কবি পরিচিতি : দেবাশিস বিশ্বাস (মুরারি)।
বাবাঃ দীনবন্ধু বিশ্বাস।
মাঃ শান্তিরানী বিশ্বাস।
জন্মঃ ১লা জানুয়ারী, ১৯৭২ সালে। বাসস্থানঃ নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানার অন্তর্গত বাবলাবন গ্রাম।পূর্বপুরুষদের বাসস্থান বর্তমান বাংলাদেশের যশোর জেলার অন্তর্গত ঝিনাইদহ সাবডিভিশান।
পেশায়ঃবাংলা বিভাগের হাইস্কুল শিক্ষক।
অবসর সময়ে কবিতা চর্চা। নেশা ঘোরা এবং বাউল ও কীর্ত্তন গান করা।
--------------------------------------------------------
হুজুকের কবি চাই
যুগের সাথে তাল মেলাতে হয়েছিলে হুজুকের কবি,
গেয়েছিলে শিকল্ ভাঙ্গার গান;
তারুন্যটা কাঁটা গাছের উচ্চে রেখে,পুচ্ছটি নাচানোর মত,গেয়েছিলে মানব প্রেমের সাম্য গান।
হুজুকে ভগবানের বুকে পা দিতেও কুণ্ঠিত করোনি চরণ,
চির তারুণ্য ছিল তোমার বক্ষ,কণ্ঠ,হাতে আর পায়ে;
তাই কান্তার গিরি দুস্তর পারাবার পার হয়েছো,সব্যসাচী-বিদ্রোহী হয়ে;
হুজুগ থেমে গেল,নিন্দুকের কণ্ঠে ধ্বনিত হল,কবিতায় নয়;নজরুল গানে বেচে আছে।
মধুর প্রেমে রত ছিল যারা,কিংবা বিচ্ছেদ অনলে,নতুবা অঙ্কুরিত ভালবাসায়;তারা তোমার গানে ফিরে পেল প্রাণ।
আল্লার বান্দার কণ্ঠে ধ্বনিত হল, "সাহারাতে ফুটলোরে রঙ্গীন ফুলের মালা",
বৈষ্ণবের কণ্ঠ চিরে বেরিয়ে এল,
"শ্রীকৃষ্ণ নাম মোর জপমালা নিশিদিন", শাক্তের সাধনা সঙ্গীতে ভরে উঠল বাংলার আকাশ বাতাস; "ওমা তোর চরণে কি ফুল দিয়ে পূজা হবে বল"?
শূন্য এ বুকে পাখি ফেরানোর যে আকুল আবেদন তোমাতে ছিল,
আজ তেমনি একটা আবেগ নিয়ে,ডাকছি তোমায়, বলছি তোমায়;
আর একটা দূর্দাম্ত হুজুগ নিয়ে এস তুমি মর্ত মাঝে,
যে হুজুকে বিদ্রোহীর মত বিদ্রোহ আছে, আছে বাস্তুঘুঘু আর রাঘব বোয়ালদের নিয়ে,আগুন জ্বালার গান;
যেমনটা গেয়েছিলে সাম্যে, বিষের বাঁশিতে, পূবের হাওয়ায় আর ছায়ানটে;
সময়টা বড় মন্দ কবি হুজুগটাও আতঙ্কময়; করোনা ভাইরাসের চেয়েও ছোয়াচে "ওরা"
মুখে মানবতা,নিশ্বাসে বিষাক্ত বিষ;
প্রতিবাদি কলমের কালি এযুগের কবির বড় কম!
তাই লাথি মার ভাঙ্গরে তালার মত,আর একটা হুজুকের কবির হাজার স্বাগত জানাই ----------
ঠিক তোমার মত।
-------------------------------------------------
ঈদের খুশি এক ফালি চাঁদে
ঈদ নীরেট সত্য খুশির জোয়ার,
একটা বাঁধ ভাঙ্গা আবেগ;
ঝিকি মিকি চাঁদের মত,
মনটা নানান রঙ্গে তরাঙ্গিত
জীবনের আনন্দ মেলায় দিকে দিকে ধায়;
রমজানের চাঁদটা ওটে,
সংযমী সত্তাটা আল্লার উয়াস্তে নিজেকে সপে দিতে, সংযমে রত হয়,পবিত্রতায় রোজা রেখে;
একটা নয় দুটো নয় পর পর তিরিশ রোজার নিয়তে বান্দা খোদা উন্মুখি হয়ে ওঠে- - - - -
খোদার দোস্ত্ মোহাম্মদ যে আজ্ঞা দিয়েছিল,উম্মতে তার প্রকাশ রোজার নিয়তে;
কামনা শূন্য বাসনা শূন্য মালিকের উপাসনা, ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে যায় মহামিলনে-----ঈদ্ নাম যার;
নবাব নফর বাদশা ফকির ভেদাভেদ নেই,
নেই কোন বিদ্বেষ বিষ;
নামাজটা একসাথে
তারপর হেলে দুলে হাতে হাত গলায় গলা রেখে,সে যে এক খুশির আকাশ,খুশির বাতাস, মিলনের মহামেলা।
নতুনের সাজে সুরমা পরিয়ে চোখে,
কি যে ভাললাগা হল্লায় মেতে ঈদুল ফেতর আসে;
আমি জানি,আমার মন জানে,ঈদের ভোরের আযানটা কানের ভিতর দিয়ে কেমনে মরমে প্রবেশ করে;
সুগন্ধি আতর মেখে,ফুলের সুবাস নিতে নিতে,ঢল নামা নামাজের কাতার!!
কিযে মহানন্দ উথলিয়ে ওঠে খুশি খুশি ভাবে--------
ঈদুল ফেতর আসে মুমিনের ঘরে ঘরে;
ঈদে যার মজেছে মন,
মেনে চাঁদের দিন ক্ষণ,
কাঁচির মত একফালি চাঁদে।
---------------------------------------
গ্রীষ্মের টুকিটাকি
তাপে দগ্ধ গ্রীষ্ম আসে বসন্তের ঐ বুক্ মাড়িয়ে।
নতুন গন্ধে ধর্মপূজা বৈশাখে বাসন্তি নিয়ে।।
ঝিম ধরা ঐ মাঠের পারে কৃষক বোসে বাবলা তলে।
তৃষ্ণাতে যায় বুকের ছাতি খাঁ খাঁ রোদে পথিক চলে।।
শুকনো নদী বিলের ধারে চিল কাঁদে সব হিজল ডালে।
কাঁদার মাঝে ছোঁ মেরে তাই শিকার কিছু পাইনি বলে।।
আগুন সম হলকা বাতাস মুখ পুড়ে যায় চোখ পুড়ে যায়।
ঢুলু ঢুলু চোখের পাতায় ক্লান্ত চাষা বটের ছায়ায়।।
তীব্র গরম স্বস্থি পেতে নদীর জলে ডুব দিয়ে তায়।
কলসি কাখে ভেজা শাড়ী গ্রাম্য বধু স্নান সেরে যায়।।
শহর বল পল্লী বল দুপুর বেলায় দুয়ার আটা।
বিশ্ব ভূবন গভীর ঘুমে জেগে কেবল দুষ্টু কটা।।
সবুজ আভা নেইকো মাঠে বসুমতির বুকটা ফাঁটা।
পাটের চারার রক্ত মুখে বরুণ দেব ছড়ায়নি ছিটা।।
মেঘ পানির গান হয়না এখন স্যালো মেশিন হয়েছে তাই।
জলের লেয়ার নেমে যাওয়ায় মেশিন থেকেও কায়দাটা নাই।।
আম জামেতে ভরপুর হলেও কুড়ানোর ধূম নেইকো এখন।
ভদ্র ঘরের নীরস ছেলে জানেনা তার কায়দা কানুন।।
তালের পাখা নেইকো হাতে ফ্যান এসিতে ভরতি বাড়ি।
মধুর প্রেমে মত্ত হওয়ার সময়টা দিয়েছে আড়ি।।
যতই গরম ঘাম ঝরুকনা পেট শোনেনা গ্রীষ্ম কথা।
লেবার শ্রেণীর কর্মধারা তাই চলে ভাই যথা তথা।।
গ্রীষ্ম পোড়াই জীর্নপাতা পোড়াই পুরাতন সকল।
নতুনকে সে আনবে বয়ে এই আশাতেই লক্ষ সচল।।
কালবৈশাখী ভাঙ্গবে যেমন সজল ধারায় গড়বে সবুজ।
দাব দাহতে দগ্ধ হয়ে আমরা যতই হইনা অবুঝ।।
বাস্তবতার গ্রীষ্ম এবার লক ডাউনেই দিচ্ছে পাড়ি।
স্কুল আফিস টের পেলনা গ্রীষ্ম কেমন ঠেলল গাড়ি।।
------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment