Sunday, 18 December 2022

সিঞ্চিত - রাণু সরকার


কি জানি কবে বাতাসে ভর দিয়ে 
সুষুপ্ত জীবাণু গুলো উড়ে উড়ে এসে 
বসে ছিলো আমার খোলা জানালায় 
এক বসন্তের গোধূলি বেলায়!
হয়তো তার চেতনায় নেই আর-
উজান স্রোতে টেনেছিলো গুণ অবসরে!

ভালো তো বাসেনি, 
প্রতিদিন গোধূলি বেলায় চলতো সময় কাটানোর খেলা খেলা পালা!
মন্থর গতিতে জীবাণুরা আয়ত্তাধীন হলো
সে এক ফাগুনে প্রবল উচ্ছ্বাসে 
নেচেছিলো প্রাণ তার প্রশ্রয়ে!

ছিলো তো মৃদুভাষী অমৃতবারি সিঞ্চনে!
অতিশয় করুণাময়ী, অ-খেয়ালে হয়তো করেছিলো অঙ্গে ধারণ!
পাঁজরের হাড় গুলো ভেঙে একাধিক খণ্ডে হলো বিভক্ত!

হবে কি নির্মুলন?
হবেনা বাঁধা আর নিবিড় আঁধারে!

Sunday, 27 November 2022

মানবতার উন্মেষ ও জনসেবা - শক্তি সেন




আজিকার দুর্দিনে তবু ভালো লাগছে
দিকে দিকে মানবতা দেখি আজ জাগছে।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা মারণ ভাইরাসের জন্যে
স্বেচ্ছা সেবীরা এগিয়ে আসছে সেবিতে অন্যে।
গতকাল - ই দেখলুম কত লোক পথে পথে যাচ্ছে
বিলি হচ্ছে তৈরি খাবার ,মানুষেরা খাচ্ছে।
বিয়ে বা ' ভূজনা ' র খরচ বাঁচিয়ে কেউ কেউ নিরন্নকে দিচ্ছে
খোদা বা ঈশ্বরের আশীষ তারা অজান্তেই নিচ্ছে।
শ্রাদ্ধবাড়ি বা বিবাহ বার্ষিকীর খরচও কেউ কেউ বাঁচাছে
মানবতা মনে ঢুকে দেখি অনেককেই নাচাচ্ছে ।
মানবতা থামোনা তুমি,তাল ধরো তাক ধিন
নিরন্ন দুঃস্থ যেন সেবা পায় দিন দিন ।
সরকার বাহাদুর সেও সদা জনগণে সেবা দিতে ব্যস্ত
নানান দায়িত্ব ভিন্নে তারা করেছে যে ন্যস্ত।
আমফান - ইয়াস ঝড়ে আস্তানা উড়ে গেছে যাহাদের
ত্রাণ - রেশনে দুয়ারে কর্মসূচি বানিয়ে সেবা দেয় তাহাদের।
অনেকে রাজনীতিতে নামে জনগণে সেবিতে
কেউ কেউ না দেয় কান জনগণের সোচ্চার দাবীতে।
দেশ,রাজ্য বা জেলায় আরও বেশি সেবকের দরকার
প্রয়োজনে সেবা পাবে, খবর না রাখলেও চরকার।
সমস্যা বিষ ফোঁড়ার মতো ব্যথা করে টনটন
দেশের সম্পদ সমভাবে হচ্ছে না বন্টন।
দিকে দিকে অর্থ শিকারীরা টাকার পাহাড় জমাচ্ছে
সাধারণ কে দুঃখ দুর্দশার পথে টেনে নামাচ্ছে।
কর্পোরেটে যথেচ্ছ টাকা ঢালে সরকার বাহাদুর
দুঃস্থ কৃষককে সাহায্য দিতে কেটে যায় তাদের সুর।
কোভিড টীকা বন্টনেও আজ রাজনীতি চলছে
সকলে পাচ্ছে না টীকা , কেউ কেউ বলছে।
আমরা জনগন চাইছি সবে যেন টীকা পায়
না কেউ দুর্ভোগে ভুগে যারা আজ সেবা চায়।

Sunday, 20 November 2022

ছোট শিশুর কষ্ট - রাণু সরকার



বাপটা আমার থেকেও নেই মনে 
করি মারা গেছেন 
চোখ মেলে দেখিনি বাপের মুখ কেমন, 
কোন ভোরে মা গেলো চলে 
বাবুর বাড়ির বাসন ধুতে 
আমরা এখন তিনজন থাকি রেললাইনের ঝুপরিতে।

আমার কাছে ভাইকে রেখে 
কি করে যাই ইস্কুলেতে 
খিদের জ্বালায় শুয়ে পড়ে 
ভাই যে আমার সারা হলো কেঁদেকেটে।

কাল রাতে পেটে আমার 
ব্যথা ছিলো
খাইনি,আমার ভাতটা থেকে গেলো-
পান্তা করে নুন দিয়ে ভাই আমার খেয়ে 
নিলো
দাড়িয়ে আছি নিয়ে কোলে 
কান্না ভাইয়ের থেমে গেলে।
ইস্কুলের যাবার সময় হলো
এই বুঝি,ঘন্টা বেজে থেমে গেলো-
কি করে যাবো,মা যে এলো না এখনো
হয়তো গিন্নীমা কাজের চাপে রেখে দিলো 
এমন তো করেনি কখনো 
আমারা গরিব বলে করলো এমন
বাপটা যদি থাকতো এখন।

Friday, 11 November 2022

সুখ কোথায় - মাধব দেবনাথ


দুঃখের বোজা মাথায় নিয়ে
চলছে ওরা সুখের পানে
পেয়েছে কি সুখ?
না । আজও পায়নি ।
তবুও চলছে আশার তরী বেয়ে
সেই দাসত্ব প্রথা থেকে আজ অবধি।

শুনা যায় তাদের দুঃখ
নিরাকরণ করতে হবে,
কিন্তু বাস্তবে এক অন্য রূপ
তাদের দুঃখ কী হয়েছে অবসান যদিও রাজনীতিবিদগণ নির্বাচনী ভাষণে বলে,
কিন্তু অবসান হচ্ছে কোথায়।

চোখের জলে ভাসে তাদের জীবন
দুঃখকে আপন করে নিয়েই
তারা বেঁচে আছে নীরব সংগ্রামে,
পায় না কারও সহানুভূতি ও ভালবাসা।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে
বাড়ি ফেরে উদাস মনে দিনান্তে
পর্ণকুটিরে,
দুঃখের যাতনা অন্তহীন
শীতে নেই বস্ত্র,
ঘুম ভাঙে আঁধার রাতে।

তাদের সুখ কোথায় 
আজও চেয়ে থাকে
বাবুদের একটু আদর ভালবাসা 
আর সহানুভূতিতে ঘুচে যাক দৈন্যতা ।

Tuesday, 1 November 2022

পুতুল খেলার ইতিকথা - কৌশিক সরকার




বাচ্চা মেয়েটি আজ চুপ করে গেছে
যেনো সবকিছুতেই নীরব অবহেলা, 
চকোলেটের লোভ দেখিয়ে রোজ
সেই দুষ্টু আঙ্কেলের নোংরা হাতের খেলা। 

সেদিন ছিলো রবিবারের বিকেল
ঘরের মেঝেতে পুতুল খেলার মেলা, 
বাচ্চা মেয়েটা জানতো কি সেদিন
নিজের সাথেই ঘটবে এমন পুতুল খেলা ? 

সেদিন সে কান্না করেছিলো খুব
হয়তো চিৎকারও করেছিলো এক আধবার, 
'প্লিজ আঙ্কেল,  প্লিজ আঙ্কেল ছেড়ে দাও, 
খুব কষ্ট হচ্ছে আমার '। 

কিন্তু সেদিন শুনতে পাইনি কেউ
শুনতে পেলেই বা কি হোতো
পুতুলের ঠোঁটে লেগে থাকা রক্তের দাগ
কখনো কি মুছে ফেলা যেতো ? 
----------------------------------------------
                   
                    

Monday, 31 October 2022

শিশিরের রং লাল - আফতাব মল্লিক



আকাশের বারান্দায় মরে যাওয়া ভালোবাসাদের  ভিড়।
রাতজাগা পাখির ক্লান্ত ঠোঁট ছুঁয়ে ছলনার বসন্ত নামে শেষ রাতের কুয়াশায়,,,,,,,,,,,,,,
আরো অনেকটা পথ চলতে গিয়েও থেমে গেছে বিষাদের নদী কোনো নীরব উপত্যকায়!
এখনও গায়ে শিশির মেখে একটা হলুদ ঘাসফুল,একটু উষ্ণতার জন্য!
ক্ষনিকের সূর্য ওঠেনি পোড়া কপালের কোণে একটুও।
এক চিলতে খুশির খোঁজে কত মনমরাদের আজীবন অসমাপ্ত সংগ্রাম।
যদি কখনও দেখা হয় ছলনাময়ীর দুঃস্বপ্নের অসহনীয় চাহনী।
আজও কাল বেয়ে ভোরের দরজা খোলে শুকতারার দীর্ঘশ্বাস!
মেঘেদের ভিড় ঠেলে আসবে না চেনা স্বপ্নের ছায়পথ, চাঁদও জানে।
কে কার চেয়ে সুখী আছে,এক প্রশ্ন সবটা বাতাসের কান জুড়ে।
হৃদয় ভাঙ্গার কম্পাঙ্ক কেউ মাপেনি আজ পর্যন্ত।
তবু পৃথিবীর মাটির ঘ্রাণে মিশে শুধুই কান্নার আওয়াজ!
অনেকক্ষণ একভাবে চেয়ে পাহাড়ের চোখও ঝাপসা!
সময়ের স্রোত ঠেলে শুধু ভেসে যাওয়া অজানার নোঙর ফেলে।
ভুলে গেছে কাশফুলও, ছাই রঙে লেখা ছেঁড়া শরতের কাব্য।
বৃথাই মন ভালো করতে দুদিনের অমনোযোগী ভ্রমণ।
বাকি দিনে সেই তো না ভালো লাগা সঙ্গীর শরীর চাওয়া দৃষ্টি!
তবু ভালো থাকা সবার, বিরক্তিকর বনানীর গায়ে লেপ্টে থেকে।
জীবন জীবনের খোঁজে, কেবলই ভাসা ভাসা তৃপ্তির মিছে অন্বেষণ,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Sunday, 30 October 2022

অপেক্ষায় সোনালী স্বপ্ন - সুদীপ চক্রবর্তী




অনেক অপেক্ষায় ছিলাম হরি সাধন চোখ মেলে তাকাবে,
হরি আমার থেকে চারদিনের ছোট ,
আজ কাঁধে নিয়ে চিতায় তুলে দিলাম ।
চিতা যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল,
অনেক পুরানো কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল,
খেলার মাঠের পাশে কাঁঠাল গাছে পাকা কাঁঠালের গন্ধ পেলে হরি পেড়ে আনতো,
খাওয়া শেষ হলে আঠা ছাড়াতে রাধাকান্ত বণিকের দোকানে পৌঁছে যেতাম, 
একটু তেল পাবার আশায়,
তখন এক সের তেল ছয় আনা, 
আর আজ দু' শ টাকা লিটার।
তিস্তা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল,
তখন পুরো চুল কালো ছিল আজ তা সাদা।
ইস্কুলে জগদীশ বাবু বলতেন আমারা অনেক কষ্ট করেছি,
দেশ সবে স্বাধীন হয়েছে একটু অপেক্ষা কর,
সোনালী স্বপ্নের দিন তোদের জন্য হবে।
সেই কালো চুল অপেক্ষায় থাকতে থাকতে সাদা হয়ে গেল,
রং কিন্তু খুঁজে পেলাম না।
হরি ও শুনেছিল, কিন্তু অপেক্ষা করতে পারলো না, চলে গেল।
আমিও অপেক্ষায় আছি,
একদিন হয়তো হরির মতো চলে যাবো, 
কালো হয়ে আসবে সবকিছু, শুধু আঁধার আর আঁধার,
ঘোর কালো অন্ধকার,
অমাবস্যার চেয়েও আরও বেশি, 
অনেক বেশি অন্ধকার,
বাঁশের মাচায় শুয়ে হেলতে দুলতে অপেক্ষার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি,
দূরে সোনালী স্বপ্ন হাত নাড়াচ্ছে।

Sunday, 23 October 2022

অবনীর ঘর - সুদীপ চক্রবর্তী





এই সেই মালভূমি যেখানে বৃষ্টি হয় বার মাস,
গাছের পাতার রং সবুজে সবুজ বর্ণময় নেয় নির্মল নিঃশ্বাস।
পাখিদের কোলাহলে ঘুম ভাঙ্গে সেই ভঙ্গিতে ,
কাঠবেড়ালির মতো ছোট জীব রাঙায় নিজেকে সেই রঙে তে ।
শুধু সরীসৃপেরা থাকে খাল বিলের পাশে,
এখানে তাদের খাদ্য পাওয়া যায় অনায়াসে।
অবনী বসে থাকে শক্তি বাবুর কল্পিত ঘরে।
যদি দরজায় কেউ কড়া নাড়ে,
" অবনী বাড়ি আছো ? "
সে শব্দ ঘুরে ফিরে মিলিয়ে যায়
শুনতে কভু পেয়েছ ?
আজ আর বৃষ্টি পড়ে না,
সবুজ রং মিলিয়ে গিয়েছ কোথায়
কেউ জানে না।
গাছের কঙ্কালসার চেহারা ফুটে উঠেছে,
সব কিছুর অভাবে কাঠবেড়ালি, বাঁদর সব পালিয়ে গেছে ।
সরীসৃপেরা এখন আছে,
খাল বিল শুকিয়ে গেলেও এখন কিছু খাদ্য বেঁচে আছে।
অবনী এখনো অপেক্ষা করে থাকে,
যদি দরজায় কেউ কড়া বাজিয়ে দেখে,
" অবনী বাড়ি আছো? "
শক্তি বাবু অবনীর হাহুতাশ আর কান্না উপর থেকে দেখে,
তার চোখ দিয়ে টসটস করে জল পড়তে থাকে।
তবুও অবনী শান্ত মনে এক কোনে নিজেকে বসিয়ে রাখে,
যদি আবার পুরানো গলায় ডাকে,
" অবনী বাড়ি আছো" ?

( কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা অবলম্বনে। )

Thursday, 20 October 2022

বিদ্রোহী - রাধাকান্ত মুদি


ওই যে দূরে পথের পানে
                 কে যেনো দিচ্ছে ডাক
বলছে এসে দেখো একবার
               শুধু ভীতুরা ঘরে থাক।।
বলছে সে প্রতিবাদী সুরে
                 বন্ধু এসো করি লড়াই
মূর্খের মতো কতো দিন
        আর করবে মিথ্যার বড়াই।।
বলছে সে এসো ধরো
              সততার ওই শক্ত লাঠি
এগিয়ে চলো নির্ভীক হয়ে
          ভাঙো মিথ্যার কল কাঠি।।
চোখে তার জ্বলন্ত শিখা
                     মানবে না সে হার
ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই করি
               ক্ষতি হয় বলো কার।।
স্লোগান সে তুলেছে ওই 
                ভিক্ষা নয় চাই শিক্ষা
সময় এসেছে বন্ধু এবার
    দিতে হবে সততার পরীক্ষা।।
অন্ন চাই বস্ত্র চাই 
            চাই মাথা গোঁজার ঠাই
মোরা অনেক সয়েছি অন্যায়
       এবার শুধু অধিকার চাই।।

Wednesday, 19 October 2022

মা, আমি এখন বড়ো হয়ে গেছি - আফতাব মল্লিক




কোটি টাকার ফ্ল্যাটের  রঙিন কামরায়, পাখির  পালকের মত নরম তোষকে যখন -
  রাত তিনটা পর্যন্ত ঘুম আসেনা -
বিছানায় শুয়ে, জল থেকে তুলে আনা মাছের মত-
 ছটফট করি-
 তখন বলতে পারিনা -
 মা, আমার পাশে বসে  মাথায় হাত বুলিয়ে দাও-
 আর সেই রাজকুমারী আর সোনার কাঠির গল্পটা বলে-
আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দাও-
 মা, এখন আমি বড় হয়ে গেছি !
এক আকাশ   চিন্তা আর একমুখ অরুচি নিয়ে-
 হাজার রকমের  দামী খাবার খেতে -
ডাইনিং টেবিলে বসে যখন একটুও খেতে ইচ্ছে করে না-
  তখন বলতে পারিনা -
 মা,  কাছে টেনে মুখের সামনে থালা ধরে-
 আমাকে তোমার হাতে খাইয়ে দাও-
মা, আমি এখন বড় হয়ে গেছি !
 নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যখন -
ঘরের এসি মেশিনটা তার পুরো শক্তি প্রদর্শন  করতে থাকে-
 আর আমি একটা পাতলা বেড কভার নিয়ে -
প্রচণ্ড শীতকেও শরীরের নকল অনুভূতি দিয়ে গোপন করতে থাকি -
 তখন বলতে পারিনা -
মা, আমাকে তোমার কোলে টেনে নাও-
 সেই ছোট্টোবেলার মতো!
 এখন আমি অনেক বড় হয়ে গেছি !
 তাড়াহুড়ো করে বাথরুমে গিয়ে 
একটা তোয়ালার জন্য যখন  চল্লিশ  মিনিট দাঁড়িয়ে থাকি -
 তখন বলতে পারিনা -
মা , তোমার আঁচলটা  দিয়ে আমার মাথাটা মুছে দাও-
 মা, এখন আমি অনেক বড় হয়ে গেছি-
 একটু ভালোবাসা পাওয়ার  জন্য -
মিথ্যে মরীচিকার পেছনে ছুটে যখন 
জীবনটা নিজের কাছে মূল্যহীন মনে হয় -
 তখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে -
মা ,পৃথিবীর সব ভালোবাসা মিথ্যে -
শুধু তোমার আদর ছাড়া-
 আমাকে দোলনায়  নিয়ে বসে, একটু আদর করে দাও -
কিন্তু এখন তো আমি  অনেক বড় হয়ে গেছি -
 কেন যে বড় হলাম মা !
খুব ভালো হতো -
যদি  আবার তোমার পুচকু  হতে পারতাম !!!!!!


(পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ )

সীমারেখা - কৌশিক সরকার

মেরুদণ্ড বরাবর হাঁটতে হাঁটতে
ইতিহাস ভেঙেছি রোজ, 
দিনের শেষে ভিজেছি শব্দে
কেউ নেয়নি খোঁজ। 

মনের জানালা আজও খোলা
দিগন্তরেখায় হাওয়ার গান, 
শিউলি ফুলের গন্ধ মেখে
চাঁদের আলোয় করেছি স্নান। 

এখনো ভাবিস আমার কথা ?
বৃষ্টিদিনের ভিডিও কল, 
এখন বুঝি ডাস্টবিনেতেই
একাকী রাতের মেসেজের ঢল ! 

আমিও এখন যাচ্ছি মিশে
দিনবদলের রঙিন পাতায়, 
স্বপ্ন দেখার সীমারেখা 
আঁকছি আজও মনের খাতায়। 

                      
                     

Sunday, 16 October 2022

About


Voice Literary Blog 
         An open platform for literary practices   


( Affiliated  by : Voice Literary Cultural Organization)     
ভয়েস সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন        


     Founded : 2019 
Founder : Bijoy Sarkar 
Co-founder : Chandan Mahanta 


Mission : Our one an only mission is to bring the writers from the different. parts of india to the international stage and to progress creative latent talents. 

Vission :  in our vision; every writers and poets are equal. 
Liberality - Fraternity - Humanity.    

Contact Us : 

Email : voiceculturalteam@gmai.com 

Phone : +917001533847 
Whatsapp : +918918172319 

------------------------------------------------------------------


                  Bijoy Sarkar
                      founder 
Voice Literary Cultural Organization 

---------------------------------------------
         

            Golap Singha 
              President 
Voice Literary Cultural Organization 
----------------------------------------------


            Palash Sarkar 
               Secretary 
   Voice Literary Cultural Organization 

---------------------------------------------

Voice Literary Cultural Organization

-------------------------------------------------
  
 
-------------------------------



With regards 
Voice Literary Blog Team 


Saturday, 15 October 2022

মহা জাগরণ -- সিরাজুর বড়ভূইয়া

ত্যাগের মন্ত্রে গড়বো মোরা
শান্তি মৈত্রীর দৃঢ় বন্ধন,
প্রীতির পথেই আনবো ত্বরা
মানবতার মহা জাগরণ।

মহৎ মনে সর্বজনে
গড়বো ঐক্যের সোপান,
দৃঢ় পণে সাম্যের গানে
হোক মানবতার উত্থান।

মেহনতী জনতার এ লড়াই
মোদের যাবেনা বিফল,
জাগবে দেশে আশার আলো
ভাঙ্গবে সব বিভেদের শৃঙ্খল।

দীপ্ত মশাল লড়াই বিশাল
নেই ভয় উদ্বেগ শংকা,
শক্ত শপথ দৃঢ় মনোরথ
বাজাবো মুক্তির জয় ডঙ্কা।
🌹🌹🌹✍️✍️🌹🌹🌹

মায়া ত্যাগ -- সুস্মিতা রায়

আজ বিজয়া দশমী, সন্ধ্যায় চারিদিকে ঢাকের আওয়াজ,শঙ্খধ্বনিতে বিদায় সুর জানান দিচ্ছে মায়ের বিসর্জনের বার্তা। এদিকে 'মা দুর্গার' সঙ্গে বিদায় নিলেন পার্বতীদেবী। আশি বছরের পার্বতীদেবী ইহলোক ত্যাগ করলেন।পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এল।
পার্বতীদেবী আঠারো বছর বয়সে সংসারী হয়েছেন।উনি ছিলেন 'রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী'। বিয়ের পাঁচ বছরের মধ্যেই দুই ছেলে মেয়ের মা হ'ন। সন্তানদের মানুষ করার সঙ্গে পরিবারের সকলকে নিয়ে মানিয়ে গুছিয়ে সংসার করেছেন। ছেলে মেয়েকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে সংসারী করেছেন। নিজের স্বার্থত্যাগ স্বীকার করে সুখের সংসার গড়ে তুলেছেন।
মায়ের সব কাজ সম্পন্ন করে মুম্বাই ফিরে যান ছেলে অভিরূপ। যাওয়ার আগে মা বাবার জিনিস গোছাতে গিয়ে নজর পড়ে মায়ের খাটের তলা। মায়ের যত্ন করে রাখা পুরনো টিনের বাক্স। ছোট বেলা থেকে দেখে আসছেন, তবে কোনদিনই কৌতূহল জাগেনি, তার ভিতর কি আছে জানার জন্য। মা সব সময় বাক্সে তালা লাগিয়ে রাখতেন, আর চাবিটা নিজের মাথার বালিশের তলায় রাখতেন। নিরিবিলিতে মাঝেমধ্যেই খুলে দেখতেন।
আজ সেই বাক্স খুললেন অভিরূপ। অনেক স্মৃতি বিজড়িত জিনিস সযত্নে রাখা, বিয়ের বেনারসী, ধুতি পাঞ্জাবী। শাড়ির তলায় পাওয়া গেল একটা লাল ডাইরি। ডাইরি খুলতেই ওনার চোখদুটো ঝাপসা হয়ে যায় অশ্রুজলে, স্বর্ণাক্ষরে লেখা বিশেষ ঘটনা, তারিখ ও সাল। পাতা উল্টাতেই স্বরচিত কবিতা ও গল্প দেখে অবাক হয়ে যান । অনেক কবিতার মধ্যে ফুটে উঠেছে ওনার মনের অপূর্ণ সাধ বা ইচ্ছা। ডাইরির সঙ্গে পাওয়া গেল একটা প্যাকেট যার মধ্যে রাখা আছে বাবার চিঠি। বাবা ছিলেন জাহাজের নাবিক, জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে জলে, নিয়মিত চিঠি পাঠাতেন পার্বতীদেবীকে। ওনার দেওয়া ছোটছোট বিদেশী উপহার ওনার কাছে ছিল খুব যত্নের।
আজ এই সব পার্থিব মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

ত্যাগেই শান্তি -- অমরনাথ ঘোষাল

ভোগেতে বাড়ায় রিপু আসক্তি, 
ত্যাগের আছে যে মহা নিদান, 
দেহ মনে রিপু জয় করতে,
ত্যাগ ই  দিচ্ছে সঠিক  বিধান।
জ্বলন্ত আগুনে ঘৃতাহুতি দিলে
হু হু ক'রে ওঠে জ্বলে, 
আগুনের যে হয়  জ্বলন,
শান্তি  হবেই নিভিয়ে দিলে। 
শ্বাসজয় হয়   অনুশীলনে, 
প্রাণশক্তি বাড়াবে  শ্বাস্,
মধুর এ আলাপন আছে, 
নাসিকা রন্ধ্রে শ্বাস প্রশ্বাস। 
সম্ভোগ হ'লে রিপুর তাড়ন, 
অতি সম্ভোগ করতে বারণ, 
শাস্ত্রে লিখেছে মানুষ  দেখেছে, 
প্রাণশক্তি দেহে আবরণ। 
লোভের সঙ্গী সরস জিহ্বা, 
খাবারে বাড়ায় আসক্তি, 
ধ্যান করলেই মঙ্গল হয়, 
  ত্যাগেতে বাড়ায় মহাশক্তি। 
সংযত করে সবার প্রকৃতি ,
ত্যাগের আছে যে শান্তি, 
প্রকৃত শান্তি পেতে হ'লে, 
ত্যাগের স্বস্তি প্রশান্তি। 
সঙ্গত নাহ'লে  দাবীর সনদ, 
অতীব বিবাদ বাড়ায় এসে, 
ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের বিবাদ, 
অর্থলোভকে ভালবেসে ।

ভালোবাসার উপসংহার -- শৈবাল কর্মকার

তোমাকে ভালোবাসি বলে
নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম
শামুকের খোলকে,
ত্যাগ করেছিলাম নিজস্বতাকে
আপন করেছি একাকীত্ব।
হাতে হাত রেখে
ঠোঁটে ঠোঁট দিয়ে
ভালোবাসা আমাকে স্পর্শ করেছিল,
আমি ও প্রত্যুত্তরে
জাগিয়েছি কামরূপ চেতনা।
এখন,
অনুভূতিগুলি অতীত মৃত-অগ্নিদ্বগ্ধ
আমার আর ভালোবাসার অহরহ বাঁধে দ্বন্দ্ব,
নিজের সবটুকু যার জন্য করেছি ত্যাগ
সে আমায় প্রশ্ন করে
কেন করেছিলে?
এখন,
শুধু কথার পিঠে কথা বসে
যুক্তি-তর্কের পাহাড় আকাশ ছুঁতে চায়
সূচ ফুটানো কথাগুলি হৃদয়ের রক্ত ঝরায়।
এখন,
প্রতিদ্বন্দ্বিতা!
ত্যাগের হিসাব অঙ্ক কষতে বসায়,
ব্যস্ততার অজুহাত দাঁড়ায়-
দু 'জনের মাঝে প্রাচীরের মত,
সেদিনের অমলিন ভালোবাসা
এখন শুধু বোঝাপড়া
আর স্পষ্ট চাঁদের ক্ষত।
এখন,
প্রেমাতুর মন খুঁজে
একলা সন্ধ্যে,
একটা নিশ্চিন্ত অপরাহ্ন,
অবাধ্য মন আজীবন ভালোবাসতে চায়
মুছে যায় অতীত রজনীর স্মৃতি চিহ্ন।
এখন,
আমার আর ভালোবাসার করুণ পরিণতি
ভালোবাসা বৈরাগ্য চায়!
আমি চাই হতে -
ভালোবাসার যতি।


নিরাসক্তি -- পরেশ চন্দ্র দাস



ভোগাসক্তি লোভ জন্মদাতা ভবে
                           তীব্র আকাঙ্ক্ষার তরী ,
তম গুনে আসক্ত হয়েছি মোরা
                              নিজেই  নিজের অরি ।
ত্যাগের ভাবনা স্বত্তগুণে রয়
                                  আশ্চর্যের কিছু নাই ,
ত্রিগুণে জগৎ চলে নিত্যদিন
                                    দোষ গুণ সবটাই ।
ভোগের পরে ত্যাগ তাড়না দেয়
                                  আদ্যোপান্ত অনুমান ,
অজ্ঞের ভিড়ে বিজ্ঞ অসহায়
                                      চাইছেন পরিত্রাণ ।
চাহিদা বেড়েছে যুগ বিবর্তনে
                                 স্বার্থ যেখানে অধরা ,
নারী যেখানে ভোগের বিজ্ঞাপন
                                     মগ্ন হয়েছে পসরা ।
কোষাগার শূন্য হয়েছে সংসারে
                                    বারবনিতার লোভে ,
নিস্ফল ক্রন্দনে মাতেন রমণী
                                বিপথ গামীর ক্ষোভে ।
ত্যাগ আগে রক্তরোষ ক্ষয়ে শেষে
                                    বয়সের যায় অস্ত ,
মহিমা তখন শীত ঘুমে ব্যস্ত
                                ত্যাগের দুয়ারে ন্যস্ত  ।
শৈশবে করিয়া ব্যয় উদ্দীপক
                              যৌবনে আজ কাঙাল ,
সামনে ভবিষ্যৎ করিছে কেলি
                                বৈরাগ্য হলো নাকাল ।

--------------------------------------------------

Sunday, 11 September 2022

ভয়েসের উদ্যোগে গ্রন্থ প্রকাশ ও কবি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান


০৪-০৯-২০২২ :  রবিবাসরীয় দুপুরে ভয়েস লিটেরারি কালচারাল অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে রায়গঞ্জ সুপার মার্কেটস্থিত ওয়েস্ট দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্স সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হল গ্রন্থ প্রকাশ ও কবি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। কবি বিজয় সরকারের সম্পাদনায় বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের ৮৪ জন নবীন-প্রবীন কবির সৃষ্টিশীল কবিতা সংকলিত 'আত্ম অন্বেষণ ' কাব্যগ্রন্থের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটলো।

 ভয়েসের সাংগঠনিক সম্পাদক চন্দন মহন্ত তার স্বাগত ভাষণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানিয়ে ভয়েস সংগঠনের উদ্দেশ্য ও ভয়েসের বহুমুখী মানবিক কার্যাবলী তুলে ধরেন।
 'আত্ম অন্বেষণ' সংকলনের সম্পাদক কবি বিজয় সরকার তার বক্তব্যে সংকলন প্রকাশের প্রাসঙ্গিকতার উল্লেখ করেন l 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বঙ্গরত্ন, কবি-প্রাবন্ধিক বিশ্বনাথ লাহা বলেন - সৃষ্টিশীল কর্মমুখী জীবনের মধ্য দিয়েই খুঁজে নিতে হবে বাঁচার আনন্দ। সমাজ জাগরণে নবপ্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন তিনি। 
বিশেষ অতিথি 'আত্ম অন্বেষণ' কাব্যগ্রন্থের ভূমিকা লেখক তথা অধ্যাপক সুকুমার বাড়ইয়ের কথায় ভয়েসের তরুণ তুর্কি দল যেভাবে সকলকে সাথে নিয়ে শিক্ষার প্রসার, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ও সমাজসেবামূলক কাজ করে চলেছে, তা সত্যি প্রশংনীয় l
বিশেষ অতিথি ডি.এস.পি হেড কোয়ার্টার ও সাহিত্য-নাট্যপ্রেমী রিপন বল বলেন - বর্তমানের এই কঠিন পরিস্থিতিতে একমাত্র সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার দিশা দেখাতে।  

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সম্মানীর অধ্যাপক ড. দীপক চন্দ্র বর্মন 
এবং সম্মানীয় কবি মিহির দাশগুপ্ত। 

     সংগীতশিল্পী আল্পনা কুন্ডুর 
"শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ভোরের আগমনী" - গানের মধ্য দিয়ে  অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশিত হয়। 
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন বর্ণালী রায়, রত্না রায়, ছবি বর্মন, রুপা সরকার। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি শৌভিক দাস, সুব্রত মিত্র, অভিজিৎ কুমার মল্লিক, যাদব চৌধুরী, গগন ঘোষ, বিনয় লাহা প্রমুখ l অনুষ্ঠানে উপস্থিত কবিদের হাতে ভয়েসের পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয় "কবিরত্ন সম্মান - ২০২২" 
এছাড়া ভয়েসের পক্ষ নির্বাচিত শিল্পীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় "শিল্পীরত্ন সম্মান - ২০২২"।  

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আহ্বায়ক কবি গোলাপ সিংহ। অনুষ্ঠানকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সঞ্চালনা করেন ভয়েসের সদস্যা আল্পনা কুন্ডু।

Friday, 9 September 2022

একটা যুদ্ধ চাই -- সরিফুল হক


একটা যুদ্ধ চাই ,
ভীষণ, ভয়ঙ্কর ধরনের যুদ্ধ। 
তার পরিধি ছড়িয়ে পড়ুক 
গ্রাম থেকে শহরের সীমানা পার হয়ে 
দেশ থেকে দেশান্তরে। 
প্রতি বস্তিতে , প্রতি এঁদো-গলিতে ।
আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা থেকে প্রতিটি প্রান্তিক মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে। 
চাই সবাই স্বেচ্ছায় সামিল হোক সে যুদ্ধে।

অশিক্ষা-কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ।
ধর্ম-জাত-ভাষা বিভেদের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ। 
লাঞ্ছনা-বঞ্চনা-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ। 
দূষণ-ধ্বংসের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ।
শিক্ষা-মানবিকতা-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সে যুদ্ধ। 

জয় আমাদের নিশ্চিত।
কারণ -এই যুদ্ধের দামামা প্রতিটি হৃদয়ে অনুরণিত।
আর ,প্রকৃতিও চায় তার সমস্ত সমর্থন নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াতে। 

তারপর তৈরি হবে -একটা সুসভ্য জাতির। 
একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের। 
একটা সমৃদ্ধ - কিন্তু, মুক্ত মনের। 
তুমি ,আমি ,আমরা সব্বাই তখন স্বাধীন।


© সরিফুল হক 
মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ 

Thursday, 21 July 2022

প্রকাশিত হতে চলেছে ভয়েস-এর প্রথম কাব্য সংকলন "আত্ম অন্বেষণ "।

৮৪ জন কবির কবিতা নিয়ে কবি বিজয় সরকারের সম্পাদনায় প্রকাশিত হতে চলেছে ভয়েসের প্রথম কাব্য সংকলন "আত্ম অন্বেষণ "।  


কাব্যগ্রন্থের প্রত্যেক কবি তাদের আত্ম অন্বেষণের তথা নিজেকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন তাদের স্ব স্ব ভাবনা, চিন্তন-চেতনা, দর্শন ও আত্মবোধের মধ্যে। গ্রন্থটিতে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকা থেকে শহুরে অঞ্চলের নবীন-প্রবীণ কবিদের স্ব স্ব লেখনীতে মানুষের জীবন, প্রেম-প্রকৃতি ও বাস্তব সমাজের নানা চিত্র প্রভৃতি ফুটে উঠেছে। যা পাঠকদেরও আত্ম অন্বেষণের পথ দেখাবে, আশা রাখি।

কাব্যগ্রন্থের প্রি-বুকিং চলছে----- 

আগ্রহী সাহিত্যপ্রেমী বন্ধুরা কাব্যগ্রন্থটি প্রি-বুকিং করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।  

WhatsApp : 8918172319 

কাব্যগ্রন্থের কিছু  বৈশিষ্ট্য : 

১) বোর্ড বাইন্ডিং হার্ড কপি।  
২) ISBN যুক্ত 
৩) কবির সৃষ্টিশীল কবিতার সাথে কবির ছবি সহ কবি পরিচিতি গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে।

Saturday, 26 February 2022

ঘোষণা -- বিশ্বজিত প্রামাণিক


রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে তারকাঁটা থাকবে যতদিন গেঁথে,
এ পৃথিবীতে যুদ্ধ নামবেই প্রতি সন্ধ্যেতে এসে!

কে বলেছে পৃথিবীর ঘর আছে?*
পৃথিবীর ঠিকানা আছে?
পৃথিবী নাকি "মায়ের বুক"?

খুলে দ্যাখ তোর মায়ের বুকের ছাতি-
শুধু পড়ে আছে বারুদের বীজ!
কষ্টের বিষ!
আর "সব দখলের" রাষ্ট্রনীতির পাতি বুজরুক্!

এই যাযাবর পৃথিবী সহস্র শতাব্দী ভর-
*যুদ্ধের শূলে এঁটে আমৃত্যু যেন বাঁচে!*
 যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ নয়"
মৃত সন্তানের কফিনে মাথা ঠুকে-
ফুঁপরে ফুঁপরে আজও পৃথিবী যেন কাঁদে!



Saturday, 5 February 2022

🌼কবিতা সংকলনে লেখা আহ্বানে বিজ্ঞপ্তি 🌼

🌼কবিতা সংকলনে লেখা আহ্বানে বিজ্ঞপ্তি 🌼

সবারে করি আহ্বান 🙏🙏

🌼আনন্দ সংবাদ    
🌼আনন্দ সংবাদ🌼

ভয়েস-এর উদ্যোগে শত কবির কবিতাসহ কবিদের ছবি ও জীবনপঞ্জী নিয়ে ISBN যুক্ত কাব্য সংকলন প্রকাশ হতে চলছে। নিম্নে উল্লেখিত নিয়মাবলি ভালো করে পড়ে আপনারা আপনাদের সৃষ্টিশীল কবিতা প্রেরণ করবেন। আসুন আমরা আপন আপন সৃষ্টি দিয়ে বিশ্ব মানবতার মালা গাথি। 

🌼আগামী ২০ ই মার্চ ২০২২ - এর মধ্যে লেখা পাঠাবেন। 

🌼ভয়েসের শত কবি 🌼

🌼নিয়মাবলি🌼

১. অনধিক ২০ লাইনের মধ্যে কবিতা পাঠাবেন।  
        ২০ লাইনের বেশি হলে সেটি গ্রহন করা হবে না। 

২. কবিতার সাথে ৭০ শব্দের মধ্যে আপনার সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জী ও আপনার একটি অফিসিয়াল পাসপোর্ট সাইজের ছবি হোয়াটসঅ্যাপ ডকুমেন্টস করে পাঠাবেন। 

  ৩. লেখার ক্ষেত্রে সাধারণ বাংলা টাইপিং বা অভ্র কীবোর্ড  টাইপ করে লেখা পাঠাবেন। 
  ৪. কোনো প্রকার ছবির উপরে লেখা পাঠাবেন না।
  ৫. নির্ভুল বানানে লেখা পাঠাবেন। 
  ৬. বিরাম বা জ্যোতি চিহ্নের ব্যবহারের দিকে নজর রাখবেন।
  ৭. কবিতার সাথে  আপনার নাম ও আপনার শহর ও জেলার নাম অবশ্যই উল্লেখ করে পাঠাবেন। 
  ৮. লেখা পাঠানোর পূর্বে একবার সব (বানান+ বিরাম চিহ্ন ) মিলিয়ে নিবেন।
  ৯ .লেখা ভুল পাঠালে তার দ্বায়ভার সম্পূর্ণ রূপে কবির নিজস্ব ।  
  ১০. কেবলমাত্র বাংলা ভাষায় লেখা গ্রহণীয়।  
১১. কবিতা অবশ্যই অপ্রকাশিত হতে হবে।

                        
★লেখা পাঠাবেন উল্লিখিত হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে  : -- 

WhatsApp : 6295392549 

★ লেখা মনোনীত হলে আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

★লেখা মনোনীত হলে সহায়ক মূল্য বাবদ  ২৫০ টাকা আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। 

★ভয়েসের দেওয়া অ্যাকাউন্ট নাম্বারের যে কোনো একটিতে কাব্য সংকলন বাবদ ধার্য মূল্য পেমেন্ট করে তার স্ক্রিনশট নির্দিষ্ট লেখা পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠিয়ে দেবেন।

★Google Pay : 6295392549
★Paytm : 6295392549
★Phonepe : 6295392549
★Amazon Pay : 6295392549 
 
অথবা 

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তথ্যাদি 

State Bank of India 
A/C Holder Name : Chandan Mahanta    
A/C No : 34394704006
IFSC Code : SBIN0015279
Branch : Fulbari 

★অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কবিদের হাতে কাব্য সংকলন, ট্রফি, শংসাপত্র প্রদানের মধ্য দিয়ে সম্মানিত করা হবে।  

★অনুষ্ঠানে যারা আসতে পারবেন না, তাদের প্রাপ্ত কাব্য সংকলন, ট্রফি ও শংসাপত্র ডাকযোগে / কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে কবিদের বাড়তি ৫০ টাকা কুরিয়ার চার্জ বহন করতে হবে। 
        অনুষ্ঠানে যারা আসতে পারবেন না......তারা কুরিয়ার চার্জসহ মোট সহায়ক মূল্য ৩০০ টাকা পাঠাবেন। 

★অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ও স্থান পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। 

     আপনাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতাই আমাদের চলার পথে পাথেয়। 

     এছাড়া আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন :-- 

★ +91 6295392549 
★ +91 8918172319 
 
Email : voiceculturalteam@gmail.com 
 

ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছান্তে, 
কাব্য সংকলন কমিটি 
"ভয়েস লিটারারি কালচারাল অর্গানাইজেশন" 

🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼

আয় ছুটে মায়ের চরণে -- মুরারি



হংস বাহনে চড়ে,
জ্ঞান সাগরের পথটি ধরে;
এসেছে মা সরস্বতী,
ছাত্রে দিতে জ্ঞানের গতি।

সাথে নিয়ে এসেছে এক,
বিদ্যাবুদ্ধির বোঝাই তরী;
গান বাজনা সুর লহরীর,
যন্ত্রে বোঝাই সারি সারি।

নিবি যদি শিক্ষা নবীশ,
আয় ছুটে জ্ঞান সাগর পাড়ে;
অফুরান এই মায়ের কৃপা,
তুলে নে সব মাথার পরে।

