Wednesday, 29 July 2020

কবিতা : শম্পা দাস

কবি পরিচিতি : আমি শম্পা দাস এখন আড়িয়াদহের বাসিন্দা। নৈহাটী শহরে আমার জন্ম।পড়াশোনা বারাকপুর গার্লস হাই স্কুলে,তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ‍্যালয়ে ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ শেষ করি।

ছেলেবেলা থেকেই  কবিতা আবৃত্তি ও নিজে কবিতা লিখতে ভালোবাসি।প্রথম প্রকাশিত বই "কবিতার কথা"।

-----------------------------------------------------------


আমার কবিতা 

আমার কবিতায় নেই কোনো কাব‍্যিক ছন্দ।
আছে মাটির সোঁদা গন্ধ, আর
ক‍্যাকটাসের ঝাড়,তাইতো, লিখি বারবার।
ফণিমনসার আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ করি মিথ্যার প্রাচীর।
শব্দগুলো এক একটি ধারালো অস্ত্র।
শান্ দিয়ে রাখি, কখন কোথায় পড়ে দ‍রকার।
চারিদিকে ব‍্যাথাতুর হাহাকার।

কবিতা, ভুলেছে ছন্দমিল,লেখনী করেছে গরমিল।
তালে-তালে দেবে করতালি,
কবিতা-সুধা দেব ঢালি।
তোমার পিয়াসী মন রবেনা খালি,
কবিতা ভরে দেবে শূন্য ডালি।

কবিতা কুঞ্জে গাইবে পাখি গান,
তোমার মন ধরবে নতুন তান।
না থাক, কোনও প্রেম-প্রণয়ের আভাস,
বারুদের গন্ধে ভরে উঠুক বাতাস।
বিদ্রোহ চারিদিকে বিদ্রোহ আজ,
করি এবার লেখনীতে যুদ্ধের সাজ।
তাড়াবো যত সুবিধাবাদের ছন্দ,
এরকম কবিতা হবে নাতো মন্দ?

--------------------------------------------------------

আমরা করবো জয়


আমরা করবো জয়,
আর নেইতো ভয়।
হিংসা বিবাদ ভুলে,
মাটির পৃথিবীতে হাঁটি চরণ ফেলে,
জাতপাতের রাজনীতি ছুঁড়ে ফেলে,
একই কণ্ঠে সাম‍্যের গান গেয়ে,
সাজানো হিসেবের গরমিলে---মানবতা ছুঁয়ে দিলে---------এ সত্য নিশ্চয়,
আমরা করবো জয়।

আজ ঝড় উঠেছে,
মৃত্যু মিছিলে পৃথিবী কেঁপেছে।
ঝড় থেমেও যাবে একদিন,
পৃথিবীতে রয়ে যাবে মনুষ‍্যত্বের   ঋণ।
হাতুড়ি, শাবল,গাঁইতি চালায়ে
ভাঙলো যে পাহাড়,
পাথরে পাথর ঠুকে জ্বেলেছিল অঙ্গার।
আদিম যুগের বন‍্যতাকে ঢেকেছে সভ‍্যতার মোড়কে।
হ‍্যাঁ, সেই পারে ,পদাঘাত  হেনে
দমন করে  মহামারীর ক্ষতকে।

মানুষের শুভবুদ্ধি, সচেতনতাই ভরসা।
ডাক্তার নই,মোরা শব্দ চাষা।
কলমে-কলমে, প্রাণে-প্রাণে মিল।
মৌমাছির চাকে মেরো নাকো ঢিল,
সর্বনাশা ,পোড়ায় আশা,
সকলেই মরে যদি বাঁধে রোগ বাসা।
পরাজিত করে ফেলবই তারে।
আয়-আয় আরো বেঁধে বেঁধে
চলি, মানবিকতার সুরতান তুলি।

-----------------------------------------------------------

ফাগুন কেন?


সিঁদুর রাঙা রঙে তুমি, নাহয়
মন রাঙালে।
আবীর খেলায় ফাগুন দিনে,
নাহয় মন ভোলালে।
মায়ের করুণ চোখের অশ্রু জলে,একোন খেলায় মাতলো ফাগুন?
ঝলসে গেল স্বজন-দেহ,
জ্বললো কেন বিভেদ আগুন?
রক্তনদী বয়েই চলে,
পার হবে কে সাঁতরে?
রক্তপিশাচ দস্যু গুলো
ফেললো জীবন আঁচড়ে।
হিংসা-বিদ্বেষ লাগাম ছাড়া,
গরীব মানুষ গৃহহারা।

এমনি দিনে শ্রাবণ এলে,
শান্তি-সুধা বিলিয়ে দিলে,
বাঁচতো স্বজন প্রাণ,
গাইতো জীবন -গান।
কোন সে মাথা, ঠান্ডা ঘরে
বসে,শুধুই লাভের অঙ্ক করে?
লাঠালাঠি আর বিভেদ হেনে,
লোককে দেখায়,আইন মেনে
মুখেই কেবল,শান্তি চায়।
উসকিয়ে দিয়ে ধর্ম-আগুন,
লোককে শেখায় নিয়ম-কানুন।

এমন দিনে ফাগুন কেন?অঝোর ধারায় শ্রাবণ আনো।
ধুয়ে যাক হিংসা-বিবাদ,
বাঁচুক মানুষ মিটিয়ে 
তাদের মনের সাধ।

--------------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment