কবি পরিচিতি : দিলীপ দাস। জন্ম ১০ ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে, মালদা শহরের উত্তর কৃষ্ণপল্লী। পড়াশোনা: রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির, মালদা, ও মালদা জিলা স্কুল। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ শাস্ত্রে। দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী বিশ্ববিদ্যালয়, আজমীর থেকে ইংরেজি সাহিত্যে। তৃতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন নেতাজী সুভাস মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা থেকে ইংরেজি ভাষায়।
কর্ম জীবন শুরু হয় ভারতীয় বায়ু সৈনিক হিসেবে। প্রায় ১৮ বছর সেখানে সেবার পর, বর্তমানে ১৩ বছর যাবৎ ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, মালদা শহরে কর্মরত। প্রকাশিত বই:
(1) Spoken English,
(2) You can Learn and Explore Yourself
(3) Indian Social Problems
(4) Women folk of India: A voice unheard
(5) পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে বঙ্গ সংস্কৃতি।
----------------------------------------------------------
ত্যাগের মহিমায়
বিপ্লবীর বলিদান,
সাতচল্লিশের পুনর্জন্ম স্বাধীনতা,
ভারতমাতার এক বীরত্বের ইতিহাসে গাঁথা।
অখন্ড ভারত আজ তাদের ধৈর্য্যের ফসল,
আগামী প্রজন্মের কাছে যা সৌভাগ্যের দখল।
অমর বীর শহীদদের স্মরণে করি যে নতপ্রান,
বাঁচিয়ে রাখিতে পারি যেন দেশের সম্মান।
সার্বভৌমত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী,
সিরাজদ্দৌলা, মৌর্য চন্দ্রগুপ্ত।
শিবাজী, নেতাজি, তাতিয়া তোপি,
উজ্জ্বল নক্ষত্র তার সাহসে বলিয়ান।
বৃথা যাবে না তোমাদের আহ্বান জানি,
প্রাণের বলিদান বীরত্বের 'মনু' ঝাঁসির রানী।
আজ আমিও দেশের বিশ্বস্ত সৈনিক,
জলে, স্থলে ও আকাশে অতন্দ্র প্রহরী।
আমার দেশের মানুষের প্রাণ,
আমার প্রাণের চেয়ে বেশী দামী।
হোক না কার্গিল, দোকালাম, তিব্বত , গলওয়ান।
ভারতীয় সৈনিক সবচেয়ে বেশি বলবান।
যখন যুদ্ধে যাওয়ার ডাক আসে আমার,
আঁচলে চোখের জল মুছে নিও মা।
বিদায় দেয়ার বেলায় ভরসা দিও ,
যেন বিজয়ের ধ্বজা উড়িয়ে দিতে পারি।
তোমার কোলে শিশুর মতো লালন করেছ যারে,
দেখতে পাবে তোমার ছেলে বীরের মত বলে,
'স্বাধীনতা আমার জন্মগত অধিকার!'
রক্ত মাখা অস্ত্র ধরা আমার দুহাতে,
দেশ মাতৃকার রক্ষায় যদি মৃত্যু আসে,
দেশের পতাকা উত্তোলিত রাখিব,
হাসিমুখে করি এই অঙ্গীকার!
হে দেশবাসী!
তোমরা জানিয়ে দিও তখন,
আমার শোকাহত মাকে,
একটু সহানুভুতি!
এই বলিদান স্বার্থক হবে,
তোমাদের জীবন রক্ষিত হলে,
আমার প্রাণের বদলে!
-------------------------------------------------------
নদী
আমি;
আমি নদী,
বিশ্ব জনের আবাহনে,
আমি ঝরে পরেছি সজোরে।
নির্মম ভাবে আমি বিদারিত করেছি চিরতরে,
নিভৃত বিশালতার সাক্ষী সেই অদম্য গিরিখাত।
আমি;
আমি প্রকৃতি,
তোমার জীবন চলার সাথে,
পথের বাঁকে সমর্পিত এক সৈনিক।
সৃষ্টির ও বিনাশের যুদ্ধের বাতায়নে,
সমন্বয়ের নিরলস প্রচেষ্টায় উদ্ধত,
তোমার পূর্ণতার লক্ষে এক বাগদত্তা।
আমি;
আমি ইতিহাস,
নিশিতের নেশায় বিভোর;
প্রভাতের আলোয় আলোকিত;
অজস্র বন্ধন-বিচ্ছিন্নতার সাক্ষী।
দেখেছি সত্য-মিথ্যার পথ চলার সঙ্গী।
দেখেছি বহু ভাঙ্গা-গড়ার নিরলস প্রচেষ্টা।
আমি;
আমি তোমার বন্ধু,
নিষ্পাপ শিশুর মতো ভালোবাসার,
বিশেষ প্রয়োজনের আর এক নাম।
চলার পথের আশার-নিরাশার বাণী,
তোমার তৃষ্ণা মেটানোর সোমরস।
---------------------------------------------------------
জিজ্ঞাসা
কোন গগনে মেঘের ভেলায় ভেসে ওই,
মন জানালার বাতায়ানে উরান দিলি?
পূর্ণ হল কি আজ মেঘ বাদলের দেশে,
ওই আগামীর স্বপ্ন দেখার সেই আশা?
সবুজে ঘেরা বন পাহাড়ের বুকের মাঝে,
মায়ের মতন যত্নে থাকিস কোন কোলে?
নীল আকাশের বন বাতাসের কি ডাকে,
হারিয়ে যাওয়া কি অজানা কি নেশায়?
ছন্দ ছাড়া পতন হওয়া পিয়াসীর মন,
আনন্দ দিস আপন মনের কোন সুরে?
মুগ্ধ মননে মুক্ত গগনে মেঘের কোলে
অবাধ বিচরণ করতে পারিস কি করে?
মন মাতানো সুরের পাখি কোথায় উড়িষ,
বাঁধন ছাড়া কোন বাগিচার বুলবুলি তুই?
কিসের বশে কিসের ডাকে মন হারিয়ে,
কোথা থেকে বাঁচার উপায় পাস দেখি?
স্বর্গ নরক দেব মানুষের কথা জানি,
স্বপ্নে দেখা পক্ষীরাজের দেখা পেলি?
বলতে পারিস আমার প্রিয়জনেরা কোথায় আছে,
বিশ্বাস করিস তোর ওপরে বাসযোগ্য স্বর্গ আছে।
----------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment