Wednesday, 29 July 2020

কবিতা : পারমিতা সরকার

কবি পরিচিতি : পারমিতা সরকার।  
জন্ম--রায়গঞ্জ।  
ছোটবেলা থেকেই মা ও বাবা এক ভাই ও এক বোনের সাথে সংগ্রাম করে চলতে হয়েছে আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকার জন্য । কিন্তু পড়াশোনার উৎসাহ বাড়িতে খুব বেশী ছিলো। আমাদের তিন ভাই বোনের ঘুম আসতো মায়ের মুখ থেকে গল্পের বই এর গল্প ও সঞ্চয়িতার কবিতা শুনে। 

**পড়াশোনা--মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক--রায়গঞ্জ গালর্স স্কুল

*স্নাতক--রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়(বাংলা বিভাগ)

*স্নাতকোত্তর (বাংলা বিভাগ/রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়,কলকাতা )। 


**লেখা শুরু স্কুল পত্রিকা থেকে, তারপর আবার কলেজ পত্রিকায় গল্প ও তথ্য ভিত্তিক লেখা, সাথে কবিতা, তবে এখন কবিতাটাই বেশী লিখি। কিছু পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে, চলতি বছরে(2020) কলকাতা বইমেলায় ২ টো কবিতা ভিন্ন ভিন্ন দুটো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, ঝুলিতে দু'চারটে পুরস্কার আছে। 
**শখ--বিভিন্ন রকম কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। যেমন-ধ্রুপদি নাচ, থিয়েটার, নিজের যোগাসনের স্কুল চালানো, একটা ছোটো ব্যবসার কাজ, ভূতের গল্পের বই ও ছবি দেখার অসম্বভ নেশা, অনেক রকম হাতের কাজ করা,মেয়ের পড়া, নাচ, আঁকা,  আর সাথে বাবার ও শ্বশুর বাড়ির মিলে এগারো জন মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলা। এর মাঝে নিজের জন্য কিছু সময় বের করে লেখা । লেখা আর পড়া এই দুটো বিষয় আমায় উজ্জীবিত করে। এই উৎসাহ এসেছিলো মায়ের থেকে । 
আজ মা থাকলে খুব খুশী হতেন। পনের বছর আগে দুরারোগ্য ক্যান্সারে মা চলে গেছেন। ওনার আশীর্বাদ সর্বদা আমাদের সাথে আছে আর থাকবে এই বিশ্বাস করি। 

-----------------------------------------------

বোধ


তেজদীপ্ত শীতলতায় 

খরস্রোতা জীবন,

আলটপকা শূণ্যতায়

উন্মনা মন ।

অব্যক্ত প্রতিশ্রুতির

বিস্তৃত মায়াজাল ,

অবচেতনের দোলাচলে 

ক্ষণজন্মা জীবনকাল ।

--------------------------------------------------------------

 ডাক 


জল আমায় ডাকে 
এক অমোঘ আকর্ষণে,
যখন জোৎস্নারাতে  
নারকেল পাতার ফাঁক দিয়ে 
চাঁদের ছায়া পড়ে টলটলে জলে-
তখন সেই জল আমায় ডাকে 
দূরের হাওয়ায় তার ধ্বনি
শোনা যায়, আর আমি
বাঁধা পাই কর্তব্য আর নিয়মের শিকলে,
তবুও জল এসে ডাকে আর 
ফিসফিসিয়ে বলে--
পালিয়ে আয় 
আমি কেমন চেয়ে থাকি ,
কিন্তু যেতে পারিনে।
        

------------------------------------------------------------

উল্টোকথা 


ও আমায় প্রতিদিন দেখে 

কখনো শাড়িতে, কখনো সালোয়ারে, 

কখনো জিন্স, আবার কখনো রাতপোষাকে,

নিত্যদিনের কাজে অথবা সাজে ।

আসলে ও ঘুরেফিরে নিজেকেই দেখে 

মুগ্ধতাভরা চোখে ।


আর আমি দেখি ওর চূড়ান্ত স্বাধীনতা 

কর্মমুখর দিনগুলোতে ভীষণ ব্যস্ততা

কিংবা ছুটির দিনের অলসতা।

তখন বুকচাপা হতাশারা আমায় ঘিরে ধরে।

মনে হয় মাঝের দেওয়ালটা ভেঙে দেই।

চলে যাই সামনে, বেরিয়ে পড়ি বাইরে,

পিছনে পড়ে থাকুক সেই ঘষা কাঁচের জীবনটা ।


কিন্তু তা আর হয়না, আমি যে ওরই প্রতিবিম্ব ।

আমি যে নকল, ওর জীবনের উল্টো দিক,

তাই আমার জীবনে সবকিছুই উল্টো।

আসলে আমি যে আয়না।।

No comments:

Post a Comment