Saturday, 16 May 2020

আলোর আল্পনা

 "আলোর আল্পনা" 
    --শিবানী মন্ডল 

অসহ্য যন্ত্রণার আগ্ৰাসনে
        জাগরুক প্রকৃতি,
রাত্রি যাপনের অধিকারে
দিগন্তহারা আকাশ।
প্রতিদিনের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে দৈহিক তুলাদণ্ড।
তবু ঝরে যাওয়া শরীর -
আঁশ ছড়াতে ছড়াতে সম্বিত ফিরে পায়,
রোদহীন জলঘরের ক্রান্তিকালে।
তখনো এক বুক শূণ্যতা নিয়ে
জীবন এঁকে চলে পোড়া মাটির টেরাকোটা...।
যেন ভগ্ন, সিক্ত পলকের
      শব্দহীন নৌকা নিরুদ্দেশ!
প্রতিবার পরিচয় হয় বাস্তবের হৃদয়ে
আর অসীম বন্ধন ডানা মেলে উড়ে যায়।
স্তব্ধতার আঙুলে লেগে থাকে
নীল বিষের অনাস্বাদিত আল্পনা।
নিয়ম ভাঙা আলোর দরজায় তখন -
            খিল অকৃপণ...!!!

Copyrights@ 
-----------------------------------------------------------
 
শ্রীমতি শিবানী মন্ডল 
কবি -লেখিকা 
 ঝাড়খন্ড, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice---------------

অঙ্কুরোদগম

"অঙ্কুরোদগম"
       --জয় চক্রবর্তী 

বেশ কিছুদিন আগের কথা...
মৃত্যুমুখী কুড়ি জন মানুষকে
একটা ঘরে রাখা হয়েছে। 
তাদের যত্ন সহকারে দেখাশোনা করা হচ্ছে।

প্রত্যেকে জানে তারা বেশিদিন বাঁচবে না...
কেউ ক্যান্সারে, কেউ কিডনি সমস্যায়,
কেউ কেউ দুরারোগ্য অসুখে। 

সেদিন ছিলো রবিবার...
একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো 
ওই কুড়িজন মানুষের জন্য, সেই ঘরের মধ্যে ।

এক এক করে জানতে চাওয়া হলো
তাদের জীবনের শেষ ইচ্ছা কি ?  

#প্রথমজন – বাড়ির সামনের ছোট্ট ফুল বাগানটায় গোলাপ  ফুল গুলো ফুটেছে দেখে যেতে চায়।

#দ্বিতীয়জন  নাতির অন্নপ্রাশন আর মাত্র পনেরো দিন বাকি । ওই দিনটা পর্যন্ত যেনো...

#তৃতীয়জন  জামাই এর সামনের মাসে চাকরিটা পাকা হওয়ার কথা...

অনুষ্ঠান শেষ। 
আয়োজকমন্ডলী ভেবে অবাক...
তারা এতক্ষন যাদের সাথে কথা বলছিলো,
তারা সবাই জানে তারা বাঁচবেনা। 
অথচ, 
সবার শেষ ইচ্ছার কথা থেকে এটা বোঝা গেলো...
কেউ মৃত্যুর কথা বলছে না। 
তাদের প্রত্যেকের ইচ্ছা 
একটা সুন্দর অঙ্কুরোদগমের ...

Copyrights@ J Chakraborty  

------------------------------------------------------------
শ্রী জয় চক্রবর্তী 
কবি-লেখক 
ডায়মন্ড হারবার, দঃ ২৪ পরগনা,  পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ 

---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice-----------------
             

আকাঙ্খায় পূর্ন প্রাপ্তি

"আকাঙ্খায় পূর্ন প্রাপ্তি" 
    ~ দেবযানী ঘোষাল


বহু দিনের সুপ্ত বাসনা ছিল গদাধর আর মা সারদার জন্মের পবিত্র স্থান অন্তত একবার যেন চাক্ষুস করি l সুযোগটা এসেই গেল সেদিন l আমাদের ওয়ার্ড থেকে প্রায় দুশো জন তিনটে ট্যুরিস্ট বাসে করে রওনা দিলাম কামারপুকুর আর জয়রামবাটির উদ্দেশ্যে l গেছিলাম আমি নীচের ঘরের জেঠিকে নিয়ে পূণ্যভূমি  দর্শন করতে l বয়ঃজ্যেষ্ঠ মানুষকে এসব জায়গায় নিয়ে যাওয়ায় একটা অন্য অনুভূতী হয় l বাস ছাড়লো ভোর সাড়ে পাঁচটায় l মিনিট দশেক পরেই ব্রেকফাস্ট প্যাকেটে করে l বান পাঁউরুটি , ডিম সেদ্ধ , অমৃত্তি আর হলদিরামের চানাচুড় ভরা প্যাকেট l সাথে মিনারেল ওয়াটার l প্রত্যেকের একটা করে বোতল l প্রায় ঘন্টা খানেক পর ওগুলো একটু একটু করে সাবার করতে লাগলাম l শহর পেরিয়ে গ্রাম , দুপাশে চাষের জমি পেরিয়ে যাচ্ছে সাই সাই করে l রোদের তাপও বাড়তে লাগলো l নিত্য কর্মরত মানুষের রোজনামচা আহরন করতে করতে অবশেষে পৌঁছালাম , আমার রুন আকাঙ্খিত গন্তব্যে l প্রথমেই জয়রামবাটি l বাস স্ট্যান্ড থেকে খানিকটা হেঁটে বিশালাকার ফটকে প্রবেশ করলাম l মায়ের বাড়ি l মায়ের জন্মস্থানের ওপরেই এখন পাকা মন্দির l সেখানে শ্বেত পাথরের অপরূপ শোভায় শ্রী শ্রী মা বিদ্যমান l মুখ , হাত , পা  ধুয়ে মন্দিরে ঢুকে বসলাম খানিকক্ষন প্রার্থনার জন্য l শ্বেত পাথরের মেঝেতে বসে মাতৃ মুর্তি দর্শনে প্রাণ জুরিয়ে গেল l কিছু পরে ঘুরে দেখলাম , মায়ের প্রকৃত কুটির l মাটির দেওয়াল , মেঝে আর খড়ের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট ছোট্ট ঘর নিয়ে তিন চারটে ঘর l কোনটা সারদার মা ( শ্যামাসুন্দরী ) য়ের ঘর , কোনটা অন্য ভাইদের l পশ্চিম দিকে কাকা জ্যাঠাদের ভিটে l মন্দির থেকে সারদামনির ঘর অবধি যেতে বিশালাকার ফুলের বাগান l রঙিন ফুলেদের বাহারী রং যেন প্রানবন্ত মায়ের স্নেহ স্পর্শে l এগারোটায় ভোগ বিতরন l মন্দিরের পাশেই লাইন দিতে হল প্রায় ঘন্টা খানেক l ঠিক এগারোটা l গেট খুললো l জুতো খুলে প্রবেশ lএকসাথে প্রায় পাঁচশো মানুষের ব্যবস্থা l লোহার বেঞ্চ , স্টিলের থালা গ্লাশ l অসম্ভব ভালো লাগলো ভোগ গ্রহনের প্রাথমিক পর্ব দেখে l প্রত্যেক সেবাইত প্রার্থনা সঙ্গীতের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে অন্ন নিবেদন l প্রত্যেক দর্শনার্থী দাঁড়িয়ে পরলো নিবেদনের জন্য l প্রত্যেকের খাবার কুপনে লেখা ছিল , আগে ঈশ্বরকে নিবেদন করে তারপর নিজে গ্রহন l মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আগুন গরম সাদা ভাত , ডাল , দুররকম তরকারি , চাটনি আর পায়েস l খাওয়া শেষে নিজের নিজের থালা একটা বিশালাকার জায়গায় রাখতে হয় l

