Saturday, 9 May 2020

কবিতা

"তোর জন্য"
অমিতাভ মুখার্জী

পরের জন্ম বলে যদি কিছু থাকে।
তবে, পরের জন্মে তোর জন্য এক চিলতে রোদ্দুর হবো আমি। আকুলি-বিকুলি জড়িয়ে থাকবো তোর দেহে।
শীতল জলে ছায়া হতে বড্ড ইচ্ছে আমার, তোর জন্য তাও হবো আমি।

অচেনা গ্রামের ধুলো মাখা পায়ে ঘুরে ঘুরে বাউলের একতারা শুনবো শুধুই তোর একার সাথে।

তোর জন্য বসন্ত বাতাস হবো আমি। শুকানো পাতা ঝরা অলস দুপুরে পলাশের আগুন রঙ হয়ে আসবো তোর কাছে এক পাগল কবি হয়ে।
লিখবো প্রেমের হরফে তোর ভালোলাগা মনের কথা।

পরের জন্মে তোর জন্য দুঃখ হবো আমি।
মনের যতো গোপন কথা একলা নেবো আমি।
নিঝুম রাতের বৃষ্টি হয়ে তোর সব কলঙ্ক ধুয়ে দেবো আমি।

তখন যদি না চিনতে পারিস ক্ষতি কি আর তাতে। শিমুল গাছের ছায়ায় বসে শুনবো রাখাল ছেলের বাঁশি।
ধানের ক্ষেতে চাষির মাঝে হারিয়ে যাবো আমি। পল্লীবালার হাতের কাঁকনের সুরে সুরে ফিরে যাবো আমি।

পরের জন্মে তোর জন্য মাটি হবো আমি।
মাটির ভেতর থাকবো দুজনে একসাথে
মিলেমিশে।
                    
----------------------------------------------------------
শ্রী অমিতাভ মুখার্জী 
কবি-লেখক 
 ---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

গল্প (রহস্য রোমাঞ্চ)

 "কুঞ্জবনে আঁততায়ী"
নাজির হোসেন বিশ্বাস  
============ 

ল্যান্ডফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বেজেই চলেছে, “এই কে আছিস ফোনটা ধর তো”, হাঁক দিলেন অরূপ রতন মজুমদার, শৈবাল মজুমদারের বাবা! অবসর প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার, তাই তাঁর গলার জাঁক একটু বেশিই! 
“হ্যালো কে বলছেন?”  
“আমি পাটনা রেল কোয়ার্টার কুঞ্জবন থেকে বলছি, অরূপ রতন বাবু আছেন?” “দাদা বাবু আপনাকে চাইছেন!”  এই দুপুর রাতে কে ফোন করছে, বিড় বিড় করে কথাগুলো বলতে বলতে ফোনটা ধরেই, “হ্যালো বলুন, অরূপ রতন মজুমদার বলছি!” 
“আপনি যত তাড়াতাড়ি পারবেন পাটনা  চলে আসুন স্যার”
“কেন একটু পরিস্কার করে বলুন, প্লিজ! কোন সমস্যা?”
“হ্যাঁ, স্যার, শৈবাল মজুমদার তো আপনার ছেলে, আজ রাতে রহস্যজনক ভাবে,..”
“কি হয়েছে শৈবালের? কোন বিপদ?” 
“হ্যাঁ স্যার, শৈবাল মারা গেছেন!”
ফোনটা ঝনঝন করে হাত থেকে খসে পড়লো মেঝেই! 
    
রেলের চাকরির চিঠি নিয়ে শৈবাল দৌঁড়তে দৌঁড়তে মায়ের কাছে হাজির! “মা, মা আমি চাকরি পেয়েছি রেলে!” চাকরি পাওয়ার সংবাদে প্রথমটাই সব্বাই খুশিতে ডগমগ হয়, কিন্তু যখন শুনলো দূরে অজানা জায়গায় ছেলেকে যেতে হবে তখন মা বেঁকে বসেন! একমাত্র ছেলে বাইরে যাওয়ার কথা শুনেই মায়ের মনটা বড্ড ভারাক্রান্ত হয়ে যায়! সব সময় ছেলের ভাবনায় অস্থির, কি খাবে, কে দেখবে! বিদেশ বিভূয়ে ছেলের থাকার কোন অভিজ্ঞতা নেই তাই মায়ের দুশ্চিন্তা একটু বেশি! ছেলের প্রথম চাকরি হলেও  স্বচ্ছল পরিবারের  একমাত্র ছেলে শৈবাল!  স্বভাবতই মায়ের মন চায়নি দূরে ছেলেকে চাকরি করতে দিতে, কিন্তু ছেলের জেদের কাছে হার মানে বাবা, মা দুজনেই! অগত্যা ব্যাগ পত্তর বেঁধে শৈবাল বেরিয়ে যায় কর্মস্থল পাটনার উদ্দ্যেশে! 
 
পাটনা ট্রেন স্টেশনে নেমেই শৈবাল হাত উল্টিয়ে ঘড়িটা দেখে নিল, সবে বিকেল তিনটে বাজে! সময় মতোই শৈবাল পৌঁছে যাবে! ওয়াশরুমে গিয়ে একটু ফ্রেস হয়ে মাটির ভাঁড়ে আয়েশ করে এক কাপ চা নেয় টি স্টল থেকে! বেশ বড় মাপের মাটির কাপে চা শৈবাল তেমন খায় নি কক্ষনো! তাই এখানে চা খেয়ে বেশ তৃপ্তি পায় শৈবাল! চা খাওয়ার দু’মিনিটের মধ্যেই একজন যুবক এসে দৌঁড়তে দৌঁড়তে কাছে এসেই হিন্দিতে বলে উঠলো, “ইধার আইয়ে সাব, গাড়িভি তৈয়ার হ্যায়! আপ চলিয়ে জলদি!” 
“তুম কৌন হ্যায় ভাই? ম্যায় তো সমঝে নেহি!” 
“রনবীর সাব হামকো ভেজ দিজিয়ে, তুমকো লে জানে কে লিয়ে!” 
“ও আচ্ছা তুম রনবীর সাব কা নৌকর হু?” 
“হা সাব!”
 “তব চলিয়ে!” বাইরে বেরিয়ে দেখে একটি ঘোড়ার গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, তাতে উঠেই রওনা দিল শৈবাল! তখন প্রকৃতির বুকে বসন্তের ঢল নেমেছে! কৃষ্ণচূড়া পলাশ ফুলে যেন  লাল আগুন ঢেলে দিয়েছে! বসন্তের কোকিল একটানা ডেকে চলেছে কুহুউউউ কুহুউউউ করে! একটা দেহাতি বালক তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে গেয়ে চলেছে কুহুউউউ কুহুউউউ! “এই পৌঁছে গেছি সাব, ধীরেছে সাব! আপ যাইয়ে, ম্যায় লটবহর লে আউঙ্গা!”   
“আরে শৈবাল এসো এসো, পথে কোন কষ্ট হয়নি তো?” এই হিন্দি বলয়ে এসে  এভাবে কেউ পরিষ্কার বাংলায় আপ্যায়ন করবে শৈবাল আশা করেনি! ফলে বেশ খুশিই হোল শৈবাল! “না স্যার কোন অসুবিধা হয়নি! মোহনলাল ভালোই গল্প করতে করতে এলো! ছেলেটি বেশ মজার স্যার!” 
“হ্যাঁ মোহন আমাদের বাড়িতে আছে সেই ছোটবেলা থেকে! ওর মা আমাদের বাড়ি কাজ করতো, হঠাৎ দু’দিনের জ্বরে মারা গেল, সেই থেকে আমার কাছেই রয়ে গেল! বড় বিশ্বাসী ছেলে! কোন কাজ দিলে ঠিক করে তবেই ফিরবে! তোমার চেহারা পোষাকের বর্ণনা দিয়েছিলাম ওকে, দেখ ঠিক তোমাকে চিনে বের করেছে। অসম্ভব বাস্তব বুদ্ধি ছেলেটার!  এসো এটা তোমার থাকার জায়গা! চারিদিকে বড় বড় জানালা, এই বসন্তে কোকিলের ডাক, বাগানে পলাশ কৃষ্ণচূড়ার আগুন ধরা রঙ তোমার খুব ভালো লাগবে শৈবাল!”  
 “জায়গাটা খুব সুন্দর স্যার, আমার বেশ মনে ধরেছে!” 
“ঠিক আছে তুমি ওয়াশ করে টিফিন করো, কোন প্রয়োজন হলে বলবে কিন্তু, নো হেজিটেশন ইয়ং বয়!” হাসতে হাসতে আদ্যপান্ত বাঙ্গালী অথচ রাজস্থানী ভদ্রলোক অমল আগরওয়াল সাহেব ভেতরে চলে গেলেন!

শৈবাল কিন্তু নতুন পরিবেশে বেশ মানিয়ে নিয়েছে! আজ সাতদিন হলো অফিসের কাজ, ফাইল বুঝে নিতেই কেটে গেল, আজ একবার মাকে  ফোন করে দেখি! বলে ল্যান্ড ফোনের রিসিভারটা কানের কাছে চেপে ধরে নম্বর ডায়াল করলেন, ওপারে  থেকে ভেসে এলো, “কে বলছেন?”
“আমি বাবু বলছি!” 
“দিদিমা বাবু কথা বলছে, তাড়াতাড়ি এসো” শৈবালকে বাড়িতে সব্বাই বাবু বলেই ডাকে! 
“হ্যাঁরে বাবু কেমন আছিস? এতদিন পরে ফোন করছিস, শরীর ঠিক আছে, স্নান খাওয়া ঠিকঠাক করছিস, রাতে ঘুম হচ্ছে?” 
“মা, তুমি কেমন আছো? আমি ভালো আছি, কোন অসুবিধা নেই, খুব ভালো জায়গা মা, তুমি একদম চিন্তা করো না, ওষুধ নিয়ম করে খাবে, আর হ্যাঁ, ফুরিয়ে গেলে বিল্লুকে দিয়ে ওষুধ আনিয়ে নিও, কেমন?” 
“হ্যাঁ রে বাবু, ওখানকার খাবার খেতে পারছিস? আমার হাতের রান্না না হলে তোর আবার মুখে ওঠে না!” 
“হ্যাঁ মা বেশ ভালো খাবার, তুমি চিন্তা করো না, বাবাকে খেয়াল রেখো, আমি এখন রাখছি, আবার পরে কথা বলবো! রাখছি!” রিসিভারটা রেখে ভারাক্রান্ত মনে শৈবলিনী দেবী মন্থর পায়ে এগিয়ে গেলেন! 
“কিগো গিন্নী, ছেলের সঙ্গে কথা হোল, কি বললো?” 
“আর কি বলবে, কথা শুনেই আমি বুঝেছি, ওখানকার খাওয়া বাবুর পছন্দ হচ্ছে না!”
“তাই বললো বুঝি?”
“তা বলবে কেন? বড় হয়েছে ছেলে, এখন কি আর ছোট আছে, সব বুঝে নিতে হয়,  তোমরা অতটা বুঝবে না!” 
“ ও আচ্ছা তাই বলো, আমি ভাবলাম”
“তোমাকে আর ভাবতে হবে না, যে ছেলে কোনদিন নিজের হাতে খায় নি, সে নিজের হাতে খেয়ে ভালো থাকবে” বলেই চোখের জল ঝরিয়ে দিলেন এক পশলা! 
“আহা কাঁদো কেন গিন্নী, ছেলে বড় হয়েছে, ছাড়তে শেখ, আর কতদিন আঁচলে বেঁধে রাখবে?” 
“দাদাবাবু, বাইরে কে একজন আপনাকে ডাকছেন!” বাড়ির কাজের ছেলেটি এসে  জানিয়ে গেল! 
“কে আবার এখন ডাকছে দেখি!”

“শ্যামলাল ব্যাপারটা কেমন হোল বলো দেখি? আমি আজ দশ বছর ধরে এই অফিসে জুনিয়র পোষ্টে কাজ করছি, আমার প্রমোশন হোল না, অথচ কোথাকার এক ছোকরা এসে চেয়ারের দখল নিল!” অফিসের এ্যাসিস্ট্যান্ট রামকান্ত ধর কথাগুলো বলেই সিগারেট ধরালেন!
“কি করবেন স্যার, সবই তো দেখতে হচ্ছে, আপনার মত যোগ্য মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে!” বলে বাথরুমে চলে গেলেন শ্যামলাল! 
“রামকান্ত দা, একটু আমার চেম্বারে আসুন প্লীজ!” ডেকে পাঠালেন শৈবাল বাবু! 
“হ্যাঁ বলুন স্যার!” 
“এই ফাইলটা একটু চেক করে আপ ডেট করে দিন প্লীজ!” 
“আজই দিতে হবে স্যার?” বলে রামকান্ত বাবু দাঁড়িয়ে রইলেন! 
“হ্যাঁ আজই, এনি প্রবলেম?” 
“না স্যার, বলছিলাম কি, আমার ছেলেটা একটু অসুস্থ, ডাক্তারের কাছে যেতে হোত!” 
“ওকে, নো প্রবলেম, কালকেই দেবেন!”
“থ্যাঙ্ক ইউ স্যার, আসছি!” 
এমন সময় একজন লোক চেম্বারে গলা বাড়িয়ে বলে উঠলো, “আসবো স্যার?”
“ও ইয়সে আসুন,বসুন!” 
“আমি আসলে বীরভূম থেকে আসছি, বীরভূমের লাল সড়ক আমার বাড়ি!” 
“ও আচ্ছা, অতদূর থেকে কি মনে করে, বলুন আমি কি সাহায্য করতে পারি?” 
“সাহায্য ঠিক নয়, আমি আপনার কাকার ছেলে, বিশাল মজুমদার আমার নাম, বাবার নাম রতিকান্ত মজুমদার! আপনি যখন ছোট, তখন আমার বাবা, মুর্শিদাবাদ ছেড়ে বীরভূম চলে আসেন, আমার তখন জন্মই হয়নি!”
“তাই, তাহলে ক্যান্টিনে চলুন, কিছু খেয়ে নেবে, তারপর কথা শুনবো!”
“দাদা আমি কিছু খাবো না, খাওয়া দাওয়া করেই অফিসে ঢুকেছি!”
“বেশ তো কিছু না খাও, এই গরমে একটু জুশ খাবে চলো, হাজার হলেও ভাই তো, তবে কোনদিন শুনিনি আমার কাকা আছেন বলে!” 
“আসলে আমার বাবা একটু খেয়ালী মানুষ ছিলেন, লেখাপড়া না করে যাত্রাপালা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন, ঠাকুরদাদার নিষেধ অগ্রাহ্য করে দিনের পর দিন এই নিয়ে মেতে থাকতেন! তাই তিনি বিরক্ত হয়ে বাবাকে তাজ্য পুত্র করেন, সেই থেকে বাবা নিরুদ্দেশ হন, তারপর এঘাট ওঘাট খেয়া মেরে অবশেষে বীরভূমে আস্তনা গাড়েন!” 
“আজ দাদা উঠবো, ভালো থেকো!” 
“আচ্ছা ঠিক আছে এসো, ভালোভাবে যাও!” 
“আচ্ছা দাদা আসছি, তোমার সঙ্গে আলাপ করে খুব ভালো লাগলো, আবার এদিকে এলেই দেখা করে যাবো দাদা!” 

“শ্যামলাল!”
“বলুন স্যার!”
“রামকান্ত বাবু আসেন নি?” 
“না স্যার, আসেন নি!” 
“উনার কাছে ফাইলটা আছে, আজ দেব বলেছিলেন, একটু ফোন করে দেখ তো শ্যামলাল!” 
“আচ্ছা স্যার দেখছি!” বলেই রামকান্ত বাবুকে ফোন লাগালেন! 
“হ্যাঁ স্যার আজকে কি আসবেন না? আপনার কাছে ফাইলটা আছে!” 
“না শ্যামলাল, ছেলেটার অসুখটা বেশি হয়েছে, তাই আজ অন্য ডাক্তারকে দেখাবো ভাবছি, স্যারকে বলে দাও, কালকে ফাইল রেডি করে দেব!” 
“না স্যার আসবেন না, ফাইল কালকে দেব বললেন!” 
“স্যার আসতে পারি?” বেশ সুন্দরী একজন মহিলা চেম্বারে গলা বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলো! 
শৈবাল টাইয়ের নডটা একটু টাইট করে নিয়ে গুছিয়ে বসেই বলে উঠলেন, “আসুন!” 
বেশ সপ্রতিভ সহাস্য, জীন্সের ওপরে একটি সোনালী টপ, ঠোঁটে ব্রাইট লিপস্টিক ঘষা, চোখগুলো টানাটানা, বেশ আধুনিকা মহিলা, প্রবেশ করেই, একরাশ সুগন্ধি ছড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলেন, “থ্যাঙ্ক ইউ স্যার!” 
“বসেই বলে উঠলেন, একটু পার্সোনাল স্যার!”
“শ্যামলাল দরজাটা লাগিয়ে দাও, আর কেউ এলে বলবে, স্যার ব্যস্ত আছেন!” 
“ওকে স্যার!” বলেই শ্যামলাল মুচকি হেসেই বাইরে বেরিয়ে গেলেন! 
“আমার নাম মিস কঙ্কনা, কঙ্কনা ভাদুড়ী” 
ওদের দু’জনের মধ্যে মিনিট দশেক কথা হয় তারপরেই মিস কঙ্কনা গটগট করে শ্যামলালের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যান! 
“শ্যামলাল সব গুছিয়ে বন্ধ করে দাও, আমি বেরিয়ে গেলাম!”  


“চলুন ওই গঙ্গার ধারে একটু বসি স্যার!”
“গঙ্গার পাড়টা তো বেশ মনোরম,কঙ্কনা দেবী ” শৈবাল বলে উঠলো
“স্যার একটা গিপ্ট এনেছি আপনার জন্য, নিলে খুব খুশি হবো স্যার!”
“না না দিতেই পারেন, কৈ দিন!” বলে হাত পাতলেন শৈবাল বাবু! 
“একটা বিদেশি পারফিউম, রাতে সমস্ত শরীরে মেখে শুয়ে পড়বেন, সুন্দর ঘুম হবে!”
“তাই, অনেক ধন্যবাদ!” 
“এবার আমরা উঠবো স্যার!” কঙ্কনা দেবী বলে উঠলেন! 
 
 রাত তখন বারোটা! ক্রিং ক্রিং করে থানার ফোনটা বেজে চলেছে, একজন হেড়ে গলায় বলে উঠলো, “নমস্কার মুঙ্গের থানা বলছি!” 
“হ্যালো আমি রেল কোয়ার্টার কুঞ্জবনের কেয়ার টেকার সুখলাল বলছি, এক্ষুনি এখানে আসতে হবে, একজন রেল অফিসার রহস্যজনক ভাবে মারা গেছেন, আটেন্ড করতে হবে স্যার!”
“আচ্ছা আসছি রাখুন, সান্তা গাড়ি বের কর বেরতে হবে, শালা দেশটা খুন খারাপিতে ভরে গেল!” 
পুলিশ অফিসার, সুখদেব রাও ও তার চারজন পুলিশ নিয়ে ঢুকে পড়লেন! 
“বুঝলে বিকাশ ছবিগুলো ঠিকঠাক তুলবে, আর জিনিসপত্র যেন একটিও বাদ না যায়! আর পুলিশ পিকেট বসিয়ে দাও, সকাল ছাড়া ডেড বডি তোলা যাবে না”
“ওকে স্যার!” 
“আচ্ছা সুখলাল বাবু, আপনি কিভাবে কখন এটা জানতে পারলেন?”
“স্যার আমি নিয়মিতই উনাকে রাত্রি দশটার সময় খাবার ঘরে পাঠিয়ে দিই! তারপর ঘন্টাখানেক পর একবার আসি জল দিতে, উনি ফ্রেশ জল ছাড়া খান না তাই আগে জল দেওয়া হয় না স্যার!” 
“আচ্ছা এখানে ওনার জয়েনিং করা কতদিন হোল? আর এই কোয়ার্টারে আসাই বা কতদিন হোল?” 
“স্যার সে সাত মাস হবে, প্রথম থেকেই এই রুমে উনি থাকেন!” 
“কোন কোন লোক এখানে আসা যাওয়া করেন?” 
“না স্যার এখানে কোন লোক আসেন না, সমস্ত লোকজন অফিসেই দেখা করতেন, কোনদিন এখানে কেউ আসেন নি!” 
ভোরের আকাশে লাল আভা, পাখিরা কিঁচির মিঁচির করে ডেকে উঠেছে, দূরে একটি মসজিদ থেকে আজানের সুর ভেসে আসছে! ভৈরব মন্দির থেকে ভেসে আসছে কীর্তনের সুর! সব মিলিয়ে একটুকরো ভারতবর্ষ! 
এমন সময় শৈবালের বাবা মা আত্মীয় স্বজন পৌঁছে গেলেন কুঞ্জবনে!  মা শৈবলিনী হাউমাউ করে এসে কেঁদে পড়লেন শৈবালের নিথর দেহের উপর, “আমি তক্ষনি বলে ছিলাম চাকরী করতে হবে না, বিদেশ বিভূই যেতে হবে না, তবুও কেউ আমার কথা শুনলো না”, বলে বুক চাপড়াতে লাগলেন শৈবালের মা!  
অরূপ রতন বাবু পুলিশ অফিসারকে ডেকে বললেন, আমি প্রক্তন আই.সি বলছি, আমার ছেলের মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটন করতে হবে, সমস্ত রকম চেষ্টা করুন স্যার!” 
“আমরা চেষ্টা করছি স্যার, এই ধীমান বডি পোষ্ট মর্টেমের ব্যবস্থা করো!” 

পুলিশ অফিসার সুখদেব রাও দুপুরে চেম্বারে বসে বসে ভাবছেন, কোথায় থেকে শুরু করা যায়, এই কেসের রহস্য উন্মোচন তো করতেই হবে! 
“সান্তা গাড়ি বের কর, একটু রেল অফিসে যেতে হবে!”
পনের মিনিট গাড়ি চালিয়ে সান্তা পৌঁছে গেল রেল অফিস! “আমরা থানা থেকে আসছি!”
“আসুন আসুন বসুন স্যার!” শ্যামলাল  একটা চেয়ার দিলেন বসতে! 
“আচ্ছা শৈবাল বাবু তো এই অফিসে চাকরি করতেন?” 
শ্যামলাল বলে উঠলো, “হ্যাঁ স্যার, উনি এই অফিসের ইনচার্জ অফিসার ছিলেন!” 
“উনার এই আকস্মিক মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ কিছু বলতে পারবেন?” 
“না স্যার, আমি কি করে বলবো?” 
এই অফিসে আর কে কে কাজ করেন?”
“আছেন রামকান্ত ধর এ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার, উনি আজ আসেন নি!” 
“আপনি কি এই সাত মাসে রহস্যজনক কোন কিছু এই অফিসে খেয়াল করেছেন?” 
“অনেকেই তো আসেন অফিসের কাজে, তবে উনার এক ভাই এসেছিলেন দু’বার, আর একজন সুন্দরী মহিলা এসেছিলেন কয়েকবার! বাইরের লোক বলতে এই দু’জনকেই দেখেছি স্যার!” 
“অফিসের সবার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতেন?”
“শৈবাল স্যার খুব ঠান্ডা আর ভদ্রমানুষ ছিলেন, কোনদিন জোরে কথা বলতে শুনিনি, সব সময় হেসে হেসে কথা বলতেন!”
“ভিজিটর্স বুক থেকে ওই দুজন ভাই আর ভদ্রমহিলার নাম ঠিকানাটা লিখে দিন!”
“এই নিন স্যার!” 
“ধন্যবাদ আজ আসছি, পরে প্রয়োজন হলে আবার আসবো!” 
“স্যার পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট দেখুন!” 
  “এতো রীতিমত পরিকল্পনা করে খুন” বলে উঠলেন তদন্ত অফিসার সুখদেব রাও! “সান্তা গাড়ি বের কর, আমরা যাবো কুঞ্জবন রেল কোয়ার্টার!” 

“আসুন স্যার!”
“হ্যাঁ চলুন শৈবালের রুমটা একটু দেখবো!”
দরজা খুলে ঘরের মধ্যে পা রাখতেই একটা বিদেশি পারফিউমের গন্ধ নাকে লাগলো! একটু খুঁজতেই আলমারির নীচ থেকে একটি পারফিউমের শিশি চোখে পড়লো! “ধীমান এই শিশিটা ফরেনসিকে পাঠাতে হবে!” চারপাশটা ভালো করে দেখে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন সুখদেব রাও!  

“ধীমান আগামী সোমবার এই পাঁচজনকে থানায় ডেকে পাঠাও, তদন্ত ফাইনাল করতে হবে!” বলে একটা নামের তালিকা ধীমানের হাতে ধরিয়ে দিলেন! 

“আজ আমরা এক জায়গায় মিলিত হয়েছি, শৈবাল বাবুর মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের জন্য, আশাকরি আপনারা পূর্ণ সহযোগিতা করবেন!” চারিদিকে পিন ড্রপ নিরবতা! কোকিলটা এক নাগাড়ে বাইরে ডেকে চলেছে! 
সব্বাই চুপচাপ, কেউ কোন কথা বলছেন না! এমন সময় ঘরে প্রবেশ করলেন পুলিশের বড় কর্তা ও শৈবালের বাবা অরূপ রতন মজুমদার মহাশয়! 
“পুলিশের বড় কর্তা নীলরতন তালুকদার বলে উঠলেন, তাহলে সুখদেব শুরু করো তোমার কাজ!”
“হ্যাঁ স্যার শুরু করি,  আমি প্রথমেই রামকান্ত ধর মহাশয়কে বলছি, বলুন আপনার কি বলার আছে?”
কাচুমাচু করে রামকান্ত ধর বলে উঠলেন, “স্যার আমি তো কিছু জানি না! আমি যা বলার আগেই বলেছি, তার বেশি কিছুই জানিনা!” 
“বেশ, বিশাল মজুমদার বলুন?” 
“স্যার শৈবাল আমার দাদা, আমি ওর কাছে দু’দিন এসেছিলাম, সৌজন্যের খাতিরে দেখা করতে, অফিসে কথা বলেই চলে গেছি স্যার!”
“আপনি মিস কঙ্কনা দেবী, আপনি কিছু বলবেন?”  
“স্যার আমি তো যা বলার আগেই বলেছি, আর কিছু তো আমি জানি না!”
“বেশ তাহলে কেউ কিছু যখন জানেন না, আমাকেই সবটা বলতে হবে, আমার  কাছে কিন্তু সব প্রমান পত্র রয়েছে, তাই কেউ অস্বীকার করলেও ছাড় পাবেন না! মিস কঙ্কনা দেবী একটি পারফিউমের শিশি, শৈবালকে গিপ্ট করেছিলেন মনে পড়ে?” 
“হ্যাঁ স্যার আমি দিয়েছি, একটি বিদেশি পারফিউম, আমার খুব পছন্দ তাই স্যারকে দিয়েছিলাম!” 
“জানেন কি সেটাই আসলে বিষাক্ত?” 
“না, স্যার আমি কিছু জানিনা”
“তাহলে কে জানে বলুন? সত্যি কথা বলুন?”
“আসলে বিশাল মজুমদার আমাকে পারফিউমটা দিয়েছিল, বলেছিলো শৈবালকে এটা দিতে হবে!”
“আপনি বিশালকে কতদিন থেকে চেনেন?”
“চিনি না স্যার, আমাকে অনেক টাকার লোভ দেখিয়ে এই কাজটি করিয়ে নেয়!”
“বিশাল বাবু কিছু বলবেন?”
বিশাল বাবু বুঝে গেছেন তিনি ফেঁসে গেছেন জালে, তাই সব স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া পথ নেই। 
“স্যার শৈবালের মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী, আমার বাবাকে সম্পত্তি থেকে ওর বাবা বঞ্চিত করেন, তাই বদলা নিতে আমি এই পথ বেছে নিয়েছিলাম!” 
“সে কি আমি বঞ্চিত করেছিলাম মানে?” অরূপ রতন বাবু চিৎকার করে উঠলেন! 
“স্যার অপরাধী যখন অপরাধ স্বীকার করেছে, তখন ওকে কোর্টে চালান করতে হবে! আসলে ওই পারফিউমে ছিল বিষাক্ত বিষ! যেটা ঘ্রাণের সঙ্গে নিলে মানুষ একঘণ্টার মধ্যে মারা যায়! আর সেই পথটাই বেছে নিয়েছিল আঁততায়ী! অতি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজটা করেছিল! ধীমান বিশাল মজুমদার ও কঙ্কনা দেবীকে এ্যারেস্ট করো ওদের কোর্টে চালান করতে হবে!
Copyrights@ N.H Biswas 
-------------------------------------------------------

নাজির হোসেন বিশ্বাস 
কবি-লেখক 
মুর্শিদাবাদ,  পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্শজ 

 ---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

কবিতা

  শান্তি  
     --প্রশান্ত মাইতি

কাঁটাতারের তীক্ষ্মফলায় প্রদীপের শেষ
সলতের মতো বেঁচে থাকে জীবন
জমাট বাঁধা মৌচাকের বাসার মত
মৃত্যুও লেগে রয়েছে আন্ঠা হয়ে
            #
অভিমানে দাঁড়িয়ে থাক তুমি ওপারে
এপারে প্রেম তোমার আসার প্রহর
গোনে বৃষ্টির ফোঁটায় ভিজে
             #
চালাকি যতই করি মৃত্যুর সাথে
তবুও সে খুঁজে নেয় ভিড়ে
              #
জীবন খোঁজে শান্তি মৃত্যুভুলে ।।
       
Copyrights P Maity 
-----------------------------------------------------------
 
শ্রী প্রশান্ত মাইতি 
কবি-লেখক 
কাকদ্বীপ, দঃ ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ ভারতবর্ষ 
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

কবিতা

 "সময় লিপি" 
        --শিবানী মন্ডল 

সময় লীন হয়
লুকনো মৃত্যু ফেরার দেশে।

বিলিয়ে যাওয়া স্বপ্ন সমূহ

সঞ্চিত আলিঙ্গন....
অক্টোপ্যাডের সুরে
বৈরীতা নিয়ে সীমাহীন দ্বন্দ্ব

গোঙানির তন্দ্রা
  রঙিন দেওয়ালে আঁকে
      মেঘলা দুপুর আল্পনা।

খোলা চোখ সঙ্গে নিয়ে যায়
       দুঃখের দিনলিপি.....

Copyrights@ S Mandal 
----------------------------------------------------------- 
শ্রীমতি শিবানী মন্ডল 
কবি -লেখিকা 
 ঝাড়খন্ড, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------
        

Sunday, 3 May 2020

"প্রতিবাদহীন মানুষ ও কিছু কথা" --মন্টু হালদার

মাথা নিচু করে প্রতিবাদহীন মানুষ হয়ে সবার সবটা মেনে নিলে , কেউ তোমার শত্রু হবে না সত্যি এবং অবশ্যই তোমার বন্ধুর সংখ্যাও বেড়ে যাবে অনেক ....
কিন্তু খোলা মাঠকে জঞ্জাল মুক্ত না করলে গাছের সাথে সাথে আগাছাদের ভিড়টা অধিক বেড়ে যায় তাতে মাঠকে উপর থেকে যত সবুজই  লাগুক না কেনো মাঠের শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে এটা বলা যায় না ।উপরন্তু মাঠে যে সুগন্ধী ফুলের গাছটার জন্য মাঠ প্রশংসা পেতো সেই গাছটিকে একলা পেয়ে  আগাছারা সবাই মিলে ঢেকে দেবে  । তখন মাঠটি বাগানের পরিবর্তে আগাছার জঙ্গল হয়ে ওঠে যা অসম্মানের এবং অবশ্যই অমর্যাদার । 

অবশ্য মর্যাদা এবং সম্মান ব্যক্তি বিশেষে , সামাজিক -রাজনৈতিক -অর্থনৈতিক ভিন্নতায় বিভিন্ন হতে পারে ।
শুধু ভিন্ন মতাদর্শী বলে কোনো রাজনৈতিক প্রভু তার আনুগত্যহীন কবিকে যদি সম্মান দিতে অস্বীকার করে তখন সে অসম্মান গাহ্য নয় । ব্যক্তিগত মতবিরোধ যখন যোগ্য প্রতিভাকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে তখন গুণীর অমর্যাদা হয় না । বরং ভয়ে বা দক্ষিণা বা অনুগ্রহ পাওয়ার লোভে সে কবি যদি পেন ছেড়ে 'ঝাণ্ডা 'হাতে তুলে নেয়, গায়ক গান ছেড়ে নেতার স্তব ধ্বনি দিতে শুরু করে তবে সেটাই অনভিপ্রেত , সেটাই শিল্পের এবং সৃষ্টির অপমান ।

তা বলে শুধু মাথা নিচু করে লিখলেই চলবে না। তেমন সময় এলে দেশ ও দশের  প্রয়োজনে কবিকে অবশ্যই পথে নামতে হবে , গায়ককে মিছিলে হেঁটে গান গাইতে হবে । সমাজের প্রতি ,সহ নাগরিকদের প্রতি কর্তব্য পালন করাটাও দায়িত্ব ।দেশের প্রতি শিল্পীরও দায় আছে । অত্যাচার মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সদা জাগ্রত লেখক শুধু লিখে নয় মিছিলের একদম প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেবে , যে কোনো আগ্রাসনের বিপক্ষে(বিশেষত ধর্মীয় ) ,প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ....

সংখ্যাধিক্কের কাছে আত্মসমর্পণ বা গতানুগতিকতাকে  অন্ধের মতো বয়ে নিয়ে চলা রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক হলেও সেটা কোনদিন-ই শিল্পীর লক্ষ্য নয় । 

আমার জীবনের ক্ষেত্রে আমি তার প্রমাণ ।আমার ডান দিকে ছিলেন গুটি কতক মানুষ যারা আমাকে প্রায়ই  সমালোচনা করতেন কিন্তু বাঁ দিকে ছিলেন প্রচুর মানুষ যারা আমাকে সর্বদা  প্রশংসায় ভরিয়ে দিতেন । এতএব আমি বাঁ দিকে ঘেসতে ঘেসতে  ডান দিকের থেকে অনেক দূরে চলে আসি , সহজেই হাততালি কুড়ানোর লোভে  আমিও সস্তায় পরিণত হই । এর ফলে বিস্তার পেয়েছি বটে তবে পরিপুষ্ট হতে পারিনি । অনেক গুলি কবিতা আমি  প্রসব করেছি সত্য কিন্তু একটাও সু সন্তান হয়ে ওঠেনি  ,  হুজুগে মেতেছি খালি কিন্তু যুগের হতে পারিনি । 
ডানদিকে থাকা দু চারজনের সাথে দূরত্ব বাড়িয়ে ছিলাম কারন সংখ্যালঘুদের কথায় কি যায় আসে ?   এ ছাড়া তাঁরা আমায় বলেছিলো  -'রাজা তোর কাপড় কোথায়?'আমি রুষ্ট হয়েছিলাম যদিও পরে বুঝেছি -- কাপড় আমি সত্যিই পরে নেই । এখন একবাক্যেই স্বীকার করি যারা শুধু প্রশংসা করে সংখ্যায় তাঁরা যতবেশিই হোক না কেনো , তাঁরা মিথ্যাচার করেন কিন্তু যারা সমালোচনা করেন তাঁরাই জীবনের প্রকৃত শিক্ষক তারাই আত্মীয় ।আর আমি অতিথিকে মধ্যমণি করতে গিয়ে আত্মীয়কে করেছি অনাদর । 

