Tuesday, 1 November 2022

পুতুল খেলার ইতিকথা - কৌশিক সরকার




বাচ্চা মেয়েটি আজ চুপ করে গেছে
যেনো সবকিছুতেই নীরব অবহেলা, 
চকোলেটের লোভ দেখিয়ে রোজ
সেই দুষ্টু আঙ্কেলের নোংরা হাতের খেলা। 

সেদিন ছিলো রবিবারের বিকেল
ঘরের মেঝেতে পুতুল খেলার মেলা, 
বাচ্চা মেয়েটা জানতো কি সেদিন
নিজের সাথেই ঘটবে এমন পুতুল খেলা ? 

সেদিন সে কান্না করেছিলো খুব
হয়তো চিৎকারও করেছিলো এক আধবার, 
'প্লিজ আঙ্কেল,  প্লিজ আঙ্কেল ছেড়ে দাও, 
খুব কষ্ট হচ্ছে আমার '। 

কিন্তু সেদিন শুনতে পাইনি কেউ
শুনতে পেলেই বা কি হোতো
পুতুলের ঠোঁটে লেগে থাকা রক্তের দাগ
কখনো কি মুছে ফেলা যেতো ? 
----------------------------------------------
                   
                    

Monday, 31 October 2022

শিশিরের রং লাল - আফতাব মল্লিক



আকাশের বারান্দায় মরে যাওয়া ভালোবাসাদের  ভিড়।
রাতজাগা পাখির ক্লান্ত ঠোঁট ছুঁয়ে ছলনার বসন্ত নামে শেষ রাতের কুয়াশায়,,,,,,,,,,,,,,
আরো অনেকটা পথ চলতে গিয়েও থেমে গেছে বিষাদের নদী কোনো নীরব উপত্যকায়!
এখনও গায়ে শিশির মেখে একটা হলুদ ঘাসফুল,একটু উষ্ণতার জন্য!
ক্ষনিকের সূর্য ওঠেনি পোড়া কপালের কোণে একটুও।
এক চিলতে খুশির খোঁজে কত মনমরাদের আজীবন অসমাপ্ত সংগ্রাম।
যদি কখনও দেখা হয় ছলনাময়ীর দুঃস্বপ্নের অসহনীয় চাহনী।
আজও কাল বেয়ে ভোরের দরজা খোলে শুকতারার দীর্ঘশ্বাস!
মেঘেদের ভিড় ঠেলে আসবে না চেনা স্বপ্নের ছায়পথ, চাঁদও জানে।
কে কার চেয়ে সুখী আছে,এক প্রশ্ন সবটা বাতাসের কান জুড়ে।
হৃদয় ভাঙ্গার কম্পাঙ্ক কেউ মাপেনি আজ পর্যন্ত।
তবু পৃথিবীর মাটির ঘ্রাণে মিশে শুধুই কান্নার আওয়াজ!
অনেকক্ষণ একভাবে চেয়ে পাহাড়ের চোখও ঝাপসা!
সময়ের স্রোত ঠেলে শুধু ভেসে যাওয়া অজানার নোঙর ফেলে।
ভুলে গেছে কাশফুলও, ছাই রঙে লেখা ছেঁড়া শরতের কাব্য।
বৃথাই মন ভালো করতে দুদিনের অমনোযোগী ভ্রমণ।
বাকি দিনে সেই তো না ভালো লাগা সঙ্গীর শরীর চাওয়া দৃষ্টি!
তবু ভালো থাকা সবার, বিরক্তিকর বনানীর গায়ে লেপ্টে থেকে।
জীবন জীবনের খোঁজে, কেবলই ভাসা ভাসা তৃপ্তির মিছে অন্বেষণ,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Sunday, 30 October 2022

অপেক্ষায় সোনালী স্বপ্ন - সুদীপ চক্রবর্তী




অনেক অপেক্ষায় ছিলাম হরি সাধন চোখ মেলে তাকাবে,
হরি আমার থেকে চারদিনের ছোট ,
আজ কাঁধে নিয়ে চিতায় তুলে দিলাম ।
চিতা যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল,
অনেক পুরানো কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল,
খেলার মাঠের পাশে কাঁঠাল গাছে পাকা কাঁঠালের গন্ধ পেলে হরি পেড়ে আনতো,
খাওয়া শেষ হলে আঠা ছাড়াতে রাধাকান্ত বণিকের দোকানে পৌঁছে যেতাম, 
একটু তেল পাবার আশায়,
তখন এক সের তেল ছয় আনা, 
আর আজ দু' শ টাকা লিটার।
তিস্তা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল,
তখন পুরো চুল কালো ছিল আজ তা সাদা।
ইস্কুলে জগদীশ বাবু বলতেন আমারা অনেক কষ্ট করেছি,
দেশ সবে স্বাধীন হয়েছে একটু অপেক্ষা কর,
সোনালী স্বপ্নের দিন তোদের জন্য হবে।
সেই কালো চুল অপেক্ষায় থাকতে থাকতে সাদা হয়ে গেল,
রং কিন্তু খুঁজে পেলাম না।
হরি ও শুনেছিল, কিন্তু অপেক্ষা করতে পারলো না, চলে গেল।
আমিও অপেক্ষায় আছি,
একদিন হয়তো হরির মতো চলে যাবো, 
কালো হয়ে আসবে সবকিছু, শুধু আঁধার আর আঁধার,
ঘোর কালো অন্ধকার,
অমাবস্যার চেয়েও আরও বেশি, 
অনেক বেশি অন্ধকার,
বাঁশের মাচায় শুয়ে হেলতে দুলতে অপেক্ষার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি,
দূরে সোনালী স্বপ্ন হাত নাড়াচ্ছে।

Sunday, 23 October 2022

অবনীর ঘর - সুদীপ চক্রবর্তী





এই সেই মালভূমি যেখানে বৃষ্টি হয় বার মাস,
গাছের পাতার রং সবুজে সবুজ বর্ণময় নেয় নির্মল নিঃশ্বাস।
পাখিদের কোলাহলে ঘুম ভাঙ্গে সেই ভঙ্গিতে ,
কাঠবেড়ালির মতো ছোট জীব রাঙায় নিজেকে সেই রঙে তে ।
শুধু সরীসৃপেরা থাকে খাল বিলের পাশে,
এখানে তাদের খাদ্য পাওয়া যায় অনায়াসে।
অবনী বসে থাকে শক্তি বাবুর কল্পিত ঘরে।
যদি দরজায় কেউ কড়া নাড়ে,
" অবনী বাড়ি আছো ? "
সে শব্দ ঘুরে ফিরে মিলিয়ে যায়
শুনতে কভু পেয়েছ ?
আজ আর বৃষ্টি পড়ে না,
সবুজ রং মিলিয়ে গিয়েছ কোথায়
কেউ জানে না।
গাছের কঙ্কালসার চেহারা ফুটে উঠেছে,
সব কিছুর অভাবে কাঠবেড়ালি, বাঁদর সব পালিয়ে গেছে ।
সরীসৃপেরা এখন আছে,
খাল বিল শুকিয়ে গেলেও এখন কিছু খাদ্য বেঁচে আছে।
অবনী এখনো অপেক্ষা করে থাকে,
যদি দরজায় কেউ কড়া বাজিয়ে দেখে,
" অবনী বাড়ি আছো? "
শক্তি বাবু অবনীর হাহুতাশ আর কান্না উপর থেকে দেখে,
তার চোখ দিয়ে টসটস করে জল পড়তে থাকে।
তবুও অবনী শান্ত মনে এক কোনে নিজেকে বসিয়ে রাখে,
যদি আবার পুরানো গলায় ডাকে,
" অবনী বাড়ি আছো" ?

( কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা অবলম্বনে। )

Thursday, 20 October 2022

বিদ্রোহী - রাধাকান্ত মুদি


ওই যে দূরে পথের পানে
                 কে যেনো দিচ্ছে ডাক
বলছে এসে দেখো একবার
               শুধু ভীতুরা ঘরে থাক।।
বলছে সে প্রতিবাদী সুরে
                 বন্ধু এসো করি লড়াই
মূর্খের মতো কতো দিন
        আর করবে মিথ্যার বড়াই।।
বলছে সে এসো ধরো
              সততার ওই শক্ত লাঠি
এগিয়ে চলো নির্ভীক হয়ে
          ভাঙো মিথ্যার কল কাঠি।।
চোখে তার জ্বলন্ত শিখা
                     মানবে না সে হার
ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই করি
               ক্ষতি হয় বলো কার।।
স্লোগান সে তুলেছে ওই 
                ভিক্ষা নয় চাই শিক্ষা
সময় এসেছে বন্ধু এবার
    দিতে হবে সততার পরীক্ষা।।
অন্ন চাই বস্ত্র চাই 
            চাই মাথা গোঁজার ঠাই
মোরা অনেক সয়েছি অন্যায়
       এবার শুধু অধিকার চাই।।