হাত মুখ ধুয়ে একটু জল দিলাম মাথায় l একটু টিপ টাপ হয়ে , ফটোসেসন পর্ব l খানিক পরে মা জগদম্বা ( জগদ্ধাত্রী ) দর্শন l একটু হাঁটা পথ l পাড়ার মধ্যে l শুনেছি ঐ থানের মাটি মুখে দিয়ে নাকি সারদা মায়ের কঠিন অসুখ সেরেছিলো l একমুঠো মাটি  কাগজে টোপলা করে নিয়ে এলাম l একটু টুকটাক কেনাকাটি করে দুপুর আড়াইটে নাগাদ রওনা হলাম কামার পুকুরের উদ্দ্যেশ্যে l মিনিট কুড়ির মধ্যে পৌঁছালাম সেখানে  l সারে তিনটের সময় গেট খুললো l ঢুকেই বিশাল আম গাছ l ঠাকুরের নিজের হাতে লাগানো l একটু এগিয়ে ডানদিকে ঠাকুরের জন্ম ভিটে l ছোট ছোট খড়ের ছাউনি দেওয়া তিন চারটে মাটির ঘর , রঘুবীরের  ঘর l ঠিক যেখানে ঠাকুর জন্মেছিলেন , সেখানে মন্দির স্থাপন হয়েছেl শ্বেত পাথরের মুর্তিতে ঠাকুর বিরাজমান l বেশ ভিড় l একবার তো জেঠি হারিয়ে গেল l অনেক পরে খুঁজে পেলাম সেখানে , যেখানে ঠাকুরের জন্ম বৃত্যান্ত দেওয়ালে চিত্রায়িত হয়েছে l বড় ইচ্ছা ছিল , চিনু শ্যাকারির বাড়িটা একটু দর্শন করি l যিনিই একমাত্র প্রথম অনুধাবন করেছিলেন যে ঠাকুর আমার তোমার মত সাধারন নয় l ঈশ্বরের অবতার l কপালে নেই দেখা l সময় হয়েছে ফেরার l ওখানকার আঁখের রসের স্বাদ কখনো ভুলবো না l দুজনে তেষ্টা মেটালাম l আর নিয়ে এলাম কিলো খানেক ওখানকার শ্পেশাল সাদা বোঁদে l বাস ছাড়লো সন্ধ্যে সাড়ে ছটায় l সাতটা নাগাদ বাস থামিয়ে বিকেলের টিফিন l ঠোঙায় করে মুড়ি , আলুর চপ আর বেগুনী l তার সাথে চা l আবার বাস এগোতে লাগলো l বাড়ি পৌঁছালাম সাড়ে দশটা l শান্ত হল মন বহু আকাঙ্খিত তীর্থস্থান ভ্রমণ করে ll

Copyrights@ Debjani Ghoshal 
---------------------------------------------------------------

শ্রীমতি দেবযানী ঘোষাল 
কবি-লেখিকা 
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice-----------------


Sunday, 10 May 2020

কবিতা

 "বিচিত্র অঙ্গীকার"
         -- ক্ষমা কংসবনিক 

       নীল গগনে কালো মেঘের আনাগোনা, 
       হয়তো প্রেমের পূর্বাভাস |
     শরীরতো মনের অধীন, 
    চিন্তা সে তার নিত্যসঙ্গী ছোট্ট কুটির বাস |
       তাই বুঝি গর্জে  বিদ্রোহী আকাশ |
       শরীর গেলেও রুখবে প্রিয়ার সর্বনাশ |
        মরার আগে মরব না  হোক অঙ্গীকার|
      বেঁচে আছি তাই বাঁচবে  করো মনের সংস্কার |
     সর্বনাশা অভিলাষা মনের প্রাঙ্গণ, 
      অভিমানী সে, প্রেম পিপাসি, শোনে না  কারো বারণ |
       গর্জে ওঠা আকাশ ও বোঝে, 
 মন - সে কি চায়? 
       প্রেম মিলনে,  প্রিয়া বিহনে, মরণ ও ভীত প্রায় |


Copyrights@ Kshama Kangsabanik 
------------------------------------------------------------

শ্রীমতি ক্ষমা কংসবনিক 
কবি-লেখিকা
উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ 
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------


कविता

 ***ख़्याल***
     --शिप्रा देबनाथ

सायद तूमहे मेरि ख्याल भी नहीं आता होगा
मगर मुझे तुम्हारी यादें दिन भर सताया करते रहते हैं ,

ऐसा किया गुनाह कर दिया मैंने जो तुम मुज्ञको 
अपने यादों  से बाहर निकल दिया! 
मुझे भुलाकर तुम अगर हो खुश तो 
मुझे कोई ग़म नहीं कयु कि 
तुम्हारा खुशी हि मेरि  मक़सद थी हमेशा।

तुम खुश रहो जिन्दगी भर  येही दुआ रहेगी 
हरपल  मेरी खुदा से,  

मैं न आऊंगी राह में तुम्हारा  बस येहि चाहुंगी  
तुम्हें अपना मंजिल मिल जाए,

किया हुआ अगर तुम जो मुझे न मिले तो
जिसे मिले तुम वो तो होगी खुशनसीब बहुत,
उसकी दामन भर देना तुम  
दुनिया कि हर खुशी से कि
 वह  हो दुनिया के सबसे खुशनसीब।

Copyrights@ Shipra Debnath 
-----------------------------------------------------------
 
शिप्रा देबनाथ
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

অপরিচিত - মোহন হালদার



হঠাৎ দেখা তোমার সাথে
ঐ আম্রবৃক্ষের তলে
তখন তুমি আমার কাছে 
ছিলে অপরিচিত।

তোমায় দেখি  লুকিয়ে আমি
ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে
তখন তুমি বোঝো নি আমায়
তখনও অপরিচিত।

দিন চলে যায় 
রাত চলে যায়
খোঁজো নি তুমি আমায়
অপরিচিত তুমি তাই।

বার পনেরো তাকাই আমি
তোমার ভ্রুক্ষেপ নাই
কারণ আমি তোমার 
অপরিচিত তাই।

যখন তুমি অন্যের হলে
খুঁজলে না আমার হাত
কারণ আমি তোমার
অপরিচিত তাই।

Copyrights@ Mohan Haldar 
---------------------------------------------------------------
 
শ্রী মোহন হালদার 
লেখক ও গবেষক 
গাজল, মালদা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ 
 ---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

একটি রবীন্দ্র জয়ন্তী

"একটি রবীন্দ্র জয়ন্তী" 
    -- মানস চক্রবর্ত্তী 

গ্রামে প্রাইমারী স্কুলের স্যার বাবাকে বলেছিলেন , 
' পরেশ মেয়েটাকে গান শেখা , গানটা ওর আসে | ' 
বাবা কোনো উত্তর দেয়নি | শুধু 
হ্যাঁ সূচক ভাবে ঘাড়টা নেড়েছিল | 
স্যার দিদিকে কী বুঝিয়েছিল কে জানে ; 
দিদি প্রায়ই বায়না করত 
হারমোনিয়াম কিনে দেওয়ার জন্য 
বাবা হেঁসে বলতেন : কিনে দেবো রে মা | 
তারপর অনেকগুলি পঁচিশে বৈশাখ আর 
বাইশে শ্রাবণ পেরিয়ে গেল 
একদিন দিদি খুব গো ধরল |
কেন , কে জানে, বাবার মেজাজ সেদিন চড়ে গেল 
দিদির গালে সপাটে এক চড় ,
দিদিকে আর কোনোদিন বায়না করতে দেখিনি | 

আমার মা বরিশালের মেয়ে 
দাঙ্গার সময় উদ্বাস্তু হয়ে এদেশে এসেছিল 
কিছুই আনতে পারেনি , কেবল 
একখানা গানের খাতা ছাড়া | 
শুনেছি দাদু নাকি ভালো এসরাজ বাজাতেন 
রবীন্দ্রনাথের খুব ভক্ত ছিল 
এ সব অবশ্য মায়ের কাছেই শোনা 
মা যে গান জানতেন সেটা কোনোদিনও 
আমাদের কাছে বলেনি ,
দিদিই প্রথম আবিষ্কার করেছিল  | 
একদিন ঝড়ের রাতে মা গুনগুনিয়ে গেয়ে উঠেছিল 
' যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে ...' 
দিদি চেঁচিয়ে  উঠেছিল , ' মা তুমি গান জান ? ' 
মা দিদির মুখ চেপে ধরেছিল 
তোর বাবাকে বলিস না যেন , 
উনি রাগ করবেন | 
বাবা গান বাজনা খুব একটা পছন্দ করত না | 
গান যে বাবা কেন পছন্দ করত না 
তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা আমি আজও জানি না 
হয়তো  অভাবের জন্য স্বভাবটা একটু 
রঙচটা হয়েছিল ,
অবশ্য এই নিয়ে মায়ের কোনো অভিযোগ 
ছিল কিনা জানি না ,থাকলেও  
তা প্রকাশ করেনি | 

আমাদের বাড়িতে ঢাউস মার্কা  একটি 
রেড়িও ছিল ,ওটা ঠাকুরদার সম্পত্তি ,
উত্তরাধিকার সূত্রে বাবা পেয়েছিল | 
কারখানা থেকে ফিরে রাত আটটার  খবর শুনত 
মা দুপুরে শুনত মহিলা মহল , আর টুকুটাকি অনুষ্ঠান ;
সত্যি কথা বলতে কী রেড়িওর ওই ক'টা অনুষ্ঠাই
মায়ের বাঁচার অবলম্বন ছিল |  

আমাদের বাড়িতে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন হতো 
মূল উদ্যোক্তা মা 
বাবা কাজে বেরিয়ে গেলে 
মা কাপড় রাখার ট্যাঙ্ক থেকে গুরুদেবের ফটোটা বের করে 
একটা জলচৌকির উপর রাখত |
আমি ফুল নিয়ে আসতাম 
দিদি বাটত চন্দন 
মা সুন্দর করে গুরুদেবকে সাজাতেন , মালা পরাতেন | 
একটা আসনে বসে গাইতেন -
'হেঁ নূতন 
দেখা দিক আর-বার 
জন্মের প্রথম শুভক্ষণ | ' 
আমি আবৃত্তি করতাম | 
দিদি কিছু বলত না , মা বললেও না | 

সেবার পাড়াতে পঁচিশে বৈশাখের প্রস্তুতি চলছে 
অন্য বারের চাইতে জমকটা এবার একটু বেশি 
অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এবার নিমন্ত্রিত 
সুলেখা দির কাছে আমি ক'দিন 
বীরপুরুষ আবৃত্তিটা দেখে নিলাম | 
অনুষ্ঠানের দিন দিদি বাড়ির বাইরে বের হল না | 
সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি ফিরেই 
আমি চেঁচিয়ে শুরু করে দিলাম - 
' সন্ধ্যে হলো , সূর্য নামে পাটে 
এলেম যেন জোড়া দীঘির মাঠে | 
ধু ধু করে যেদিক পানে চাই  , 
কোনোখানে জনমানব নাই | 
তুমি যেন আপন মনে তাই  - ' 
' মা দিদি কোথায় গো ? ' 
উত্তরের অপেক্ষা না করে 
এক দৌড়ে দক্ষিণের বারান্দা ডিঙিয়ে 
বীরপুরুষের মতোই দিদির ঘরে | 
' তুই আজ গেলি না দিদি , 
দারুণ হলো | আমি বীরপুরুষ আবৃত্তি করলাম | 
সুলেখাদি অনেকবার তোর খোঁজ করেছিল | 
তুই কেন গেলি না দিদি ? 
গেলে খুব মজা হতো | 
বনানীদি মায়ের গানটা গাইল  - 
হে নূতন দেখা দিক আর-বার  | ' 
দিদি কোনো কথা বলছে না দেখে বললাম , 
' কিরে আমার উপর রাগ করেছিস ? ' 
' না | তুই এখন যা -
আমার মন ভালো নাই | ' 
আমার আনন্দটা কেমন যেন দমে গেল | 
গুটিসুটি মেরে মায়ের কাছে এসে বসলাম | 
মা রুটি করছিল | 
' জানো মা দিদি আমার সঙ্গে 
ভালো করে কথাই বলল না | ' 
এমন সময় দরজা ঠেলে বাবা ঢুকল | 
হাতে বড়ো মতো কি একটা 
আলোতে আসতেই দেখা গেল - হারমোনিয়াম | 
আমি সুখবরটা দিতে এক দৌড়ে দিদির কাছে 
দেখি ঘরটা প্রায় অন্ধকার 
প্রদীপের আলোটাও নিভু নিভু 
দিদি মেঝেতে শুয়ে আছে | 
' দিদি | দিদি | ' দুবার ডাকলাম 
কোনো উত্তর নাই 
আমি ভয় পেয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম - ' মা ' | 
মা দৌড়ে এল 
' কী রে ,  কী হলো ? ' 
' মা দেখো , দিদি কথা বলছে না | ' 
মা গায়ে হাত দিয়ে কি বুঝল কে জানে ! 
আমাকে বলল : হারমোনিয়ামটা নিয়ে আয় | 
মা আসনটা পেতে বসল 
হারমোনিয়ামটা কাছে টেনে নিয়ে গাইল - 
' আছে দুঃখ , আছে মৃত্যু , বিরহ দহন লাগে 
তবুও শান্তি , তবু আনন্দ , তবু অনন্ত জাগে | ' 

Copyrights@ M Chakraborty  

 ---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

কবিতা

"বেঁধে বেঁধে"
     --আভা সরকার মন্ডল

পাঁচটি আঙ্গুল বেঁধে বেঁধে 
হয়ে উঠি তুমুল জোর,
মুষ্টিবদ্ধ হাতটি আমরা 
ভয় কি মাগো জানা তোর।।

একই সাথে জাগবো আমরা
দেখতে রাতের কালো দৌড়,
কেউবা দুপুর, কেউবা বিকেল
কেউবা দেবো সতেজ ভোর।।

যাই ছড়িয়ে নানান প্রান্তে
নিত্য ঝগড়ায় বাঁধি ডোর,
যাইবা আসুক, জয় পরাজয়
নির্ভীক সন্তান আমরা তোর।।


Copyrights@ Ava Sarkar Mandal
---------------------------------------------------------------
শ্রীমতি আভা সরকার মন্ডল 
কবি-লেখিকা 
রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ 
 ---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------