Sunday, 5 April 2020

গল্প

"তোমার চোখে আমার পৃথিবী" 
            --সিন্টু বর্মন

কি ভীষণ স্তব্ধ চারিপাশ। বরাবরের দুরন্তপনা ঘুড়িটাও কেমন দুরত্ব তারে আটকা। এ পৃথিবীর অসুখ করেছে খুব। এক চিলতে জানালার স্বাধীনতাও আজ ক্ষয়রোগে পঙ্গু। কতদিন হলো তোমারও কোনো খোঁজ পাইনা! আর অভিমান হয় না, জানো! রাগ তো কখনোই সেভাবে করিনি তোমার ওপর। শুধু আফসোস কিছু রয়ে গেছে বাকি!!

তোমার হাতের পাতায় ভীষণ অবাধ্য একখানা নদী আঁকতে চেয়েছিলাম। জোয়ার ভাঁটায় ব্যস্ত রাখতো তোমায়। তুমি উজানে পাল তুলে দিতে অবেলায়। আমি বলতাম, কত বেলা হলো! আমি ডুব দিয়ে আসি। তুমি ভাত বাড়ো। তুমি বলতে, এই তো, আর একটু! 

বুকপকেটে রেখে দিতে চেয়েছিলাম পকেট থেকে বের করে রাখা শুকনো গোলাপ। ভ্রূক্ষেপহীন তুমিও যাতে কোনোদিন বাড়ি ফিরতে দেরি হলে, নিয়মমাফিক মন কেমন'এর অজুহাত খুঁজে পাও! 
 
তোমার আঙুল জুড়ে রূপকথা সাজিয়ে কিংবা এলোমেলো ছড়িয়ে রাখার ভীষণ সাধ ছিল। আর তারপর, আমার শহরটা, চেনা গৃহকোণ, গল্পের বই, ব্যালকনিতে অ্যালোভেরা, অ্যাপ্লিক ওয়ার্কের টেবিল ক্লথটা... সবটুকু তোমার প্রিয় হতো খুব। 

একটা সাঁঝবাতি জ্বেলে রাখতাম তোমার কোলের কাছে রোজ। তুমি কবিতা পড়তে, আমি ছাদ থেকে নামিয়ে আনা জামা কাপড়ের ভাঁজে খুব যত্নে তুলে রাখতাম কিছু দামি অবসর। 

ঝগড়া হতো প্রায়ই। হতেই হতো। তা না হলে কিভাবে হঠাৎ বৃষ্টি নামতো রাতে? রাতভর বৃষ্টির পর শান্ত হতো পৃথিবী? ঘড়িতে অ্যালার্ম দিতে না তুমি। সব অভিমান ভুলে সময়ে আমিই ডেকে দিতাম ঠিক। 

রোদ নেমে গেলে গাছেদের ছায়া দীর্ঘতর হয়। মায়া জমে কোটরে কোটরে। এবার বাড়ি ফিরবার পালা। ফিরতেই হয়। তবু গাছের গায়ের গন্ধে ডুবে আরোগ্য ছুঁয়ে থাকতে চায় ভাঙাচোরা স্পর্শকাতর মন। 
আচ্ছা, যদি পাখি হয়ে যাই? আর তুমি গাছ? তবে নিশ্চয়ই বাড়ি ফিরতে হলেও গাছের কাছেই ফিরে ফিরে আসা যায়!!

Copyrights@ S Barman 
 
 -----------------------------------
স্রী সিন্টু বর্মন 
লেখক 
গঙ্গারামপুর, দক্ষিন দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ

------------------------------------
     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

No comments:

Post a Comment