Wednesday, 5 August 2020

সপ্তশ্রী কর্মকার


গল্প
----

লেখিকা পরিচিতি :  সপ্তশ্রী কর্মকারের জন্ম ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে শান্তিরবাজার দক্ষিন ত্রিপুরায়। তার পিতা শঙ্কর কর্মকার ও
মাতা ছন্দা কর্মকার 
শারীরবিদ্যা( বিজ্ঞান) বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। 


এখন শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত। 
অবসর সময়ে সাহিত্য তার সঙ্গী আর রান্না করা, ভাষ্যপাঠ করা। ভবিষ্যতে সাহিত্য চর্চা ও আরও উচ্চত্র পড়াশোনা নিয়ে এগিয়ে যেতে চান জীবিনে।

---------------------------------------------------------------------


প্রতারিত যখন অর্ধাঙ্গী



প্রত্যেকটা মেয়ের স্বপ্ন থাকে একটা আদর্শ বৌ-এর সন্মান পেতে। সারাদিন ব্যস্ততায় ঘিরে হাজারো চিন্তার অবসান হয় একটা মেয়ের যখন তার স্বামীর কাছে কম-বেশী সব কিছু পিছু ফেলে লক্ষ্য জেতা কথা শেয়ার করে। 

#সমাজের ওইসব মানুষগুলি যারা ভালো মুখোশের বেশে বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় হায়না যাদের বোঝা বড়ো দায়! যারা ভালো চাকুরীজীবি বা উচ্চ শিক্ষার ট্যাগধারী, বাবা-মা এসব দেখে নিজের রাজকন্যার দায়িত্বটা ঐসব পিশাচদের হাতে তুলে দেন। কারন তারা বুঝতে পারে না, মুখোশের বেশে বেঁচে থাকা হায়নাগুলোকে। 

বলা বাহুল্য এরা হলো অন্ধকারের কুয়ো ভেঙে প্রবেশ করা সময় নির্ঘণ্ট  না দেখা কিছু রুগ্ন রুচির গগনচুম্বী শরীর ছোঁয়ার বিদ্যাধারী.... কামুক পুরুষ। 

যেখানে ধূলো পড়া জানালার কাঁচ জানে পর্দার আড়ালে চলা কিছু বিভৎস গল্প, 
বেসামাল কামড়ানোর দাগ ধুয়ে মুছে যায় না কোন ঔষধের প্রলেপে। 

মাঝরাতে নেশার ঘোরে আসক্ত #সতনু বাড়িতে গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ছে আর আকণ্ঠ অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি দিচ্ছে দেরী কেন হচ্ছে দরজা খুলতে দেখে। 

বিকেলে উদাসী হওয়ার পালে চড়ে, 
রাতে ঘনিয়ে আসা তীব্র ব্যাথার ঘনিষ্ঠতার ক্ষন, 
যেখানে খাটের রেলিংটাও জানে
কত কথা মুখে না বলে মনের আড়ালে জমতে থাকা স্বামীর প্রতি ক্ষোভ। 
আর জন্ম নিরোধক ঔষধ খাওয়ার পর তীব্র শারীরিক অবনতির প্রতিবন্ধকতা। 

ইতিমধ্যে সতনুর বৌ কষ্টে কাতরাতে কোন রকমে দরজা খুলে দিতে গেল, আর দরজা খুলতে না খুলতেই সতনু তার স্ত্রী কে বিছানায় ফেলে যৌনতার শান্তিতে মেতে উঠেছে। এদিকে #সুহানার
দু-চোখ বেয়ে পড়ছে অশ্রুধারা আর বোবা বালিশ হচ্ছে তার সেই মুহূর্তের সাক্ষী। 

এদিকে সতনু তার দৈহিক শান্তি মিটিয়ে যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখন সুহানা তার সাদা বেডসিটের রক্তমাখা ছবি দেখে কষ্ট কাতরায় ভেঙে পড়া মনে প্রশ্ন করছে আজ তার স্বামী কি জানত না যে আজ সে #মাসিকের যন্ত্রণায় ছটফট করছে? সারাদিন তলপেটে যন্ত্রণায় কষ্ট পেয়েছে? 

হারামি সতনু ৩০-এর জীর্ণ মেরুদন্ডহীন দৈহিক জ্বালার লাল চোখের আফিমে ঘেরা স্বপ্ন বিলাসী পুরুষ যে তীব্র স্ত্রীকামী। যে নিজের স্বার্থে নিজের স্ত্রীকে তার যৌন রসের লেলিহান বিশ্বাসহীনতার বাজারে তীব্র চিৎকারের সুরে বিলিয়ে দেয়। 

মাসের সেই বিভীষিকাসম লাল চটচটে প্যাডের গন্ধ যা বাতাসে সন্মাহোনী হয়ে পড়ে বছর ২৬ এর #সোহানার। কে জানে বা জানতো ঐ দিনগুলিতেও চাঁদপানা মুখের গা বেয়ে ভালোবাসার আদর নয় অ্যালকোহল ঠিকরে পড়ে দু-চার ফোঁটা। 

হ্যাঁ স্বামীরূপী জ্যান্ত শৃগাল বিষ দাঁত ঝেড়ে দিয়েছে আর থাবা বসিয়েছে তার কোমল হরিণের দেহে। অনেকে হয়তো বা পরের দিন কোনো দাগ দেখলেও জিজ্ঞেস করে না বা বুঝে যায় আগের রাতের জোছনার আবছা আলোয় অন্দরমহলে নরম মখমলে বিছানায় কি হয়েছিল সুহানার শরীরের নরম মাংসে। 

জানোয়ারদের মস্তিষ্কে তো *crus cerebri* থাকার কারণে অন্য জন্তুকে হত্যা করে, কিন্তু তুই তো আর জানোয়ার না, তো কি করে যৌন ক্ষুধার জ্বালার সাথে নর খাদকের রূপ নিস? 

মন্তব্য :-- আজও নীরবে নিভৃতে হাজারো স্ত্রী ঘরে ধর্ষিত হয়। যেটা কোন আইনের কাঠগড়ায় দাড় করানো হয় না। নিশ্চুপ হয়ে সব কিছু সয়ে যায়, আর পরদিন সেই হায়নারূপী স্বামী-র সেবা করে যায়। 
#ছোট্ট একটি শব্দ স্বপ্নের "তুমি "
তুমিময় রক্তক্ষরণ, তুমিময় জীবন।

" হে নারী তোমার দেহ এত সস্তা 
বিয়ের আগে নাকি সব করা শেষ 
তাহলে বিয়ে করে লাভ কি ?
এইকথাও শুনতে হয়। 
নারিরা আজ এইভাবে ধর্ষণ হচ্ছে"। 

তবে নারীরা আজ যেমন ঘরে ধর্ষণের শিকার, তেমনি বাইরের পশু খাদকদের কাছেও। ঘরে ধর্ষিতা হলে তো উচ্চ আদালতেও বিচারের সম্ভাবনা কম। কারন গৃহহিংসার সব প্রমান তো থাকে না। যেচে কাউকে বললে  বলবে ওটা স্বামীর সোহাগ বলে উড়িয়ে দেবে, নয়তো adjust করে নে কথাটা আসবে। আবার কেউ বলবে তোর বর wild sex পছন্দ করে খুব। 

আরে ঘরে বাইরে থাকা কিছু মস্তিষ্ক বিকৃত পুরুষদের বলছি, যে তোরা শুধরে যা, নয়তো দেখবি কোনো নারীর গর্ভে তোদের আর জন্ম হবে না। 
"নারী মানেই সহন শক্তির অধিক" ও একটা মহাপুরুষ জন্ম দেওয়ারও ক্ষমতা ওরা রাখে। শোনো হে পুরুষ - নারীরা কখনো পুরুষদের স্পর্শ ছাড়া নষ্ট হয় না। 

যে নারীর কারণে "মহাভারত" ও "লঙ্কা দহন" সেই নারী আজ ধর্ষিতা হলেই কি মৌন মিছিলে মোমবাতির যাত্রা বহন? 

এখন তো মনে হয় পুরুষ - নারীর যুগল বন্দি বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে "সমকামী" জুটির প্রবণতা হওয়া অনেক ভালো। "ধর্ষক" থেকে সমকামীদের মানসিকতা ভালো। 

ঔষধের দোকানে সব রোগের ট্যাবলেট আছে জানি, যদি ঐসব ধর্ষকরূপী স্বামীদের একটা করে খাইয়ে দিলে ভালো হতো, তাহলে হায়না গুলো রোজ রাতে যে নরম নারীর দেহের মাংস ঝলসে খেতো অপার্থিব শতবর্ষের ক্ষুধা নিয়ে তা সেই ট্যাবলেট দিয়ে মেটানো যেতো। 


(সব  চরিত্র কাল্পনিক)


------------------- ------------------------ ----------------------

No comments:

Post a Comment