কবিতা
--------
কবি পরিচিতি : জন্ম: ২৭ ফেব্রুয়ারি , ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দ , বাঁকুড়ার একটি ছোট্ট গ্রামে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই শুরু হয় বিদ্যালয় বর্হিভূত পুস্তক পাঠ | দিদির হাত ধরে তখনই শুরু হয় লাইব্রেরিতে যাতায়াত।
' সংবাদ ' পত্রিকায় প্রথম লেখা " মনীষীদের মা " প্রকাশ পায় | পরে ঐ পত্রিকাতেই প্রথম অণুগল্প " আত্মসম্মান " প্রকাশিত হয় |" বিদ্যাভারতী সংবাদ " নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকায় শুরু হয় প্রবন্ধ ও নিবন্ধ লেখা | ' প্রাঙ্গণ সাহিত্য পত্রিকা ' র যৌথ কাব্য সংকলন " মনের দরজায় দাঁড়িয়ে " তে প্রথম কবিতার আত্মপ্রকাশ | বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয় বহু কবিতা | এছাড়া ' সনেট ' , ' সাতকাহন ' বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত কবিতা সংকলনে কবি বেশ কিছু কবিতা লিখেছেন।
শিক্ষকতা ও কবিতাকে পাশাপাশি রেখে কবি জীবন পথে এগিয়ে চলেছেন।
----------------------------------------------------------------
ফিরে আসুক শুদ্ধ স্মৃতি
তুমি শীতের মতোই শৈত্য
এ কোন স্বর্গ বানাচ্ছি আমি পুরুষ অদ্বৈত
দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে আমাদের সুলভ সমাচার
অধিবর্ষের মতো অতিরিক্ত স্পর্শ
মনে হয় পুরানো শতাব্দীর কোনো এক গোধূলি হর্ষ |
না ফুরানো আশা , না পাওয়ার ব্যথা
সবই কী উপনিষদের তত্ত্ব কথা ?
কাস্তের মতো বাঁকা চাঁদ , সেই মিহি ঘ্রাণ
নিশ্বাসের প্রতিশব্দ আর অবেলা অঘ্রাণ
সবই কী তুমি খুলে রেখেছ , ভুলে থেকেছ ?
মলমাসের মতো কোন্ অশুদ্ধ তিথি
তোমার শিয়রে এখন উদ্ধত্ব অসি ?
চৈতন্যের মগ্নতা কাটিয়ে তোমাতে আসুক
তোমার শুদ্ধ স্মৃতি |
---------------------------------------------------------------------
আমাদের সেই গল্পটা
আমাদের সেই গল্পটা আজ শেষ
এমন ভাবছ কেন ?
হতে পারে
বিকেল আসতে আর বেশি দেরি নেই
হতে পারে
গাব গাছের মাথার উপর দিয়ে শঙ্খচিল উড়ে গেল
হতে পারে
ইডিয়টের মতো হুজ্জোতি করিনি |
আমি এখনো দাঁড়িয়ে আছি
হাঁদার মতো - তিন মিনিট , চার মিনিট -
কয়েক ঘণ্টা , অনেক বছর - বহুবছর ...
আমি জানি
রাত্রিরও একটা সৌন্দর্য আছে
মৃতসঞ্জীবনী মন্ত্র শুধু চাঁদের কাছেই আছে
রাত্রেও ফুল ফোটে
শিউলির জীবন তুমি কিভাবে অস্বীকার করবে ?
কুয়াশার চাদর জড়ানো রাতে
কোনোদিন গেছ রূপনারায়ণের কাছে ?
শুনতে পাবে বুড়ো অশ্বত্থগাছটির নিচে
এখন এসরাজের বিষাদ আর
রূপনারায়ণের জলে আইবুড়ো মেয়েটির
ম্লান মুখের ছবি |
ভালোবাসার এই গল্পটাই শুধু জানি
কারণ গল্পটা এখনো শেষ হয়নি ....
-----------------------------------------------------------------
স্মৃতি ফেরানোর দিন
বৈশাখী বিকালে বিষাদ
ঝাউবনে আমি একা
পাশে নামানো বেহালা
বসন্ত পেরিয়ে গেছে , বোকা বোকা বন
বেহায়া কোকিল এখনও ডেকে চলে নিরন্তন |
বেগবতী নয় নদীটির পাশে খুলে রেখেছি জুতো জোড়া
নদীর জল মেখে নিতে বড়ো ইচ্ছে করে
বাহুতে আর বুকে ,
লাল আলো এখন লেগে আছে নদীতে
লম্বা লম্বা ছায়া ঘনাল জলে
আমি এখনও বসে আছি গোধূলি বিকেলে
নদীকে প্রণাম , ঝাউকে প্রণাম
প্রণতিতে মুছে যায় সব অভিমান |
পদ্যছন্দে নেই আজ বর্ণালী সুখ
বরবর্ণিনী তবু চলো বুড়ো বটতলা
অথবা বাগান , আখ্যান ছেলেবেলা
হলুদ ধানের পাশে সবুজ উপত্যকা
বেল , বকুল , বাতাবীর ফাঁকে
এখন চাঁদের আনাগোনা |
সন্ধ্যামণি কত ফুটে আছে
প্রজাপতি হাজার উড়ে আসে
স্মৃতি ফেরানোর দিন এখনও ঢ়ের পড়ে আছে
চলো আবার গিয়ে বসি
চাঁদের সাথে , তারাদের সাথে
হিজলের পাশে |
No comments:
Post a Comment