Sunday, 23 January 2022

অনাদৃত বীর- গাথা -- আশুতোষ শী


হে বীর বঙ্গসন্তান !
হে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র—
যেন পরাধীন ভারত গগন ললাটে 
ভাস্বর অগ্নিটিকা সম
উদিত পাবন-চন্দ্র ।
স্বাধীনতাকামী ভারত যবে
নায়ক হীন ,আশাভগ্ন ,
উতরোল ভারতবাসী যবে ঘোর সংগ্রামে মগ্ন,
তুমি আবির্ভূত কটকনগরে- স্বনামধন্য পিতা জানকী নাথের ঘরে ।
আপামর ভারতবাসীরে পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির মানসে
আপনার সুখের জীবন করিয়া উৎসর্গ ,যাত্রা করিলে এক মহৎ উদ্দেশে
সে কোন্ নিরুদ্দেশে।
অতঃপর মনিপুর কোহিমায় উড্ডীন হলো
স্বাধীন ভারতের ত্রিরঞ্জিত পতাকা,
স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় সূচনার
সর্বপ্রথম চিহ্ন রহিল আঁকা ।
১৯৪৫সাল , ভারতের স্বাধীনতার প্রাক্কাল, 
১৮ই আগষ্ট, তাইহোকু বিমানক্ষেত্র,
কোন এক অজ্ঞাত কারণে
বিমান ধ্বংসের অছিলায় গেলে তুমি অন্তর্ধানে,
স্বার্থান্বেষীজন সদর্পে ঘোষে তবে মরণ সন্দেশ ।
কিন্তু,আজও হলোনা রহস্য উদ্ঘাটিত-
সেটা কি মৃত্যু ? না নিরুদ্দেশ !
যারা দায়িত্ব মুক্ত হতে চায় সানন্দ ঘোষনায়
তব সন্দিগ্ধ মৃত্যুকাহিনী,
তারা কি ভুলেছে তব নিস্বার্থ অবদান ,I.N.A বাহিনী ?
স্বাধীনতার সুমিষ্ট ফল যারা ভক্ষে আজি সুখে,
তারা কি পারেনা অনুসন্ধিৎসু-চোখে তাকাতে সম্মুখে ?
তোমার সেই ঐতিহাসিক আহ্বান—
'তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব'—
আজকের এই বিষাক্ত পরিবেশে
অমূল্য সে বারতা প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে 
ভারতের আকাশে-বাতাসে,
নিঃশ্বাসে- প্রশ্বাসে ।
তোমার আত্মত্যাগের বাণী ,
যশোলিপ্সা বিহীন অনাদৃত জীবন কাহিনী ,
বর্তমান ভারতীয় মোরা কৃতঘ্ন, অর্বাচীন,স্বার্থপর,তমশামগ্ন,
তবু স্মরি মোরা প্রতিক্ষণে
তোমার শুভ জন্মদিনে-
তোমারে ভুলিনাই, 
ভুলিবোনা কভু ,জীবনে মরনে ।

উপেক্ষিত বিপ্লবী -- পরেশ চন্দ্র দাস


বাংলামায়ের দামাল ছেলেদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ যিনি ক্রীতদাসের আব্রু ভূষিত ,কলঙ্কিত অধ্যায়ের মহানায়ক ।
বাঙালীকে ভয় করেনা এমন দৃষ্টান্ত ইতিহাসের মোড়কে স্বর্ণাক্ষরের ছড়াছড়ি ।
ভারতের ইতিবৃত্তে বাংলার বিপ্লবী অধ্যায় ,বিষ বাঁও জলে ।
ভাষার ষড়যন্ত্রের নাটকের জালে উপেক্ষিত রয়েলবেঙ্গলটাইগার ।
স্বার্থান্বেষী চক্রধারীর গোলক ধাঁধায় ধর্ষিত, শৃঙ্খলে আবদ্ধ মায়াকান্নার বিপ্লব ফাঁসির মঞ্চে ঠেলে দিয়ে , গণতন্ত্রের নামাবলী গায়ে সেকুলার ব্রাণ্ডের আতর ছড়ায় ।
বুদ্ধিমত্তা শোষে হাফ সেঞ্চুরির নেফো, বোকা সেজে টুপি বিক্রির ভয়ে আবোল তাবোল পড়ে ।
আর স্বাধীনতা সংগ্রামের পা চেটে সময়ের অপেক্ষা করে বাক্যবাগীশ ।তারাই বিভূতি গায়ে মেখে মেড ইন জাপানের
তুলোধোনাতে পঞ্চমুখ ।
..........................................
   

মাপ কাঠি -- জ্ঞানেন্দ্র নাথ রায়



প্রভাতদার সঙ্গে সুদিনের আলাপ, লণ্ডনের ভারতীয় ছাত্রাবাসে। সুদিন ইম্পিরিয়াল কলেজ অফ সায়েন্স অ্যাণ্ড টেকনলজিতে এম ফিল করছে। তখনকার দিনে গুগলস ছিল না, কিন্তু সবজান্তা প্রভাতদা ছিলেন। রোববারের প্রাতঃরাশের টেবিলে সুদিন হয়তো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল, আচ্ছা প্রভাতদা, গামছা ভাল? না তোয়ালে ভালো? প্রভাতদা বেশ একটা বিজ্ঞ বিজ্ঞ ভাব নিয়ে, আলোচনা শুরু করলেন। সকলে তখন সেই আলোচনায় যোগ দিলেন। জায়গা বিশেষে অনেকে মন্তব্য ছুঁড়ে দিলে আসর আরও বেশ জমে উঠত।
প্রভাতদাকে শুধু উস্কে দেওয়ার অপেক্ষা। এবিষয়ে লোকের অভাব হত না। অনেকদিন এমনও হয়েছে যে, আলোচনাটির অবতারণা যিনি করেছিলেন, তিনি আগেই আসর ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু আলোচনা চলতেই থাকত।
-আচ্ছা, প্রভাতদা, আপনি কি বিশ্বাস করেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এখনও জীবিত আছেন?
-দেখুন, ওনার জন্ম তারিখ অনুযায়ী, ওনার বয়স আজ প্রায় ৭২, তাহলে ধরে নেওয়াই যায়, উনি বেঁচে আছেন। তবে এখন ঠিক কোথায় আছেন বা থাকতে পারেন তা কিন্তু জানি না।
আর একদিন একজন জানতে চাইলেন, আচ্ছা প্রভাতদা, দেশপ্রেম কী? 
-এতো সকলেই জানে, মাতৃভূমির প্রতি এক ধরনের আবেগপূর্ণ অনুরাগ বা ভালোবাসাই হচ্ছে দেশপ্রেম। সেটা দেশের প্রতি একজন ব্যক্তির বা কোনো এক জনগোষ্ঠীরও অনুভূতি হতে পারে। আবার এভাবেও বলা যেতে পারে দেশপ্রেম হচ্ছে একজনের দৃঢ় প্রত্যয় যে আমার দেশটা অন্যান্য দেশের চেয়ে উৎকৃষ্টতর। এবং আমি এখানেই জন্মগ্রহণ করেছি। 
ফোঁড়ন কাটার লোকের অভাব হয় না, একজন প্রশ্ন রাখলেন, আচ্ছা, প্রভাতদা, আপনার কি দেশপ্রেম আছে?
-কেন থাকবে না? আপনাদের কি সন্দেহ আছে?
-না, মানে, এতদিন আপনি দেশ ছেড়ে, বৌদিকে ছেড়ে লণ্ডনে রয়ে গেছেন, লোকের মনে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে।
এই প্রথম প্রভাতদা একটু গম্ভীর হয়ে গেলেন। পরিবেশটা অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে দেখে সুদিন বলল, না, না, ব্যক্তিগত কোনো প্রশ্ন এখানে চলবে না। 
উপরোক্ত বক্তব্যটি সভার মাঝে রাখলেও সুদিনের নিজের মনেও কিন্তু অনেক প্রশ্নের উদ্রেক হতে শুরু করে।সুদিন নিজেই চিন্তামগ্ন হয়ে পড়াতে, প্রভাতদার কোনো কথা ওর কানে যেন আর পৌঁছয় না। সেই নিষ্পাপ বালিকাটির মুখটা ভেসে ওঠে মনে, ওর না বলা প্রশ্নগুলোও যেন সুদিনের কানে সশব্দে উচ্চারিত হতে থাকে, সুদিনদা, তোমার স্কলারশিপ কবে শেষ হবে? দু বছর তো অনেকদিন শেষ হয়ে গেছে! তোমার তাহলে চলছে কীভাবে? সুদিনের দিকে আঙুল উঁচিয়ে আজ শত শত লোক যেন প্রশ্ন করছে, এক বছরের স্কলারশিপের নাম করে, তুমি কেন লণ্ডনে গিয়ে বসে আছ? এই কি তোমার দেশপ্রেমের নমুনা? 
সুদিনের কিছু আর তখন ভাল লাগে না। চেয়ার ছেড়ে সুদিনকে উঠতে দেখে, অনেকেই প্রশ্ন করল, উঠছেন? 
-যাই, কাজ আছে।
ঘরে এসে, শুয়ে পড়ল সুদিন। নানা চিন্তা ওর মাথায়। অনেকেই ওকে বুঝিয়েছে, আরে ভুলে যান দেশপ্রেম, বিদেশে আসার সুযোগ যখন পেয়েছেন, সুযোগের সৎ ব্যবহার করুন। দেশে না ফিরে যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় চলে যান, ওখানে অনেক টাকা। কী আছে, স্কলারশিপের টাকা প্রয়োজন হলে সরকারকে ফিরিয়ে দেবেন। 
কথাগুলোর মধ্যে যুক্তি আছে, কিন্তু মা-বাবার মুখ দু'টো যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে, ঐ নিষ্পাপ চোখ দুটোর ভাষা যখন শব্দায়িত হয়ে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে, তখন সুদিনের সব কিছু ওলোট-পালোট হয়ে যায়। 
না, টাকাটা সব কিছুর মাপ কাঠি হতে পারে না। দেশ ওকে চাইছে। দেশের সেবা, মা-বাবার সেবা তো করতেই হবে। এটা কর্তব্য। সুদিন দেশে ফিরবেই।
সুদিন চিঠি লিখতে বসে গেল।  
-o-

চির ভাস্বর নেতাজী -- দিলীপ কংসবণিক



পিতা জানকী নাথ বসু, রত্নাগর্ভা মাতা প্রভাবতী 
তাঁদের পুত্র রূপে এসছিলে তুমি চির ভাস্বর বঙ্গদ্যূতি।
হে ভারত মাতার শ্রেষ্ঠ সন্তান তোমায় প্রণমী,
জনমিয়া দেখিয়াছিলে ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি।
দেশমাতৃকা শৃঙ্খলাবদ্ধ, শ্বাসনালি তার অবরুদ্ধ বিদেশিদের অত্যাচারে,
মাতৃভূমি র জন্য কাঁদিলো তব প্রাণ বাল্য বয়সে ই করিলে পণ' মায়ের শৃঙ্খল মুক্ত করিবারে।
ভারত মায়ের শান্ত সুবোধ সন্তানেরা মরছে অনাহারে বিদেশিদের তৈরি দুর্ভিক্ষে--
ধানের পরিবর্তে করিয়েছে তারা নীল চাষ, কৃষক পরিবার থাকে অনাহারে তাকিয়ে অন্তরীক্ষে।
বিদেশিদের অপশাসন, দেশি বণিক রা ও করে স্বার্থ অন্বেষণ, করে বিদেশিদের তাঁবেদারী,
দেখে দেশের এই গতি, ভাঙ্গিতে বিদেশি রীতি, বিবেকানন্দ র বাণী স্মরণ করি।
করিলে উদাত্ত আহ্বান, ওঠো জাগো হে ভারতবাসী,
তোমাদের এই অবচেতনে লুটতরাজ করেছে বিদেশি।
বিদেশি উৎখাতে করেছ সশস্ত্র বিপ্লব, আজাদ হিন্দ ফৌজ নিয়ে করিলে বিদেশিদের আক্রমণ,
ভারতের কিছু ঘাতকের জন্য তোমার অন্তর্ধান, করিতে পারিলেনা বিদেশিদের নিষ্ক্রমণ।
তাদের বংশধরেরা এখনও দাপিয়ে বেড়ায় ভারতে,
ভারত মাতা কে করছে কলুষিত সত্য ঢাকে অসতে।

অনেক ই বলি নেতাজী তুমি ফিরে এসো তোমাকে বড়ো দরকার,
এ যে অসম্ভব! অলীক কল্পনা র কথা ই বলি বারবার।
তোমাকেই চাই' তোমার আদর্শ কে নয়?
গ্রহিলে তোমার আদর্শ মিলিতো স্রষ্টা র বরাভয়।
লিপিবদ্ধ রয়েছে তোমার বাণী, সম্মুখে তব দেখানো পথ,
তোমারি আদর্শে গড়ি না নিজেকে চালাই না সে পথে নিজ মনোরথ।
মোরে ক্ষমা করো হে নেতাজী ক্ষমা করো এই অধমেরে,
জনমিয়া তোমার দেশে গ্রহিতে পারিনি আজ ও তোমারে।

**************************

Friday, 14 January 2022

কবিতার কবিতা -- মানস মাইতি



তোমার ওষ্ঠ অধরের উৎসবে আমার রাত নেমে এলেই, জন্ম নেয় কবিতার শতদল।
কি নরম মায়াবী দুঃখ মাখা সে অক্ষর সাধনা!
কান্নার এতো এতো আনন্দ-অনিন্দ্য- যাপন তখনই অনুভব করি।
সে অধর চুম্বনের এতো রঙ এতো আলাপন আগে কখনো বুঝি নি!!
সৃষ্টির গোলাপ-ভালোবাসা প্রতি রাতের কবিতার ডায়েরি পাতায় আমি এঁটে রাখি।
সৃজনের নীল আকাশ অভিমান এঁটে রাখি পাতায় পাতায়।
কখনো বিহাণ বেলার আলতো রোদ-রঙ সৃজনে আসে,
তাকেও মেখে রাখি,যেখানে আমার কবিতার গোলাপী ঘর।
আর সেই, হৈমন্তী মেঘে অনাহুত বর্ষার অকস্মাৎ আগমন
সেও এক কবিতার রঙিন রঙ, তাকেও যত্নে বুলিয়ে রেখেছি তোমার পরশ মাখা কবিতায়।
নষ্ট হতে দিও না,
সেদিন
যেদিন
আর ওষ্ঠ অধরে উৎসবের আয়োজন থাকবে না।
সেদিন
প্রতিটি কবিতার আখরে তোমার আঙুল নেমে আসুক।
সেদিন
প্রতিটি কবিতায় কান পেতে শোনো,
তারা সমস্বরে বলবেই,
কবিতা কখনও শরীরের পাপ মাখে না
কবিতার ওষ্ঠ অধর চাঁদের কলঙ্কের মতো শাশ্বত
সুন্দর।
এবার, আজ, আরও একবার, ওষ্ঠ অধর রাখো
আমার তুমিতে
দেখো,কবিতার বুকে জন্ম নিয়েছে,
কবিতার কবিতা...


অধ্যাপক মানস মাইতি
কবি-লেখক ও সঙ্গীতসাধক 

----------------------------------------------------------

লাঞ্ছিত প্রকৃতি -- পরেশ চন্দ্র দাস


সর্ব উপদ্রপ সহা অবনি আজ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলি কহিছে,
মানুষ নামক সর্বভূক প্রাণীকে, রেহাই দাও আমাকে ।
এবার আমার পাক ধরেছে বয়সের আলোকবর্ষে ।
কার্বনের পরিমাপ বর্ধনে ,অক্সিজেনের হ্রাসে নিওন,হাইড্রোজেন সবাই দল বেঁধে আমার
বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটিয়েছে ।
যেখানে আমার ব্যালান্স খাদ্যভান্ডার উঃমেরু
দঃমেরুর তুহিন । লাঞ্ছ ,ডিনার, প্রাতরাস্  সারতাম অবলিলায় । যা ধ্বংশের দোরগোরে।
সুপ্ত জীবাণুরা আজ প্রাণ পেয়েছে ,জমিয়ে ভূমন্ডলের প্রাণীদের উপরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয় ।
বিজ্ঞানের সমস্ত প্রোটোকল প্রশ্নপদক চিহ্নের
মুখোমুখি । হারজিৎ এর ডামাডোলে প্রকৃতি
চাইছে অব্যাহতি ।
চাহিদার যোগান দিতে জীবনটাই ডেসট্রয়েড ,
'দোষ শুধু ঈশ্বরের' ।।

নগরায়ণ উষ্ণায়ন -- দিলীপ কংস বণিক



নগ্ন পায়ে, আদুল গায়ে, ছুটছে শিশু রাস্তা পানে।
মাটির সুবাস থাকবে না, খোলা পায়ে হাঁটবে না, এই শিশু কি সেই জানে!
কাঁচা মাটির সেই সড়ক, বৃষ্টিতে পঙ্কিল ধারক, সকল ই স্মৃতির অতল।
দু পাশে গাছের সারি, সড়কে ছায়া তার ই, পথিকেরে রাখিতো শীতল।
সে রাস্তা চ‌ওড়া হলো, সকল গাছ কাটা গেল, যেন খাঁ খাঁ শ্মশান।
রৌদ্রের প্রখর তাপ, যেন কার অভিশাপ,  এ হেন হুতাশন।
শিশুটির বয়স বাড়ে, দেখলো একদিন রাস্তা পরে, পাতাহলো ইট।
তার উপরে দিলো পাথর, পাথর ঢাকলো পিচের আস্তর, রাস্তা ই হলো কালকূট!
চলছে এখন বড়ো গাড়ি, ছুটছে কালো ধোঁয়া ছাড়ি, কষ্ট হচ্ছে নিতে নিঃশ্বাস।
আধুনিক এ নগরায়ণ, বাড়ায় শুধু উষ্ণায়ন, কষ্ট লাঘবের নেই কো আশ্বাস।
নানান দেশে সভা হয়, কাটাতে এ বিপর্যয়, থামাতে এ উষ্ণায়ন।
কিন্তু হায়--  সব নিরুপায়, আমরা' ই আমাদের কষ্টের কারণ!
প্রকৃতির এই ধ্বংস লীলায়, কতো মানুষ প্রাণ যে হারায়, হিসেব রাখে কে?
নানান রকম মারণ ব্যাধি, অক্সিজেন বি না ঔষধি,  রুগ্ন সব কে।
বাঁচতে করো সবুজায়ন, তবে ই প্রকৃত বিশ্বায়ন, সুস্থ সবল প্রাণ।
সকল রোগের হবে ক্ষয়, প্রাণোচ্ছল জীবন ময়, কর্মপন্থায় সঠিক বিজ্ঞান।
**************************
লেখমালা র ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
                🙏🌹🌹🙏

ঘৃতকুমারী -- জ্ঞানেন্দ্র নাথ রায়

 ঘৃতকুমারী    -- জ্ঞানেন্দ্র নাথ রায় 


বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জীব হয়েও মানবজাতিই বোধহয় প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাকে পরাজয় স্বীকার করতে হয়। পরিবেশের উন্নতি সাধন কল্পে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হয়।  
স্ত্রীবিয়োগের পর সুদিনের একাকিত্বের জীবন শুরু হয়েছিল সহধর্মিনীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিন থেকেই। কিছু বলার নেই, সকলেরই বিভিন্ন কারণ ও ব্যস্ততা তো থাকতেই পারে। বহু বছর পর আত্মীয় বা বন্ধুদের কারও সঙ্গে দেখা হলে স্বাভাবিক ভাবেই তারা হয়তো প্রশ্ন করে বসেন, আপনি একা থাকেন কী করে? আপনার ভয় করে না? সুদিনের নির্লিপ্ত উত্তর, আমি তো একা থাকি না, আমার সঙ্গে তো ঠাকুর থাকেন! তিনি হচ্ছেন প্রজ্ঞানপুরুষ শ্রীশ্রীবাবাঠাকুর। আর ভয়ের কথা বলছেন? কীসের? যার জন্য অপেক্ষা তাকে ভয় করব কেন? সুদিন মনে প্রাণে বিশ্বাস করে যে বেঁচে থাকার আর এক নাম মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা। মৃত্যুর বিষয়ে শিখারও কোনো উদ্বেগ ছিল না, এই প্রসঙ্গ উঠলেই বলত, দেখো সময় হলে ঠাকুর আমাদের না ভুগিয়েই নিয়ে চলে যাবেন। প্রকৃতি তার নিজস্ব্ খেয়ালে চলে, তাই প্রকৃতিকে তার মত চলতে দেওয়াই ভাল। 
***
মার্চ্ ২০২০, চারদিকে কোভিড-১৯এর ভ্রুকুটি। শিখার মত সুদিনেরও মৃত্যুভয় নেই। কিন্তু, ওর এক বোনের মনে হল, দাদার বোধহয়, এভাবে একা থাকাটা ঠিক হবে না! ইতিমধ্যে, সুদিনের একাকিত্বের জীবনে স্থান পেয়েছে আরও কয়েকটি প্রাণী যাদের জন্য সুদিনকে রোজই একটু ব্যস্ত থাকতে হয়। ওদের কথা ভেবে সুদিন সাধারণতঃ বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চাইত না। তাই, এখন সমস্যা দেখা দিল তাদেরকে নিয়ে। বোনের ওখানে চলে গেলে, এদের তখন দেখবে কে? তবে, অনেকের মতে, সামান্য তো ক'টা গাছ, এদের জন্য আবার এত মায়া! বোনের যুক্তি, ঠিক আছে, তেমন হলে মাঝে দু'একদিন এসে জল টল দিয়ে এবং একটু দেখাশুনো করে গেলেই না হয় হবে।
*** 
তারপর তো পরপর বহু ঘটনা ঘটল! বাস বন্ধ, মেট্রো বন্ধ। মাঝে অবশ্য প্রতিবেশীরা খবর দিয়েছেন, সুদিনের ব্যালকনির পুঁই ডগাগুলো বেশ লকলকে হয়েছে। নয়নতারা ফুলও ফুটছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি তো হচ্ছেই, ব্যালকনির কিনারায় রাখা গাছগুলো বৃষ্টির জল পাওয়ার ফলে টিকে আছে। 
***
তারপর সুদিন নিজেই কোভিড-১৯এ আক্রান্ত হল। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কয়েক মাস। দেখতে দেখতে নূতন বছরও এসে গেল। 
জানুয়ারি, ২০২১। সুদিনের মনে হল, অনেকদিন হল বাড়ির বাইরে। গাছগুলো তো নিশ্চয়ই শুকিয়ে মরে গেছে। আবার নূতন করে সব শুরু করতে হবে। বোন বলল, অনেক দিনের ব্যবধানে বাড়ি ফেরা তো, আমিও না হয় যাব, ঘর দোর সব পরিষ্কার করে সাজিয়ে গুছিয়ে দিয়ে আসবো।
জানুয়ারির মাঝামাঝি এক রোববারে দাদাকে নিয়ে বোন এল উত্তর কোলকাতার সেই ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাটে ঢুকতেই শিখার চোখে চোখ পড়ে গেল সুদিনের। আগের মত শিখা যেন বলে উঠল, ভালো আছ তো! তারপর সুদিন ঝুলবারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল। এখন একটা গাছও আর বেঁচে নেই! তারপর ভিতরে এসে ওর শোবার ঘরে প্রবেশ করল। জানলার পাল্লা খুলতে গিয়ে চোখ পড়ল জানলায় রাখা একটা টবের উপর। প্রায় দশ মাস ওতে কোনো জল দেওয়া হয়নি। অবাক বিস্ময়ে সুদিন দেখলো ওতে রাখা গাছটা তখনও বেশ সতেজ আছে। প্রকৃতির কী অদ্ভুত খেয়াল! টবের গাছটার নাম, ঘৃতকুমারী! গাছটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সুদিনের যেন মনে হল, গাছটা এই দশটা মাস ওর জন্য অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করেছে, যেন বলছে, আর পারছি না, এবার একটু জল দাও।
-o-

প্রকৃতির ছবি -- মঞ্জুলা বর


ভোরে রবি বলল ডেকে খোলো এবার দোর 
আলো ঢেলে কালো ঢেকে হলো এখন ভোর, 
 ফুল ফুটেছে কুসুম বাগে গাইছে পাখি গান
 ফুলের গন্ধে মাতাল হয়ে ধরছে অলি তান।

শিশির ঝরে ভোরে বেলায় ভেজা থাকে ঘাস  
চাষি ভায়া  রোদে পুড়ে মাঠে করে  চাষ,
মাঠ ভরেছে সোনার রঙে দুলছে পাকা  ধান
মাঠে মাঠে ভাসছে সদাই পাকা ধানের ঘ্রাণ।

 হিমেল পরশ সদাই নিয়ে  ছুটছে বায়ু খুব 
 মাছরাঙাটি ঝপাস করে দিচ্ছে জলে ডুব,
 গরু ছাগল চরছে মাঠে খাচ্ছে সবুজ ঘাস
 বিলে খালে কাদা জলে খেলছে যত হাঁস।

 বধূরা বেশ কলসি কাঁখে যাচ্ছে নদীর ঘাট
 চাষি ভায়া শস‍্যের তরে যায় গো সদা মাঠ,
পাকা  ধানে  গোলা ভরে  থাকে হাসি মুখ  
পিঠে পায়েস করে ঘরে  পায়গো মনে সুখ  ।

বাড়ি ফিরে কাজের শেষে যাচ্ছে হাটে লোক
কঠোর শ্রমে  সকল কাজে সবার শুভ হোক,
ফলে ফুলে ভরে থাকে  শোভা বাড়ে বেশ
 পাখিরা সব নীড়ে ফিরে বেলা হলো শেষ।।

Wednesday, 12 January 2022

লড়াই --বিজয় সরকার



জীবন পথে এগিয়ে যেতে 
লড়াই হোক বাঁচার সাথী।  
ভয়-কে যদি করো জয়
জিতেন্দ্রিয় হবে তুমি।