Wednesday, 29 July 2020

শিপ্রা দেবনাথ (টুলটুল)

কবিতা
--------

কবি পরিচিতি :
শিপ্রা দেবনাথ (টুুুলটুলল)  অনুবাদিকা, লেখিকা কবিতা প্রবন্ধ ছোট গল্প। "মহাবঙ্গ সাহিত্য পরিষদ" ট্রাস্টের একজন সদস্য এবং প্রচার সম্পাদক।  "ভয়েস সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের  উপদেষ্টা। প্রচুর আন্তর্জাতিক পত্রিকা এবং আন্তর্জাতিক যৌথ সংকলনে ইতিমধ্যেই তার লেখা এক অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। ২০১৯ সালে মহাবঙ্গ 'স্মারক সম্মাননা', 'মহাবঙ্গ সদ্ভাবনা' সম্মান "মহাবঙ্গ বিবেক চেতনা সম্মান"'মহাবঙ্গ শিক্ষা সম্মান', "মহাবঙ্গ শান্তি সম্মাননা"ইত্যাদি এবং একই বৃন্তে দুটি কুসুম"সাহিত্য পরিবার থেকে "কবিরত্ন"সম্মাননা অর্জন করেন।মুকুর আন্তর্জাতিক সাহিত্য পত্রিকা, মুক্তি মুক্তি আন্তর্জাতিক সাহিত্য পত্রিকা, শব্দমূল পত্রিকা, সাতকাহন পত্রিকা, বঙ্গীয় সাহিত্য দর্পণ, নব পরিচয় পত্রিকা এই আন্তর্জাতিক সাহিত্য পত্রিকা গুলোর নিয়মিত লেখিকা। 

বাংলাদেশের কবি হুমায়ুন রাজার সম্পাদিত "কবিদের কবিতা"যৌথ সংকলন গ্রন্থটিতে তার কয়েকটি কবিতা স্থান পায়। কবির  একক কাব্য গ্রন্থ "বোধোদয়" এবং "এলোমেলো ভাবনা"ইতিমধ্যেই কাব্যজগতে এক অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। তার একক  কাব্য গ্রন্থ 'বিরহী প্রেম' খুব শীঘ্রই প্রকাশ পেতে চলেছে। ইতিমধ্যেই আসামের বন্ধু কবি এবং বিশিষ্ট সাহিত্যিক রাজুমনি শইকীয়ার অসমীয়া ভাষায় লিখিত "লক ডাউন" (fight against silent killer) উপন্যাসটি বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন।

--------------------------------------------------------------------

 ভুখ

তুমুল দামামা বাজাচ্ছে
ভুখ নামের ওই দূর্মুখ
পেটের মাঝে!
কাতর চেয়ে আছে দেখো
শত শত সকরুন মুখ
সকালে দুপুরে সাঁঝে।
বেঁচে থাকাটা এখন নয় প্রশ্ন
বড় কথা জুটানো
দুবেলা দুমুঠো অন্ন,
ওই যে  পথ চেয়ে বসে 
আছে হাজারো নিরন্ন
তাদের জন্য।
যারা অসহায়ের পাশে
আছে আজ,
ফেলে নিজেদের হাজারো কাজ
তাদের করি আমি ধন্য ধন্য
আমি অতি নগণ্য
তাদের করি পাথেয়
তাদের বলি আমি বিশ্ববরেণ্য।
হে আর্ত অসহায়
ভুলোনা তাদের যারা লড়ছে
তোমাদের জন্য
নিজের প্রাণ করে বিপন্ন।
তাদের জন্য তোমার
প্রাণের আশিষ টুকু
দিও আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে
চিৎকার করে বলো
ওগো তোমরা দেবতুল্য।
চোর লুটেরা যারা 
কুড়িয়ে নিচ্ছে ঝোলা ভরে
দীনতার অভিসম্পাৎ।
ওরা চরম দরিদ্র 
নিকৃষ্ট দারিদ্রতাই ওদের সম্পদ
এব্যাপারে ওরা বলিষ্ঠ চরিত্র।

--------------------------------------------------------------------

লক ডাউন


জীবন কাটছিল যখন চলার ছন্দে
ছিলাম না জানি কত আনন্দে।
তখন হয়তো বুঝিনি,
ছন্দ হারা আজ সকল জীবন
ছন্দহীন বিশ্ব ভুবন।
দিনরাত কাটছে শঙ্কায়
প্রহর গোনে প্রতিটি প্রাণ দুশ্চিন্তায়,
কাটবে কতকাল আর এহেন নিরানন্দে!
গতিহীন ছাত্র জীবন
কবে তারা দেখবে আবার নিজ বিদ্যালয়ের মুখ
কবে শুরু হবে গতিময় পঠনপাঠন আগের মতন?
কবে দেখব আবার কচিকাঁচাদের সেই হাসিমুখ
কবে ফিরে পাবে তাদের হারানো সে সুখ?
যারা ছোটো খাটো দোকানদার
রোজ বেচাকেনা করে চলতো তাদের সংসার।
কতদিন হলো বন্ধ তাদের দোকান পাট
বন্ধ তাদের রোজগার,
এভাবে আর কতদিন চলে 
কে নেবে এখন তাদের পেটের ভার?
 নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমনিতেই তাদের
 এখন কেমন দুরবস্থায় দিনযাপন করছে ওরা,
 প্রয়োজন বোধ করেছে কি কেউ 
 তাদের খোঁজ রাখার?
 দায়িত্ব কেউ নিয়েছে কি তাদের কথা ভাবার!
 ভাবছে যে যার নিজের পেটের 
 দুমুঠো অন্নের নেই জোগাড়।
 ভেবেছে কি কেউ সে কত অসহায়?
তাদের ঘরের শিশুদের কথা 
ভেবেছে কি কেউ একবার!
বড়দের ওতো পেট আছে বৈকি
তাদেরও তো খিদে পায়,
বলে যদি দেয় কেউ 
তারা কি এখন করবে উপায়?
পড়সীর ঘরে লাগলে আগুন
তাপ তো লাগবেই নিজের ও বাসায়
এরকম আছেই কথায়।
কার পাপে কে ভোগে বোঝা বড় দায়
কিছু ভাল্লাগেনা বাপু যাই তুমি বলোনা
ইঁদুর যখন পেটে দৌড়ায়।

-----------------------------------------------------------------

হঠাৎ করেই


হঠাৎ ঝড়ের মতোই এসেছিলে জীবনে আমার
কোন সে সুদূর হতে প্রেম নিয়ে হাতে
হৃদয় তোমার সপে দিয়েছিলে
উপেক্ষা করতে পারিনি তখন
তোমার ভালোবাসার আহ্বান।
জড়িয়ে নিয়েছিলাম তাই বাহুডোরে 
একান্ত আপন করে তোমারে।
রচে ছিলাম তোমার আমার ভালোবাসার ঘর
তোমার চোখের ভাষা বলে দিয়েছিল সব
মনের কথা হৃদয় বুঝেছিল।
ভেসে গিয়েছিলাম আনন্দ সাগরে
কত মধুর সে সম্পর্ক ছিল
প্রেমের অট্টালিকা উঠেছিল গড়ে।
সেদিন ছিল ফাগুনিপূর্নিমা মনে পড়ে?
দেখো আজও আকাশে উঠেছে চাঁদ শ্রাবণী পূর্ণিমার,
তবে তার গায়ে আজ সে মাখে নাই জোছনা
আকাশের মুখ ভার আমার মতোই
 বুকে অভিমান নিয়েই জুড়েছে অঝোর কান্না,
 ভাবিনিতো দমকা হাওয়ায় উড়ে যাবে আমাদের প্রেমের ঘরকন্যা,
 সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে যাবে চলে এমন তো কথা ছিল না।
 জানি সবার কপালে সুখ সয়না,
 তাইতো আমার ও নেই কোন বায়না
 দিলাম তোমায় তাই উড়িয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মত,
 জানি  নিঃস্বার্থ প্রেম আটকে রাখা যে মানা।
 যাও সাঁঝের পাখির মতো নিজের বাসায় ফিরে
 তাকিও না আর পিছু ঘুরে।
 হোক যত দুঃখ আমিও সামলে নেব,
 নিজেকে নিজের মত করে।

--------------------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment