প্রবন্ধ
------
লেখিকা পরিচিতিঃ জন্ম-১৯৯৪ সালে ৪ ঠা বৈশাখ ( 18 এপ্রিল ) নদীয়া জেলার মদনপুরের একটি অখ্যাত গ্রামে জন্মগ্রহণ। পিতা দিনেশ কুন্ডু ও মাতা দীপিকা কুন্ডু। মদনপুর গার্লস স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি শহর শ্যামনগরে স্থায়ী ভাবে বাসস্থান। বেলঘরিয়ার ভৈরব গাঙ্গুলী কলেজ থেকে স্নাতক এবং কল্যাণী ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর পাশ।ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে রাস্ট্রবিঙ্গান বিষয়ের ওপর স্বর্নপদক প্রাপ্ত।
বর্তমানে একটি কলেজের সহ অধ্যাপিকা হিসাবে কর্মরতা। ছোট থেকেই লেখার অভ্যেস ছিল বিভিন্ন সময়ে স্কুলে কলেজে ম্যাগাজিন আকারে লেখা প্রকাশিত হয়েছে।তবে এখন প্রতিলিপি পরিসংখ্যান এর পেজে দৈনিক লেখিকা রুপেই আত্মপ্রকাশ। কিন্তু এখানেই আমার লেখার প্রথম প্রকাশনা। সমাজের পিছিয়ে পরা নারী ও পুরুষতান্ত্রিক প্রভুত্বকে কিছুটা কোনঠাসা করতেই এই লেখার সুত্রপাত। যাতে সমাজব্যবস্থার ক্ষুদ্রতম ত্রুটিবিচ্যুতি গুলো কে মানুষ বুঝতে পারে।_____________________________________________
꧁উপহার না যৌতুক꧂
"স্ত্রীর কাছ থেকে যে যৌতুক নেয়
সে স্ত্রীর কাছে বিক্রি হয়ে যায়।"
ওইযে সেফিন খবরের কাগজে হইচই হল শিক্ষিকা গায়ে আগুন দিয়েছে। আচ্ছা,কি মনে হয় একজন শিক্ষিকার এহেন কাজ শোভা পায়। না কখন ই নয়। কিন্তু নেপথ্যে যদি অন্য কাহিনি থাকে যদি প্ররোচিত খুন হয় তাহলে? তাহলে কি শিক্ষিকা বলে সর্বস্ব স্বত্বা ত্যাগ করতে হবে?
যৌতুক প্রথা বর্তমান যুগের অতি পরিচিতি কুপ্রথা। যা ছোঁয়াচে রোগের মত শিক্ষিত শ্রেণকেই গ্রাস করছে বেশি। তবে শিক্ষিত সমাজ কিন্তু তা মানতে নারাজ। তারা অন্যের বেলায় বেশ জোর গলাতেই পনপ্রথার বিরোধীতা করেন। সত্যি বলতে কি আজও পন দেওয়া নেওয়া বন্ধ হয়নি।
তবে এই প্রথা নিজের রুপ বদলায়নি বদলেছে নিজের নাম। সমাজ ই তার নাম বদলেছে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে।নামটি কিন্তু বেশ পরিচিত। শিক্ষিত সমাজের অতিব প্রয়োজনীয় কার্যকলাপের মধ্যে যৌতুক এখন উপহার নাম নিয়ে ছাদনাতলা আলো করে বসে নতুন বউএর মতই। আবার কোনো স্বহৃদয় ব্যক্তি এর বিরোধীতা করেও তবে মা জ্যেঠিমা দের কলরব ওঠে"ওমা একি এ যে মেয়েকে কিছুই দেয়নি।
তবে যৌতুকের কিছু ভিন্নতাও রয়েছে। যে বরের যত বেশি যোগ্যতা তার জন্য তত বেশি উপহার। তাহলে প্রশ্ন একটাই সে বর যদি এতোটাই যোগ্য হয় তাহলে তার স্ত্রীর ভার বহন করতে যৌতুকের কি প্রয়োজন? এরও কিন্তু একটা গোছানো উত্তর আছে বর পক্ষের কাছে। "আরে আপনারা কি আমাদের ছেলে কে দিচ্ছেন নাকি যা দেবেন সব ই ত আপনার মেয়ের ই"। যৌতুক সমর্থকরা কিন্তু বলবেন ই যে জীবন সুন্দর ও সহজতর করতে যৌতুকের প্রয়োজন।এই যে সম্পত্তি বিক্রি বা বন্ধক অথবা ঋন গ্রহনের মত কার্যকলাপ গুলো ঘটে তারপরও কি এই উপহার গ্রহণযোগ্য ? আর এই তথাকথিত উপহারের জন্যই কিন্তু লাঞ্ছিত হচ্ছে নারী। শিক্ষার আড়ালে অশিক্ষা আর সমাজ চর্চার কারনেই আজও রয়ে গেছে পনপ্রথা তার নাম বদল করে।তবে অশিক্ষিত আদিবাসীদের মধ্যে এই প্রথা নেই।ইদানিং পাঁচ শতাংশ শিক্ষিত আদিবাসী নিজেদের দাম বাড়াতে উপহার দাবি করেন। চিরকাল ই অবিবাহিত সরকারি চাকুরের কদর কন্যার পরিবারের কাছে বেশি।প্রচুর পরিমান পন দিয়ে হলেও সরকারি চাকুরের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে রাজি হয়ে যান।আজকাল শুধু আর্থিক লেনদেন কেই পন বলে মানা হয়।কিন্তু তার পরিবর্তে প্রচুর টাকার উপঢৌকন সগর্ভে ঘরে তুলে নেয়।যেন এগুলো তাদেরই প্রাপ্য।শুধু মাত্র পন নেওয়ার ধরনটা বদলে গেছে। অনেকক্ষেত্রে বিত্তশালীরা সামাজিক মর্যাদার সূচক হিসাবে দেখেছেন। যেমন ধরুন কন্যাপক্ষ স্বেচ্ছায় আসবাব দিচ্ছেন এখন পাত্রপক্ষ দাবি করেন সেগুলো যেন সেগুন কাঠের হয়। সোনার গহনার ক্ষেত্রেও তাই যদি দিতেই হয় ভালো দেবেন। তবে প্রগতিশীল পাত্রপক্ষপন গ্রহণে অরাজী হলেও পাত্রের সমাজ ও কন্যার পিতা দুজনেই পন প্রথাকে প্রশয় দেয়। সব থেকে উল্লেখযোগ্য ও বিস্ফোরক হল যৌতুকের আধুনিকতম সংস্করণে পড়ে চাকুরিরতা মহিলারা।কারন চাকুরিরতা মহিলারা নিজেরাই এটিএম কার্ড। যার টাকা শুধু তার নিজের কাজেই কম লাগে আর পরিবারের অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহারযোগ্য সে টাকা যৌতুকের নামান্তর।তাই বিয়ের বাজারে তাদের দাম সব থেকে বেশি। ফিরিঙ্গি সাহেবদের প্রতি ঘৃনা থাকলেও এদেশে বিয়ের পাত্রী হিসাবে গুন থাক আর না থাক ফর্সা মেয়েদের জয়জয়কার।প্রতি নিয়ত স্বামীর আবদার মেটাতে সেই মেয়েটিও তার বাবাকে নিঃস্ব করে।
গাছের গুড়ির পেছনে লুকিয়ে আছে দুস্টু প্রথা।আসবাব পত্রও এখন যৌতুক প্রথার প্রথম রসদ। ছেলেপক্ষ তো আজীবন নিজের ঘর কে খালিই রাখে বিয়েতে ঘর সাজিয়ে জিনিস পাওয়ার লোভে। সমাজে বিয়েটা,যোগ্যতাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হল পন টা। সে মেয়ে অজ্ঞাত হলে "এবাবা এমন মেয়ে আর কিছু দেয়নি বাপ মা। আর যোগ্য হলে মেয়ে উপার্জন করে তাও কিছু দিলনা। আর এই টানা পোড়েনে একটা মেয়ে বিয়ের পিড়িতে বসে। যাতে সমাজ বলতে না পারে কিরে বিয়ে হয়নি কেন? ধিক্কার সেই নির্মম সমাজকে যার প্ররোচনায় একটি পিতা কন্যা সমর্পনে নিঃস্ব হয়।
---------------------- ⫷⫸ --------+------------------
সতী নারী
দুই পায়ের মাঝখানের অঙ্গ দ্বারা কোনো মেয়ের সেক্সুয়াল স্টোরি জানা কোনোদিন ই সম্ভব নয়। এবার সময় এসেছে হাইমেনের অন্ধকারকে দুর করার। আর এবার নাহয় একটু খোলাখুলি আলোচনা হোক আপ কামিং হাজব্যান্ডের সাথে। যাতে ফুলশয্যার রাতে কোনো মেয়ে সাদা চাদরের সঙ্গী না হয়।
"HYMEN CAN'T BE A SYMBOL OF VIRGINITY."
তবে সত্যিই যদি আপকামিং হাজব্যান্ড জানতে চায় তাহলে সততার সাথেই উত্তর দিন। সম্পর্ক সুস্থ হবে।
এবার আসি আসল কথায়, সতী নারী এই সমাজের একটি মুল্যবান জিনিস। সব পুরুষ ই সতী নারীকে কাম্য করে। আর তার চেয়েও বেশি এই সমাজের নারীরা সতী হতে চায়। আসলে পুরুষ বা নারী কেউই সতী হতে চায়না,চায় সতীর ইমেজ টা। সতীত্ব এবং চরিত্র দুটিই আলকিত হাস্যস্পদ শব্দ আর সমাজের মুর্খতার দলিল। সীতার আমল থেকেই চলছে সতীত্ব রক্ষার পরীক্ষা। এযুগেও হয়,ফুলশয্যার রাতে। তাই মেয়েদের একটা বিশাল অংশ সতীত্ব জাহির করতে ব্যস্ত থাকে। এক্ষেত্রে পোশাক ও একটা বড় সতীত্বের ঝান্ডা। কিন্তু সেই পোশাকের তলে কত পুরুষ গমন করল তা কেউ খতিয়ে দেখেনা। রাম সীতার সতীত্ব পরীক্ষা করেছিল আর সীতা পাশ ও করেছিল। অথচ রাবন সীতাকে স্পর্শ ও করেনি। কিন্তু রামের বউ হওয়ার কারনে সীতার ভার্জিনিটি নষ্ট হওয়ার কথা। তাহলে কেন সীতার সতীত্ব পরীক্ষা হল? আর যদি সীতা পাশ না করত তাহলে কি হত তাছাড়া সব থেকে বড় প্রশ্ন সীতা পরীক্ষায় পাশ করল কিভাবে?
নারীর জীবন যৌনতা একটি সিদ্ধান্ত। আর নিজের সঙ্গীর সাথে প্রতারণা করা অপরাধ। আর তাই সতীত্বকেই বর্বর অসভ্য সমাজ নারী পুরুষের সামনে মুলোর মত ঝুলিয়ে রেখেছে।সতীত্ব ভীষন স্পর্শকাতর বিষয়। তাই ছেলে হোক বা মেয়ে সতীত্ব নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় থাকে বিবাহের পুর্বে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সময়। অনেকে আবার মনে করেন যে ভার্জিনিটি তাদের মনবল বৃদ্ধি করে। খানিকটা মানষিক প্রশান্তির কারনে যদি ভাবা হয় তাহলে ঠিকি আছে। তবে ভার্জিনিটির কুসংস্কার ঘোচানো যথেষ্ট কস্টসাধ্য বিষয়। তারমধ্যে সবচেয়ে পুরোনো নোংরা কুসংস্কার হল বিয়ের প্রথম রাতে বিছানার চাদরে রক্তের দাগ না থাকলে তাকে ভার্জিন মেয়ে হিসাবে গন্য করা হয়না। তাহলে ছেলেটা যে ভার্জিন তার কি প্রমান আছে? প্রশ্ন হল কেন এই ব্যস্ততম যুগেও মেয়েদের শরীরের ছোট্ট একটা অংশ নিয়ে মানুষ এত মাথা ঘামায়? নিছক ই না জানার কারনে। কিন্তু সত্যি টা হল হাইমেন নিয়ে ভুল ধারনা তৈরি করা হয়েছে নারীকে শারীরিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। প্রথম রাতে তাই একটা পুরুষ সমস্ত জোর প্রয়োগ করে রক্তপাত করতে। মানষিক প্রশান্তির থেকেও তার কাছে তখন বেশি প্রয়োজন হয়ে পরে কিভাবে রক্তপাত হবে সেই বিষয়টা যাতে সকালে বন্ধুমহলে নিজেকে সগর্বে প্রকাশ করতে পারে।
ভার্জিনিটি নষ্ট মানে হাইমেন ছিড়ে যাওয়া নয়। ইলাস্টিক রাবার ব্যান্ডের মতই হাইমেনের চরিত্র। তাই হাইমেন কখন ই যোনি থেকে উধাও হয়ে যায়না। অর্থাৎ এইরুপ হাইমেন থাকার জন্যই কোনো মেয়ের রক্তপাত হয়না। সুতারাং মেয়ে ভার্জিন মানে রক্তপাত ঘটবেই এটা সম্পুর্ন ভুল তথ্য।
এবার আসি সেই মুল কৌতুহলী প্রসঙ্গে যা শুনলে তথাকথিত সমাজের ভুল কিছুটা হলেও ভাঙ্গবে। প্রসঙ্গটি হল কেন কোনো নারীর প্রথম রাতে রক্তপাত হয় আবার কেন হয়না? হাইমেন বা সতীচ্ছেদ এক ধরনের পর্দা।কিন্তু এটা যোনিমুখ কে ঢেকে রাখেনা। হাইমেনের আকার গঠন বিভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়।কখনও পুরু কখনও পাতলা আবার কখনও প্রাকৃতির ভাবে থাকেই না। ব্যস্ততম যুগে যে ধারায় জীবন পরিচালিত হয় তাতে আঠারো উর্ধ্ব কোনো মেয়ের ই হাইমেন থাকেনা। তা অপসারিত হয়। তাই প্রথম মিলনে কখন ই রক্তপাত হবেনা। তাহলে এবার প্রশ্ন হল তাহলে আঠারো উর্ধ্ব মেয়েদের প্রথম রাতে রক্তপাত হয় কেন? সে ক্ষেত্রে যা ঘটে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। বিবাহনামক যাতাকলে পিষে যায় একটি মেয়ে সেই রাতেই। পুরুষ সঙ্গী তার সাথে জোরপূর্বক সহবাস ঘটায়।আর সেই নারীর শরীরের অভ্যন্তরে ক্ষতের সৃষ্টি করে যা থেকে রক্তপাত হয়। পুরুষটি নেয় সতীত্বের পরিক্ষা।আর যদি রক্তপাত নাহয় তাহলে মুখ ভার হয় পুরুষের।কিন্তু এটা বোঝেনা যে ভালবাসার মানুষের কাছে কতটা ঘৃন্য হয়ে যায় সে জোরপূর্বক যৌনমিলনিকৃত আঘাতের ফলে। সেটা প্রথম মিলনপুর্বক হাইমেন ছিড়ে যাওয়ার কারন আদৌ নয়। বরং সেই নারীটির শারীরিক শিথিলতা ছিলনা ফলত পুরুষ অঙ্গের দ্বারা তার অভ্যন্তরে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল।
বেশিরভাগ মানুষ মনে করে সতীচ্ছেদ একটা পর্দা যা যৌনাঙ্গের প্রবেশদ্বার কে বন্ধ করে রাখে। প্রথম যৌনমিলনে তা ছিড়ে গিয়ে রক্তপাত ঘটায়। এক বার ভাবুন তো তবে মহিলাদের ঋতুস্রাব কোথা দিয়ে হয়?আসলে নারীর জটিল যৌনাঙ্গ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনার অভাবেই এসব ধারণার উৎপত্তি। এবার হয়ত প্রশ্ন আসতে পারে আগের দিনে কেন রক্তেপাত হত তার ও কারন ছিল অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারনে নারী ভীত থাকত ফলে সঠিক ভাবে উত্তেজিত হতে পারত না।তবে এটি নির্ভর করে যোনিপথের পিচ্ছিলতা মিলনের তিব্রতা ও রুক্ষতার ওপর। বর্তমানে নারীরা যৌনক্রীয়ায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে বলেই প্রথম মিলনে রক্তপাত ঘটেনা।
অনেক সময় কোনো নারী কুমারী না হলেও তার রক্তপাত ঘটে যায়। তাহলে সেই পুরুষ টি কি ভাববে মেয়েটি সতী?ভয়ানক তথ্য এই যে ইনফেকশনের কারনেও প্রথম মিলনে রক্তপাত হয় আর তা হয় নারীর যৌনাঙ্গের পরিচ্ছন্নতার অভাবে, যৌন মিলনে সেই নারীর যোনিপথ যৌনরস দ্বারা সম্পৃক্ত না থাকে। অথবা পুরুষ যদি রুক্ষ ভাবে যৌনমিলনে অভ্যস্ত হয় তবে যোনির ট্যিসু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই মুলত রক্তপাত হয়।যথেস্ট পরিমানে ফোরপ্লে না হলে মানষিক প্রস্ততি না থাকলে হাইমেন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরুষ সেই রক্তপাতকে সুখের চাবিকাঠি ভাবে। আর যদি কোনো নারীর রক্তপাত নাহয় তবে হিনমন্যতায় ভোগে। যুগ যুগ ধরে এই অন্ধবিশ্বাসের উপ্র ভিত্তি করেই নারী কে অবিশ্বাস করা হয় কিন্তু পুরুষের সতীত্ব কি দিয়ে প্রমান হবে?
তাই জীবনে প্রথম বার সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স এ রক্তপাত হবেই এমন ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হবেন না। একটা পুরুষাঙ্গের জন্য হাইমেন যথেস্ট প্রসারিত হয়।সুতারাং প্রথম মিলনে তা কখন ই ছিড়ে যায়না। যদি কোনো পুরুষ প্রথম রাতের পর সগর্বে তার স্ত্রীর রক্ত পাতের কথা জানাতে আসে তাকে ধিক্কার জানান তার পশুর ন্যায় আচরনের জন্য। আর নুন্যতম সুশিক্ষা টাকে খোলাখুলি ভাবে আলোচনা করুন প্রতি টা নিচ মানষিকতার পশুর সাথে যাতে আপনার হাত ধরে কিছু নারীর জীবন রক্ষা পায়
।---------------------------------------------------------------
অত্যাচারিত নারী
বিগত কয়েকশ সহস্রাব্দে ভারতীয় নারীর অবস্থার বহু পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আধুনিক ভারতের কিছু নারী রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী,বিরধী দলনেতা,মুখ্যমন্ত্রীর পদ দখল করলেও সমাজের একাংশ নিমজ্জিত রয়েছে আন্ধকারে।
201 5সালের লিঙ্গ বৈষম্য সুচক অনুযায়ী ভারতে নারীদের সংসদে স্থান হয়েছে মাত্র 12%। শিক্ষায় 35% ও শ্রম ক্ষেত্রে 28 %। তাই আজও তারা লিঙ্গ বৈষম্য ও অপরাধের স্বীকার।
বৈদিক যুগের নারীরা জীবনের সকলস্তরে পুরুষের সমান অধিকার ভোগ করত।ঋগবেদের শ্লোক থেকে জানা যায় নারীরা নিজ পছন্দ মত উপযুক্ত বয়সে বিবাহ করতে পারত। আনুমানিক 500 শতকে নারীর অবস্থার অবনতি শুরু হয়। ভারতের অধিকাংশ নারী বিধি নিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়।বাল্য বিবাহ,সতীদাহ,পর্দাপ্রথা,দেবদাসী প্রথা তাদের জীবনের কলঙ্ক রুপে বর্নিত হতে থাকে।
তবে আধুনিক ভারত কিছুটা অন্য মাত্রায় বর্নিত।ভারতের নারীরা অসহয়তার শিকার। ভারতে ধর্ষন,অ্যাসিড নিক্ষেপ, যৌতুকের দাবিতে হত্যাকাণ্ড, যুবতী নারী কে জোরপুর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
জাতীয় অপরাধ নিবন্ধীকরন বিভাগ 1998 সালে জানায় যে 2010 সালের মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে যাবে। THOMAS WRITERS FOUNDATION এর একটি সমিক্ষা অনুযায়ী ভারতবর্ষ নারীদের বসবাসের জন্য চতুর্থতম বিপজ্জনক স্থান। ভারতে যেসব মহিলারা কোনো পুরুষের দেওয়া বিবাহ প্রস্তাব কে প্রত্যাখ্যান করেছে অথবা বিবাহ বিচ্ছেদের দাবী জানিয়েছে তারাই সব থেকে বেশি অ্যাসিড আক্রান্তের শিকার হয়েছে। ভারতীয় আধুনিক পুরুষরা প্রতিশোধ গ্রহণের উপায় হিসাবে এই পথকেই সবথেকে বেশি অবলম্বন করছে,কারন অ্যাসিডের স্পর্শে শরীরের স্থায়ী অংশের দ্রুততম চরম বিকৃতি ঘটে। এটি একজন মহিলার জীবন যন্ত্রণাদায়ক করার কৌতুক পূর্ণ উপায়।
STATE OF THE WORLD'S CHILDREN 2009 অনুসারে 47% ভারতীয় নারী 20 থেকে24 বছর বয়সের নীচে বিয়ে করে। গ্রামাঞ্চলে তার হার 56%। লজ্জাজনক হল পৃথিবীর 40% বাল্যবিবাহই ঘটে ভারতে।
NATIONAL CRIME RECORD BUREAU অনুযায়ী প্রতি তিন মিনিটে মহিলাদের বিরুদ্ধে একটি অপরাধের ঘটনা সংঘটিত হয়।প্রতি 29 মিনিটে একজন মহিলা ধর্ষিত হয়। প্রতি 77মিনটে একজন মহিলা পন প্রথার শিকার হয়ে মৃত্যু হয়।সবথেকে ভয়ংকর তথ্য এটাই যে প্রতি 9 মিনিটে একজন মহিলা তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে যদি সেটা ভালোবাসার সম্পর্ক হয় তাহলেও।
তবে ভারতে পুরুষ ও নারী লিঙ্গ অনুপাতে পুরুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য কম।তার পরোক্ষ কারন হিসাবে চিহ্নিত করা হয় পরিনত বয়সে পৌছানোর আগেই নারী মৃত্যুর মতো ঘটনা। তবে আধুনিকতার চেয়ে আদিবাসী সম্প্রদায় খানিকটা শেষ্ট্রতর।তাদের মধ্যে শিক্ষা দারিদ্র্যতার হার কম থাকলেও লিঙ্গ অনুপাতের তেমন কোনো তারতম্য লক্ষ্য করা যায় না। অতিমাত্রায় শিক্ষিত শ্রেণির কন্যাভ্রুন হত্যার সাথে যুক্ত থাকার কারনে নারীর সংখ্যা অপর্যাপ্ত। এক্ষেত্রে জম্মু কাশ্মীরের লিঙ্গ অনুপাত আশঙ্কাজনক।
ভারতীয় সংবিধানের আইন ধারায় কিছু ফাঁক রেখে সমাজকাঠামোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।2013 এর সংশোধনী আইন অনুযায়ী 375 এর অধিনে ব্যাতিক্রমী যে ধারা লিখিত হয় সেখানে বলা হয় যে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সংসর্গ বা যৌন ক্রিয়া কখনই ধর্ষন নয়, যেখানে স্ত্রীর বয়স পনেরো বছরের নিচে নয়। কিন্তু তবুও মানষিক অত্যাচারের কারনে বৈধ ধর্ষন গুলিকে যদি মান্যতা দেওয়া যায় তবে তার হিসাব নিরিক্ষন করলে দেখা যাবে হতাশাজনক ভাবে প্রতি 20 মিনিটে একটি বৈধ ধর্ষণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়।
---------------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment