Wednesday, 29 July 2020

মানস চক্রবর্তী

কবিতা
--------

কবি পরিচিতি : জন্ম: ২৭ ফেব্রুয়ারি , ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দ , বাঁকুড়ার একটি ছোট্ট গ্রামে।  

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই শুরু হয় বিদ্যালয় বর্হিভূত পুস্তক পাঠ | দিদির হাত ধরে তখনই শুরু হয় লাইব্রেরিতে যাতায়াত।  


' সংবাদ ' পত্রিকায় প্রথম লেখা " মনীষীদের মা " প্রকাশ পায় | পরে ঐ পত্রিকাতেই প্রথম অণুগল্প " আত্মসম্মান " প্রকাশিত হয় |" বিদ্যাভারতী সংবাদ " নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকায় শুরু হয় প্রবন্ধ ও নিবন্ধ লেখা | ' প্রাঙ্গণ সাহিত্য পত্রিকা ' র যৌথ কাব্য সংকলন " মনের দরজায় দাঁড়িয়ে " তে প্রথম কবিতার আত্মপ্রকাশ | বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয় বহু কবিতা | এছাড়া ' সনেট ' , ' সাতকাহন ' বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে  প্রকাশিত কবিতা সংকলনে কবি বেশ কিছু কবিতা লিখেছেন।  

শিক্ষকতা ও কবিতাকে পাশাপাশি রেখে কবি জীবন পথে এগিয়ে চলেছেন। 


----------------------------------------------------------------


ফিরে আসুক শুদ্ধ স্মৃতি   
           


         তুমি শীতের মতোই শৈত্য 

এ কোন স্বর্গ বানাচ্ছি আমি পুরুষ অদ্বৈত 

দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে আমাদের সুলভ সমাচার 



     অধিবর্ষের মতো অতিরিক্ত স্পর্শ 

মনে হয় পুরানো শতাব্দীর কোনো এক গোধূলি হর্ষ | 

    না ফুরানো আশা , না পাওয়ার ব্যথা 

      সবই কী উপনিষদের তত্ত্ব কথা ? 


কাস্তের মতো বাঁকা চাঁদ , সেই মিহি ঘ্রাণ 

নিশ্বাসের প্রতিশব্দ আর অবেলা অঘ্রাণ 

সবই কী তুমি খুলে রেখেছ , ভুলে থেকেছ ? 


    মলমাসের মতো কোন্ অশুদ্ধ তিথি 

    তোমার শিয়রে এখন উদ্ধত্ব অসি ? 

চৈতন্যের মগ্নতা কাটিয়ে তোমাতে আসুক 

           তোমার শুদ্ধ স্মৃতি |   

---------------------------------------------------------------------

     আমাদের সেই গল্পটা 


আমাদের সেই গল্পটা আজ শেষ 

     এমন ভাবছ কেন ? 

          হতে পারে  

বিকেল আসতে আর বেশি দেরি নেই  

          হতে পারে 

গাব গাছের মাথার উপর দিয়ে শঙ্খচিল উড়ে গেল 

          হতে পারে 

ইডিয়টের মতো হুজ্জোতি করিনি | 


  আমি এখনো  দাঁড়িয়ে আছি  

হাঁদার মতো - তিন মিনিট , চার মিনিট - 

কয়েক ঘণ্টা , অনেক বছর - বহুবছর ...  


          আমি জানি 

রাত্রিরও  একটা সৌন্দর্য আছে  

মৃতসঞ্জীবনী মন্ত্র শুধু চাঁদের কাছেই আছে  

     রাত্রেও ফুল ফোটে

শিউলির জীবন তুমি কিভাবে অস্বীকার করবে ?

 কুয়াশার চাদর জড়ানো রাতে  

কোনোদিন গেছ রূপনারায়ণের কাছে ? 

শুনতে পাবে বুড়ো অশ্বত্থগাছটির নিচে 

     এখন  এসরাজের বিষাদ আর  

রূপনারায়ণের জলে আইবুড়ো মেয়েটির  

              ম্লান মুখের ছবি  | 

ভালোবাসার এই গল্পটাই শুধু জানি 

কারণ গল্পটা এখনো শেষ হয়নি .... 


-----------------------------------------------------------------

        স্মৃতি ফেরানোর দিন 
              


       বৈশাখী বিকালে বিষাদ  

         ঝাউবনে আমি একা  

         পাশে নামানো বেহালা 

বসন্ত  পেরিয়ে গেছে , বোকা বোকা বন 

বেহায়া কোকিল এখনও ডেকে চলে নিরন্তন | 

বেগবতী নয় নদীটির পাশে খুলে রেখেছি জুতো জোড়া 

 নদীর জল মেখে নিতে বড়ো ইচ্ছে করে 

        বাহুতে আর বুকে  ,

লাল আলো এখন লেগে আছে নদীতে 

লম্বা লম্বা ছায়া ঘনাল জলে

আমি এখনও বসে আছি গোধূলি বিকেলে 

নদীকে প্রণাম , ঝাউকে প্রণাম 

প্রণতিতে মুছে যায় সব অভিমান  |  



পদ্যছন্দে নেই আজ বর্ণালী সুখ 

বরবর্ণিনী তবু চলো বুড়ো বটতলা 

অথবা বাগান , আখ্যান ছেলেবেলা 

হলুদ ধানের পাশে সবুজ উপত্যকা 

বেল , বকুল , বাতাবীর ফাঁকে 

এখন চাঁদের আনাগোনা | 

সন্ধ্যামণি কত ফুটে আছে 

প্রজাপতি হাজার উড়ে আসে 

স্মৃতি ফেরানোর দিন এখনও ঢ়ের পড়ে আছে 

চলো আবার গিয়ে বসি 

চাঁদের সাথে , তারাদের সাথে 

  হিজলের পাশে  | 


--------------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment