কবিতা
--------
কবি পরিচিতিঃ অর্ণব কর্মকার। পিতা - শ্রী অজিত কর্মকার, পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মাতা- প্রয়াত বেলারাণী কর্মকার, পেশায় ছিলেন ইঁচলকোন্দা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান সহায়িকা।
জন্ম- পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত গড়বেতা-১ নং ব্লকের ছোট্ট একটি গ্রাম কাশীডাঙায় ১৯৯৩ সালের ৬ ই নভেম্বর অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
বিদ্যার্জন - গণিতে স্নাতকোত্তর, বি.এড.। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি আগ্রহ ছিলো কবিতা লেখা, ছবি আঁকা ইত্যাদিতে। স্কুল জীবনেই প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতা 'সুখের বৃষ্টি, দুঃখের বৃষ্টি', পরবর্তীকালে গড়বেতার 'আলোর জোয়ার' পত্রিকার মাধ্যমে কবিতা লেখা চলতে থাকে। বর্তমানে উক্ত পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে পেয়েছেন 'আলোর জোয়ার পুরস্কার -২০১৯'।
-------------------------------------------------------------------
একটিবার
একটুখানি ভাষা চাই
সংস্কৃতি, তোমার...
যেন মৃত্যুর ত্রিতাল শুনি...
ভাষা পেলে আমারাও
আগুন জ্বলিয়ে দিতে পারি
হাজার মশালে, প্রদীপে;
শব্দছকে এনে দিতে পারি
দাবার আড়াই চাল,
যেন তালের যুগলবন্দি।
তাই, একটিবার সংস্কৃতি
হাতে তুলে নাও চিৎকার, পতাকা
আরও একটিবার...
---------------- ----------------------- ------------------------
উঠে দাঁড়াও
তোমাকে যে অ্যাঙ্গেল থেকেই দেখিনা কেন
বড়ো বিষণ্ণ মনে হচ্ছে,
সারা শরীর জুড়ে কেবল
মৌমাছি ছাপ।
তোমার বিবর্ণ খাতাতে যারা
টেনেছিল অজস্র নর্দমা-দাগ
তারা আজ অনেকটা দূরে
তাই তো আমি পেয়েছি খুঁজে
লাল গোলাপের গন্ধ।
এখন বৈশাখ মাস
শাল পাতার সবুজ ছবিতে ভেসে উঠছে
মাটি না ছোঁয়া শাড়ির পাড়ের
ঘামমাখা গোধুলির গন্ধ,
নীরবতা খুঁজে বেড়াচ্ছে
পাতার ভাঁজে ভাঁজে পিঁপড়ের ঘর।
তবুও তুমি সরিয়ে নিচ্ছো হাত
অতর্কিতে বেছে নিচ্ছ
দেওয়ালের নির্জনতার ভাঁজ,
কাউকে যেন দূর থেকে মনে হচ্ছে
ওটায় তোমার ইতিহাস।
ভুল করছো।
এ'সময় কোনো ছায়াছবির
গল্প পাঠের ইন্টারভ্যাল নয়,
এক্ষুনি তোমায় খুঁজে পেতে হবে
কয়েকটি শক্তপোক্ত ঘাস, ছোট্ট ডালের টুকরো।
পাখির মতো বুনতে হবে
বেঁচে থাকার অপরিহার্য কারুকার্য,
শিখতে তোমাকে হবেই -
পাখিরা কীভাবে বাঁচে।
তাই, উঠে দাঁড়াও।
------------------- ----------------------- ------------------------
জাতের পাতে
জাতের পাতে ক্ষোত্রিয়ের হাত
ব্রাহ্মণের মাথা, বৈশের উদর
আর শূদ্রের পা।
কড়মড়-কিড়মিড় শব্দে জাত
চিবিয়ে খাচ্ছে সমস্ত অস্তিমজ্জা,
রক্ত-মাংসের শিকড়-বাকড়।
জাতের পাতে ভাত নেই
বর্ণগুলোর ঘাম...নেই
আছে শুধু নাগরদোলার ছন্দে
থোড়-বড়ি-খাড়া আর খাড়া-বড়ি-থোড়।
হু-হু করে বাতাস বইছে
আরও শীতল হচ্ছে
পোষাকি আসন, বোঝাই করা পদবী
আর দাঁড়িয়ে থাকা তর্জনী।
জাতের পাতে আজও তবু নুন নেই
শাক নেই আর জল নেই
আজও শুধু কাগজজুড়ে
মানুষ পোড়ার গন্ধ পাই।
---------------------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment