Tuesday, 28 December 2021

হামিদুল ইসলামের জীবনপঞ্জী


                          
আমি হামিদুল ইসলাম। আমার ছদ্মনাম লালন চাঁদ। জন্ম 1955 সালের 5 মার্চ। গ্রাম ভোঁওর পোষ্ট কুমারগঞ্জ জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর। বেশ কয়েক বছর হলো জন্মস্থান ছেড়ে কুমারগঞ্জে স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। আমার বাবা  ঁমীরহোসেন মণ্ডল। মা  ঁহালিমা মণ্ডল। 
          শৈশব থেকেই আমি দেখে এসেছি আমাদের সংসারে অভাব অনটন। আমরা পাঁচ ভাই বোনের মধ‍্যে আমি দ্বিতীয়। দিদি সবার বড়ো। বাবা তৎকালীন ভোঁওর ইউনিয়ন বোর্ডের ট‍্যাক্স কালেক্টর ছিলেন। কিন্তু সারা মাসে কমিশনের যে টাকা আসতো তাতে সংসার চলতো না। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। এমতাবস্থায় বাবা ইউনিয়ন বোর্ডের ওই কাজটি ছেড়ে দেন। পৈত্রিক জমি ছিলো বিঘে তিনেক। সেটার উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। ওই জমিতে তখন ছিলো না কোনো সেচ। বছরে একটিই ফসল হতো। আমন ধান। সংসারে যেটুকু ধান আসতো সারা বছরের ঋণ মহাজনী শোধ দিতে দিতে অবশিষ্ট তেমন কিছুই থাকতো না। সারা বছরই কষ্ট। ধার দেনা বাকি অভাব অনটন। বিচ্ছিরি জীবন। এলেবেলে জীবন। 
           তখন আমি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো হলো না। হেড স‍্যারের কটু ভাষায় অনেক গালি গালাজ শুনে সার্টিফিকেট নিয়ে বাড়িতে আসলাম। 
            পড়াশোনার ব‍্যাপারে মা'র প্রচণ্ড আগ্রহ ছিলো। হাজার কষ্ট হলেও আমাকে পড়তে হবে। তাই আমাকে মামার বাড়িতে পাঠাবার বন্দোবস্ত হলো। আমি চলে আসলাম মামাদের বাড়ি। মামাদের অবস্থা স্বচ্ছল। সেখানেই কাটলো আমার শৈশব। এখান থেকেই আমি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলাম। পাশ করলাম থার্ড ডিভিশনে। 
            মামাদের বাড়িতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ‍্যার বৃদ্ধি। আমি ফিরে আসলাম বাড়ি। মনের মধ‍্যে জেদ চেপে বসলো। আমাকে পড়াশোনা করতেই হবে। বাবাকে বললাম সব কথা। বাবা টাকা ধার করে এনে দিলেন। আমি ভর্তি হলাম বালুরঘাট কলেজে। 
             প্রতিদিন ভোরবেলা বিছানা থেকে উঠতাম। গ্রামের ছেলেমেয়েদের টিউশন পড়াতাম। তারপর কলেজে রওনা দিতাম। কতোদিন যে আমি খেয়ে না খেয়ে কলেজে গেছি তা এখন ভাবলে শিউরে উঠি। 
             যখন আমি নবম শ্রেণির ছাত্র তখন স্কুলের ম‍্যাগাজিনে আমার প্রথম কবিতা " ভালোবাসা " প্রকাশিত হয়। কলেজ লাইফেও বেশকিছু পত্রিকার সাথে পরিচয় ঘটে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আমার কবিতা প্রকাশ পায়। 
             কলেজের থার্ড ইয়ারের পরীক্ষার রেজাল্ট আউট হলো। কলেজে গেলাম। লিষ্টে দেখছি আমার নাম সবার উপরে। আমিই কলেজের ফার্স্ট বয়। মনটা নাচছিলো। যেনো হাতে স্বর্গ পেলাম। 
            আর পড়াশোনায় এগুতে পারলাম না। অনেক টাকার দরকার। কে দেবে টাকা ? ছেদ পড়লো পড়াশোনায়। 
             আমার বাবা কাকারা বাম আদর্শে বিশ্বাসী। আমিও ভীঁড়ে গেলাম সে নৌকোয়। পরিচিতি বাড়লো। এক জেঠু আমার এই অবস্থা দেখে একটি চিঠি দিয়ে আমাকে বললেন, এই চিঠিটা এলেন্দরী জুঃ হাই স্কুলের সেক্রেটারিকে দেবে। ওখানে একটা অরগেনাইজড স্কুল চলছে। ওই স্কুলে তোমাকে নেবার কথা বলেছি। আমি চিঠি নিয়ে গেলাম সেক্রেটারির কাছে। উনাকে আমার সব কথা বললাম। উনার মেয়ে আমাকে চা খাওয়ালো। 
             উনি আমাকে ওই স্কুলে অরগেনাইজড শিক্ষক হিসেবে নিলেন। বছর খানেক স্কুল করলাম বিনে পয়সায়। ইতোমধ‍্যে সেক্রেটারির মেয়ের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়লাম। বিষয়টি জানাজানি হতেই আমাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করলেন সেক্রেটারি। 
ফিরে আসলাম বাড়ি। আমাদের চিঠির আদান প্রদান চললো তখনো। একদিন উনার মেয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে আসলো আমার বাড়ি। থানা পুলিশ হলো। থানায় ধরে আনলো আমাদের। আমরা আমাদের মতামত জানালাম। ও সি আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। সেক্রেটারি সাহেব চোখের জল ফেলতে ফেলতে ফিরে গেলেন। পরে অবশ‍্য স্থানীয় বিধায়ক (আমার কাকু ও কাকিমা ) ও উনার স্ত্রীর কথামতো বিষয়টি মিউচুয়াল হলো। 
            জীবনের সংগ্রাম থেমে থাকলো না একটি দিনের জন‍্যেও। পরের বাড়িতে গতর দিতে শুরু করলাম। পঞ্চায়েতের চৌকো মাটি কাটলাম। রাতে এম.এ.পরীক্ষার প্রস্তুতি চললো। কঠোর পরিশ্রম করলাম চার বছর। বাংলা ও ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করলাম । 
             বছর দুয়েক বাদে শিক্ষক হিসেবে আমার চাকরি হলো। 
              লেখালেখির ছেদ পড়ে নি এ সব দিনগুলিতেও। অবসর গ্রহনের পর এখন অবশ‍্য চুটিয়ে লিখছি। এখন লেখাই আমার নেশা। সারাদিন কিছু না কিছু লিখি। গত বছর ' প্রাঙ্গণ সাহিত‍্য পত্রিকা ' থেকে " সাহিত‍্যরত্ন " ও " কবি সাগর " সম্মাননা পেয়েছি। এ ছাড়া এসেছে বহু শংসাপত্র। মেমেন্টো। এ বছর রাজ‍্য ওয়ারি দুটো সাহিত‍্য পত্রিকায় আমার কবিতা প্রথম হয়েছে। এ যাবৎ ন'টি একক কাব‍্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। চল্লিশটির মতো যৌথ কাব‍্য সংকলন গ্রন্থ। তিনটি ই কাব‍্যগ্রন্থ। একটি অপ্রকাশিত কাব‍্যগ্রন্থ। এখনো অপ্রকাশিত তেরো টি নাটক। সাতটি উপন‍্যাস। লেখা চলছে। পরিচিতি বেড়েছে বহুলাংশে। সাহিত‍্যিক হিসেবে এটাই আমার পাওনা। আমার গিন্নি বন্ধু হিসেবে থেকেছে আমার পাশে। মানুষের সহানুভূতি পেয়েছি অনেক। সহানুভূতির দরজায় এখন ভাসছে সাহিত‍্যের ভেলা। 


_____________________________________________________



Tuesday, 14 December 2021

ভগ্নকাল -- চন্দন তুষার তপন



           চিনতে বহুদিন বহুবিধ প্রসঙ্গ 
               একান্তরে একাধিকবার 
       তবুও চেনা হলো না যে বিবর্তনের 
              অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কত বিস্তার !
       আজ নয় কাল নয় চিরকাল জুড়ে
                নিয়তির নিরন্তর খেলা 
       আমার দুচোখ ভরে ন্যাস্ত বারেবারে 
               দেখেছি আমার অবহেলা;
        যদি প্রণয়ের ভাগাভাগি অবশেষে 
                মান আমার মাটির মতো 
        তার মুল্য কে বা দেবে যে বা পদতলে 
                 কেনাবেচা দাম অ'বিক্রিত 
            একদিন যদিও মূর্তির মতো হবো
                  আকার মসৃণ মখমলে 
          কারো মনের মার্জিত বাসনার সুখে
                   পদতলে নদীর দূকুলে !
              মনুষ্যত্বের ঘাম ঝরে না বর্ণনায় 
                  উদগ্ৰীব মরু প্রজাপতি 
          পৃথ্বী চিনতে পারিনি মানুষের ভিড়ে 
                   বহুমুখী অজানা প্রগতি 
           আবার কবে চাঁদের মত অন্ধকারে 
                আকাশ জুড়ে সেজে আসবে 
           পদান্তরে ক্ষণিক থামতে'ই হবে যে 
                 পরিণতি কি কভু ঢাকবে ।।
                          ____________

Monday, 13 December 2021

বদলেছে সময় --- বিজয় সরকার


আমি দেখেছি রক্তে ভেজা মাটির বুকে
 তিলে তিলে গড়ে ওটা এক দেশ,  
আজ দেখছি কোনো এক যুদ্ধে সে দেশের সীমানা ভাঙনে
 শত সহস্র জনগনের অশ্রুজল ঝরে পরছে। 

আমি দেখেছি ধর্মে ধর্মে মিলিত হয়ে
মানুষ মিলনের সেতু বেঁধেছে, 
আজ দেখছি জাতি-ধর্মের লড়াইয়ে
পৃথিবীতে কত দেশ ভাগ হয়ে যাচ্ছে। 

আমি দেখেছি নদীর বুকে__
কত শত মানুষ ভালোবাসা বেঁধেছে, 
আজ দেখছি সহসা কোনো এক ঢেউ এ
সে সব ভালোবাসা হারিয়ে গেছে। 

আমি দেখেছি জীবনে চলার পথে
মানুষ হাজারো বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়েছে, 
আজ দেখছি সময়ের স্রোতে
সে সব সম্পর্ক ভাঙণের প্রহহর গুনছে।

আমি দেখেছি স্বপ্ন চোখে শত শত নারী 
নীল আকাশে জয়ের নিশান উড়াতে বাইরে বেরিয়ে এসেছে
আজ দেখছি হিংস্র পাষন্ডের দল 
ফুল হয়ে ফোঁটার আগেই কত শত নারীর পাপড়ি ছিঁড়ে দিচ্ছে। 

আমি দেখেছি রাজনীতির ভেলায় চড়ে মন্ত্রির ছেলে 
যোগ্যতা নেই তবু প্রফেসর হয়েছে,  
আজ দেখছি গ্রামের গরিব মেধাবী ছেলেটা 
পিএইচডি হয়েও বেকারের জ্বালা ঘোচাতে ডোমের কাজ করছে। 

আমি দেখেছি অনেকেই __
বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধুতে পৌঁছেছে, 
আজ দেখছি তাদের অনেকেই দম্ভ অহংকারের তরে
 সিন্ধু  হতে বিন্দুতে নেমে গেছে। 

আমি দেখেছি শান্ত স্নিগ্ধ পৃথিবীর বুকে 
মানুষের শান্তিতে বসবাস, 
আজ দেখছি আমার পৃথিবীর বুকে 
দাঙ্গা হিংসা আর গোলা বারুদের উন্মত্ততার ছাপ।

আমি দেখেছি দিনের পর দিন
মানুষের অত্যাচারে সবুজ প্রকৃতি হারিয়ে গেছে, 
আজ দেখছি আমার পৃথিবী__
কঠিন অসুখে পরে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।। 


Copyrights © Bijoy Sarkar 
Date : 22-07-2020
Raiganj, Uttar Diajpur, W.B, India 
--------------------------------------------------------------------

Sunday, 12 December 2021

বিজয় দিবসে আজি -- লাল্টু সেখ




রক্ত দামে স্বাধীনতা কিনে নিলো যারা,
কালে কালে চিরকাল বেঁচে রবে তারা।
অমর- অজেয়- সেই --শহীদের তরে,
বিজয় দিবসে আজি চোখে অশ্রু ঝরে।

যাদের দয়ার দানে --হয়েছি স্বাধীন,
কোনো দামে যায় না যে শোধা সেই ঋণ।
হৃদয়ের মণি'কোঠা - তাদের দখলে,
নত শিরে ভক্তি শ্রদ্ধা জানায় সকলে।

পাপীর শৃঙ্খলে মাতা বন্দি ছিলো যবে
সিংহের গর্জনে বীর -ছুটে এলো সবে।
ন্যায়ের পতাকা হাতে হয় আগুয়ান,
বুলেটে বিধ্বস্ত হয় কচি তাজা প্রাণ।

ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে তরুণের দল,
মায়ের শ্লোগান মুখে, দেহে বাড়ে বল।
রক্ত বাষ্প মেঘ হয়ে ভাসে নীলিমায়,
পশুপাখি বৃক্ষলতা নীরবে তাকায়।

অদম্য সাহস বুকে প্রাণ দিয়ে গেল,
বিনিময়ে বঙ্গমাতা স্বাধীনতা পেল।
বীরের বীরত্ব কথা ভোলা নাহি যায়,
বিজয় দিবসে সবে প্রণাম জানায়।

Saturday, 11 December 2021

ঝুলন্ত ঘড়ি --সপ্তশ্রী কর্মকার



  অভিশপ্ত সেই যম দিকের দেওয়ালে,
ঝুলন্ত ঘড়িতে আটকানো দমবন্ধ প্রাণ।
স্বপ্ন ছিলো তুমি হবে শীতপাখি, 
আমি সেই শব্দের ছাদে শস্য ছিটিয়ে দেবো। 
কেউ মনকে কাছে নিয়ে ভালোবাসে,
আর কেউ ছোঁয়ার বাহানায় ।
অবাক হওয়ার কিছু নেই, 
একটা রাতে কবিতার বিরুদ্ধে গিয়ে 
শ্রীহীন হয়ে আজকে আমাদের পাতলা চামড়ার হৃদয়ে আজ বিশাল তালা।
পেছনে ফিরে আর চাইব না, 
রাখব না কোনো আবদার ,
গুটিয়ে রাখব নিজেকে শুঁয়োপোকার মতো ,
একাকীত্বের জীবনে বাহারি নেশার রং মেশাবো না। 
শিশির ভেজা রাত দুঃখরা বেরিয়ে যাক 
চোখের জলে,
মন তুলির ক্যানভাসে
তুলির টানে তোমার মুখ আঁকবো,
 পটচিত্রের স্বয়ম্বর সাজিয়ে সেই তোমাকেই
নতুন আলোর দিশা খুঁজে
 আমার আমিতে ভীষণ খুশি থাকতে শিখবো।

সপ্তশ্রী কর্মকার 
কবি-লেখিকা 
ত্রিপুরা, ভারতবর্ষ 

Friday, 10 December 2021

একদিন সেদিন -- ধীমান দাস


একদিন দেখা হবে
চাদরে জড়িয়ে ধরা ভালোবাসার উত্তাপে
একদিন দাঁড়িয়ে থাকবে
পলাশের মালা হাতে মনের খোলা দুয়ারে
একদিন কথা হবে
ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে অজানা অনুভূতি পরশে
একদিন মিলন হবে
দুটি আত্মার ওই ধ্রুবতারার দেশে
একদিন বিরহ ডাক দেবে
এলোমেলো কালবৈশাখী হৃদয় হয়ে
একদিন ক্লান্তি আসবে
দীর্ঘ পথ চলার টানাপোড়েনের মাঝে
একদিন ঘুমিয়ে পড়ব
দুটি শরীরে চিরন্তন জীবিত হয়ে। 

@ ধীমান দাস

Sunday, 5 December 2021

অসহায় প্রতিবন্ধী - ডাঃ অসিত কুমার সরকার



জীবন যুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়া 
সে এক ক্লান্ত সৈনিক , 
সমাজের চোখে বোঝা সে 
দুঃখ যন্ত্রণা করে ভোগ দৈনিক । 
অসহায় অবস্হায় কাটে তার জীবন, 
পায়না সে সুবিচার , 
কথা আর কাজে বিশাল অমিল 
খাতা কলমে বন্দী তার অধিকার। 
সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রতিনিয়ত 
সে বৈষম্যের শিকার, 
উপহাস, অনাদর আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে, 
জীবনে তার ঘোর অন্ধকার। 
চায়না সে কারো দয়া করূণা 
চায়না কারো অনুদান, 
মাথা উঁচু করে চায় সে বাঁচতে 
চায় যথাযথ সম্মান। 
সাহায্যের নামে করছে 
কিছু ভাঁওতাবাজির সংগঠন, 
প্রজন্মের প্রতিবাদী হয়ে রুখে দাঁড়াই 
বন্ধ করি এই অমানবিক আচরণ। 
ওতো আছে আমাদের চারিপাশে 
ওতো আমাদেরই ভাই বোন, 
আর নয় হেলাফেলা, নয় কোনো অবহেলা 
করি তার ভালো থাকার আয়োজন। 
হাঁসি ফুটাই ওর মুখে 
ভুলে যাক সে প্রতিবন্ধী 
যোগালে সাহস,দিলে ভরসা
থাকবেনা সে আড়াল বন্দী। 
শত বাঁধা, শত বন্ধুর পথ পেরিয়ে 
জীবন যুদ্ধে হবে সে জয়ী, 
মনুষ্যত্বের দাবী নিয়ে দাঁড়াই ওর পাশে 
হইনা কিছুটা বিনয়ী।

ভারসাম্য - পরেশ চন্দ্র দাস



'ল্যাংড়া খোঁড়া বদের গোরা'
আমাদের সামাজিক জীবন ধারার কল্পনাপ্রসুত
উদ্ধৃতি পীড়াময় ।
অধিকার যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকের তিক্ত ভর্ৎসনার
দুর্বৃত্তায়ন বৃশ্চিকদংশন । 
সক্ষমতার দাম্ভিক মনোবৃত্তির বজ্জাত্
উদাহরণ।
প্রতিবন্ধী শব্দটি প্রতিবন্ধকতার কষাঘাতের
মর্মবেদনা ।
অপর পক্ষে 'মানবিক চাহিদা সম্পন্ন'
বাক্যদ্বারা আস্বস্ত করতে মানসিক বিপ্লব সংগঠিত
নেতিবাচক প্রস্তাব ।
ভিক্ষার চেয়ে মৃত্যুযন্ত্রণা  শিরোধার্য্য,
ভালোবাসার সহমর্মিতায় বাঁচুক আমার 
শারীরিক চাহিদা সম্পন্ন সংগ্রামীবন্ধু।
সম্মানজনক রাষ্ট্রীয় সাম্মানিক পাবার অধিকারের বঞ্চনাবৃত্ত মানুষের বার্তা,
বধিরকর্ণের শ্রবণশক্তির বিরূপপ্রতিক্রিয়া ।
ভাগ্যের পরিহাসে যাহারা চাহিদা হারিয়াছে
তাদের অধিকারগুলো নির্বিকারে
ধর্ষনেপ্রবৃত্ত ।
দিশাহারা বাকশক্তি হারিয়ে চাপাকান্নায়
কূপমুণ্ডুকের চারিত্রিকরুপে নিমজ্জিত ।
লক্ষ একটাই কে আমার বিপদভঞ্জন
রাষ্ট্রনায়ক ।

জ্ঞানেন্দ্র নাথ রায় - প্রতিবন্ধী


 

আমাদের এক প্রতিবেশী হচ্ছেন শ্রীঅপরাজিত সরকার। ওনার স্ত্রীবিয়োগের পর থেকে এক প্রকার প্রতিবন্ধী জীবন যাপন করছেন। উনি নিজে রান্না তো দূরের কথা এক কাপ চা-ও তৈরি করতে পারেন না। হ্যাঁ, তাই বলে কি আর চা তেষ্টা পায় না? নিশ্চয়ই পায়, কয়েক বছর আগে আমরা ওনাকে একটা ইলেকট্রিক কেটলি কিনে দিয়েছি, তাতে জল গরম করে টি-ব্যাগ ডুবিয়ে চা বানিয়ে নিতে পারেন। এইটুকু করতে পেরেই উনি যথেষ্ঠ খুশি।
কোভিড-১৯এর প্রাদুর্ভাবের পর, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে ওনার দুর্দশা আরও বৃদ্ধি পেল। পায়ের ব্যথার কারণে, উনি বাজারেও খুব একটা যেতেন না। এখন করোনার ভয়ে সেটাও বন্ধ করে দিলেন। আমরা পাড়ার সকলে মিলে ওনার বাজার করে দিচ্ছিলাম। খাওয়া দাওয়ার জন্য উনি হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। একই ধরনের রান্না খেতে অসুবিধে হচ্ছিল বলে উনি পালাক্রমে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে খাবার নিতেন। প্রাতঃরাশ নিতেন বিশেষ কোনো এক পরিবার থেকে আর বিকেলের জলখাবার আসত পাড়ার এক দোকান থেকে।
এত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও উনি কিন্তু প্রতিবন্ধী নন, কারণ সরকারের চোখে উনি প্রতিবন্ধী হিসাবে স্বীকৃত নন।
যাইহোক, একাকিত্বের ও করোনার কারণে ওনার এই প্রতিবন্ধী জীবনযাপন আমাদের ভাল লাগত না, তবু সকলে নিশ্চিত ছিলাম যে ওনার হয়তো কিছু হবে না।

***

এত সব সাবধানতা সত্ত্বেও কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। করোনার কোনো উপসর্গ যেমন জ্বর, শুকনো কাশি, গলাব্যথা, শরীরে ব্যথা এসব কিছুই ছিল না। থাকার মধ্যে আমাশয়ের মত পায়খানা ও পেটে ব্যথা। ওনার হাউস ফিজিসিয়ান সব শুনে পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেন। ওনারা ভর্তিও করে নিলেন।
ভর্তি হওয়ার পরের দিনই করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল। হাসপাতালে থাকাকালীন, ওনার বিশেষ কয়েকটি উপলব্ধি হয়েছিল। উনি এমনিতে প্রজ্ঞানপুরুষ শ্রীশ্রীবাবাঠাকুরের আশ্রিত। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে উনি সবসময় শ্রীশ্রীবাবাঠাকুরকে স্মরণ করতেন আর বলতেন, হে ঠাকুর, আমি সব কিছু তোমার উপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত আছি। আমি বন্ধনমুক্ত, আমার কোনো পিছটান নেই। তুমি আমাকে নিয়ে যেতে পারো, আমার কোনো আপত্তি নেই। আর যদি মনে কর পৃথিবীতে আমার কাজ আছে, তাহলে আমায় বলে দাও কী করবো আর আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে চল। এই প্রতিবন্ধী জীবন আর আমার ভাল লাগছে না।
সপ্তাহ দুয়েক বাদে কোভিড-১৯ এর নিগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেল। হাসপাতাল থেকে যিনি ফিরলেন তিনি কিন্তু সম্পূর্ণ এক নূতন ব্যক্তি। ওনার স্মৃতিশক্তি অনেক হ্রাস পেয়েছে। মোবাইল কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা তিনি কিছুতেই মনে করতে পারছিলেন না। ভারসাম্য রক্ষা করতে অপারগ হওয়ার কারণে হাঁটতে ওনার অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু, ঈশ্বরের উপর ওনার বিশ্বাস এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে উনি নিশ্চিত যে এইসব দুর্বলতা খুবই সাময়িক এবং ক্রমশঃ সব দূর হয়ে যাবে। 
এই চিন্তাধারার কারণে, ওনার মধ্যে সব সময় শান্ত সমাহিত এক ভাব বিরাজ করতো। উল্লেখ করেছিলাম, উনি মোবাইল কী করে ব্যবহার করতে হয় তা প্রায় ভুলে গিয়েছিলেন। কিন্তু, উনি নিশ্চিত ছিলেন যে ক্রমশঃ সব কিছু একদিন আবার ফিরে আসবেই। মাঝে মাঝেই উনি বলতেন, আজ সকালে মোবাইল চালু করতেই ঐ জিনিসটা মনে পড়ে গেল। জয় শ্রীশ্রীবাবাঠাকুর। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর কথা বলতে গেলেই ওনার কাশি হত। সেটাও ক্রমশঃ হ্রাস পেল |

Friday, 3 December 2021

লেখাপড়া - সুনীপা শী


আমি নয় শিক্ষিত, নয় অশিক্ষিত 
আমার নেই কোনো ডিগ্রি, নেই কোনো পাস 
আমি শিখিনি হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু 
শিখেছি বাংলা কারণ আমি যে বাঙালি। 
পরেছি মাধ্যমিক পর্যন্ত, 
তাও পনেরো বছর আগে। 
তাই সব ভুলে গেছি, 
ভুলে গেছি লিখতে, 
লিখতে গেলে হয় আমার বানান ভুল। 
জানি না কোথায় হয় দাঁড়ি, কমা, ফুলষ্টপ। 
সব ভুলে গেছি আমি। 
মনে পড়ে ছোট্ট বেলার কথা, 
মা বলতেন - বাছা আমার লেখাপড়া কর, লেখাপড়া কর, লেখাপড়া করে। 
আমি তখন বলতাম মাকে, 
দুর ছাই ভালো লাগে না 
আমার লেখাপড়া করতে। 

মা বলতেন তখন - 
ওরে এখন বুঝবি না - 
যখন হবি আমাদের মতন, 
তখন বুঝবি
লেখাপড়া র কত মূল্য। 
আমি তখন মাকে বলতাম - তুমি তো কই লেখাপড়া কোরোনা । 
করো শুধু বাড়ি র কাজ কর্ম। 
সত্যি, আজ আমি বড়ো হয়েছি
ব্য়স হয়েছে তিরিশ বছর। 
আজ বুঝি মায়ের ঐ কথার মুল্য কত। 
আজ আমার বড়ো ইচ্ছে  হয় 
আবার আমি লেখাপড়া করি
কিন্তু লজ্জা করে আমার। 
আবার ভাবি শেখার তো কোন    
ব্য়স নেই, জানার তো কোন শেষ নেই 
তাই আমি আবার শুরু করি লেখা। 
হাতের লেখা আমার ভিষন বাজে। 
বুঝতে পারেনা অনেকে, 
বুঝতে হয় কষ্ট করে 
তবুও আমি লিখি। 
আর লিখতে আমার বড়ো ভালোলাগে। 
জানি না আমার এই লেখার শেষ কোথায়? 
আমার এই লেখা কি খাতার মধ্যে পরে থাকবে? 
না কি আমার এই লেখা পাবে একদিন সম্মান। 
                         

Monday, 22 November 2021

পুরুষ - আশুতোষ শী




ঈশ্বরে সৃজিলেন জীব ,
                        বিধির  বিধান,
বহু  শাস্ত্রে  রহিয়াছে
                        প্রকৃষ্ট  প্রমাণ ।
সৃষ্টিকর্তা  রচিলেন
                        জীব গতিধারা ,
কভু  না  হবে  রুদ্ধ 
                জীবের দুর্নিবার ধারা ।
স্মরনাতীত কাল হতে 
                        জীবের দুই বিভাগ ,
এক ভাগে পুরুষ জাতি
                          নারী  আর  ভাগ ।
পুরুষ  সুঠাম  দেহী
                             শক্তিশালী  হয় ,
নারী  দেহ  কমনীয়
                         ততটা  দৃঢ়া  নয় ।
জীব দেহ ধারণের জন্য
                           খাদ্য সংগ্রহেতে ,
পুরুষই অগ্রনী হয়,
                            নিয়ম  জগতে ।
পুরুষই জগতে শ্রেষ্ঠ
                            কর্মের  বিচারে ,
পুরুষ-চরিত্রেই তার তরে
                             সেই গুন ধরে ।
জীবকূলের  যাহাতে
                              বিনাশ না হয় ,
বংশ রক্ষার দায়িত্ব 
                             পুরুষে  বর্তায় ।
দৈহিক দৃঢ়তায় মরদ
                              সব জীবে আছে,
নারী তাই অবলা মানি
                          বেটাছেলের কাছে ।
সমাজেতে  নরগনের
                            যতেক  অবদান ,
রমনীর  না হয় কভু
                              তাহার  সমান ।
জীবন সমরে কর্ম 
                        যাহা পুরুষেই পারে,
বিপদে আপদে সে তো
                         নিয়োজে নিজেরে ।
উপার্জন কালে পুরুষের
                             ভূমিকা  অগ্রনী ,
সামাজিক শৃঙ্খলায় জায়া
                               হয় যে ঘরনী ।
সর্ব কর্ম অসম্ভব হয়
                         নারী-শক্তির পক্ষে,
পুরুষ তুলনায় নারী
                           না রহে সমকক্ষে ।
দোষে আর গুনে হয়
                                 মনুষ্য  চরিত্র ,
নারীও মুক্ত নহে এতে
                              বিদিত  সর্বত্র।
ক্ষেত্র বিশেষে মরদ
                             হয়  পরিত্রাতা ,
কখনোও বা শত্রু হয়
                         "সহোদর  ভ্রাতা ।
কখনো বা নারী হয়
                          লাঞ্ছনার শিকার ,
যদি কভু হয় পুরুষের
                           বুদ্ধির  বিকার ।
যুগে যুগে পুরুষ কর্তৃক
                               দমনোৎপীড়ন ,
ললনা গন নীরব- কন্ঠে
                          সয়েছে  আজীবন ।
হয়তো বা  নরগনই শ্রেষ্ঠ
                             দেহ- আকৃতিতে ,
তবু  বামার গুন বার্তা
                             না পারি বর্ণিতে ।
রমণীরা "মা" না হলে যাবে
                                সৃষ্টি  রসাতলে ,
জগৎ অচল হবে দুই- এ
                              সমান না হলে ।
সংক্ষেপেতে মর্দের
                             দিলাম যে বর্ননা ,
মহিলারা আমার 'পরে
                        ক্রোধিতা হয়ো না ।
কিছু মর্দা নেশা করে
                        হয় যে বেসামাল ,
মানবী তখন বহু কষ্টে
                           ধরে ঘরের হাল ।
মানবী কে অবজ্ঞা জ্ঞানে
                            না করো দর্শন,
তারাও করে দক্ষ হস্তে
                             দেশের শাসন ।
সংসারেতে  নারী- পুরুষ
                        দুয়েরই আবশ্যক ,
বাঁচার  জন্য  তারা
              একে- অন্যের পরিপুরক 

পুরুষ আমি -- ডাঃ অসিত কুমার সরকার


পুরুষদের নাকি কষ্ট হয় না, 
হওয়ার তো কথাও নয়, বাস্তবতায় তারা বাঁচতে জানে, 
কান্না লুকিয়ে পুরোদমে হাঁসতে জানে। 
পুরুষদের আবার মন ভাঙা কি, 
পাজর ভাঙার কষ্ট কেবল হাড় গুলোই জানে 
চামড়ার বাহিরে আর খতর দরকার কি??? 
পুরুষদের তো মন নেই, 
প্রেম নিয়ে খেলেই কেবল 
অথচ দায়িত্বের বেড়াজালে ডিঙিয়ে, 
হয়না পাওয়া ভালোবাসা যাযাবর।। 
পুরুষ মানেই তো প্লেবয়, 
পুরোদমে ভালোবেসে অযুহাত  দিয়ে ছেড়ে যায় কেবল, 
অথচ তাদের কষ্টটাও মেয়েদের মতই প্রখর। 
পুরুষ মানেই শক্ত সামর্থ 
খুশিতে চকচক করা চোখ থাকলেও 
কান্নায় জ্বল জ্বল করা চোখ থাকতে নেই 
ও হ্যা পুরুষদের তো আবার কাঁদতে ও নেই। 
কেননা পুরুষদের তো ইনকাম, দায়িত্ব আর নিজের ছোট বড় শখ চাওয়া পাওয়া ইচ্ছের বিসর্জনেই বড় হতে হয়, তাদের আবার কান্না কি,
তারা তো পাষাণ। 
কেননা এই জগৎ এ বিসর্জন মানেই নারী, 
পুরুষের আর কি হলেই হলো 
কোন এক সুন্দরী রমনী আর বিলাসিতায় মোড়ানো বিশাল একটা বাড়ি।। 
তবুও কখনো কখনো পুরুষেরাও অবহেলিত, প্রতারিত, এমনকি দিনশেষে তারাও বহন করে আকাশ সমান অসহায়ত্ব।।।।।।।।।।

ভুল -- রিয়া মিত্র


মঞ্চে মেয়ের বক্তৃতা শুনে কমলেন্দু বাবুর চোখে জল চলে এলো। ছোট থেকেই মেয়েটা বড় লিখতে ভালোবাসত। একদম ওর মায়ের মতো লেখার প্রতি ভালোবাসা ছিল মেয়েটার।
কমলেন্দু বাবুর স্ত্রী অনিতা দেবীও লেখালেখি, সাহিত্য-চর্চা করতে খুব ভালোবাসতেন। যে'দিন অনিতা দেবীর এই সখের কথা কমলেন্দু বাবুর মা আর দুই দিদির কানে যায়, কি অশান্তিটাই না তারা করেছিলেন! অনিতা দেবীর লেখার সাধের লাল ডায়রিটা তারা আগুনেই পুড়িয়ে দিলেন। মেয়েমানুষের আবার পড়াশোনা, লেখালেখি কীসের?! যতসব আদিখ্যেতা, সংসারের কাজ না করে পটের বিবি সেজে বসে থাকার ফন্দি। সংসারের যাবতীয় কাজ চাপিয়ে দিতে লাগলেন অনিতা দেবীর ওপর, যাতে দিনের শেষে ক্লান্ত, অবসন্ন শরীরে তার সাহিত্য-চর্চার ভুত ঘাড় থেকে নেমে যায় তবু অনিতা দেবী দিনান্তে গোপনে তার প্রাণের ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন। এ'জন্য স্বামীর কাছেও কম গঞ্জনা সহ্য করতে হয় নি তাকে! সে'দিন মাতৃভক্ত কমলেন্দু বাবুও বৌকে অপমান করতে ছাড়েন নি। বড় ভুল হয়ে গেছিল তার! 
অন্নপ্রাশনে মেয়ে যখন সব কিছু ছেড়ে বই আর পেন তুলে নিল, অনিতা দেবীর বোধহয় বুক কেঁপে উঠেছিল, তার মতোই মেয়েরও পরিণতি হবে না তো?! এরপর সব চোখরাঙানি অগ্ৰাহ্য করে মেয়ের লেখালেখি আপন ছন্দে এগিয়ে গেছে। অনিতা দেবী নিজের অপূর্ণ সাধ পূর্ণ করতেন মেয়ের হাত ধরে। লুকিয়ে মেয়েকে লেখালেখিতে উৎসাহ দিতেন। প্রাণাধিক প্রিয় মেয়েকে কোনো কিছুতে বাধা দেন নি কমলেন্দু বাবু। নিজের স্ত্রীকেও যদি এই স্বাধীনতা দিতে পারতেন, হয়তো আরেকটি কুঁড়ি ফুল হয়ে ফুটতে পারত। অনুতপ্ত কমলেন্দু বাবুর আফসোসে মনটা ভরে উঠলো। আজ অনিতা দেবী বেঁচে থাকলে মেয়ের সাফল্যে খুব খুশি হতেন, তার অপূর্ণ ইচ্ছা পূর্ণ হতো।
মঞ্চে তখন 'রবীন্দ্র পুরস্কার' প্রাপ্ত স্বর্ণালী দেবী ডেকে নিয়েছেন তার বাবাকে, "যে মানুষটা না থাকলে লেখার অনুপ্রেরণা পেতাম না, তিনি আমার বাবা, তাকে মঞ্চে আসতে অনুরোধ করছি।"  ঝাপসা চোখে মঞ্চে উঠে এলেন কমলেন্দু বাবু। স্বর্ণালী দেবী বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বললেন, "ভাগ্যিস্, মায়ের মতো বিদুষী নারীর চলার পথে তোমরা এত বাধা দিয়েছিলে, তাই তো আমার জেদটা দ্বিগুণ বেড়ে গেছিল। মা কিন্তু বীরাঙ্গনার মতো আমাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছিল, কখনো আমাকে হেরে যেতে দেয় নি।" অনুকম্পিত, লজ্জিত কমলেন্দু বাবু মোখ নীচু করে নিলেন, ঠিকই তো, সত্যিকারের পুরুষ মানুষ কখনো নারীর অধিকারের পথে, অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, বরং নারীর হাত ধরে একই সঙ্গে পথ পাড়ি দেয়। সেই রকম পুরুষ, সেই রকম স্বামী আর হতে পারল কোথায় সে?! মেয়েকে জড়িয়ে ধরে চোখের জলে নিজের ভুল সংশোধন করলেন তিনি।

*রাবণ* ✒️পরেশ চন্দ্র দাস



অসৎ আত্মাকে রিভাইভ করে,পাপ নগরীর
সেলিব্রিটি ।
লালসার মোহে কৈকেশী গর্ভে জন্ম আমার—'নাম রাবণ' ।
বর্ণসংকরের জিনেটিক রিলেশন ঘটিয়ে ,
এ যুগের মহান প্রবাদ পুরুষ *আমি*।
আমার কর্মের ছাপ সবার কলিজার ভিতর সুপ্ত
আকারে প্রবেশের জাতিস্মর ।
মনগড়া কথার জালে ছেঁকে তুলেছি প্রাণবন্ত,
নটীনারীর আশ্চর্য কাহিনী।
বর্বরতার 'মোখটা, বিক্রি হচ্ছে, ফেসবুক স্ট্যাটাসের রসময় মনোহরা
ইন্দ্রজালের ম্যাসেঞ্জারে ।
ভদ্রতার প্রাচীর টপকে পার হচ্ছে আমার
নীলরাতের পর্ণগ্রাফি । 
সতীত্ব এখন পণ্যজাত ,পটেশ্বরী ফ্লেক্সে বিজ্ঞাপন , খদ্দের আমি
দশমহাবিদ্যাধারী রাবণ ।
নারী দিয়ে নারী ধরে নারী পাচার চক্রে আমি
গুরমিতরামরহিম ।
আমার চিতাভষ্মে যে নেটওয়ার্ক ছড়ানো আছে,তার নতুন নামকরণ
প্যানডেমিক । 
'রাবণ আছে থাকবে পুরুষসত্বার
রেনেসাঁসে ।।
Iiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiiii

পুরুষ" -- দিলীপ কংস বণিক।


হে পুরুষ, তুমি কাম বীজ স্বরূপ--
প্রকাশিবে সত্য, করিবে সুন্দরের সৃজন।
আপনারে ভুলি, নিলে হাতে তুলি আপনার ধ্বংস করণ।।
কোন মোহ তে ভুলি আপন ধর্ম হয়ে উন্মত্ত কর সৃষ্টি অনাচার
হে পুরুষ আপনারে চেনো আপনি স্মরণ করো আপন অঙ্গীকার।
সত্য সুন্দরের পূজারী তুমি তবে কেন এহেন কদর্য রূপ তোমার
কেন এমন রূঢ়তা পৈচাশিক ভ্রষ্টাচার।।
হে পুরুষ তব তেজময় দীপ্তিতে অসুর নাশিতে সৃষ্টি করিলে দশভূজা--
পুরুষ! কেন আজি রক্ষিতে নারে ভগ্নি-আত্মজা?
ধিক্ ধিক্ শত ধিক্ তব পৌরুষেরে।
জাগ্রত করো পৌরুষত্ব, আত্মগুণ হোক মহত্ত্ব আপনি চিনো আপনারে,
তুমি সৃষ্টির আধার, ভোলো বারবার আপনি আপন সত্তা।। 
তুমি যে মহৎ দেখিবে জগৎ সৃষ্টি করো আপনারে।
পুরুষ তুমি বর্ধিষ্ণু, সত্তা কেন ক্ষয়িষ্ণু? কোথা তোমা সহিষ্ণু?
পাতিয়া দিয়াছ আপনি বক্ষ রক্ষিতে মহান সৃষ্টি--
জাগো জাগো হে পুরুষ,
হে সত্য সুন্দরের পূজারী।
দেবতা ও যে যাচে,            জ্ঞান-পুরুষ-ত্রিপুরারি।।


Monday, 15 November 2021

"ভয়েস" -- দিলীপ কংস বণিক


মনের আবেগ প্রকাশে উচ্চারিত হয় 'ধ্বনি',
কতো সুরের মূর্ছনা শ্রুতিমধুর বাক্য শুনি।
গীতি তরঙ্গে হয় মোহিত কন্ঠমাধুর্যে র প্রকাশ,
বজ্রের কন্ঠ ঘোষে কম্পিত মহী অশ্রু বর্ষে আকাশ।

মায়ের সুমধুর স্নেহ বাক্যে শীতল মন-প্রাণ, 
পিতার অনুশাসন বক্যে গড়ি উন্নত জীবন।
শিক্ষকরা বাক্য দ্বারাই করেন জ্ঞান-চক্ষু দান,
বন্ধু র প্রীতি বাক্যে হয়, 'হৃদয় মহান'।

মহান অনুভবে সৃষ্টি  "ভয়েস" সংগঠন,
সাহিত্য সাংস্কৃতিক এর মুক্ত অঙ্গন।
প্রচারের আলোয় আসিতে পারে না এমন গুণীজন,
তাঁদের প্রকাশ প্রয়াসে হয় সংঘের সৃজন।
শুধু সাহিত্য ই নয়, করেন সমাজ সেবা মূলক কর্ম,
ব্রতী হয়েছেন পালন করিতে মানবতার মূল ধর্ম।
বিজয়ের সুপ্ত বাসনা আজ বাস্তব বিজয়
হয়েছে সকল কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায়।
'ভয়েস' কথার যথার্থ অর্থ বাহক এ সংগঠন,
শিখরে পৌঁছবে ই 'সাম্যবাদ' সঠিক মূল্যায়ন।
********************************
                🙏🌹🌹🙏

শব্দেরা আর্তনাদ করে -- -প্রদীপ বাগ


        ‌‌     
অজস্র লেখা কবিতা সাহিত্য পত্রিকা সজ্জিত রয়েছে পৃথিবীর গ্রন্থাগারে,
রঙচটা ধোঁয়াটে পাঁপড় ভাজা কাগজের অক্ষর গুলো খসে খসে ঝরে পড়ে,
অবহেলার ধূলোয় আলমারিতে রাখা বইগুলো নিত্য উইপোকা মনের সুখে কুরে কুরে খায়,
আভিজাত্যের নিদর্শন জ্ঞানের প্রতীক তবু জাগলো না সমাজ মানবিক চেতনায়!!
প্রাজ্ঞ জনেদের ফুসফুসের ধমনি হতে নির্গমন রক্তের কালিতে লেখা পৃথিবীর পান্থশালার সারবস্তুর কথা,
জীবনের উপসংহার বিরহ বিদুর বেদনার্ত মনের সাদা পাতা অনুভূতির অক্ষরে শব্দের সূক্ষ্ম কারুকার্য রয়েছে সেথা,
অমনিশায় নিশ্চুপ নির্বিকার শব্দ চাষী হতাশাগ্রস্থ আজ উঠলো না পূর্ণিমার চাঁদ নিঃসঙ্গ রাতে!
শুধু লিখে রেখে যায় অব্যক্ত মনের না বলা কথা উদিত হয় যদি নতুন অরুণোদয় দিগন্ত প্রভাতে,
সুশোভন মুদ্রণে শব্দের বুনন অলঙ্কার খচিত অজস্র গ্রন্থ উপন্যাস কবিতা নান্দনিক লেখা,
সাহিত্য সাধনার পথিকৃৎ রক্ত মাংসের মানুষ আছে তাই কবিত্ব প্রাপ্তির স্বঘোষিত আত্মঅহমিকা,
পুঁথি গ্রন্থ হতে শব্দের অক্ষরমালা বিদ্রোহী কন্ঠে তুলেছে আওয়াজ মুক্তি চাই থাকবে না আর কাগজে বন্দী হয়ে..........
আধুনিক সভ্যতা সামাজিক অবক্ষয়ের পথে,রাশি রাশি গ্রন্থের পাহাড়ে জ্ঞান চেতনা লুকিয়ে আছে ভয়ে !!!
পচ্ছন্দের পাতা হতে আওড়ায় উদ্ধৃতি শব্দের ভাষা মেকি পান্ডিত্যের আড়ালে চারিদিকে সাধু সেজেছে শয়তান,
কেতাবি ভাষা শব্দে ঠাসা ওরা আর্তনাদ করে বন্ধ বইয়ের দরজা খুলে জ্ঞানের আলোকে পেতে চায় পরিত্রাণ............
        (সংরক্ষিত)

যুগের প্রতীক ✒️পরেশ চন্দ্র দাস



"যত্র যোগেশ্বর কৃষ্ণো যত্র পার্থো ধনুর্ধর"
কৃষ্ণ যোগে বুদ্ধিমত্তায় সাহিত্যের 
নবজাগরণের ছায়া,
তীক্ষ্ণ শেন দৃষ্টির লেখক-পাঠকের
খেলায়—ভয়েস তার তটিনীবিধৌত
সমভূমির একবিন্দু জল ।
সত্তা, বুদ্ধিমত্তা কালের প্রবাহে মহীরুহে পরিনত হওয়া এক অপেক্ষার আঙ্গিকে স্রোতবহা।
সূচনা- মুষ্টিমেয় সৈনিকের আদম্য
পরিশ্রমের সাফল্য লাগজুরিয়াস্।
কলা-বালি মিশ্রিত রোল,
এক অপুর্ব স্বাদ সাগরের তীরে
দীপকরাগিনীর সুর ।
বাধা, গতিকে দুর্বার করে তোলে—
যদি এক কেন্দ্র বিন্দুর লক্ষ হয়
ব্রহ্মাস্ত্র ।ধ্বংশের উপত্যকায়
সৃষ্টি সুখের উল্লাসে *ভয়েস- কোভিট* জমজ সন্তান।
পাঠকপিপাশু গড়ে তোলার
কান্তারস আস্বাদনের নিরিখে
ক্ষৌণিময়  কৌশিকী সম।
ভয়েস নামক কষ্টি পাথরটা
আবৃতকারে , মাদুকড়ী সংগ্রহে
পরিব্রাজক।
আবেগমুগ্ধ নিরন্তন ভাঙ্গা গড়ার খেলায় ,মেতে আছি ভয়েসের
সৃজনশীল শুদ্ধ লেখক হবার
তাড়নায় ।
ভানু-শশীর মেলবন্ধন,সহিষ্ণুতার
মেঘডালে  সাম্যের গীতবিতানে
ভয়েসের নতুন পালক এসে যুক্ত 'যূগের প্রতীক, ।

মনে পড়ে - ডাঃ অসিত কুমার সরকার



তোমায় মনে পড়ে, 
শীতের সন্ধা সাজানো 
এই বিকেলে, 
মিনি মিনি কুয়াশা ঘেরা 
প্রকৃতির নিচে। 
তোমায় মনে পড়ে , 
ছাদের কানায় সাজানো 
বেনচিতে বসে, 
ঐ দূরের পথ দিয়ে 
এখুনি যাবে কোথাও । 
ছিঁড়ে গেছে প্রেম
ভালোবাসার বাঁধন, 
তবু ভালোবাসি
ভালোবাসি আমি তোমাকেই। 
একটু দেখি বা না দেখি
তবু তার পূর্বাভাস 
বয়ে আসে বাতাসে, 
ঐ আম বাগান
পুকুরের বুক চিরে। 
মনে পরে যায়
তোমার ও মুখ খানা, 
শরীরের লাবণ্য, 
মনে পরে যায় 
সেদিনের সেই 
দূরে সরানোর ভাষা, 
ছিঁড়ে ফেলা ভালোবাসার 
কুটি কুটি চাহনি। 
মনে পরে যায় 
প্রথম দেখা তোমার 
মুচকি হাঁসির ঝলকানি 
ভালোবাসার ইশারায়। 
ভালোবাসা, ভালোবাসা, 
হা, ভালোবাসা, 
তোমায় মনে পড়ে।।।

তোমার কণ্ঠ - কার্তিক ঘোষ



তোমাকে আমি দেখিনি কোনোদিন
তবু তোমার কণ্ঠ শুনেছি বহুবার,
আছে আবেগ,
আছে ক্লান্তি হীনতা।
তোমার সেই কণ্ঠ মনে পড়লেই
মুখস্ত করে না মনে রাখতে পারা
বহুকবির নাম আমার মনে পরে যায়,
যেমন রবীন্দ্রনাথ,
তাকে আমি কোনোদিন পড়িনি
তবু যেন মনে হয়
তাকে আমি চিনি,
বহুযুগ ধরে চিনি।
কাজীনজরুল,তার প্রত্যেকটা বিদ্রোহী কথা যখন তোমার ঐ কণ্ঠে জাগে
তখন নিজেকেই যেন বিদ্রোহী মনে হয়
বিদ্রোহ করতে ইচ্ছে করে,
রক্তকে আপন করে নিতে ইচ্ছে করে
নেতাজির সেই কথা " তোমরা আমাকে রক্ত দাও,আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব " যেন নিজের বলে মনে হয়।
ভীষণ আপন মনে হয়।
হ্যাঁ তোমায় আমি চিনিনা,
তবে তোমার ওই কণ্ঠকে আমি চিনি,
প্রতি রাস্তায়,রাস্তায়
প্রতি বস্তিতে - বস্তিতে
প্রতি মঞ্চে মঞ্চে।

Sunday, 7 November 2021

নাম না জানা পাখি - সুনীপা শী



দুই টি পাখি গাছের ডালে, 
বসে আছে আপন মনে 
তাকাই তারা এর ওর দিকে 
কি যেনো কথা বলে ওদের মনে। 
আমি কি আর বুঝি। 
দেখছি তবু ওদের দিকে, 
কোথাও না গিয়ে। 
দেখি ওরা কি করে। 
হঠাৎ দেখি দুই টি পাখি 
করে কিচিরমিচির। 
আচ্ছা ওরা কি ঝগড়া করছে? 
না কি নিজেরা কথা বলছে? 
আমি কি আর ওদের ভাষা বুঝি। 
তারপর দেখি, 
পাখিদের কিচিরমিচির হলো বন্ধ। 
একটি পাখি গেলো উড়ে, মাঠের দিকে 
আরেক টি বসে আছে, গাছের ডালে। 
তাকিয়ে আছে মাঠের দিকে। 
কিছুক্ষণ বাদে - 
পাখি টি এলো উড়ে হতাশ হয়ে। 
শুনতে যেনো পেলাম আমি, 
আস্তে করে বল্লো পাখিটি
কি-চির-মি-চির। 
তখুনি গেলো উড়ে আরেকটি পাখি
ঐ বাগানের দিকে। 
আর, সঙ্গে সঙ্গে উড়ে এলো বাগান থেকে, 
অন্য পাখিটিকে বললো তারাতারি - 
কিচিরমিচির কিচিরমিচির। 
আর সঙ্গে করে নিয়ে গেলো
তার সঙ্গীটিকে ও। 
রইলাম আমি তাকিয়ে গাছটির দিকে। 
এলো নাকো আর ফিরে 
ঐ পাখি দুটি। 
ছোট্ট খোকা আমি, 
বুঝি না আমি ঐ পাখিদুটির কথা। 
তবে পাখিদের কিচিরমিচির 
করার কারণ আমি বুঝেছি, 
ওরা খাবার খোঁজ করার কথা বলছিল। 
পাখি দুটির কথা নয় আমি বুঝলাম। 
কিন্তু, পাখি দুটির নাম তো আমি জানি না। 
আমার পাশে থাকত যদি বড়োরা কেউ-
করতাম আমি তাদের  জিজ্ঞাসা। 
আচ্ছা পাখি দুটির নাম কি? 
                              

আলোর রোশনাই - প্রদীপ বাগ


 

শাক্ত ধর্মের আরাধ্য দেবী তুমি আদ্যাশক্তি মা মহামায়া,
ঘোর অমানিশার কুজ্ঝ্বটিকা থমকে জীবন ভুত চতুর্দ্দশী।
মহাশ্মশানের বুকে নিত্য ভুতের নৃত্য চিতার দাবানলে,
করেছে গতিরোধ মহাকাল শায়িত মা কালীর পদতলে।
স্বর্গ মর্ত্য পাতাল ধরাধাম সর্বত্র নরাধম অসুরের গ্রাসে,
দর্পের কোলাহল উন্মত্ত জয়ে দৈত্য দানবেরা অট্টহাসে।
ষড়রিপুর যূপকাষ্টে মানবতা বলি রক্ত তিলক ললাটে,
মুন্ডমালিনী করালবদনী শুধু হাসে আর ভেংচি কাটে।
লালসার যজ্ঞকূন্ডে দগ্ধ কৈশোর যৌবন কোন অভিশাপে?
তৃপ্ত রসনা সিক্ত বাসনা বার্ধক্যের শেষে হরিনাম জপে!!
স্বার্থের টানাটানি পঙ্কিলতা ভরা জীবন যায় বিফলে,
শেষ পলকে মুদিবে আঁখি তারায় যেন গো মাতারা মেলে।
আলোক মালায় প্রতি বছর আসে কালীপুজো দীপাবলি,
জ্বলেনা হৃদয়ে জ্ঞানের দীপ থাকে অন্ধকার কানাগলি।
ভাগ্যের আকাশে আশার ফানুস আলোর রোশনাই জ্বলে,
দিয়েছো বরাভয় সন্তানেরে মাগো সেকি তুমি ভুলে গেলে!
কালিমা মুছে দিয়ে ত্রিনয়নে দীপ্ত তেজে ঘুচে যাক তমসা,
উদ্ভাসিত হোক চেতনার রোশনাই জেগে উঠুক মানবতা।।
       

দীপাবলি - ডাঃ অসিত কুমার সরকার


 

অন্ধকার থেকে আলোর পথে
শুরু হয়েছে এই যাএা;
সবার জীবনে এই দীপাবলি 
আনুক নতুন মাএা। 
তমসাবৃত মন থেকে তমসা 
হয়ে যাক আজ দূর ;
আনন্দে মন উঠুক ভরে, 
এই প্রাণেতে বাজুক সুর। 
মন মন্দিরটি সাজুক আলোতে, 
হৃদয়েতে দীপ জ্বালি, 
মুছে যাক এই মনের কোনায়, 
জমে থাকা যত কালি। 
বিষয় বিষেই ডুবে থাকা মনে 
জটিলতা অবিরত ;
হাজার জ্বালা যাতনায় 
মনের গভীরে ভীষণ খত! 
এই দীপাবলিতে প্রাথনা করি
মিলে মিশে একসাথে, 
অশুভ শক্তির বিনাশ হোক, 
দীপাবলির শুভ রাতে। 
মায়ের আশিস সকল সময়
আছে আমাদের পরে ;
হৃদয় হোক এই দীপাবলি, 
হোক দীপাবলি অন্তরে। 
এই দীপাবলি হৃদয়েতে জ্বলে, 
যাক সম্পীতির আলো ;
মন থেকে মুছে  যাক আবিলতা 
যত গ্লানি যত কালো।

বর্ণালী - পরেশ চন্দ্র দাস ।




অমাবস্যার অন্ধকারাচ্ছন্ন শ্যামা মূর্তি-
বর্ণালীর ছটায় দৃশ্যমান ।
কুহকজাল কেটে নিভৃতে দন্ডায়মান
হইয়া—মাতৃবন্দনার অমোঘ আস্ফালন ।
প্রতিফলন প্রতিসরণের খেলায় জগৎ
- বাসী মেতেছে ,স্পিরিচুয়াল বৈভব
গা- মুচড়ে দ্বীপদানে পূজিত হচ্ছে
তমশা।  প্রগাঢ়  তিমির  নেশা নর খাদকদের নিশানা বৃত্ত । মাতৃআরাধনায় সংস্কারে পরিনীত
ছিল,আছে,থাকবে । মৃনাল কুঞ্জে
পদ যুগল  বন্দির ভক্তিমিশ্রিত ছলনা
সর্বজন বিদিত । 
মূক হয়ে প্রহর গুনবার পালায় বর্ণালী পাহারা দেয় গোটা রজনী ।
তন্দ্রাচ্ছন্ন  স্বপ্নে ভেসে ওঠে ভৈরবীর 
শোষক-শোষিতের গীতমালা ।

        

Monday, 1 November 2021

বেকারত্ব - দিলীপ কংস বণিক

 

বেকারত্ব জীবন এক চরম অভিশাপ--
নিরস ছন্দহীন ভীষণ দুর্বিষহ সন্তাপ--
কুড়েকুড়ে খায় যুবসমাজের চেতন, নির্বাক ভবিষ্যত--
সময় অবসাদ গ্রস্থ হয়ে  হারায় ইজ্জত--
কর্মহীনতায় বিবেক ধ্বংস হয়, মনুষ্যত্বের লয়--
আসে চরম বিপর্য্যয়,  মানবতার অবক্ষয়--
কর্মেই পায় মানব সুস্থ জীবন, বাঁচার অধিকার--
আশা-নিরাশা পথের দিশা গ্রাস ক'রে  'বেকার'--
বিকৃত রাজনীতি, নেতৃত্বের কূট-নীতি, করে ভ্রষ্টাচার--
হয় স্মৃতি ভ্রংশ, মনুষ্যত্ব ধ্বংস, যিনি হন  'বেকার'--
বেড়েই চলেছে ক্রমান্বয়ে বেকারত্বের হার!
সংবাদে সান্ত্বনা র বাণী' ই শোনায় সরকার!
শুন্য রয়েছে অনেক  'পদ'  হচ্ছে না পূরণ--
বাড়ছে বেকার সংখ্যা,  বুঝিনা কি কারণ!
ট্রেন-ষ্টেশন ঝাড়ুদেয় ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ার!
ডিগ্রি পেয়ে ও চাকরি মিলছেনা! এ লজ্জা কাহার?
বলছে সরকার ঋণ নাও  কর স্বাধীন ব্যাবসা!
বাণিজ্য ঢোকেনা মাথায়, প্রাপ্য  শুধুই হতাশা--
ভিটে-মাটি বেচে, অনেক কষ্টে, 'ডিগ্রি' পেলো ইঞ্জিনিয়ার--
দেখে আশার আলো, মা-বাবা থাকিবে ভালো, স্বচ্ছল সংসার--
কিন্তু হায় চাকরি নাহি পায়, নাম লেখাতে হয়  'বেকার' খাতায়--
তাড়িয়ে বেড়ায় সর্বক্ষণ প্রায় ভাগ্য বিড়ম্বনায় বেকারত্ব যন্ত্রণায়-- 
বেকারত্বের জ্বালায়, জীবন অবহেলায় করে কেহ আত্মহনন--
এলে 'সাম্যবাদ' ঘুচিবে প্রমাদ, হবে বেকারত্ব দূরীকরণ---

জীবিকা - পরেশ চন্দ্র দাস

   

উদ্যোগ নিয়ে জন্মায় শিশু-
                  সমাজ দেয় তারে তালিম,
শিক্ষার মানপত্র দামী
                    মেধাতেই অল্প জালিম।
কর্মক্ষেত্র ধুঁকছে ঠান্ডা ঘরে
                     ডিগ্রির  চোথা পকেটে,
গরম ভাতের আশায় ছোটে
                      মেধা ঝুলছে  লকেটে ।
স্বপ্ন বেচে ভুতের বাড়ী
                       জুয়ায়  লাগায় দাঁও,
দেশ রাজ্যের কাদা খেলায়
                        জল এখন বিশ বাঁও।
বন ছেড়ে মনে জ্বলছে দাবানল
                       পরিবর্তন নীতি নীতি,
ম্যানুয়ালে বাদ পরেছে যারা
                   ছাঁটাই এ বেড়েছে ভীতি ।
প্যান্ডামীক বাধ সেধেছে
                     নীতি আয়োগ জগন্নাথ,
অজ্ঞতা চেনায় অন্ধকার পথ,
               শুরুটা ভালো শেষটা বরবাদ।
হিড়িক পড়েছে যেনতেন প্রকারেন
                     স্বার্থ সিদ্ধির চোরা হোডিং,
পথ চলা শুরু হয়েছে কেবল-
                     বাধ্যতা মূলক হবে কোডিং।
শিক্ষার মানপত্র মানদন্ডে নয়,
                       স্কিলে সাজাও যত্নে,
আবেগ কে পুঁতে ফেল সবে-
                    খনন করো উদ্যোগ রত্নে ।
   

বেকারত্ব - শক্তি পদ সেন

 

দেশ চলেছে দারিদ্র্যে আজ,আছে অনেক বেকার,
শিক্ষিতেরা না পায় কাজ,হচ্ছে কেউ বা ' হেকার '।
বড়লোকদের প্রতি ক্ষোভ জমেছে, দেশের সম্পদ করছে যারা লুঠ,
গরিবদের বেলায় অবহেলা, সেথা নেইকো কোনো  ' ছুট '।
রেশনেতে দিচ্ছে লাইন,দেশের আইনে তাদের আড়ি,
টাকা - পয়সার অভাবে গালে জমছে গোঁফ - দাড়ি।
বড়লোকদের প্রতি অকৃপণ সরকার ,পক্ষে হচ্ছে আইন,
দেশ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে, দু চার জনা করছে জীবনে ' সাইন '।
একদিকেতে টাকার পাহাড় জমছে সারা দেশে,
আরেক দিকে আমজনতা ঘুরছে ভিখারির বেশে।
বড়লোকদের করছে তোষণ বাঁচাতে তাদের গদি,
নির্বাচনটা তারাই করায়, ভয় -- গদিটা হারায় যদি !
বলছে তারা বিনামূল্যে সারা দেশে দিচ্ছে ভ্যাকসিন,
পিওর চামড়া বলে চালায় তারা, আসলে সেটা রেক্সিন।
জ্বালানির দাম অগ্নিমূল্য,বাড়ছে সারা দেশে,
জিনিসের দাম বাড়ে কেন, ঝাড়ছে না তারা কেশে।
কেউ খাচ্ছে গড়গড়িতে , কেউ বা তামাক হুঁ কায়,
সবার লক্ষ্য একটাই ভাই, কিভাবে পকেটে ঢুকায়।
শিক্ষাব্যবস্থায় আছেটাই কি -- নম্বর এক ঝুড়ি,
সেই ঝুড়িটা মাথায় নিয়ে কাজের খোঁজে করছে দৌড়াদৌড়ি।
অনাহারে মরছে মানুষ -- বিশ্ব সূচক দেখো,
পাক - বাংলা - নেপাল এগিয়ে, না হয় তাদের থেকেই শেখো।

Sunday, 31 October 2021

তোমার তুলনা তুমি নিজেই - নূপুর আঢ‍্য




প্রতিদিন প্রতিক্ষণ তুমি করছো 
অসাধ্য সাধন,
হাসিমুখে নিয়েছো মেনে 
করোনি আলগা বাঁধন।
তোমার ছোঁয়ায় সংসার আজ 
সুখের নিকেতন,
সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে রেখেছো 
তব গুণে সারাক্ষণ।
নিজের কষ্ট দাওনি বুঝতে 
করোনি অভিযোগ,
বলার আগে করে দাও সব 
একেবারে অমোঘ।

তুমি যে একাধারে প্রেমময়ী,স্নেহময়ী 
জায়া জননী,
নিজেকে উজাড় করে বিলিয়ে যাচ্ছো 
বুঝতে দাওনি।
তোমার তুলনা তুমি নিজেই
যতই বলি - হবে না বলা,
ওগো দশভুজা,গৃহের লক্ষ্মী,
ভেবো না - তুমি একলা।
আমরা তোমার পাশে আছি
থাকবো চিরদিন,
তোমার সঙ্গ লভিয়া হয়ে কৃতার্থ 
নিয়ত অমলিন।

Wednesday, 27 October 2021

চিন্ময়ী মা - প্রদীপ বাগ



সারাদিন ঝিরঝির করে বৃষ্টি হচ্ছে,একঘেয়ে ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না,বন্ধু নীলেশের মুখেই শোনা গল্প আজ আপনাদের শোনাবো- বর্ষাস্নাত এই রকমই দুর্গাপুজোর সময় একটা ঘটনা যা আজও নীলেশের কাছে কোনো  ব্যাখ্যা নেই।নদীয়ার বিখ্যাত মৃৎশিল্পী জীবন কৃষ্ণ পালের নাম শোনেননি এমন লোক খুব কমই আছে।নীলেশের পাশের গ্রামে কুড়ি-পঁচিশ ঘর বসতি নিয়ে কুমোড়পাড়া,সেখানকার মানুষেরা চাষাবাদ ছাড়াও বাড়তি রোজগারের জন্য অনেকেই বিভিন্ন মূর্তি,খেলনা ইত্যাদী তৈরী করতো।যাদের মধ্যে অন্যতম জীবন কৃষ্ণ পাল তার হাতে গড়া দুর্গা ঠাকুর সূদূর অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বিভিন্ন দেশে সমাদৃত হয়েছে। সরকার থেকে বিশেষ পুরস্কৃতও হয়েছেন।অথচ মানুষটি কে দেখলে বোঝার উপায় নেই, কালো মোটা ফ্রেমের চশমা,হাঁটুর উপর ধূতি একটা ফতুয়া,কখনো বা খালি গায়ে কাঁধে গামছা।বেশিরভাগ সময় খালি পায়ে হেঁটে চলে বেড়াতে ভালোবাসে।
জীবন বাবু মূর্তি গড়াই বেশি পছন্দ করে,এক একটা মূর্তি তৈরী করতে কয়েক মাস লেগে যেত, এই সময় নাওয়া খাওয়া ভুলে বিভোর হয়ে কাদামাটি দিয়ে আঙুলের টানে মূর্তি গুলো সব জীবন্ত হয়ে উঠতো.........

একমাত্র মা মরা মেয়ে দুর্গা ছাড়া তার ত্রিভূবনে কেউ নেই, দুর্গার জন্মের সময়ই তার স্ত্রী কমলবালা ইহলোক ছেড়ে চলে যায়। সেই থেকেই জীবন বাবুই দুর্গার মা আবার বাবা।পরম স্নেহ যত্নে মেয়েকে লালন পালন করছেন এমনকি শত প্রতিকূলতার মধ্যেও দ্বিতীয় বার বিয়ে পর্যন্ত করেনি পাছে মেয়ের অযত্ন হয়।আড়ালে আবডালে লোকেরা কানাঘুষো করে,এই মেয়েটা অলক্ষী জন্মাবার সাথে সাথেই মা টাকে খেয়েছে। জীবন বাবু এসব শুনেও চুপচাপ থাকতো কারণ চলা পথ,বলা মুখ কখনো আটকানো যায় না।ক্রমশঃ দুর্গা বিবাহযোগ্যা হয়ে ওঠে সমত্থ মেয়েকে বেশি দিন তো নিজের কাছে রাখা যায় না তাছাড়া চোখ বুজলে মেয়েটার ভবিষ্যত কি হবে।সম্বল বলতে কাঠা চারেক জমি, কয়েকটা মেডেল আর শংসাপত্র।সাতপাঁচ ভেবে শান্তিপুরে একটি সম্বন্ধ ঠিক হলো।অগাধ জায়গা জমি,ব্যবসা বর্ধিষ্ণু বনেদী পরিবার। শান্তিপুরের বিখ্যাত রাশ মেলায় সুভাষ ঘোষের রাশের ডালা নামকরা,তাঁর জেষ্ঠ্য পুত্র অমর ঘোষের সাথে বিয়ে স্থির হয়েছে। 
দুর্গা নামেও যেমন রূপে গুণেও তেমন সাক্ষাৎ মা দুর্গা- টানাটানা চোখ টিকালো নাক মাথা ভর্তি চুল লেখাপড়াও মোটামুটি জানে।নম্র ধীর স্থির এবং খুব সহজেই সকলকে আপন করে নিতে পারে এটাই হলো ওর মহৎ গুন।এসব দেখেই ছেলের বাড়ির লোক এককথায় বিয়ের দিন পাকা করে গেছে।তারা নিজেরাই মেয়েকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে যেতে চায়।

দুর্গা কিছুতেই বিয়ে করতে রাজি নয়,কান্নাকাটি করতে লাগলো।বাবা এই বয়সে তোমাকে কে দেখবে?আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না।
-- দুর পাগলি তুই তো আমার মা।তোর শক্তি,প্রেরণায় আমি ঠিক থাকবো,তুই চিন্তা করিসনা।বেশিরভাগ সময় জীবন বাবু দুর্গার কাছাকাছি থাকে,ছলছল চোখে দূর থেকে মেয়েকে সর্বদা নিরীক্ষণ করে।ছোট থেকে মানুষ করার সব ছবি মানসপটে ভেসে উঠে আসে।

যথারীতি ২রা আশ্বিন গোধূলি লগ্নে চারহাত এককরে কন্যা সম্প্রদানে শুভ বিবাহ প্রতিপন্ন হলো।পরের দিন মেয়ে জামাই কে বুকে জড়িয়ে ধরে চোখের জলে বিদায় দিলেন। সমস্ত অনুষ্ঠান পর্ব জীবন বাবু দক্ষতার সাথে নিখুঁত ভাবে শেষ করলো।

এবারে পাঁচটা দুর্গা ঠাকুরের বায়না নিয়েছে।মোটামুটি সব শেষ হয়ে এসেছে শুধু একটা ঠাকুরের চোখ মুখ আঁকা বাকি।হাতে বেশি সময় নেই,মেয়ের শোক কে বুকে চেপে রেখে টিনের দরজা সরিয়ে ঠাকুরগুলো ফিনিশ করতে লাগলো,চোখ মুখ আঁকা প্রায় শেষ হঠাৎ বলকে বলকে নাক মুখ দিয়ে কাঁচা রক্ত উঠতে লাগলো,আপন মনেই বলে মা রে আর একটু সময় দে তোর মুখটা একটু পালিশ বাকি আছে।দ্রুত হাত চালাতে থাকে, বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারে না হাত থেকে তুলি ক্যানভাস পড়ে যায়........

বৌভাতের অনুষ্ঠান-মাথায় মুকুট,টানা নথ চন্দনের কল্কায় একেবারে প্রতিমার সাজে সিংহাসনে দুর্গা বসে আছে।অভ্যাগতদের সাথে আলাপচারিতার মাঝে মাঝে আকুল হয়ে চোখ দিয়ে কাউকে খুঁজছে।জামাই কে সাথে নিয়ে বাবা কাছে আসতেই দুর্গা বাবার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। জীবন বাবু মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিতে দিতে বল্লো-কাঁদিস না মা কাঁদিস না, দেখবি এবারে আমি তোর ছেলে হয়ে তোর কাছেই থাকবো। এমন সময় দমকা হাওয়ায় লাইট নিভে গেল বাইরে বজ্র বিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে।পরের দিন সকালে খবর এলো জীবন বাবু মারা গেছে।

শোকে মূহ্যমান দুর্গাকে নিয়ে জামাই নদীয়ায় এসে পৌঁছালো। টিনের দরজা সরিয়ে সবাই দেখে মেঝেতে চাপ চাপ রক্তের মাঝে জীবন বাবুর নিথর দেহ পড়ে আছে তার ঠিক সামনের মূর্তি টা হুবহু মেয়ে দুর্গার মতো দাঁড়িয়ে মেঝের দিকে বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে আছে। পাড়ার লোকেরা বলে তুই যাবার পর এই ঘর থেকে আর জীবন বাবু বের হয়নি........??
            

Tuesday, 26 October 2021

মেস বাড়ির রকমারি রঙ্গ - শক্তি পদ সেন


  ভদ্রলোকের নাম বিপুল দাম। না, তিনি কোন নামী ব্যক্তিত্ব নন। মানে তিনি কোন কিছুর উদ্বোধন করেননি বা কোন গদ্য বা পদ্য লেখেননি। তা যা হোক, ওই ভদ্রলোকের সাথে আমার একবার আলাপ হয়। ওটাকে খেজুরে আলাপ ই ধরে নিতে পারেন। আচ্ছা দেখুন, আজকালকার দিনে শাক - সবজি, জামাকাপড়, খাদ্য - দ্রব্য, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিকস সব কিছুরই দাম বাড়ছে আর একদিকে মানুষের দাম কমছে। তো দেখুন,নামটাই হলো তাঁর বিপুল দাম। সত্যিই তাঁর দাম কিন্তু বিপুল ই, অন্ততঃ তাঁর বন্ধু - বান্ধব,শুভানুধ্যায়ী, অনুসারী সকলের কাছেই। ভদ্রলোকের কথায় এমন যাদু যে কথায় কথায় আপনাকে কিছুক্ষনের মধ্যে বিমোহিত করে ছাড়বেন। তিনি আমার কাছে একদিন গল্প করেছিলেন।তিনি নাকি বরাবরই হোস্টেলে বা মেসে থাকতেন। সত্যি, এমন জমাটিয়া মানুষ দুনিয়াতে খুব কমই দেখা যায়।তিনি বেশ রবীন্দ্র সংগীত গাইতেন সাথে কিছুটা রস ঢেলে। সেদিন সকলেই আমরা তক্ত পোশের উপর বসে আছি। হঠাৎ ই তাঁর বিপুল - বিশাল শরীরটা দেখিয়ে তিনি গলা ছেড়ে গান ধরলেন ---" আমার এই বিপুল বিশাল দেহখানি তুলে ধরো,,,,,। আর মেসের সকলে তাঁর গানের সাথে সাথে তাল ধরে নাচতে শুরু করল। দু - চার জন তো থালা বাজাতে শুরু করল। ওই গানের পর ই আরেকজন আরেকটা গানের তালে তালে নাচতে শুরু করল ---- " জানা, ও মেরি জানা,,, অ্যয় ম্যায় তেরে রাজা,,,লায়লা,, ও মেরি লায়লা,,,। আ। - যা,,মেরে বাহু মে আ,, যা,,,,।সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গেল সকলের উদোম নাচ। মেস বাড়ির আশেপাশের উঠতি বয়সের ছেলে - মেয়েরা জানলা থেকে উঁকি মেরে দেখে আনন্দ উপভোগ করতে লাগল।
  পরে অবশ্য শুনেছি -- কেউ কেউ নাকি এতে বিরক্ত হয়ে মেস বাড়ির কাজকর্মের ব্যাপারে তিরস্কার ও করেছে। তবে কে কার কথা শুনে ? দিনের পর দিন মেসের এই হযবরল দিনের পর দিন চলতেই থাকত।
  কি অদ্ভুত জমিয়ে রাখার ক্ষমতা! দেখুন ,আমি বলেছি কিন্তু খেজুরে আলাপ। তার মানে এই নয় যে তিনি খাজুরা হের সব জিনিস পছন্দ করেন বা তার সাথে তাল মিলান। আসলে তাঁর রসের নৌকার খেয়া দিনে অন্ততঃ বিশ - পঁচিশ বার খেপ মারে।
   আর একবার তিনি শোনালেন --- মেসে দিন দুয়েক ঠাকুর নেই।আবার কাজের মাসিও বেপাত্তা। তো তখন সেই কাহিনী তিনি যা বললেন -- বেশ মজার ব্যাপার। তখনকার দিনে কয়লার উনুনে রান্না হত।সেই কয়লার ছাই পাশেই পড়ে থাকত।সকালে উঠে সবাই কার ডিউটি হল কয়লার ছাই দিয়ে থালা মাজা। তো তিনি নিজেকে এ ব্যাপারে অনভিজ্ঞ বলেই বর্ণনা করলেন। পাশাপাশি বসে লাইন দিয়ে সবাই থালা মাঁজছে।লাইন দিয়ে বলতে তখনকার দিনে মেয়ে বউরা যেমন লাইন দিয়ে পাথরের যাতায় মাসকলাই ভাঙত -- অনেকটা সেইরকম। তো বসে থালা মাজতে মাজতে অনেকের গুন গুন করে গান ও চলছে। কয়েকজন আবার উত্তেজনা চাপতে না পেরে উঠে দাঁড়িয়ে কয়লার ছাই সহ থালা হাতে নাচতে শুরু করে দিল ---
"জানা, ও মেরি জানা,,,
এয়, ,, ম্যায় তেরে রাজা,,,
লায়লা, ও মেরি লায়লা,
আ,,,যা,,মেরে বাহু মে আ,,,যা,,,
  তো সময়টা গ্রীষ্ম কাল। কুয়োতেও বেশ একটা জল নেই। কোন রকমে বালতি নামিয়ে কুড়িয়ে বাড়িয়ে আধ বালতি করে জল বার কয়েক উঠল।নাচা গানার পালা শেষ হলে কোন রকমে সবাই থালাগুলো তখন পরিস্কার করে নিজের নিজের জায়গায় রাখল।
  তারপর আরেক জনের গান সমেত নাচ শুরু হল। মেস বাড়িতে শুরু হল --" জিলে লে,,, জিলে লে,,,আও ,,, আও আও জিলে লে,,,,। মানে ওই আলুভাতে গিলে লে,,,,গিলে লে,,,,। সত্যিই সেদিন আলুভাতেই হল। ঠাকুর তো নেই। কারুর রান্নার অভিজ্ঞতা নেই। কোন রকমে মশাই সেই বড়ো হাঁড়িতে কয়লার উনুনে বানানো আলু ভাতই খাওয়া হল। তার অধিক আর কিছুই জুটল না। এদিকে অনেক দেরি করে চান টান করে খাওয়া হল।ঘন্টা তিনেক বিশ্রাম। তারপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল।
  এবার এল চায়ের পালা।একজন গিয়ে ততোধিক উৎসাহী হয়ে চা বানাল।এখন বলে উঠল  -- শালা, চা করতে জানিস ? যা চা হয়েছে দেখছি, মনে হচ্ছে তাতে দিতে আর কোন কিছুই বাকি নেই। শালা, চায়ের এমন স্বাদ যেন পাঁচ ফোড়ন ,জিরে, ধনে সব দিয়ে দিয়েছে --- এক বিতিকিচ্ছিরি যাচ্ছেতাই স্বাদ ! তাহলে এত কষ্ট করে চা করার কি দরকার ছিল ? যা হোক,তখন চায়ের সাথে বিস্কুট কি জুটল জানেন ? এখনকার মতো সহজপ্রাপ্য নামী ব্রিটানিয়া বিস্কুট নয়,তৎকালীন বিখ্যাত ' ভগবতী ' বিস্কুট। সত্যিই ,মেসের এই ভগবতী দের জন্য ওই ভগবতী বিস্কুট ই সেরা।একজন ত বলেই উঠল --" আজকে আমরা সবাই ভগবতী। কার্তিক মাস। নেহাত পাশের গাঁয়ের লোকেরা খোঁজ রাখে না। না হলে আমাদের সকলের শিংয়ে ( থুড়ি মাথায়) ধান শিসের টোপর আর কপালে সিঁদুর লেপে দিয়ে দেখাত যে ভগবতী দিগকে দুনিয়ার মানুষ বেশ সুখেই রেখেছে।
  সত্যিই ,ওই জমাটিয়া ভদ্রলোককে আর যাই বলেন, তাতে তাকে অন্ততঃ খেজুরে আলাপের মানুষ কোনো ভাবেই বলা যায় না।

Sunday, 24 October 2021

কোথায় চেতন - মঞ্জুলা বর

 



সুন্দর  পৃথিবীতে মানুষ কবে আর 
মানুষ হবে ? এতো শিক্ষা ব‍্যবস্থা  
এতো আইন  কানুন তবুও  শত সহস্র
 নারীর গণধর্ষণ গর্ভকালীন !

 কেমন শিক্ষা?---ভাবতে অবাক লাগে
 এতো পুলিশের সমারোহ পথে পথে--
 হাজার হাজার  জন মানব তবে কী
 করে মোড়ে মোড়ে নারীর  কেন 
 এত ধর্ষণ  ও মৃত্যু  !

আসলে সব থেকে ও কিছু নেই অভাগা 
দেশে! জ্ঞানের আলোকে  মানুষ কবে  
আর মানুষ হবে?সবাই আমরা মুখে 
কত জ্ঞানের বাণী শোনাই কিন্তু সত‍্যি কী 
কেউ  সঠিক  পথে চলি! সবটা যেন  
অজানা! ------

বিবেক চেতন যদি জাগতো তবে দিনের 
পর এতো অন‍্যায় অরাজকতা হতো না!
মিথ‍্যার কবলে সত‍্য হতো না জর্জরিত ।

লোভের মোহে দিকে দিকে ধান্দা 
আর মারামারি  । স্বার্থের তরে হিংসা,ঈর্ষা ,
ক্ষুণ,খারাপি  চলছে অহরহ।  

 কোথায়   মনুষ্যত্ব ?কোথায় চেতন?
কোথায়  বা  মানবিকতা? নীরবে আজও 
কাঁদে  অসহায়  ধরণী ।।

এসো - গাই জীবনের গান - নূপুর আঢ‍্য


 
লুন্ঠিত,রক্তাক্ত আজ মানবিকতা হচ্ছে অবক্ষয়,
পৈশাচিক উল্লাসে ধর্মান্ধরা করছে নৃত্য।
দেশের দশের ওরা বিভীষিকা,নরকের কীট,
ধর্মের আড়ালে আপন ধর্ম করছে কালিমালিপ্ত।

সকল ধর্মের মন্ত্র -- প্রেম ভালোবাসা,
মানুষের কাছে আসা,পাশে থাকা,
বন্ধুত্ব,সহমর্মিতা,মানবিকতা,শুদ্ধতা,
ন‍্যায়ের সাথে অপর ধর্মকে সম্মান জানানো।

এসো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষ,
কতিপয় পামরদের করে প্রতিহত,
ওদের ঘৃন্য আচরণ করে নির্মূল,
সত‍্য শিব সুন্দরের হই পূজারী।

মানুষের জন্য ধর্ম,মানুষের হিতার্থে 
মানুষ হয়েছে ধর্মের অনুশাসনে আবদ্ধ।
এসো হিন্দু,এসো মুসলমান,এসো শিখ খৃস্টান,
সৌহার্দে হই মিলিত,গাই জীবনের জয়গান।

মুসলমান - দিগন্ত কুমার দাস।


  

মুসলমানের সজ্ঞা জানো-
 কাকে বলে মুসলমান?
মুসলমান তাদেরই বলে- 
বিশ্বে যারা শান্তি চান।
নয় সে মুসলিম, নয় সে হিন্দু,
 নয় সে বৌদ্ধ বা খ্রস্টান,
সকল ধর্মের, সকল জাতির
প্রতি যাদের টান সমান।
তবে কেন মাটির দেহের
প্রাণকে নিয়ে এতো রাগ!
মাটির দেহ খুন করলে কি,
লাগেনা কলংকের দাগ?
যে মাটি- মা শেষ ঠিকানা,
তাকেই যদি ভেঙ্গে দাও,
কেমন করে মানতে পারি,
তোমরা কারো শান্তি চাও?
তোমরা যাদের করছ আঘাত,
তারা কি সব মানুষ নয়?
মানুষ মেরে হয় কখনো, 
ধর্ম কিম্বা জাতির জয়?
মানুষ হয়ে মানুষ মারো,
ভাবোনা কে আপনজন,
সব মানুষ আজ মরে গেলে,
কাকে নিয়ে কাটবে ক্ষণ?
        

শিরোনাম : রক্ত দিয়ে হয় লেখা - আরতি সেন




মানবতার অবক্ষয় আদিম  যুগ থেকেই
মানুষের  মধ‍্যে এক প্রগাঢ় অবস্থানে বিদ‍্যমান।
স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলেই মানুষের  আদিম হিংস্র রূপ হয় প্রতীয়মান।
রক্ত লোলুপ হিংস্র জানোয়ারের থেকে হয়ে উঠে হিংস্র ও ভয়ংকর 
দাঙ্গা খুন রাহাজানি সব কিছুই  যেন মানবের জন্মগত অলংকার 
"মানুষ  মানুষের জন‍্যে" এই কথাটা বর্তমান যুগে সম্পূর্ণ ভাবে নয় প্রজোয‍্য
কারো প্রতি কেউ করে না সমব‍্যবহার ন‍্যায‍্য।
আর্য অনার্য মুঘল পাঠান  সকলেই মানব সভ‍্যত‍া বিকৃতিকরণ।
মানব ইতিহাস  রচিত হয় অঝোর ধারায় হয়  মানবের রক্তক্ষরণ
সকলের অন্তরে যেন প্রজ্জ্বলিত এক লেলিহান শিখা
যার পরিসমাপ্তির ইতিহাস  রক্ত দিয়ে হয় লেখা।।

মনুষ্যত্ব জ্ঞানে নিবৃত্ত হয় - দিলীপ কংস বণিক।



অবক্ষয় তখনই হয়, যখন কোন মানুষ বা কোন জাতি হয় আত্মকেন্দ্রিক।
একা আমি ভালো থাকবো, একা ই সব ভোগ করবো সকল সমষ্টিক।।
অবক্ষয় নিবারণ হবে, সামগ্রিক চিন্তন যবে মানব মনে বোধোদয়।
মানবতার উন্নতি, সুখি মানব জাতি সামগ্রিক ভাবনায় উদয়।।
লেখাপড়া শিখলে ই মানুষ হ‌ওয়া যায় না, মানুষ হতে চাই মনুষ্যত্ব জ্ঞান।
মানবতার উন্নতি, বিশ্বের সমগ্র জাতি' সুখ বিকাশে থাকে যার ধ্যান।।
মনুষ্যত্ব জ্ঞানে সেই হয়েছে মানুষ, পর দুঃখে কাঁদে যাহার প্রাণ।
পর সুখানন্দে আন্দোলিত  হৃদয় সুখানুভূত সেই তো মহীয়ান।।
আত্মকেন্দ্রিক মানুষেরা হয় শোষক, লুটেরা বাজ নৃশংস।
তারা দিয়েছে মনুষ্যত্ব বলি, করে মানব কল্যাণের সকল ধ্বংস।।
মন্দির ভাঙ্গেনি নিছক, ভেঙ্গেছে মানুষের হৃদয়, ভেঙ্গেছে মানবসভ্যতা।
ভাঙ্গিলো এ সব যে জাতি প্রমত্ততায় মাতি, প্রকাশিলে তার ধর্মের নগ্নতা।।
সাজিয়াছেন যারা ধর্মগুরু, এখনো তারা করেন নি শুরু ঢাকিতে আপন লজ্জা।
সকল ধর্ম ই শান্ত হয়, হানা-হানি কোন ধর্ম নয় উড়ায়নি শান্তি' ধজ্জা।। 
মনুষ্যত্ব জ্ঞান   হয় ধর্ম পরায়ন  পালন করে ধর্মের শিষ্টাচার।
"সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই" কন্ঠে ধ্বনিত বারংবার।।
নম্র  বিনয়ী  সহিষ্ণুতা  সাম্য  সত্যবাদীতা আনে মানবতার উন্নতি। 
মানবতার অবক্ষয় মনুষ্যত্ব জ্ঞানে ই ধ্বংস হয়, জাগ্রত বিবেক সভ্যতার প্রগতি।।
কলুষ, হিংসা-বিদ্বেষ করে সকল নিঃশেষ,  হয় মানবতার অবক্ষয়।
 হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার, গ্রহি সভ্য শিষ্টাচার শিরে লভি স্রষ্টার বরাভয়।।
হে জ্ঞান দিবাকর,  তুমি চির ভাস্বর, দিনমনি জ্যোতির্ময়।
তব জ্ঞানালোক করে হৃদয় পুলক মুছে দিক মানবতার অবক্ষয়।
        

ধিক্কার - প্রদীপ


 

ভয়ঙ্কর সর্বনাশগুলো দূর থেকেই দেখছি
অন্তর্জাল ও ফেসবুকের আশীর্বাদে।
ধ্বংসস্তুপ দেখছি আর অন্তর্দাহে দগ্ধ হচ্ছি
ধর্মোন্মাদদের তান্ডবলীলার বিভীষিকা দেখে।

নিপীড়িত -নির্যাতিত-নিষ্পেষিত সংখালঘুদের  উপরে 
ধর্মোন্মাদ জিহাদিদের নির্যাতন -হত্যা-ধর্ষন 
মন্দিরে- গৃহে লেলিহান অগ্নি সংযোজনে সমাহিত চিরকালের স্বপ্ন। 
ধর্মের ষাঁড়ের জনস্রোতে ও প্রবল আক্রমণে অস্তিত্ব টেকাই দায়
সংখ্যালঘুদের আপন জন্মভূমির ভিটে মাটিতে। 
মাথা তুলে দাঁড়ানো তো দূরের কথা 
চলছে জীবন বাঁচানোর এক মরিয়া প্রয়াস প্রতিনিয়ত। 
যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতা আবার 
সবুজ-শ্যামল-নরম -নির্মল বাংলার বুকে।
জিহাদিদের পৈশাচিক আক্রোশ -আক্রমন 
মহামান্য সরকারের মৌনতা ধারণ 
এক অভিশাপ, গণতান্ত্রিক নামধারী দেশের কাছে।
এক সোনালি -সুবর্ণযুগ আততায়িদের কাছে
পাগলা হাতির মতোই দাপিয়ে চলছে বাংলার বুকে।
অবাক লাগছে ভণ্ড সরকারের ভণ্ডামিতে,
নীরব বুদ্ধিজীবী -নীরব সুধীগণ এ বর্বরতার কাছে।
কে তবে এ নির্যাতিতদের পাশে?
কিসের দেশ-কিসের জন্মভূমি 
কিসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রাম 
সবই প্রহসন
এই ধর্মোন্মাদ মানসিক বিকলাঙ্গ জিহাদিদের কাছে।
রবীন্দ্রনাথ -নজরুল-জীবনানন্দ- সত্যেন্দ্রনাথদের সোনার শ্যামল বাংলা 

এখন জিহাদিদের পীঠস্থান -মুক্তাঙ্গন।
লজ্জা হচ্ছে -লজ্জা হচ্ছে
সোনার বাংলার এ ঝলসানো রূপ দেখে।
ধিক্কার জানাই তীব্র ধিক্কার জানাই
ধর্মোন্মাদ লুটেরা জিহাদিদের, 
ধিক্কার জানাই তীব্র ধিক্কার জানাই 
মহামান্য গণতন্ত্রের রক্ষক-ভক্ষক প্রহসনের প্রশাসককে।।

নেপোটিজম - ঋজু






এই যে ছেলে ! তুই বেশতো আছিস ওনার নেপো হয়ে
ভিড়ের মধ্যে নিজের তরে সুখটা খুঁজে নিয়ে,

ও দাদা --- আরে ও দাদা শুনুন শুনুন 
ভালোই চলছে অতীত নিয়ে !!নেই কোন দুরাবস্থা!!!
পদলেহনে মত্ত আমি- না হয় হলাম খানেক সস্তা ??

এদিক-ওদিক কান দেই না- শুধু কাজটা আমি করি
বুঝলেন,আমি এদিক-ওদিক কান দেই না, শুধু কাজটা  নিজের করি--
দিনের শেষে আহ্লাদে আমি গুরুর চরণ ও ধরি!

পরের দিনে আবার মাখি- কালি  আমার মুখে
দাদা!!পরের দিনে আবার মাখি- কালি  আমার মুখে
আমার জীবন চলছে ভালোই আছি আমি খুব সুখে ।

তাই ,কাঙ্ক্ষিত ভাষা নগ্ন শরীরে করে গেছে শুধু নৃত্য
দিনের শেষে পরিচয় মোর পা চাটা এক ভৃত্য ।

কি বলেন ? ভৃত্য?? পরিচয়টা বড্ড ভালো শুনে হলাম আপ্লুত!
দেখছি ,তোমার ন্যায় নীতিবোধ একেবারে যে হয়েছে গত।

দাদা!!! আমি দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা এক টুকরো খানি মাংস
বারবার সেথা খেয়েছি খোঁচা তবুও -ছাড়িনি আমার অংশ..
বুঝলেন, তবু ছাড়বোনা আমার অংশ।

তাই ,ওই খানেতে হারিয়ে ফেলেছি আমার লেখার ছন্দ
কলম ভেঙেছি বারবার আমি ভুলে গেছি ভালো-মন্দ,

আমার চিন্তা লোভের বশে- চুপিসারে রাখি বন্ধক
তাই আধার আমার বড্ড প্রিয় -ভয় করি দিবালোক!

হৃদয় আমার স্বপ্নে ঠাসা -আসলে কর্মবিমুখ
তবু স্বল্প সময়ে সুখের পরশ -পেতে আমি  উৎসুক,

গুরুর দেওয়া তিরস্কারও সিক্ত করেনি স্বার্থ
বুঝলেন,গুরুর দেওয়া তিরস্কারও সিক্ত করেনি স্বার্থ
ক্ষতি কি আছে? সত্তা বিলিয়ে -না হয় পেলাম কিছুটা অর্থ!!!

তাই ,দিনের শেষে সবাই নেপো এই জীবন যুদ্ধ টাতে
তাই দিনের শেষে ! সবাই নেপো এই জীবন যুদ্ধ টাতে
আমার গুরু সেও নেপো -অন্য কোন পাতে।।

                              

মানবতার অবক্ষয় - ডাঃ অসিত কুমার সরকার




সমাজে মানবতা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে, 
রাস্তায় শুয়ে থাকা অনাথ শিশুর গায়ে মানবতার স্পর্শ লাগেনি, 
মানবতা আদি যুগ থেকে ধুলো মাটি মেখে জীর্ণ শীর্ণ হয়ে পড়ে আছে, 
সভ্যতার পদদলিতে মানবতা পিষ্ট হচ্ছে, 
মানবতা রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজছে, 
সমাজে এখনো মানবতার দৃষ্টি  পড়েনি ।। 
দুমুঠো ভাতের সন্ধানে পাগলী মেয়েটি আজ গর্ভধারিনী 
ছিঃ! ছিঃ! ছিঃ! এতো অচল অবস্থা সমাজের!! 
তবে কি সুশীল সমাজে মানবতা আজও আসেনি??? 
সভ্যতার হাত ধরে কলিযুগে এসেছে তোলাবাজি, 
ব্যাভিচার লম্পট ছলনার কারবারি, 
তাই আধুনিক সভ্যতায় মানবতা আসেনি।।। 
ওই দেখ মানবতা আসছে খুড়িয়ে, 
মানবতার হাত ভাঙা!! পা ভাঙা!! 
রক্ত মাখা সারা অঙ্গ জুড়ে, 
ওই দেখ মানবতা আসছে চারিদিকে মস্তক ঘুরিয়ে।।। 
একি হাল মানবতার??? 
আজ মানবতা অসুস্থ, 
নিভু নিভু প্রায়!!! 
এই সুশীল সভ্যতায়, 
এই আধুনিকতায়, 
সবকিছু যাচ্ছে এগিয়ে, 
শুধু মানবতার হচ্ছে অবক্ষয়।

রহস্য - পরেশ চন্দ্র দাস


মাকড়সার জালে আবদ্ধ হৃদয়—
ততক্ষন বেঁচে আছি ! যতক্ষন মাকড়সা আসেনি তার বাসায় ।
ঘড়ির পেন্ডুলামটার মতো জীবন,
যতক্ষন চলে ততক্ষন ঠিক ।
মরু বালির বাঁধ শিখিয়ে দেয় অধিকার, তবুও সচল থাকবার-
বালী'র মতো অভিপ্রায় মাত্র।
মরীচিকার জলে স্নান করবার উদ্দীপনা, কূর্মের ডিম পাড়ার সামিল ।
মগজ ধোলাই চলছে অহরহ বিপদকে
সরবত করে গেলাচ্ছে এক শ্রেণীর গোখুরো ।তার মস্তক হেলমেটে মোড়া।
এক বিষাক্ত ধোঁয়াশার পরিমন্ডলে
পেন্টু্লামের ফিতে ধরে দাঁড়িয়ে আছি।
              

মানবিকতা - রিয়া মিত্র

 


চাঁদিফাটা গরমে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ধূপকাঠি বিক্রি করছে পরিমল। এত রোদে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। পা যেন আর চলছে না।
সামনেই একটি বড় তিনতলা ফুলের বাগান দিয়ে সাজানো সুন্দর বাড়ি দেখে কিছু বিক্রির আশায় সে ভিতরে ঢুকল। বেল বাজাতেই বাড়ির কর্ত্রী দরজা খুলে জিজ্ঞাসা করলেন, কী চাই?
-- আজ্ঞে, ধূপকাঠি কিনবেন? খুব ভালো গন্ধ....
তাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই কর্ত্রী বললেন, না, না, নেব না। দুপুরবেলা কেন বিরক্ত করেন, বলুন তো?
পরিমল শুকনো মুখে বলল, ঠিক আছে, দিদিভাই। একটু জল হবে?
কর্ত্রী চেঁচিয়ে বললেন, দুপুরবেলা এসে মানুষের বাড়িতে চুরি করার ধান্দা?
মুখের ওপর দরজাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পরিমল মনে মনে ভাবে, পৃথিবীতে মানবিকতা শেষ হয়ে গেছে। ক্লান্ত-মুখে গেট খুলে বেরোতে যাবে, এমন সময় গেটের পাশের ছোট টালির ঘর থেকে একটি ছোট বাচ্চা মেয়ের গলার আওয়াজ শুনে থমকে দাঁড়ায় সে, কাকু, এই নিন একটু জল-বাতাসা।
পরিমল অবাক হয়ে তাকাতেই মেয়েটি হেসে বলল, আমি এই বাড়ির মালীর মেয়ে। আমি শুনছিলাম, আপনি বলছিলেন যে, আপনার খুব জল পিপাসা পেয়েছে। এ'টা খেয়ে নিন। শরীর ঠাণ্ডা থাকবে।
পরম তৃপ্তিতে জল-বাতাসা খেতে খেতে পরিমল ভাবলো, এখনো মানবিকতা মরে যায় নি.....



সময়ের দৌড়ে মানবতার অবক্ষয় - রীতা রায়


পৃথিবী ছুটছিল  .. দিন থেকে সন্ধ্যা ..
সন্ধ্যা থেকে রাত ..রাত পেরিয়ে আবার সকাল | পৃথিবীর ঘূর্ণনের মাত্রা অনুসরণ করে মানুষও ছুটছিল কারন তারা এতদিনে জেনে গেছে নিজেদের অস্তিত্বের লড়ায়ে এগিয়ে থাকতে হলে ছুটতেই হবে | এই ছোটার নেশা ক্রমে এতটাই প্রবল হয়ে পড়লো যে ক্রমশঃ তারা ভুলতে বসলো তাদের সীমা | সামনে যত বাধা নিমেষে বিলুপ্ত করতেও তাদের দ্বিধা বোধ হলোনা | ফলে প্রকৃতির নিয়মের পরিপন্থী হয়ে দাঁড়ালো তাদের আকাঙ্ক্ষা | একাংশ  মানুষ যখন উদগ্রীব হয়ে প্রায় ছুঁয়ে ফেলছে আকাশটাকে  ..আর একদল মানুষ তখন পিছিয়ে পড়তে লাগলো | এই রেষারেষীর নাম দিল 'ইঁদুর দৌড়' | কিন্তু ইঁদুরেরা কখনো নিজেরা নিজেদের প্রজাতিকে বিনষ্ট করতে একে ওপরের সাথে বিরোধিতা করেনা | তবু, বদনামটা  তাদের নামেই ব্যবহার হলো | আবার মানুষের প্রতি মানুষের অত্যাচারের নামে ব্যবহৃত বিশেষণ 'পাশবিকতা' | পশু কিংবা পাখি তারা কি নিজেদের মধ্যে খাদ্য বা অধিকার নিয়ে কাড়াকাড়ি করে ? একটি কাক কোথাও খাবারের সন্ধান পেলে কা কা রবে অন্য কাকেদের জানান দিয়ে তারপর খাবারে মুখ দেয় | কুকুরের দল একসাথে খাবার ভাগ করে খায় | বাঘ সিংহের মতো হিংস্র প্রাণীও একটি শিকার নিজের পেট ভরার পর অন্যদের জন্য ছেড়ে দেয় | ক্ষুদ্র জীব পিপীলিকা বা মৌমাছি কিংবা পঙ্গপাল .. এরা কি কখনো দলছাড়া থাকতে পারে ? মানুষও সমাজবদ্ধ জীব। একে অপরের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা সত্বেও নিজেদের অধিকার ও আর্থিক স্বচ্ছলতার কারনে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি | নিজেদের প্রতিপত্তি বা প্রাধান্য বিস্তারের জন্য পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করতেও দ্বিধাবোধ করে না তারা |
তা সত্বেও তাদের নামের বিশেষণে 'মানবিক' শব্দটি ব্যবহার হয়ে আসছে | মানবিক বললেই সুস্থ সুন্দর সচেতন অনুভূতি চোখের সামনে ফুটে ওঠে .. আবার পাশবিক বললে একটা হিংস্র দুরাচার অত্যাচার .. এগুলোই বোঝানো হয় | কিন্তু পশুরা কী সবসময় হিংস্র ? তারা নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে কখনো কখনো হিংস্র হয়ে ওঠে | কিন্তু মানুষ তার লোভের বশে হিংস্র হয়ে ওঠে ..পরিচয় দেয় অমানবিকতার | মানবিকতার জন্য শিক্ষার প্রয়োজন হয় না .. প্রয়োজন অনুভূতির , ভালোবাসার |
মানুষ দিন দিন ভুলতে বসেছে তাদের স্বকীয়তা | প্রতিনিয়ত হয়ে চলেছে মানবতার অবক্ষয়। আবার রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতা মানুষে মানুষে নতুনভাবে বিভেদ সৃষ্টি করছে। 'মনুষত্ব' শব্দের অর্থ আজ বিলীন। ধর্মের অর্থও আজ বদলে গেছে। ধর্ম শব্দের অর্থ ন্যায় , আর অধর্ম শব্দের অর্থ অন্যায়। আধুনিকযুগে এসে অনেকগুলো ধর্মগুরু সৃষ্টি হওয়ার ফলে প্রত্যেকে নিজ নিজ তৈরী নিয়মকে ন্যায়ধর্ম ও অন্যান্যদের নিয়মকে অন্যায়ধর্ম মনে করতে লাগলো আর তখনি 'ধর্ম' শব্দটা বিভেদ সৃষ্টি করলো মানুষে মানুষে। কিন্তু এ ধারণা ভুল। মানুষের ধর্ম 'মনুষ্যত্ব'। মানবিক ধর্ম অবলম্বনই একমাত্র উপায় সুস্থ ও স্বাভাবিক পৃথিবী গড়ে তোলার। আর এভাবেই মানবতার অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।
------===-------===-------===-----

মানবতাই সুখে থাকার মূল কারণ - রতন বসাক



বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে এই পৃথিবীতেই একমাত্র জীবের বাস। অন্যান্য পশু পাখিদের মতোই মানুষ একসময় জীবনযাপন করতো। তবে মানুষ হলো জ্ঞানে, গুণে, বুদ্ধিতে সমস্ত জীবের থেকে সেরা। কর্মগুণ ও ইচ্ছাশক্তির বলে মানুষ তাঁর জীবন সবার থেকে সুখের করে নিয়েছে। আর জীবন পথে আরও এগিয়ে যাবার জন্য, একের পর এক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই পৃথিবীতে কারো পক্ষেই একা বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তাই মানুষ প্রথমে সমাজ তারপর দেশ, গড়ে নিয়ে সবাই মিলেমিশে বসবাস করে চলেছে। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের জন্য এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। সবাই সব কাজ সমান ভাবে করতে পারে না। তাই আমাকে অন্যের ও অন্যকে আমার প্রয়োজন আছে, বেঁচে থাকতে গেলে। মানবতা, প্রেম, প্রীতি ও ভালোবাসাই হলো সহাবস্থানের মূল ধন।

তবে কিছু কাল হলো দেখা যাচ্ছে যে, অল্প কিছু মানুষ নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। দুষ্কৃতীমূলক আচরণ করে চলেছে। বিশেষত রাজনৈতিক ও ধার্মিক কারণেই মানুষ তার নিজের মানবতা ভুলছে। ভালোবাসা ভুলে অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। পুরোটা না জেনে বুঝেই অন্যের ক্ষতি করতে একবারও ভেবে দেখছে না। অন্যের প্ররোচনায় নিজের মনুষ্যত্বকে ভুলে গিয়ে তারা অন্যায় কাজ করতে যাচ্ছে।  

সামান্য কিছু কারণেই উত্তপ্ত হয়ে অন্যের ধন সম্পদ ধ্বংস করছে; এমনকি জীবন হানিও করছে এইসব কিছু ক্ষুদ্রমনা মানুষ। যদিও আমি এদের মানুষের পর্যায়ে মনে করি না । কেননা এরা মান ও হুঁশ ভুলে বসে আছে। কোন কাজটা করা ন্যায় আর কোন কাজটা করা অন্যায়, এরা একবারও ভেবে দেখে না। অন্যের প্ররোচনায় কিংবা সামান্য কিছু লাভের আশায় এরা এইসব অপকর্ম করে থাকে।

পৃথিবী কিংবা একটা দেশের প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে মানবতা নেই, এটা আমি মানতে পারি না। সবাই যেমন খারাপ হতে পারে না, আবার সবাই ভালোও হতে পারে না। ভালো আর খারাপ মানুষ নিয়েই আমাদের সমাজে বাস করতে হয়। প্রত্যেকটি ভালো মানুষের কর্তব্য হলো, খারাপ মানুষকে ভালো করে বুঝিয়ে তাঁদের ভালো করে তোলা। কেউ জন্ম থেকেই খারাপ হয় না। বিভিন্ন কারণে ও পরিস্থিতিতে পড়ে সে খারাপ হতে বাধ্য হয়।

একজন ভালো মানুষ ও অমানবতার পরিচয় দিলে কেমন করে চলবে এই সমাজে? কাউকেই নিজের হাতে শাসনভার তুলে নিয়ে শাস্তি দেওয়াটা উচিত নয়। এর জন্য প্রত্যেকটি দেশেই প্রশাসন বিভাগ আছে। কোনো অন্যায় হলে তার অভিযোগ করে বিচার পাওয়ার আশা রাখতেই পারে। এই পৃথিবীর প্রত্যেকটি জীবের প্রতি আমাদের মানবতা দেখাতে হবে। আর তা না হলে অমানবিকতায় আগামীতে জীবের ধ্বংসের সম্মুখীন হতেই হবে।

এই বঙ্গ দ্বেষ - সুব্রত মিত্র


এই বঙ্গে অনেক বুদ্ধিজীবীদের দেখতে পাই।
এই বঙ্গে অনেক মহাকবিদের দেখতে পাই।
এই বঙ্গে অনেক সম্প্রীতির বার্তা বাহককে দেখতে পাই।
এই বঙ্গে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কথা বলার মত-- অনেক মুখরোচক নেতাদের দেখতে পাই।
যা দেখেছি সব ভুয়ো বাতাস, সব নিঃস্বতায় পোড়া এক রত্তি ছাই।

এই বঙ্গে অন্যায়ের প্রাতিবাদ না করে শুধু সম্মান হারানোর ভয়ে-----
লেজ গুঁটিয়ে পালানোর মত অনেক মহাপুরুষদের দেখতে পাই।
আমি খুব ছোটখাটো মানুষ অথচ আমি মস্ত বড় ছোটলোক হয়েও------
উনাদের দেখে বড় কষ্ট পাই ,ওনাদের দেখে বড় লজ্জা পাই।

এই বঙ্গে ঝুলিয়ে সম্প্রীতির মালা
শালারা মা-বোনের ইজ্জত বেচে দেয়---
তারাই আবার দেশপ্রেমের উন্মুক্ত চেতনার ভাষণে মঞ্চ আওড়ায়।
এই বঙ্গে ঐ কান্ডারীর দল কেড়ে নেয় ইমোশন; ফাঁটকাবাজের শক্তিমান হয়ে পকেটে ভরে প্রমোশন,
সম্প্রীতির নামে নিজের স্বার্থে এখানে-----
ভেসে যায় আমার মা-বোনের সম্ভ্রম।

এই বঙ্গে ভাইয়ে-ভাইয়ে, বাবা-কাকায় হয়ে যায় কত হানাহানি
এই বঙ্গেই আমি দেখি; সব জেনেশুনেও জনস্বার্থে নেতারা করেনা কানাকানি,
শুধু বলে; "সম্প্রীতি, সম্প্রীতি, সম্প্রীতি"।
আমি যদি বলি ওহে নেতা, কেন হচ্ছে তবে সমাজের এত অবনতি?

স্বাধীনতার এত বছর পরেও এই বঙ্গের হয়েছে কি সংস্কার?
চারিদিকে হিংসার দুর্বার, এই বঙ্গ ঐ বঙ্গ ভেঙে হচ্ছে ছারখার
কি প্রয়োজন হয়েছিল ওদের আজ হিন্দুদের ঘরবাড়ি; মন্দির পোড়াবার?

তোমরা নাকি মুসলমান;
তোমাদেরওতো ধর্মের আছে অনেক মান সম্মান
তবে কেন অন্য ধর্মের ক্ষতি করে নিজের ধর্মকে করো অপমান?
আমি বিগ্রহ চিত্তে মালা ছিড়ে ফেলি সব নেতাদের সব রাজনৈতিক দলের------------------
সব হিংস্রতার; সব নোংরা মানসিকতার।

আর যে সকল কবি সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা------
বুদ্ধির ঢেঁকি মাথায় নিয়ে চুপটি করে তামাশা দেখে--
তোমাদের আক্কেল হওয়া চাই, 
তোমাদেরও আছে মা বোন, আছে ভাই।

তবে আজ তোমাদের কলম কোথায়?

হে কবি, হে বুদ্ধির ঢেঁকিওয়ালা বুদ্ধিজীবী .. ....  ...  ..
তোমাদের মানবিকতাও বিক্রি হয়েছে নাকি ঐ নেতাদের গোপন পকেটে?
নাকি তোমার ধর্মটাও বিক্রি হয়ে গেছে স্বার্থের হাটে?
তুমি জানো কি ?আমাদের জাতিটাও আজ ভেসে যেতে বসেছে সস্তার ঘাটে।

শুনে রাখ, শুনে রাখ, শুনে রাখ সকল বুদ্ধিজীবীগণ.......
সকল জাতির জাতীয়তাবাদ, সকল ধর্মের ধর্ম প্রবাদ
সকল দেশের দেশাত্বতা, সকল মনের মহানুভবতা
সকল মনের কামনা-বাসনায়; স্পর্শতা থাকুক স্বাধীনতায়।

আমাদের দুই বঙ্গের আপন সিন্ধু সেই তো মোদের বঙ্গবন্ধু
তারেই বলি মোরা জাতির জনক,
সেতো আজ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মোদের অহংকারের মাইলফলক।
সে যে শিখিয়ে গেছেন একই ভাষায় দুই বঙ্গের আলিঙ্গন
শিখিয়েছেন ভালবাসতে; শিখিয়েছেন কাছে আসা আসি
সেই তো মোদের রবীন্দ্রনাথের কন্ঠকে জাতীয় সংগীতে স্থাপন করেছেন--
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি"।

জাগো; জাগো; জাগো;.. ..    ... জাগো মহাবীর
এই বঙ্গমাতার নিঃস্ব খাতায়-------
রাখিবো আবার অটুট ছবি আমার বঙ্গের সংস্কৃতির।

লজ্জা - গৌতম নায়েক

  


বাহ রে ধর্ম! বকধার্মিকদের কি দারুন দেয় শিক্ষা
অসহায়ের প্রতি নৃশংস হয়, দেয় না সমব্যথা ভিক্ষা।

অসহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয় কেবলই যে ধর্ম
হানাহানি ছাড়া গুরুর যে ধর্মে নেই কর্ম
জালিয়াতি হয় যে ধর্মে ধর্মগুরুর মূলধন
হিংসাকে যে ধর্ম করতে পারে না বর্জন
গুরুর ফাঁদে পা দিয়ে যে ধর্ম ছড়ায় সন্ত্রাস
সে ধর্মে কি আছে বাঁচার মুক্ত বাতাস?

যে ধর্ম করতে শেখায় মানবতার ধ্বংস
সে ধর্ম আদৌ কি উপর ওয়ালার অংশ?
হত্যালীলা চালাতে যেথা চলে ঘুঁটির সজ্জা
তেমন ধর্ম মানবতার চরমতম লজ্জা।
উস্কানিতে যে ধর্ম গড়ে সিঁড়ি স্বর্গে যাবার
মানুষকে যে সম্মান দেয় না, তাকে জানাই ধিক্কার!
                   ----------------

নিহত বিবেক - অভিজিৎ ব্যানার্জী



এই বেশ আছি,
বলতে পারি না, ডুঁকরে কাঁদে মন,
আশার ছলনায়, ছুটে যাই দ্বারে
দেখি দাঁড়ায়ে শমন!

যাহা কিছু চাই, ভুল করে চাই,
যেটা হাতে পাই, পরে দেখি ছাই,
অন্তর জ্বালা ,মেটায় কোথায়?
খুঁজে চলে ক্ষ্যাপা মন।

সুখের আশায় বানিয়েছি বাড়ি,
স্বার্থ জানালা খোলা,
দুঃখের সাথে দিতে চাই আড়ি
দৃষ্টিশক্তি হয়ে আসে ঘোলা!

তবু হেঁটে চলি, অভিসার পথে
সৌভাগ্যের ,কোন আশার রথে
যদি হয় কভু ঠাঁই,
দেখি পথে পড়ে, বিবেকের মৃত লাশ
প্রেম ভালোবাসা করে হা-হুতাশ
আশা আকাঙ্ক্ষা পুড়ে হলো ছাই!

মানবতার মাথা হেঁট লজ্জায় - প্রদীপ বাগ



মাঝে মধ্যেই কঠিন ভাষা প্রতিবাদের রূপ নেয়,
আমরা যারা অনুর্বর পতিত জমিতে অখ্যাত চাষি,
অলঙ্কার বিহীন কমদামী কলমে শব্দ চাষ করি,
জানিনা জনসমক্ষে স্বীকৃতি স্বরূপ কতটুকু প্রাধান্য পায়!
তবু একটা শব্দ খরচ করতেও রাজি নয়??
যারা ধর্মের নামে ভাঙচুর লুন্ঠন বলাৎকার করে,
তারা কোনো ধর্মাবলম্বী হতে পারেনা,নরকের কীট।
স্বার্থের সুযোগ সন্ধানী সমাজের পাঁজরে লুকিয়ে থাকে,
ধর্মের দোহাই আখেরে বাসনার চরিতার্থ দেয় ইন্ধন,
বিভিন্ন জায়গায় চলে অগ্নিসংযোগ ধ্বংসের যজ্ঞলীলা,
প্রচ্ছন্ন প্রশাসনের মদতে একই হুঁকোয় তামাক সেবন।
সমস্যা জিইয়ে সহানুভূতি আদায় শাসকের এক কৌশল,
বিপদে কুলুপ এঁটে দেখ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দল।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐক্যে বিনষ্ট করে বীরত্ব দেখায়,
কলঙ্কিত দেশাত্মবোধ বিশ্বে মানবতার মাথাহেঁট লজ্জায়।
জাতিগত দাঙ্গা খুন জখম ধর্ষণের ইতিহাস পড়েছি,
বহু মিছিল কবিতার বহর তদন্তের দীর্ঘসূত্রতা দেখেছি।
পানা পুকুরে ঢিল আবার সহবস্থান মশাদের চাষ,
ধর্মের ধ্বজাধারী মুখোশ এঁটে বিভেদের সম্প্রীতিতে বিশ্বাস।
          

Wednesday, 20 October 2021

স্মৃতির পাতায় - মিঠুন সরকার



চোখ মেলা ভোরে 
সেই পাখির কলতান 
আপন ছন্দে গেয়ে যায় 
নদী তার গান, 
কোন সে দিক হারানো 
মিষ্টি মাতাল হাওয়া, 
মেঘ শূন্য আকাশ মাঝে 
নিজেকে  খুঁজে পাওয়া !
হরিদ্রাভ ঈষৎ আলোয় 
বৃক্ষরাজের স্নান, 
হেডফোনে বেজে ওঠা 
পুরোনো দিনের গান, 
এসব কিছুই স্মৃতির পাতায় 
ব্যস্ত দিনের মাঝে 
আপন সুরে কভু কভু 
হৃদয় কোণে বাজে !

Monday, 18 October 2021

রুপের ঝলক ( প্রেমের কবিতা সংকলন ) - - মুজিবর রহমান মল্লিক


 


তোমার রুপে বিশ্ব সারা,
     তোমার রুপ দেখে আমি শিরহিত।
তোমার রূপ আমি বারে বারে দেখেছি,
             সেই রূপে রূপে তুমি রূপায়িত।
প্রতিক্ষণে তোমার রুপের ঝলকে,
                                  এ বিশ্ব মোহিত।
যে রূপ মনমোহিনী,
            সৌন্দর্যের ধারা অব্যাহত,
তোমার রূপের আকর্ষণ,
                    হৃদয় গভীরে।
আমি আজ নির্বাক,
          তোমার রুপের ঝলকে।
সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব সৃষ্টি,
     তোমার সৃজনশীলতা আর কৃষ্টি।
তাই তোমার রূপ,
         দেখতে চাই বারে বারে।
তুমি বিরাজ করো,
          আমার পদ্ম কাননে।।



লুকোচুরি - সুনীপা শী


ডাকছে মা আমার খোকা খোকা কোথায় ওরে? 
মাগো, পাচ্ছি আমি শুনতে। 
দেবনা কো সাড়া আমি তোমার ডাকে। 
লুকায় রই চুপটি করে, 
ঘরের ঐ কোনাতে। 
মিটমিটিয়ে হাসি আমি, তোমার ডাকেতে। 
দেখছি আমি লুকিয়ে লুকিয়ে, 
আমায় তুমি খুজছ কেমন করে। 
এদিক, ওদিক খুঁজে বেড়ায় 
চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে গলা ফাটাও
হঠাৎ দেখি মাগো - 
তোমার দুটি চোখ করে ছলো ছলো। 
কান্না কাটি করো তুমি। 
তাই দেখে, পারিনাকো আমি আর থাকতে লুকিয়ে। 
এসে বলি মাগো কঁদছো কেন অমন করে। 
এই তো আমি তোমার সামনে। 
জরিয়ে ধরে বললো মা আমায় - ছিলিস কোথায় এতখন? 
আমি যে তোকে খুঁজে মরি। 
এতো ডাকি তোকে আমি 
দিসনে কেন সাড়া। 
খেলছিলাম যে আমি, তোমার সাথে লুকোচুরি। 
পাওনি যে খুঁজে আমায় তুমি। 
দেব কেন ধরা তোমায়? 
সেই তো দিলাম শেষে আমি
ধরা  তোমার কাছে। 
তোমার দুটি চোখে জল দেখে 
আমার বড় কষ্ট হলো যে, 
লুকায় আর পারিনাতো থাকতে। 
এলাম আমি তোমার কাছে 
ধরা দিলাম শেষে।  
                             

Sunday, 10 October 2021

শেষ বিদায় - প্রশান্ত মাইতি



কোনোদিন যদি মৃত্যু আসে আমার
গভীর রাতের অন্ধকারে মায়াবী জোছনায়

তখন আমি তাকে দাঁড় করিয়ে রাখবো
কিংবা,পেতে দেবো উঠোনে অপেক্ষার চেয়ার
নক্ষত্রের আলোদীপ দেবো জ্বালিয়ে

তারপর,শেষবারের জন্য তোমার ডানহাতে
হাঁটু গেড়ে বসে এঁকে দেবো চুম্বন
শান্ত মনে অবাক বিস্ময়ে হাসি
মুখে জড়িয়ে ধরবে তোমার বাহুডোরে

ইপ্সিত ইচ্ছের বাসনা ধুলোয় উড়িয়ে
ক্ষনিকের শেষ প্রেমটুকু দিয়ে পাড়ি
দেবো,তোমার অজান্তে মৃত্যুর হাত ধরে

পালকে চড়ে অনন্ত বাতাসে শেষবিদায় ।।
        ---------------
মো:- ৭০০১২৫৪৭০৪

Friday, 8 October 2021

অন্ধকার বৃষ্টি - প্রশান্ত মাইতি

 

গভীর নিঝুম রাত,ঘড়ির -----
টিকটিক শব্দ বড্ড বাজছে কানে

টাঙানো মশারির উপরে ঘুরছে জোনাকদল
জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে  আলো---
করছে ঘর বিদ্যুতের ঝকমকি

আমি শুয়ে শুনছি বাতাসের স্বরলিপি
আর পাতা থেকে ঝরে পড়া
টুপটাপ বৃষ্টির নৃত্য শব্দ

সব থেমে যাওয়ার পর দেখছি
ভেসে আসছে বাতাসে খসে পড়া
ফুল পাপড়ির চেনা শব্দ

সব থেমে যাওয়ার পরও চেনা অন্ধকার
ঝড়ে পড়ছে আমার একাকীত্বে বৃষ্টি পথে ।।
      

Sunday, 26 September 2021

☘ ভয়েস সাহিত্য পত্রিকা : শারদ সংখ্যা ১৪২৮ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ☘


১৯-০৯ ২০২১ : এক আনন্দঘন সাহিত্য -সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কলকাতার যোগেশ মাইম একাডেমি হলে উন্মোচিত হয়ে গেল ২২১ জন কবি-লেখক-লেখিকা ও চিত্রশিল্পীদের সৃষ্টিশীল লেখমালা ও চিত্রাকলা নিয়ে ভয়েস সাহিত্য পত্রিকা : শারদ সংখ্যা ১৪২৮"।  
    
      (দ্বিতীয় সংখ্যা - দ্বিতীয় বর্ষ)  



   ☘ভয়েস আয়োজিত এ  মিলনায়তনে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনুরাগী মানুষদের উজ্জ্বল উপস্থিতি অনুষ্ঠান কে প্রাণবন্ত করে তোলে। 


🌹অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাহিত্য ও সঙ্গীত সাধক মাননীয় অধ্যাপক মানস মাইতি মহাশয় (বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, বাজকুল মিলনী মহাবিদ্যালয়)  


🌹প্রধান অতিথ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সঙ্গীতশিল্পী শ্রীমতী অনুশীলা বসু মহাশয়া।  

☘সম্মানীয় অতিথিবৃন্দ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন :-- 


🌹বিশিষ্ট নাট্য ও চিত্রশিল্পী মাননীয় শ্রী সুদীপ মুখার্জি মহাশয়।  
🌹মাননীয়া শ্রীমতী সুছন্দা ঘোষ মহাশয়া ( সহযোগী অধ্যাপিকা,  ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন কলেজ)। 
🌹বিশিষ্ট  নৃত্যশিল্পী শ্রীমতী তবস্মি পাল মজুমদার মহাশয়া।
🌹অধ্যাপক সুব্রত রায় মহাশয় 


  ☘অনুষ্ঠানের সম্মানীয় সভাপতি, প্রধান অতিথি ও অতিথিবৃন্দের পুস্পস্তবক ও উত্তরীয় দিয়ে বারণ ও মানব বাবুর উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়। 


এরপর আসে সেই বহুপ্রতীক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ - মঞ্চে উপবিষ্ট সভাপতি, প্রধান অতিথি ও অতিথিবৃন্দ সহ ভয়েসের সদস্যারা একসাথে মিলে উন্মোচিত করেন "ভয়েস সাহিত্য পত্রিকা : শারদ সংখ্যা ১৪২৮" সে সময় করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে আলো আঁধারী যোগেশ মাইম একাডেমি সভাস্থল। 
    




  ☘এরপর একে একে প্রধান অতিথি ও অতিথিবৃন্দের মূল্যবান বক্তৃতা, নিলাশা, মেধা ও শ্রেষ্ঠার অসাধারণ নৃত্য, অনিতা রায় মুখার্জী,  সীমা সোম বিশ্বাস, শুভজিৎ রায়চৌধুরী,  সোমা বিশ্বাস, অর্চিতা মাইতি,  বর্ণালী রায় প্রমুখের কণ্ঠে সুন্দর সুন্দর আবৃত্তি ও দীপ্তশ্রী দে তার অসাধারণ কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন....এসব কিছু  সকলের মনকে আপ্লুত করে তোলে। 

☘শারদ সম্মান ১৪২৮ প্রদান ☘









ভয়েস-এর এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল কবি-লেখক-লেখিকা ও চিত্রশিল্পীদের হাতে আমরা তুলে দিই "শারদ সম্মান ১৪২৮" শংসাপত্র,  ট্রফি ও ভয়েস শারদীয়া পত্রিকা। 

☘অতিথি শারদ সম্মান ১৪২৮ প্রদান ☘

🌹 ১) নাট্য ও চিত্রশিল্পী প্রতিভায় অসামান্য অবদানে জন্য মাননীয় সুদীপ মুখার্জি মহাশয়ের হাতে "শারদ সম্মান ১৪২৮" প্রদান করা হয়। 

🌹২) শিক্ষা ও শিল্প প্রতিভাকে কুর্নিশ জানিয়ে মাননীয়া অধ্যাপিকা সুছন্দা ঘোষ মহাশয়া-কে "শারদ সম্মান ১৪২৮ প্রদান করা হয়।।

🌹৩) নৃত্য শিল্প প্রতিভাকে কুর্নিশ জানিয়ে বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী শ্রীমতী তবস্মি পাল মজুমদার মহাশয়া-কে " শারদ সম্মান ১৪২৮" প্রদান করা হয়। 

সাহিত্য রত্ন সম্মান ১৪২৮  প্রদান☘
🌹সাহিত্য সাধনা বা সাহিত্য ক্ষেত্রে অমন্য অবদানের জন্য ভয়েস-এর পক্ষ থেকে এবার "সাহিত্য রত্ন সম্মান ১৪২৮" প্রদান করা হয় বিশিষ্ট সাহিত্য ও সঙ্গীত সাধক মাননীয় অধ্যাপক মানস মাইতি মহাশয়-কে। 

☘মানব বন্ধু সম্মান ২০২১ প্রদান☘

🌹১) সমাজসেবায় ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে  অনন্য অবদানের জন্য ডঃ দেবব্রত সেন মহাশয়-কে "ভয়েস-এর পক্ষ থেকে " মানব বন্ধু সম্মান ২০২১" প্রদান করা হয়। 


🌹২) সমাজসেবা ও সঙ্গীত শিল্প প্রতিভাকে কুর্নিশ জানিয়ে মাননীয়া অনুশীলা বসু মহাশয়-কে "ভয়েস-এর পক্ষ থেকে " মানব বন্ধু সম্মান ২০২১" প্রদান করা হয়। 

🌹৩) সমাজসেবায় অসামান্য অবসানের জন্য মাননীয় সুজিত সোম (লংকা, আসাম) মহাশয়-কে "ভয়েস-এর পক্ষ থেকে " মানব বন্ধু সম্মান ২০২১" প্রদান করা হয়। 

   ☘ভয়েস-এর পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে সম্মান জানাতে পেরে আমরা নিজেরাও  সম্মানিত ও গর্বিত।  



☘অনুষ্ঠানে ভয়েস সাহিত্য পত্রিকার সহ-সম্পাদিকা বৃষ্টি কংসবনিক ও ভয়েস লিটেরারি কালচারাল অর্গানাইজেশ-এর সভাপতি শ্রী বিজয় সরকার মহাশয় দু-চার কথা সকলে মাঝে তুলে ধরেন।। 


☘অনুষ্ঠানে আর একটি চমক ছিল আমাদের ভয়েস  সংগঠনের সম্পাদক মিত্র চন্দন মহন্তের প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ "তবুও স্বপ্ন দেখি" এর মোড়ক উন্মোচন। এটা আমাদের সকলের ভালো লাগা ও  পরম আনন্দ। 

☘ পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি মহাশয়ের মূল্যবান বক্তৃতা ও জাতীয় পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান পরিসমাপ্ত হয়। 


☘সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভয়েস সংগঠনের সদস্যা বিদিশা রায়, সংগঠনের সহ-সম্পাদক ধীমান দাস দাদা।  

🌹সত্যি সকলের ভালোবাসা ও আশির্বাদ কে পাথেয় করে আমরা উত্তরবঙ্গ ছুঁয়ে এলাম বঙ্গভুমির হৃদয়ভূমি কলকাতা। ভয়েস আয়োজিত এ অনুষ্ঠান পূর্ব,  পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিন মিলেমিশে মহামিলনের গান রচিয়েছে। যা সর্বদা একে অপরকে বেঁধে বেঁধে রাখবে।