স্বভাবতই আত্ম সম্মান বোধ সম্পন্ন মানুষের জায়গাটা সমগ্র পৃথিবী জুড়েই কমে এসেছে ।চারি পাশেই চলছে ' মাত্স্যন্যায়' । সংবিধানে স্পষ্টত উল্লেখ আছে ,বিরোধীরা গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ । যারা সংবিধান কস্মিণ কালেও পড়েন নি কথাটা তারাও জানেন  কারন বিরোধী শিবির প্রতিমুহূর্তে এত বার , এত জোরে কথাটা বলে চলেছে  যে সরল নিরক্ষর জনগণেরও  কান পর্যন্ত কথাগুলি পৌছে গেছে   , কিন্তু যখন আজকের বিরোধী , কাল  সরকারে আসে তখন সে নিজেই কথা গুলি  ভুলে যায় ।পরিস্থিতি এমন যিনি জানেন বেশি  তিনি মানেন কম  । 

এই মানা না মানা নিয়েই জীবন । প্রেমিকা যদি স্ত্রী হয়ে ওঠে এবং সেই ভিত্তিটাই যদি  কাব্য লেখার একমাত্র শর্ত  হতো তবে তা হতো  দৈনন্দিন জীবন গাঁথা তাতে শব্দ থাকতো  ছন্দ থাকতো , বিজয় করবার গর্ব থাকতো , প্রাপ্তির সুখ থাকতো কিন্তু বিচ্ছেদের করুন রস থাকতো না , মিলনের উন্মুখতা থাকতো  না , উদাসী মনের কল্পিত কল্পনা থাকতো না, না পাওয়ার ব্যথা থাকতো না..,আর বিরহ- বঞ্চিত সাহিত্য কক্ষনো  চিরকালীন সাহিত্য হতে পারে না  । বুদ্ধির চেয়েও মন ও  আবেগ শিল্পে বেশি সমাদৃত ,সর্বোপরি কাঙ্খিত । 

তাই হতে হবে নম্র তবে তা সত্যের কাছে , হতে হবে শিষ্য তবে তা প্রকৃত শিক্ষিকের কাছে , হতে হবে ধার্মিক অবশ্যই সঠিক গুরুর কাছে । 

অর্থাৎ এক জন সত্য কারের বন্ধু হাজারটা মুখোশ ধারী বন্ধুর চেয়ে দামী। 

copyrights@ Mantu Haldar 
--------------------------------------------------------------

শ্রী মন্টু হালদার 
কবি-প্রাবন্ধিক 
 পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------.------Voice------------------

কবিতা

বিলাসের পরিণতি
   --চন্দন চক্রবর্তী

লোট লুটে নে , ইচ্ছে মত , নেই মানা !
জগৎটাতো তোর একারই মালিকানা ? 
ছাল ছাড়িয়ে বের করে নে মাংসগুলো
হাড়গুলোতে আছে যত মজ্জাগুলো !

ছালটা দিয়ে ডুগডুগিটা বানিয়ে নিয়ে
প্রচার চালা বাতাস ভরে,মাইক লাগিয়ে । 
কলজেটাতে নে বানিয়ে নবাব খানা 
বাদ বাকিতে যা মনে চায় তাই বানা ।

দেখবি কেমন লেজ নাড়াবে কুকুরগুলো
ছুড়িস যদি বেহিসেবী খাবারগুলো
হাড়গুলোকে দিবি ছুড়ে ওদের মুখে,
ঘেউ ঘেউটা বন্ধ হবেই,থাকবি সুখে ।

বাদবাকি সব যত আছে গরু ভেড়া, 
ওদের ঘামেই হবেরে তোর প্রাসাদ গড়া ।
সেই প্রাসাদের শীষ মহলে নুপুর পায়ে 
বাইজি নাচুক ঝারবাতিটা উঠুক জ্বলে ।
 
লক্ষজনের অনাহারের জল ছবিতে
দে মাড়িয়ে দু পায়ের ওই নাগড়াটাতে ।
অনাহারের হাহাকারটা আসলে ধেয়ে
দুহাত দিয়ে কানটা ঢেকে উঠবি হেসে ।

জীবন শেষে বিঁধির বিধান ফলবে যবে
তোর জীবনের প্রদীপটাতে তেল ফুরবে  
তোর বিলাসী কাপড়খানা রাখবি খুলে 
উঠবি না হয় ন্যাংটো দেহে চিতায় ঠেলে !

copyrights@ Chandan Chakraborty 
--------------------------------------------------------------

শ্রী চন্দন চক্রবর্তী 
কবি -লেখক
 নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

অনু গল্প

"আমার বন্ধু',
    --শিপ্রা দেবনাথ 

নিস্তব্ধ রাত চারদিক নিশ্চুপ সবচাইতে ভালো সময়। দিনের আলোয় কত হট্টগোল মানুষের গিজগিজ। অথচ এত ভিড়ের মাঝেও তোমার সঙ্গে তখন কেউ নেই। নিঃসঙ্গ হলেও তাকেই নিজের বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছি। রাতের সাথে যেমন খুশি খুনসুটি করো। কেউ তোমায় কিছু বলতে পারবে না সে নিজেও বিরক্ত হয় না রাগ করে না খারাপ কথা বলে না। বরং খুব মিষ্টিমধুর ব্যবহার ওর । সবচাইতে মজার ব্যাপার ওর সাথে আরো সঙ্গী আছে চাঁদ তারা জোছনা অন্ধকার জোনাকিরা।ওদের মধ্যে যদি কারো সাথে আমার একটু বেশি ভাব হয়েও যায় কখনো,সে রাগ করে না তখনও বরং খুশি হয়।
তাই তো কখনো তারাদের ভিড়ে হারিয়ে যাই আমি।দু'একটা তারা তো এমন ভাবে তাকায় আমার দিকে যেন কতকালের গভীর সম্পর্ক ওদের সাথে আমার। রাত ও সবকিছু দেখতে পায়
কিন্তু কিচ্ছু বলে না আমায়। আবার কখনো আমি শুক্লা একাদশী চাঁদের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে থাকি, সাদা কালো মেঘের সাথে ওর লুকোচুরি খেলার অংশীদার হই। তবু রাত আমার কিচ্ছু বলে না।পূর্ণিমার চাঁদের জোছনায় মুগ্ধ হয়ে আমি সেখানে পরম তৃপ্তিতে অবগাহন করি সম্পূর্ণ ভিজে যাই জোছনায় ডুব সাঁতার কাটি স্নান করি তবু রাত আমার কিচ্ছু বলে না। অন্ধকারের  সাথেও আমার ভালই ভাব হয়েছে। অন্ধকার যখন আসে সে আমাকে লুকোতে সাহায্য করে। তখন চাঁদ-তারা জোছনা ওরা কেউই আমাকে খুঁজে পায়না দারুন লুকোচুরি খেলা জমে ওঠে। রাত ও খুঁজে পায়না আমাকে। তবু সে রাগ করে না আমার সাথে।ঝগড়া করে না ও জানে আমি ওর সাথেই আছি এটা ওর বিশ্বাস। তাইতো আমি ওকে এত ভালোবাসি।আবার জোনাকিদের দুই-একটা এসে মাঝে মাঝে ঘরে এসে ও আমাকে দেখে যায় দু'চারটা কথা হয় আমাদের মধ্যে, তখন অন্ধকার ও উপস্থিত থাকে তবু রাত আমায় কিছু বলেনা। কেন ভালোবাসবেনা রাত আমায়! আমি যে ওর জন্যই জেগে থাকি একটুও ক্লান্ত বোধ করি না। সত্যি বলছি অকপটে স্বীকার করছি আমি রাত কে ভীষণ ভালোবাসি। আমাদের দুজনের ভালোবাসা পাক্কা, চিরস্থায়ী।

copyrights@  Shipra Debnath 
--------------------------------------------------------------
শ্রীমতি শিপ্রা দেবনাথ (টুলটুল)
কবি -লেখিকা 
 রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

আমরা ঘুমাবো এখন -- প্রসেনজিৎ মাইতি

"আমরা ঘুমাবো এখানে"
      --প্রসেনজিৎ মাইতি

আমরা ঘুমাবো এখানে
যেখানে,মলিন মানুষ 
জমা করে তার নোংরা সম্পদ।

যেখানে,গ্রীষ্ম সাহস করেনা
ডুবে যায় কোদাল
রোপন করা হয়না তীর।

যেখানে,গাছের শিকড়
গুড়ি মেরে জড়িয়ে ফেলে।

আমরা ঘুমাবো।
যেখানে,জল অনির্বচনীয় শীতকালে
পরিশোধক কৃত
সামান্য,রয়েছে
চোখের পাতা ভেজানো
আর অনমনীয় হাসি।

এখানে,
বিষন্ন কর্মশালা যেখানে নকল হয়
ফসলাদি।
আমরা এখানে ঘুমাবো,
তোমরা দরজাটা বন্ধ করো।

 
--------------------------------------------------------------
শ্রী প্রসেনজিৎ মাইতি 
কবি -লেখক
পূর্ব মেদিনিপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

অনু কবিতা

"চরাচর"
     --দেবাশীষ চট্টোপাধ্যায় 

আরো দূরে ফেরার মতো যে সুড়ঙ্গ পথকে তুমি 
শ্মশান বলে মনে করো -----
তারও দূরে ফিরে যেতে হয়

একদিন,আজ অপেক্ষায় ওই পথেই" তুমি আর তুমির "
পাশাপাশি ছিলে 

যেন -না থাকার মতই কেউ ফিরে যাবে বলে 

মিলিয়ে যাবে ভাটায় 

সিঁদুরে, অকূলে, 

চরাচরের ভিতর জুড়ে ----

--------------------------------------------------------------
শ্রী দেবাশীষ চট্টোপাধ্যায় 
কবি-লেখক 
 নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

অনু কবিতা


"অদৃশ্য পৃথিবী"
   --ধীমান দাস 

আমার কল্পনাগুলি হাঁটছে বৃষ্টির সরলরেখা বরাবর
মরুভূমির কপালে আঁকা শিবের ত্রিশূল,
একখন্ড প্রদীপ জ্বলছে
গুমড়ে আসা কালবৈশাখীর কোলে।
হাবুডুবু খায় ক্ষণস্থায়ী ভালোলাগা
টাইটানিকের পতাকার আড়ালে
জীর্ণ শকুনের ডানায় ভর করে উড়ছে
অদৃশ্য পৃথিবীর যুদ্ধ রথের চাকা।

© ধীমান দাস

copyrights@ Dhiman Das 
--------------------------------------------------------------
শ্রী ধীমান দাস 
কবি -লেখক
 বালুরঘাট, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

মধুর শৈশব --নীতা কবি



মানুষের জীবনে কত বেলা থাকে, বেলা এবং অবেলা
কৈশোর-বেলা, বৃদ্ধ-বেলা এবং থাকে ছোটবেলা
ছেলেদের যদি ছেলেবেলা থাকে, মেয়েদেরও থাকে মেয়েবেলা
এই বেলাটাই সবচেয়ে প্রিয়, স্নেহ ভালোবাসা দেয় দোলা।

ছোট্ট মেয়েটি উঠোনের ধারে কত কি যে নিয়ে খেলা করে
মায়ের আদর, বাবার স্নেহ শিশিরের মতো ঝরে পড়ে
তারপরে খুকু ইস্কুলে যায়, দেখে নতুন পাঠশালা
সখীদের সাথে খুনসুটি আর উচ্ছ্বলতায় প্রাণখোলা।

মেয়েবেলাকার পুতুল খেলা, বৌ বৌ সাজ মন কাড়ে
বড় হয়ে তারও সংসার হবে সুপ্ত বাসনা মনে বাড়ে
চু-কিৎ-কিৎ, কানামাছি আর গাঁয়ের পুকুরে স্নান করা
নাচ-গান শেখা, সরস্বতী পূজো, আরও কত কি যে প্রাণভরা।

সেই নিশ্চুপ শান্ত দুপুরে আঁচার চুরির ছক কষা
লাল ফিতে দিয়ে চুল বাঁধা আর পড়ার টেবিলে চক ঘষা
ছোট্ট-বেলার সেই সুখ-স্মৃতি ফিরে ফিরে আসে, চোখে ভাসে
বড়-বেলাতেও মন শুধু চায় ছোটবেলা যদি ফিরে আসে।

দোল-উৎসব, গাজনের মেলা, কতরকমের সুখস্মৃতি
স্মৃতির সাগরে ডুব দিয়ে খুঁজি ছোট্ট-বেলার সেই রীতি
যত দিন যায়, হারায়ে খুঁজি ছোট-বয়সের ফাজলামি
আর কি কখনো পাবো সে জীবন যতই খুঁজি এই আমি?

Copyright@ Nitakabi
--------------------------------------------------------------
শ্রীমতি নীতা কবি 
কবি -লেখিকা 
 বর্ধমান,।পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

কবিতা

"চাপাক্ষোভ"
     --কৃপাসিন্ধু মাহাত

মনের এতো চাপা ক্ষোভ
        মিটিবে কি না জানিনা
হাজার হাজার ভাই বোন 
      আজও কেন বোঝেনা।
কলাীদহে ফিরেছে কালী
      মনুষ‍্য রুপ দিয়ে।  
একে একে মারছে মানব
        নিজ বাহুবল দিয়ে।
কাঁদে মন কাঁদে প্রাণ
       মুর্খ ভাই ভগিনীদের দেখে
দেশের কত উঁচু মাথা
       আজও ঘাড় নীচু করে থাকে।
ওরে মুর্খ ওরে স্বজাতি ভাতৃ ভগিনী গন
আপন সুচি সুদ্ধকর
   কর চিত্ত জাগরন।
সকল মানুষ আজ রঙের বশ 
    সবাই রঙের ভৃত‍্য
রঙ্গদেবী আজ রঙের নেশায়
     করে কলির নৃত‍্য।

Copyrights@ Kripasindhu Mahata 
--------------------------------------------------------------
শ্রী কৃপাসিন্ধু মাহাত 
কবি -লেখিকা 
 পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------
 

দ্বিতীয়ার চাঁদের মতো --মানস চক্রবর্ত্তী

"দ্বিতীয়ার চাঁদের মতো" 
         --মানস চক্রবর্ত্তী 

হলুদ জ্যোৎস্নার কাছে কৃতজ্ঞতা দাবী করে না চাঁদ 
ব্যর্থ ভালোবাসা নয় জীবনের অপমান 
শব্দের মতো অপচয় হয় না তো জীবন  

বিষাদ , অবসাদ , বিষণ্ণতা 
বহুদিন ম্লান করে কামিনী বিকাল 
বহুদিন লোভগুলি উদাসীন 
বহুদিন অশ্রুপাত শব্দহীন 
তবুও বাতাবী ফুলের ঘ্রাণের মতো স্মৃতি 
দ্বিতীয়ার চাঁদের মতো জেগে থাকে  
একদিন পূর্ণ অবয়ব হবে  | 


copyrights@ Manas Chakraborty 
---------------------------------------------------------------------
শ্রী মানস চক্রবর্ত্তী
কবি -লেখক 
 পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

নিশি কথা --প্রিয়তমা ঘোষ

"নিশি কথা"
        --প্রিয়তমা ঘোষ 

হয়ত এবার লোকের পরে থাকা সে অবশিষ্ট ঘুমটা ,
হালকা হাতে দরজায় করা নাড়ছে .
মাথাভাঙ্গা কার্মাটার রেল স্টেশনের  শেষ ট্রেন এর ভেঁপু টাও ;
হালকা বাতাসে মিশিয়ে যাচ্ছে ......

যশোর রোডের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া ট্রাক গুলোও ,
চিল , শকুনের চিৎকার টাকে অতিক্রম করছে .
আর অসম্পূর্ণ সে গল্প গুলো ! 
নিজের স্বপ্নকে পূরণ করার তাড়নায় ;
না জানি চোখের কোণে কত শব্দ লিখছে ......

Copyrights Priyatama Ghosh 
----------------------------------------------
প্রিয়তমা ঘোষ 
কবি-লেখিকা 
 উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ,  ভারতবর্ষ   
----------------------------------------------------------------

     Voice Literary Blog 
     Editor - Bijoy Sarkar 

 Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
          Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------

আশুতোষ তাঁরা --খগেশ সিংহ

"আশুতোষ তাঁরা"
 --খগেশ সিংহ

 সুখে ছিল তাঁরা কষ্টে গড়া তাদের ছোট্ট সংসারে,
  বিশ্বের সর্বসুখ অনুভব করত তাদের পর্ণ কুটিরে।
 হঠাৎ করে বয়ে এল কোরোনা ভাইরাসের ঝড়,
ভেঙ্গে দিল তাদের অতিব যতনে গড়া ঘর।
দিন এনে দিন খেত তবুও ছিল না কোনো কষ্ট,
আজ এই আশুতোষরা দুমুঠো ভাতের ভক্ত।
 কর্মহীন হয়ে তাঁরা আজ বসে আছে ঘরে, 
দিন রাত ভেবে চলছে লকডাউন কবে শেষ হবে।
দুমুঠো ভাতের তরে তাঁরা ছুঁটে হয়ে দিশেহারা,
সন্তানের ক্রন্দন দেখে মা হন আত্মহারা।

নেই তাদের কোনো ব্যাঙ্কব্যালেন্স ও সঞ্চিত খাদ্য, খেয়ে বেঁচে থাকবে লকডাউনের দিবারাত্র।
রেশনের দোকানে পায় না ন্যায্য রেশন,
যতটুকু পায় খেয়ে করে তাঁরা জীবন পালন।
এতোই নির্বোধ তাঁরা জানে না ভাইরাস কেমন,
বলে হাত নেই পা নেই তবু করে মানুষ মারণ।
এই দুর্দিনে তারা শুধু চায় বেঁচে থাকতে অন্ন,
তাঁরাও হতে চায় কালকের জনসংখ্যায় গন্য।

 তাঁরা তো জানে না যে ভাইরাসের জন্ম বিদেশে, 
তা কীভাবে এল এই ভারতবর্ষের মাটিতে।
ভারতের ধনী ব্যক্তিরা গিয়েছিল বিদেশে,
নিজের বা দেশের অভিষ্ট সিদ্ধ করতে।
চীন, আমেরিকা, ইতালি, ইংল্যান্ড ছড়িয়ে ছিটিয়ে,
তাঁরা স্বপ্ন পূরণের কাজে নিজেদের রেখেছিল জড়িয়ে ।
যখন তাঁরা এল ফিরে ভারতবর্ষের বুকে,
কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে গেল ভারতের জনমানসে ।
দোষ নেই তাদেরও কোরোনা ভাইরাস ছড়ানোয়,
 আজ ভারত তথা বিশ্ব ব্যথিত কোরোনার যন্ত্রণায়। সবাই প্রার্থনা করো কোরোনা মুক্ত হোক ভারত তথা সমগ্র বিশ্ব,
ভারত তথা সমগ্র বিশ্বের সমস্ত মানুষ হয়ে ওঠুক সুস্থ্য।

অবশেষে আমার প্রার্থনা ভারতের ধনী ব্যক্তিদের প্রতি,
দীন দরিদ্রদের কাছে গিয়ে দেখাও আপনাদের সহানুভূতি।
আপনারা যদি তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দেন দুমুঠো ভাত,
এই আশুতোষরা হয়তো আবার দেখবে নতুন প্রভাত।

copyrights@ 
--------------------------------------------------------------
শ্রী খগেশ সিংহ 
লেখক
 ইসলাম্পুর, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------


       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------


মা --ক্ষমা কংসবনিক

"মা"
  --ক্ষমা কংসবনিক 
           
         জননী তুমি জন্মদাত্রী
   গর্ভধারিনী মা। 
         সৃষ্টি তুমি পালন হারিনি, 
  তুমি অতুলনীয়া। 
 মমতার আঁচলে বাঁধা, 
       তুমি প্রণয়নী।  
          বক্ষ তোমার মায়াবিনি
    শ্রেষ্ঠ তুমিও জগৎজননী|
           রক্তক্ষরণ, যন্ত্রণা সহন, 
         এসবই তোমার মায়ার ফলন|
            আদি শক্তি সৃষ্টি রূপিণী, 
         তবুও শান্ত তোমার বুকের দহন। 
           সমাজ সৃষ্ট  ভয়াবহদৃশ্য, 
        আজও কলুষিত তুমি মা|
       স্থির বুদ্ধি তিতিক্ষা রমণী, 
 অপার সর্বত্র তোমার ছায়া। 

copyrights@ Kshama Kangsabanik 
---------------------------------------------------------------------

শ্রীমতি ক্ষমা কংসবনিক  
কবি -লেখিকা 
 উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ   
---------------------------------------------------------------

       Voice Literary Blog 
       Editor - Bijoy Sarkar 

Sub-Editor - Monowar Hossain 

       ..... Chief Organizer.....
           Chandan Mahanta  

Voice Literary-Cultural Organization
---------------------Voice------------------