলাম। উত্তর পাইনি এখনও"।
---"আমরা দুজন মধ্য বয়স পেরিয়ে এসেছি অনেক দিন। ভালোলাগা ভালোবাসা এইগুলো তো ছেলেমানুষী। থাকনা এখন"।
---"ভুল, বয়েস হলেই বুঝি চশমা পড়ে গম্ভীর হয়ে থাকতে হবে! যে কটা দিন বাঁচবো আনন্দের সঙ্গে বাঁচবো।
রিনি তোমার মধ্যে একটা দুঃখের ভাব আছে সেটা বুঝেছি কিন্তু জানতে চাইনি। আজ বলবে"?
---"আমার জীবনে তেমন কিছুই নেই যা কাউকে বলা যায়! জিবনটা শুরু হতে গিয়েই হোঁচট খেয়ে থেমে গেছে"।
---"সেই হোঁচট খাওয়া পর্যন্তই বলো। তারপর আমি হাত ধরে নেবো। অবশ্যই যদি হাতটা বাড়াও"!
---"নির্ভরতার হাত সবাই ধরতে চায়, কেউ পায় কেউ পায়না"।
সুরজিৎ তাকে সময় দিয়েছিল ফেলে আসা সময়টাকে তার সামনে তুলে ধরতে।

          রিনি বাড়ি থেকে সেদিন বার হয়ে কোনোও চিন্তা না করেই শিয়ালদহ স্টেশনে এসে একটা দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে বসে পড়েছিলো। চেকার যখন টিকিট চাইলো তখন সে বুঝতে পারলো কি ভুল সে করেছে। তবে এইটুকু নিশ্চিন্ত যে চেকার ধরে নিয়ে গেলে থাকা খাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে আর চিন্তা থাকবেনা। 
রিনি যখন চেকারের সাথে যেতে তৈরি তখন সামনে বসা এক বয়স্কা মহিলা রিনিকে বললেন যে রিনি তাদের সঙ্গে যাবে।
---"আপনি আমার মতো একজন অচেনা মেয়েকে কেন নিয়ে যাবেন"! অবাক হয়ে রিনি বললো।
---"আমি মানুষ চিনি। আমার বাড়িতে অসহায় বুড়ো বুড়িদের রাখি। কিন্তু এখন একলা আর পারছিনা। তাই চাইছিলাম  একজন নির্ঝঞ্ঝাট কাউকে যে ওই অসহায় মানুষদের নিজের মনে করে ভালোবাসবে। তাই আমি চাই তুমি যাবে আমার সাথে"।
পাল্টে গেল রিনির জীবন। প্রায় তিরিশ বছর হতে চললো এই "আশীর্বাদ" ভবনে।  
এখন রিনি এই পরিবারের সর্বময়ী। তবে আগের মতোন আর কাজ করতে পারেনা। তাই দুজন মেয়ে আছে সকলের দেখাশোনা করার জন্য। 
অনেকটাই অবসর এখন আর সেই অবসর সময়টা নিজের মতো কাটাবে বলে ফেসবুকে ঢুকে পড়েছে। 
রিনি কথাগুলো সুরজিৎ কে বলে চুপ করলো।
---"রিনি আমি অনেকটাই এইরকম ধারনা করেছিলাম তোমার সম্বন্ধে। এইবার তো বলো কতখানি ভালোলাগা তোমার আমার সম্বন্ধে"।
---"একজন নিকট বন্ধুর প্রতি ভালোলাগা বা ভালোবাসা দুটো শব্দই আমার কাছে নতুন। জীবনে এই প্রথমবার শব্দ টা শুনলাম"।
---"পেছনের সব ব্যাথা ভুলে যাও । আজ থেকে আমি তোমার পাশে"।
সেদিনের পর থেকে রিনি অনেকটা সহজ হয়ে গেল সুরজিতের কাছে। সুরজিৎ তার ফাঁকা মনটাকে ভরিয়ে দিয়েছে।
        একদিন এক ভোরবেলায় একটা পাখির শিস রিনির ঘুম ভাঙিয়ে দিল। চোখটা খুলে দেখলো জানলায় বসে কি সুন্দর একটা হলুদ পাখি। খুশিতে ভরে উঠল রিনির মন।
---"দিয়ে গেনু বসন্তের এই গান খানি ----"
চোখ বন্ধ করে রিনি গাইতে লাগলো। এমন সময় টুং টাং করে ফোনটা -----
---"চোখ খুলেই তোমার কথা ---
---"কি কথা -- 
---"তোমার কথা মনে পড়লো। তাই তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। একটু বলো তো কোন রাস্তায় কিভাবে যাবো"?
একটু ইতস্তত করে রিনি ঠিকানা টা বললো। 
বিকেলের নরম রোদে যখন সবাই বাগানে ঘুরছে তখন এক ভদ্রলোক আশীর্বাদের গেট খুলে দাঁড়ালেন।
---"কাকিমা মনে হয় একজন সদস্য বাড়লো" রিনির পাশে দাঁড়ানো স্বপ্না আস্তে করে বললো।
রিনি এগিয়ে এসে বলল,
---"এসো আমাদের আশীর্বাদে"।
সুরজিৎ বললো,---"তুমি একদম অন্যরকম তোমার ছবি থেকে। ইউ হ্যাভ এ নাইস প্রিটি লুক। আচ্ছা আমাকে চিনলে কি করে? প্রোফাইল ছবিটা তো একটু অন্য রকম"। 

---"তোমার কথা বলার স্টাইল ছড়িয়ে আছে তোমার মুখে। তাই চিনতে অসুবিধে হয়নি"।

সুরজিৎ চারিদিকটা  ভালো করে দেখে নিয়ে বললো,
---"খুব সুন্দর শান্তিময় পরিবেশ। এই জন্যই আমাদের পুর্ব পুরুষরা বানপ্রস্থের পরামর্শ দিয়েছেন"
---"খুব একটা দুর নয়, তুমি আসলে ভালো লাগবে সকলের"।
---"আর তোমার"! খুব আস্তে ফিসফিস করে কথাগুলো বললো সুরজিৎ।
---"জীবনে নিজের করে কখনও কাউকে পাইনি। তুমি আমার প্রথম ভালোলাগা তাই তোমার আসা আমার কাছে খুব আনন্দের"।
---"তুমি আমার সন্ধ্যার আলো। জীবনের সন্ধ্যায় তোমাকে পেয়েছি"।
রিনি সুরজিৎ কে নিয়ে বাগানের দিকে যেতে যেতে বললো,---"এই সন্ধ্যের সময়টা একটু গান কবিতা গল্প হয়। আসলে একঘেয়েমি কাটানোর জন্য একটু মনোরঞ্জন"।

---"তাহলে আজকের অতিথি হিসেবে আমি প্রথম গাইবো। নাইবা হলো সুর তাল ছন্দের মিল।
---"এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু----
রিনি মনে মনে বললো,
---"সত্যিই আমি জড়িয়ে পড়েছি তোমার বন্ধনে"।

copyrights P Banarrje 
 -----------------------------------
শ্রীমতি পৃথা ব্যানার্জী 
কবি-লেখিকা ও আবৃত্তিকারব
দক্ষিন বারাসাত, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ  
-------------------------------------

     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

কবিতা - তুমি ছাড়া

"তুমি ছাড়া"
      --নূপুর আঢ‍্য


তুমি - আমার পান্তাভাতের সুমিষ্ট লবণ,
তুমি - আহারের পর তৃপ্ত ঢেকুর।
তুমি - শীতের সকালে একমুঠো রোদ্দুর
তুমি - তপ্ত দুপুরে একপশলা বৃষ্টি,
তুমি - হৃদয় জানালায় দখিনা হাওয়া।
তুমি - আঁধারের মাঝে জোনাকির আলো,
তুমি - জীবন সমুদ্রের সুদক্ষ নাবিক।
তুমি - মরুভূমির বুকে ঠাণ্ডা পানি,
তুমি - দূরের আকাশের রঙিন রামধনু,
তুমি - রাতের আকাশে উজ্জ্বল ধ্রুবতারা।
তুমি - উদাস মনের রাখালিয়া বাঁশি,
তুমি - সরোবরে বিকশিত শুভ্র শতদল,
তুমি - ছাড়া আমি জল হীন মত্স‍্য।
তোমায় ছাড়া আমি সদাই অসম্পূর্ণ,
নেই আমার একটুকুও আমার আমিত্ব।

copyrights@ N Adhya
------------------------------------
শ্রী নুপুর আঢ্য 
কবি ও লেখক 
পশ্চিম মেদিনিপু,  পশ্চিমব,  ভারতবর্ষ   
------------------------------------


     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------
 

এই বেশ ভালো আছি

"এই বেশ ভালো আছি"
    --সায়ন্তিকা ঘোষাল 

রক্তের কোষগুলো হঠাৎ করে জ্যান্ত হয়ে উঠেছে , বেশ নিজেকে বিপ্লবী - বিপ্লবী মনে হচ্ছে । এ সি চালিয়ে , গ্রীন টি খেতে খেতে পরকীয়া করছি ! সময় তো অঢেল ! স্নায়ুকোষটা ফেটে পড়ছে , আঙুলের ফাঁকের  বিষাক্ত মলিকিউল মিশে যাচ্ছে আমার শরীরের প্রত্যেকটা ইন্দ্রিয়তে ....তবুও মনে হয় আমি বেঁচে আছি ! 
আজকাল  বেঁচে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি ! কিন্তু কেন বেঁচে আছি ? ফ্যাকাসে জীবনে তো সব রঙই লাল! প্রেমিকের ঠোঁট থেকে খসে পড়া নক্ষত্র দিয়ে নিজের তৃষ্ণা মিটিয়ে নিচ্ছি ! বৃহন্নলা আমি ! পাশবিক অত্যাচারগুলো আজকাল আরাম দেয় ! বিপ্লবী করা পুরুষের কখনো আমি প্রেমিকা , কখনো গৃহিণী , কখনো শুধুই কাম্য আগুন ! 
তবুও বেঁচে আছি আমি ! আমাদের মতন নারীর তো বেঁচে থাকারই কথা ! দ্রৌপদী , সীতা , মীরা বাঈ , কাদম্বরী , নীরা কিম্বা হালফিলের আধুনিকা আ-মি বা আ-ম-রা ! উপত্যকার রুক্ষ নগ্নতা ছিনিয়ে নেয় আমাদের বস্ত্র , উর্বর জমির মালিকানা নিয়ে বচসা চলে ! তবুও আমি বৃষ্টি ভালোবাসি ! 
সোনাগাছি হোক কিম্বা সাউথ-সিটির বেডরুম --পুরুষ তুমিই মালিক ! জমির ওপর দিয়ে লাঙল চালাও , ধান ফলুক , নবান্ন উৎসব হোক ! আমিও সেদিন না হয় নতুন শাড়ী পড়ে পায়েস রাঁধবো ! 
মাঝেমাঝে মনে হয় বিপ্লব করবো ! স্লোগান লিখবো আমার নগ্ন শরীরে ! 
তখনই জানলার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় চাঁদ ---
মনে হয় বেশ আছি আমি ! 
হঠাৎ করেই একটা দমকা হাওয়া --গুমোট ঘরটাকে আরো বেশী করে নিঃসঙ্গ মনে হয় ! টেবিলের মোমবাতিটা নিভে যাবে হয়তো এবারে .....
ক্ষয়ে যাচ্ছে আশেপাশের সমস্ত আলোই ! 
একটা অস্বস্তি হচ্ছে শরীরে ! 
পুরুষ চাই আমারও --- তাহলে কিসের বিপ্লব ? 

ঘরে-বাইরের শেষ পৃষ্ঠার ওপরে চাপা দিয়ে রাখা মুঠোফোনে জ্বলে সবুজ আলো --ওপার থেকে ভেসে আসে আমার প্রেমিকের কণ্ঠ ........! 
তখন একবার জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে মনে মনে বলি ---"এই বেশ ভালো আছি !"

copyrights S Ghoshal 
--------------------------------------------------
শ্রীমতি সায়ন্তিকা ঘোষাল 
কবি ও লেখিকা 
হুগলি ,  পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষে  
--------------------------------------------------
     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------
 

কবিতা - ভালোবাসি

"ভালোবাসি" 
--দেবযানী ঘোষাল 

কত মিষ্টি সুন্দর একটা শব্দ ....
কত রকম ভাবে ব্যবহৃত ঐ নিদারুন চার অক্ষরের শব্দটা ....
কত নির্ভেজাল , অকপট , শৃঙ্খলায় বুনন....
অথচ অনুভূতীর কত ফারাক ....
একে অপরের কাছে আদান প্রদানের মুহুর্তে .....
কেউ বিশেষ কাউকে  বলতে গিয়ে সারাটা জীবন কাটিয়ে দেয় l প্রতিদান যদি অনুকূলে থাকে , সে তো স্বর্গ প্রাপ্তির সমান ....
আবার কেউ সহজেই এক আকাশ সম গভীরতা নিয়ে বারেবারে বলতে পারে , ভালোবাসি ....
পার্থিব অপার্থিব সব কিছুই প্রাণবন্ত হয় ঐ একটা মাত্র শব্দের অনুপ্রেরনায় !
কিন্তু শব্দটা নিছকই যদি কথার কথা হয় ? পরিণাম কত ভয়ঙ্কর রূপ নেয় , তা ইতিহাস জানে l 
কখনো পজেটিভ .....
কখনো বা নেগেটিভ .....
তবু এই অদ্ভুত কাঙাল শব্দটার জন্য জীবকূলের প্রতি নিয়ত বেঁচে থাকার অকৃত্রিম সংগ্রাম .....
এতটুকু অনিহা ভাসিয়ে দেয় চোখ .....
ঘুরে যায় জীবনের মোড়....
এতটুকু আবেগী সমর্থন প্লাবিত হয় শূন্য মরু 
মন l
অথচ স্বার্থপর এই শব্দটাই আবার শুকিয়ে দেয় অযাছিত বিশ্বাসী তীর তীর তীর করে বহমান নদীটাকে , অনবরত ঝরে পরা ঝরনাটাকে , 
ঘন বনানীকে করে তোলে ফাঁকা জমি .....
ভালোবাসার স্বার্থে ....
তবু এই কাঙাল শব্দটার নিস্তার নেই ....
আকাঙ্খার মরুদ্দানে কলঙ্ক সহনীয় প্রগাঢ় বৈচিত্রে সুন্দর.....
" ভালোবাসি "

copyrights@ D Ghoshal 
 -----------------------------------
শ্রীমতি দেবযানী ঘোষাল 
কবি ও লেখিকা 
------------------------------------
     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

কবিতা

"সত্যের ব্যঙ্গচিত্র" 
--প্রসেনজিৎ মাইতি
"""""""""""""""""""""""""""""
আমি আসছি জীর্ণ সমাজ থেকে
যেখানে সত্য ম‍ানুষের বিবেক ভাঙে।

আমার মধ্যেই তৈরি করি নতুন পরিকল্পনা।

আমার প্রয়োজন স্বপ্ন ত্যাগি বিবেক চেতনা 
তা আমার অবলম্বনের জন্য।

নিশ্চয় আমার আলো আর আমার অন্ধত্ব,
কাটছে মায়াহীন সমাজ কে।
আর আমার দুঃখিত প্রয়াস
মিথ্যায় আবৃত প্রকাশ্য সমাজ কে।
যা কোনো মতবাদ থেকে পালানোর।

তাই,আমি ফিরি একটা সুন্দর সমাজের খোঁজে,
বহু পরিচিত সেই মিথ্যের উষ্ণতা ,
সেই সমাজ যা আমার দৃষ্টিকে করেছে ভঙ্গুর 
বিবর্ন গোলাপী চেতনা দিয়ে।

আমি পালিয়েছি প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা থেকে,
ত্যাগ করেছি তাদের সুযোগ আর তাদের স্বপ্ন 
আর হঠাৎই নিজের অববয় দেখি দূষণ মুক্ত সমাজ
ভীষণ ভাবে বিকৃত। 

copyrights P Maity
 -----------------------------------

শ্রী প্রসেনজিৎ মাইতি 
কবি ও লেখক 
ভগবানপুর, পূর্ব মেদিনিপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ 
------------------------------------
     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------


গল্প

"তোমার চোখে আমার পৃথিবী" 
            --সিন্টু বর্মন

কি ভীষণ স্তব্ধ চারিপাশ। বরাবরের দুরন্তপনা ঘুড়িটাও কেমন দুরত্ব তারে আটকা। এ পৃথিবীর অসুখ করেছে খুব। এক চিলতে জানালার স্বাধীনতাও আজ ক্ষয়রোগে পঙ্গু। কতদিন হলো তোমারও কোনো খোঁজ পাইনা! আর অভিমান হয় না, জানো! রাগ তো কখনোই সেভাবে করিনি তোমার ওপর। শুধু আফসোস কিছু রয়ে গেছে বাকি!!

তোমার হাতের পাতায় ভীষণ অবাধ্য একখানা নদী আঁকতে চেয়েছিলাম। জোয়ার ভাঁটায় ব্যস্ত রাখতো তোমায়। তুমি উজানে পাল তুলে দিতে অবেলায়। আমি বলতাম, কত বেলা হলো! আমি ডুব দিয়ে আসি। তুমি ভাত বাড়ো। তুমি বলতে, এই তো, আর একটু! 

বুকপকেটে রেখে দিতে চেয়েছিলাম পকেট থেকে বের করে রাখা শুকনো গোলাপ। ভ্রূক্ষেপহীন তুমিও যাতে কোনোদিন বাড়ি ফিরতে দেরি হলে, নিয়মমাফিক মন কেমন'এর অজুহাত খুঁজে পাও! 
 
তোমার আঙুল জুড়ে রূপকথা সাজিয়ে কিংবা এলোমেলো ছড়িয়ে রাখার ভীষণ সাধ ছিল। আর তারপর, আমার শহরটা, চেনা গৃহকোণ, গল্পের বই, ব্যালকনিতে অ্যালোভেরা, অ্যাপ্লিক ওয়ার্কের টেবিল ক্লথটা... সবটুকু তোমার প্রিয় হতো খুব। 

একটা সাঁঝবাতি জ্বেলে রাখতাম তোমার কোলের কাছে রোজ। তুমি কবিতা পড়তে, আমি ছাদ থেকে নামিয়ে আনা জামা কাপড়ের ভাঁজে খুব যত্নে তুলে রাখতাম কিছু দামি অবসর। 

ঝগড়া হতো প্রায়ই। হতেই হতো। তা না হলে কিভাবে হঠাৎ বৃষ্টি নামতো রাতে? রাতভর বৃষ্টির পর শান্ত হতো পৃথিবী? ঘড়িতে অ্যালার্ম দিতে না তুমি। সব অভিমান ভুলে সময়ে আমিই ডেকে দিতাম ঠিক। 

রোদ নেমে গেলে গাছেদের ছায়া দীর্ঘতর হয়। মায়া জমে কোটরে কোটরে। এবার বাড়ি ফিরবার পালা। ফিরতেই হয়। তবু গাছের গায়ের গন্ধে ডুবে আরোগ্য ছুঁয়ে থাকতে চায় ভাঙাচোরা স্পর্শকাতর মন। 
আচ্ছা, যদি পাখি হয়ে যাই? আর তুমি গাছ? তবে নিশ্চয়ই বাড়ি ফিরতে হলেও গাছের কাছেই ফিরে ফিরে আসা যায়!!

Copyrights@ S Barman 
 
 -----------------------------------
স্রী সিন্টু বর্মন 
লেখক 
গঙ্গারামপুর, দক্ষিন দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ

------------------------------------
     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------