চাঁদিফাটা গরমে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ধূপকাঠি বিক্রি করছে পরিমল। এত রোদে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। পা যেন আর চলছে না।
সামনেই একটি বড় তিনতলা ফুলের বাগান দিয়ে সাজানো সুন্দর বাড়ি দেখে কিছু বিক্রির আশায় সে ভিতরে ঢুকল। বেল বাজাতেই বাড়ির কর্ত্রী দরজা খুলে জিজ্ঞাসা করলেন, কী চাই?
-- আজ্ঞে, ধূপকাঠি কিনবেন? খুব ভালো গন্ধ....
তাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই কর্ত্রী বললেন, না, না, নেব না। দুপুরবেলা কেন বিরক্ত করেন, বলুন তো?
পরিমল শুকনো মুখে বলল, ঠিক আছে, দিদিভাই। একটু জল হবে?
কর্ত্রী চেঁচিয়ে বললেন, দুপুরবেলা এসে মানুষের বাড়িতে চুরি করার ধান্দা?
মুখের ওপর দরজাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পরিমল মনে মনে ভাবে, পৃথিবীতে মানবিকতা শেষ হয়ে গেছে। ক্লান্ত-মুখে গেট খুলে বেরোতে যাবে, এমন সময় গেটের পাশের ছোট টালির ঘর থেকে একটি ছোট বাচ্চা মেয়ের গলার আওয়াজ শুনে থমকে দাঁড়ায় সে, কাকু, এই নিন একটু জল-বাতাসা।
পরিমল অবাক হয়ে তাকাতেই মেয়েটি হেসে বলল, আমি এই বাড়ির মালীর মেয়ে। আমি শুনছিলাম, আপনি বলছিলেন যে, আপনার খুব জল পিপাসা পেয়েছে। এ'টা খেয়ে নিন। শরীর ঠাণ্ডা থাকবে।
পরম তৃপ্তিতে জল-বাতাসা খেতে খেতে পরিমল ভাবলো, এখনো মানবিকতা মরে যায় নি.....
No comments:
Post a Comment